সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল”

“শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল”

“শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল”

 একজন অন্ধ ব্যক্তির চোখে কাদা লাগিয়ে সুস্থ করার পর, যিশু তাকে বলেছিলেন: “শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল।” সেই ব্যক্তি যিশুর কথামতো কাজ করেছিল এবং “দেখিতে দেখিতে আসিল।” (যোহন ৯:৬, ৭) শীলোহ সরোবরটা কোথায় অবস্থিত ছিল? সম্প্রতি, এক প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার এর অবস্থান সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রদান করে।

অনেক পর্যটক শীলোহ সরোবর নামে পরিচিত যিরূশালেমের একটা জায়গা পরিদর্শন করেছে আর তারা মনে করেছে যে, এটাই হচ্ছে যোহন ৯:৭ পদে উল্লেখিত আসল শীলোহ সরোবর। সেই জায়গাটা হিষ্কিয়ের নির্মিত প্রণালীর—সা.কা.পূ. অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত ৫৩০ মিটার দীর্ঘ এক জলপ্রণালীর—শেষপ্রান্তে অবস্থিত। বস্তুতপক্ষে, শীলোহ সরোবরটা সা.কা. চতুর্থ শতাব্দী থেকে বিদ্যমান রয়েছে। এটাকে বিজানটাইন “খ্রিস্টানরা” তৈরি করেছিল, যারা ভুলবশত ধরে নিয়েছিল যে, যোহনের সুসমাচারে উল্লেখিত সরোবরটা, এই প্রণালীর শেষপ্রান্তে অবস্থিত।

কিন্তু, ২০০৪ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদরা যে-সরোবরটা খুঁজে পায় সেটার সম্বন্ধে তারা এই উপসংহারে আসে যে, এটাই ছিল সেই শীলোহ সরোবর, যেটা যিশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তখন থেকে অস্তিত্বে ছিল। এটা সেই জায়গা থেকে প্রায় ১০০ মিটার দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থিত, যে-জায়গাকে ভুলভাবে শীলোহ সরোবর বলে ভাবা হয়েছিল। কীভাবে তারা এটাকে আবিষ্কার করেছিল? সেই শহরের কর্তৃপক্ষের ওই এলাকার পয়ঃপ্রণালী মেরামত করার প্রয়োজন হয়েছিল আর তাই, তারা বড় বড় যন্ত্রপাতিসমেত কর্মীদের সেখানে পাঠিয়েছিল। কাছেই কর্মরত একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ খনন কাজ দেখতে আসেন আর দেখেন যে, দুটো সিঁড়ি দেখা যাচ্ছে। সেই কাজ স্থগিত রাখা হয়েছিল এবং ইস্রায়েলী পুরাতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ সেই এলাকা খনন করার অনুমতি দিয়েছিল। সরোবরের প্রায় ৭০ মিটার দীর্ঘ একটা দিক এবং দুটো কোণ ইতিমধ্যেই খনন করা হয়ে গিয়েছিল।

খনন করার সময় প্রাপ্ত কিছু মুদ্রা রোমের বিরুদ্ধে যিহুদিদের বিদ্রোহের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বছরের সময়কার। সেই বিদ্রোহ সা.কা. ৬৬ থেকে ৭০ সালের মধ্যে ঘটেছিল। মুদ্রাগুলো প্রমাণ দিয়েছিল যে, ওই সরোবরটা সা.কা. ৭০ সাল পর্যন্ত, যখন রোমীয়রা যিরূশালেমকে ধ্বংস করেছিল, সেই পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছিল। বাইবেল সম্বন্ধীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ্যার পুনরালোচনা (ইংরেজি) পত্রিকাটি এই উপসংহার করে: “অতএব, সরোবরটা বিদ্রোহ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছিল এবং এরপরে সেটাকে পরিত্যক্ত করা হয়েছিল। এই এলাকায়, যেটা হচ্ছে সমগ্র যিরূশালেমের মধ্যে সবচেয়ে নিচু জায়গা, এখানে বিজানটাইন যুগের আগে পর্যন্ত কেউ বসবাস করেনি। প্রতি বছর উপত্যকা থেকে নিম্নগামী শীতকালীন বৃষ্টিপাতের ফলে এই সরোবরে কাদামাটির এক স্তর জমা হতো। রোমীয়রা সেই শহর ধ্বংস করে দেওয়ার পর, সরোবরটাকে আর কখনো পরিষ্কার করা হতো না। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, সরোবরটাতে কাদামাটি জমতে জমতে এক পুরু স্তর তৈরি হয়েছিল আর এর ফলে ধীরে ধীরে সরোবরটা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদরা এটাকে প্রায় ৩ মিটার কাদামাটির নীচে খুঁজে পেয়েছিল।”

কেন বাইবেলের মনোযোগী ছাত্ররা শীলোহ সরোবরের অবস্থান সম্পর্কে আগ্রহী? কারণ, এটা তাদেরকে প্রথম শতাব্দীর যিরূশালেমের ভৌগলিক বিবরণ সম্বন্ধে আরও স্পষ্ট বোধগম্যতা লাভ করতে সাহায্য করে, যে-বিষয়ে যিশুর জীবন ও পরিচর্যা সম্পর্কিত সুসমাচারের বিবরণগুলোতে প্রায়ই উল্লেখ করা হয়েছে।

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

নতুন আবিষ্কৃত শীলোহ সরোবর

[সৌজন্যে]

© ২০০৩ BiblePlaces.com