সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

 যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে শস্যচ্ছেদন সেই সময়ে শুরু হতো, যখন সমস্ত ইস্রায়েলীয় পুরুষ তাড়িশূন্য রুটির উৎসবে থাকত, তা হলে কারা ধর্মধামে নিয়ে আসা যবের অগ্রিমাংশ ছেদন করত?

মোশির ব্যবস্থা ইস্রায়েলীয়দের নির্দেশ দিয়েছিল: “তোমার প্রত্যেক পুরুষ বৎসরের মধ্যে তিন বার তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে তাঁহার মনোনীত স্থানে দেখা দিবে; তাড়ীশূন্য রুটীর উৎসবে, সাত সপ্তাহের উৎসবে ও কুটীরের উৎসবে।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৬) রাজা শলোমনের সময়ের পর থেকে ঈশ্বরের মনোনীত স্থান ছিল যিরূশালেমের মন্দির।

তিনটে উৎসবের মধ্যে প্রথমটা, বসন্তকালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতো। তাড়িশূন্য রুটির উৎসব বলে পরিচিত এই উৎসব, ১৪ই নিশান নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপনের পরদিন শুরু হতো এবং ২১শে নিশান পর্যন্ত সাত দিন ধরে চলত। উৎসবের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১৬ই নিশান, যিহুদিদের ধর্মীয় ক্যালেন্ডারের ওপর ভিত্তি করে বছরের প্রথম শস্যচ্ছেদনের শুরুকে চিহ্নিত করত। সেই দিন, মহাযাজককে কাটা যব শস্যের “অগ্রিমাংশ বলিয়া এক আটি” নিতে হতো এবং ধর্মধামে “সদাপ্রভুর সম্মুখে” দোলাতে হতো। (লেবীয় পুস্তক ২৩:৫-১২) যেহেতু সমস্ত পুরুষকে তাড়িশূন্য রুটির উৎসবে উপস্থিত থাকতে হতো, তা হলে এই নৈবেদ্যের শস্য কারা ছেদন করত?

তাড়িশূন্য রুটির উৎসব চলাকালীন যিহোবার উদ্দেশে কাটা শস্যের অগ্রিমাংশ উৎসর্গ করার আজ্ঞা, সমগ্র জাতিকে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক ব্যক্তিকে আলাদা আলাদাভাবে শস্যচ্ছেদন শুরু করতে হতো না এবং স্বয়ং তাকেই ধর্মধামে শস্যের অগ্রিমাংশ নিয়ে আসতে হতো না। এর পরিবর্তে, সেই জাতির প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি বিশেষরা উক্ত আজ্ঞা পালন করত। তাই, তাড়িশূন্য রুটির উৎসবের জন্য এক আঁটি শস্যচ্ছেদনের কাজটা একটা প্রতিনিধিদলকে কাছাকাছি কোনো যবের ক্ষেত্রে পাঠিয়ে করা যেত। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এনসাইক্লোপিডিয়া জুডাইকা বলে: “যদি যব পেকে যেত, তা হলে যিরূশালেমের কাছাকাছি অঞ্চল থেকেই তা আনা হতো; তা না হলে, ইস্রায়েলের যেকোনো জায়গা থেকে এটা আনা হতো। তিনজন পুরুষ তা কাটত, প্রত্যেকের নিজ নিজ কাস্তে ও ঝুড়ি থাকত।” এরপর এক আঁটি যব মহাযাজকের কাছে আনা হতো, যিনি তা যিহোবার কাছে উৎসর্গ করতেন।

কাটা শস্যের অগ্রিমাংশ উৎসর্গ করার এই চাহিদা, ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের দেশ ও ফসলের ওপর ঈশ্বরের আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছিল। (দ্বিতীয় বিবরণ ৮:৬-১০) কিন্তু, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল এই রীতিগত উৎসর্গীকরণ, “আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াবিশিষ্ট” ছিল। (ইব্রীয় ১০:১) লক্ষণীয় বিষয়টা হচ্ছে, যিশু খ্রিস্ট সা.কা. ৩৩ সালের ১৬ই নিশান পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, যেদিন যিহোবার কাছে কাটা শস্যের অগ্রিমাংশ উৎসর্গ করা হতো। যিশুর বিষয়ে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “খ্রীষ্ট মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইয়াছেন, তিনি নিদ্রাগতদের অগ্রিমাংশ। . . . কিন্তু প্রত্যেক জন আপন আপন শ্রেণীতে; খ্রীষ্ট অগ্রিমাংশ, পরে খ্রীষ্টের লোক সকল তাঁহার আগমনকালে।” (১ করিন্থীয় ১৫:২০-২৩) মহাযাজক যিহোবার সম্মুখে যে-এক আঁটি অগ্রিমাংশ দোলাতেন, তা পুনরুত্থিত যিশু খ্রিস্ট—অনন্তজীবনের জন্য মৃত্যু থেকে উত্থিত সর্বকালের সর্বপ্রথম ব্যক্তি—সম্বন্ধে পূর্বাভাস দিয়েছিল। এভাবে, যিশু মানবজাতির জন্য পাপ ও মৃত্যু থেকে মুক্ত হওয়ার পথ খুলে দিয়েছিলেন।

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

© ২০০৩ BiblePlaces.com