সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আধ্যাত্মিকতার সন্ধানে

আধ্যাত্মিকতার সন্ধানে

আধ্যাত্মিকতার সন্ধানে

 যিশু তাঁর বিখ্যাত পর্বতেদত্ত উপদেশে বলেছিলেন: “সুখী তারা যারা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন।” (মথি ৫:৩, NW) আপনি সম্ভবত এই কথাগুলোর সঙ্গে একমত। সব জায়গার লোকেরা উপলব্ধি করে যে, তাদের জীবনে আধ্যাত্মিকতার প্রয়োজন রয়েছে এবং তারা ধরে নেয় যে, তা অর্জন করা সুখ নিয়ে আসবে। কিন্তু, “আধ্যাত্মিকতা” শব্দটির অর্থ কী?

একটি অভিধান আধ্যাত্মিকতাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করে, “ধর্মীয় মূল্যবোধগুলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বা আসক্তি” এবং “আধ্যাত্মিকমনা হওয়ার গুণ বা অবস্থা।” তাই “আধ্যাত্মিকতা” বা “আধ্যাত্মিকমনা হওয়া” এই শব্দগুলোকে সমার্থ শব্দ হিসেবে দেখা হয়। এই অভিব্যক্তিটিকে বিশদভাবে বর্ণনা করার জন্য, এই তুলনাটা বিবেচনা করুন: ব্যাবসা সংক্রান্ত বিষয়ে দক্ষ একজন ব্যক্তিকে বলা হয় ব্যবসায়িকমনা। একইভাবে, যে-ব্যক্তি আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় বিষয়গুলোকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে গণ্য করে থাকেন, তাকে বলা হয় আধ্যাত্মিকমনা।

তা হলে, কীভাবে প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা অর্জন করা যায়? যদিও প্রায় প্রত্যেকটা ধর্মই আধ্যাত্মিকতা অর্জনের পথটি জানে বলে দাবি করে থাকে, তবুও সেগুলো যে-নির্দেশনা দিয়ে থাকে, তা ধর্মগুলোর মতোই অগণিত। একজন প্রটেস্টান্ট ব্যক্তি, ধর্মোৎসাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় যোগ দিয়ে পরিত্রাণ পাবেন বলে দাবি করেন। একজন ক্যাথলিক ব্যক্তি গির্জার মাস্‌ উদ্‌যাপনে যোগ দিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি ধ্যানের মাধ্যমে জ্ঞানালোক পাওয়ার চেষ্টা করেন। একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি আত্মত্যাগের দ্বারা পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন। এইসমস্ত ব্যক্তি কি প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা অর্জনের পথে রয়েছে? এগুলোর একটাও কি আধ্যাত্মিকতা অর্জনের পথ?

অনেকের কাছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর হল, না। তারা দাবি করে যে, আধ্যাত্মিকতার অর্থ হল, “কোনোকিছুর সদস্য হওয়া ছাড়াই বিশ্বাস করা” অর্থাৎ, কোনো ধর্মের সদস্য না হয়েই একজন ঈশ্বর বা দেবতাকে বিশ্বাস করা। অন্যেরা মনে করে যে, আধ্যাত্মিকতা বলতে কোনো ধর্মীয় জ্ঞানকে বোঝায় না কিন্তু এটা হল মনের শান্তি এবং অর্থপূর্ণ জীবনের এক আকাঙ্ক্ষা। তারা দৃঢ়ভাবে দাবি করে যে, যারা আধ্যাত্মিকতার সন্ধান করছে তাদের আদৌ কোনো ধর্মের প্রয়োজন নেই। এর পরিবর্তে, তাদের কেবল নিজেদের অন্তরের, তাদের মনের গভীরতম অনুভূতিগুলোর প্রতিই দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। একজন লেখক বলেন: “প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা হল এমন কিছু, যা একজন ব্যক্তির মনের গভীরে রয়েছে। এটা হচ্ছে, জগৎ ও আপনার আশপাশের লোকেদেরকে ভালবাসার, গ্রহণ করে নেওয়ার ও তাদের সঙ্গে মেলামেশা করার উপায়। এটা কোনো গির্জায় পাওয়া যেতে পারে না বা একটা নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করার দ্বারাও পাওয়া যাবে না।”

স্পষ্টতই, আধ্যাত্মিকতা সম্বন্ধে লোকেদের মতামত ভিন্ন। হাজার হাজার বই আধ্যাত্মিক জীবনের এক পথ দেখাতে পারে বলে দাবি করে, যদিও সেগুলোর পাঠকরা প্রায়ই শূন্য এবং বিভ্রান্ত বোধ করে। কিন্তু, একটি বই আছে, যেটিতে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো সম্বন্ধে নির্ভরযোগ্য নির্দেশনা পাওয়া যায়। এটি হল সেই বই, যেটি ঈশ্বর-নিশ্বসিত বা ঈশ্বর-অনুপ্রাণিত বলে প্রমাণ দেয়। (২ তীমথিয় ৩:১৬) আসুন আমরা দেখি যে, আধ্যাত্মিকতার অর্থ কী এবং এর মূল্য সম্বন্ধে সেই বই, বাইবেল কী বলে।