সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা কীভাবে আপনি তা অর্জন করতে পারেন?

প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা কীভাবে আপনি তা অর্জন করতে পারেন?

প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা কীভাবে আপনি তা অর্জন করতে পারেন?

 “মাংসিকমনা হওয়ার অর্থ, মৃত্যু; কিন্তু, আধ্যাত্মিকমনা হওয়ার অর্থ, জীবন ও শান্তি,” প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন। (রোমীয় ৮:৬, কিং জেমস ভারসন) এই কথাগুলোর দ্বারা পৌল এটা নির্দেশ করছিলেন যে, একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি হওয়া নিছক এক ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় বা ধারণা নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটা হল জীবন ও মৃত্যুর এক বিষয়। তা হলে, কোন অর্থে একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি “জীবন ও শান্তি” লাভ করেন? বাইবেল অনুসারে, এই ধরনের একজন ব্যক্তি এখনই—স্বয়ং নিজে ও ঈশ্বরের সঙ্গে—শান্তি উপভোগ করেন এবং ভবিষ্যতে অনন্তজীবনের দ্বারা পুরস্কৃত হবেন। (রোমীয় ৬:২৩; ফিলিপীয় ৪:৭) তাই কোনো সন্দেহ নেই যে, যিশু বলেছিলেন: “সুখী তারা যারা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন”!—মথি ৫:৩, NW.

আসলে আপনি যে এই পত্রিকাটি পড়ছেন, তা ইঙ্গিত করে যে, আধ্যাত্মিকতার প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে—আর এই ধরনের এক আগ্রহ থাকা দেখায় যে, আপনি বিজ্ঞ। তবে, এই বিষয়টা সম্বন্ধে বিভিন্ন মত রয়েছে, তাই আপনি হয়তো ভাবতে পারেন: ‘প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা কী? আর কীভাবে একজন ব্যক্তি তা অর্জন করতে পারেন?’

“খ্রীষ্টের মন”

আধ্যাত্মিকমনা হওয়ার গুরুত্ব এবং উপকারগুলো সম্বন্ধে উল্লেখ করা ছাড়াও, প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা কী, সেই বিষয়ে প্রেরিত পৌলের অনেক কিছু বলার ছিল। প্রাচীন করিন্থ শহরের খ্রিস্টানদের কাছে পৌল একজন প্রাণিক মনুষ্য অর্থাৎ যিনি তার মাংসিক আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করেন আর একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি, যিনি আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন, তাদের মধ্যে যে-পার্থক্য রয়েছে, তা ব্যাখ্যা করেছিলেন। পৌল লিখেছিলেন: “প্রাণিক মনুষ্য ঈশ্বরের আত্মার বিষয়গুলি গ্রহণ করে না, কেননা তাহার কাছে সে সকল মূর্খতা।” অন্যদিকে, পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, ‘আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তির’ বৈশিষ্ট্য হল, তার “খ্রীষ্টের মন” রয়েছে।—১ করিন্থীয় ২:১৪-১৬, NW.

“খ্রীষ্টের মন” থাকার অর্থ মূলত “খ্রীষ্ট যীশুর অনুরূপে পরস্পর একমনা” হওয়া বা একই ভাব থাকা। (রোমীয় ১৫:৫; ফিলিপীয় ২:৫) অন্য কথায়, একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি হলেন তিনি, যিনি যিশুর মতো চিন্তা করেন এবং তাঁর পদচিহ্ন অনুসরণ করেন। (১ পিতর ২:২১; ৪:১) একজন ব্যক্তির মন যত বেশি খ্রিস্টের অনুরূপ হয়, তার আধ্যাত্মিকতা তত দৃঢ় হয় এবং তিনি “জীবন ও শান্তি” লাভ করার দিকে তত বেশি এগিয়ে যান।—রোমীয় ১৩:১৪.

যেভাবে “খ্রীষ্টের মন” জানা যায়

কিন্তু, খ্রিস্টের মন থাকার জন্য একজনকে প্রথমে জানতে হবে যে, সেই মন কী। অতএব, আধ্যাত্মিকতা গড়ে তোলার প্রথম ধাপ হল, যিশুর চিন্তাধারা সম্বন্ধে জানা। কিন্তু, কীভাবে আপনি এমন একজন ব্যক্তির মন সম্বন্ধে জানতে পারেন, যিনি ২,০০০ বছর আগে পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন? উদাহরণস্বরূপ, কীভাবে আপনি আপনার দেশের ঐতিহাসিক চরিত্রদের সম্বন্ধে জেনেছেন? সম্ভবত, তাদের সম্বন্ধে পড়ার দ্বারা। একইভাবে, যিশুর সম্বন্ধে লিখিত ইতিহাস পড়া হল, খ্রিস্টের মন সম্বন্ধে জানার এক গুরুত্বপূর্ণ উপায়।—যোহন ১৭:৩.

যিশুর বিষয়ে চারটে বিস্তারিত ঐতিহাসিক বিবরণ—মথি, মার্ক, লূক এবং যোহনের লিখিত সুসমাচার—রয়েছে। এই বিবরণগুলো মন দিয়ে পড়া আপনাকে যিশুর চিন্তাধারা, তাঁর মনের গভীরতম অনুভূতি এবং তাঁর কাজগুলোর পিছনে যে-প্রেরণা রয়েছে, তা উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে। যিশুর সম্বন্ধে আপনি যা পড়েছেন, তা নিয়ে ধ্যান করার জন্য যখন সময় করে নেন, তখন তিনি কী ধরনের ব্যক্তি ছিলেন, সেই বিষয়ে আপনি মনশ্চক্ষে কল্পনা করতে পারেন। এমনকি যদি আপনি নিজেকে ইতিমধ্যেই খ্রিস্টের একজন অনুসারী হিসেবে মনে করেন, তা হলে এই ধরনের অধ্যয়ন এবং ধ্যান করা আপনাকে ‘আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্ত্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হইতে’ সাহায্য করবে।—২ পিতর ৩:১৮.

এটা স্মরণে রেখে, আসুন আমরা সুসমাচারের বিবরণগুলোর কিছু অংশ পরীক্ষা করার দ্বারা দেখি যে, কী যিশুকে এইরকম একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি করে তুলেছিল। এরপর, নিজেকে জিজ্ঞেস করুন যে, কীভাবে আপনি যিশুর দ্বারা স্থাপিত দৃষ্টান্ত অনুকরণ করতে পারেন।—যোহন ১৩:১৫.

আধ্যাত্মিকতা এবং “আত্মার ফল”

সুসমাচার লেখক লূক উল্লেখ করেছিলেন যে, যিশুর বাপ্তিস্মের সময় তাঁর ওপর ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা বর্ষণ করা হয়েছিল এবং এর ফলে যিশু “পবিত্র আত্মায় পূর্ণ” হয়েছিলেন। (লূক ৩:২১, ২২; ৪:১) তাই, যিশু তাঁর অনুসারীদের মনে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হওয়ার গুরুত্ব গেঁথে দিয়েছিলেন। (লূক ১১:৯-১৩) কেন সেটা এত গুরুত্বপূর্ণ? কারণ ঈশ্বরের আত্মার একজন ব্যক্তির মনকে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রয়েছে, যাতে তা খ্রিস্টের মনের অনুরূপ হতে শুরু করে। (রোমীয় ১২:১, ২) পবিত্র আত্মা, একজন ব্যক্তির মধ্যে এইরকম গুণগুলো উৎপন্ন করতে পারে, যেমন “প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন।” এই গুণগুলো—যেগুলোকে বাইবেল “আত্মার ফল” বলে—একজন প্রকৃত আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) সাধারণভাবে বলতে গেলে, একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি হলেন তিনি, যিনি ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হন।

যিশু তাঁর পরিচর্যার সব ক্ষেত্রেই আত্মার ফল প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি সমাজে নিচু শ্রেণীর সদস্য হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের প্রতি যেভাবে আচরণ করেছিলেন, তাতে প্রেম, মাধুর্য বা দয়া এবং মঙ্গলভাবের মতো গুণগুলো নির্দিষ্টভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। (মথি ৯:৩৬) উদাহরণস্বরূপ, প্রেরিত যোহনের দ্বারা বর্ণিত একটা ঘটনা লক্ষ করুন। আমরা পড়ি: “[যিশু] যাইতে যাইতে একটী লোককে দেখিতে পাইলেন, সে জন্মাবধি অন্ধ।” যিশুর শিষ্যরাও সেই লোকটিকে লক্ষ করেছিল কিন্তু তারা তাকে একজন পাপী হিসেবে দেখেছিল। “কে পাপ করিয়াছিল,” তারা জিজ্ঞেস করেছিল, “এ ব্যক্তি, না ইহার পিতামাতা?” সেই লোকটির প্রতিবেশীরাও তাকে লক্ষ করেছিল কিন্তু তারা তাকে একজন ভিখারি হিসেবে দেখেছিল। “এ কি সেই নয়, যে বসিয়া ভিক্ষা চাহিত?” তারা বলেছিল। কিন্তু, যিশু সেই অন্ধ লোকটিকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে দেখেছিলেন, যার সাহায্যের দরকার ছিল। তিনি সেই অন্ধ লোকটির সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং তাকে সুস্থ করেছিলেন।—যোহন ৯:১-৮.

এই ঘটনাটা খ্রিস্টের মন সম্বন্ধে আপনাকে কী জানায়? প্রথমত, যিশু নিচু শ্রেণীর লোকদের উপেক্ষা করেননি কিন্তু তাদের সঙ্গে কোমল সমবেদনা সহকারে আচরণ করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, তিনি অন্যদের সাহায্য করতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আপনার কি মনে হয় যে, আপনিও যিশুর দ্বারা স্থাপিত এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছেন? আপনি কি লোকেদেরকে যিশুর মতো করে দেখেন, তাদের জীবনকে উন্নত করার এবং ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য জোগান? নাকি আপনি সেই ব্যক্তিদের প্রতি অনুগ্রহ দেখাতে চান, যারা বিশিষ্ট এবং সেই ব্যক্তিদের উপেক্ষা করে থাকেন, যারা বিশিষ্ট নয়? আপনি যদি লোকেদেরকে যিশুর মতো করে দেখে থাকেন, তা হলে যিশুর উদাহরণকে আপনি ভালভাবে অনুসরণ করছেন।—গীতসংহিতা ৭২:১২-১৪.

আধ্যাত্মিকতা এবং প্রার্থনা

সুসমাচারের বিবরণ দেখায় যে, প্রায়ই যিশু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতেন। (মার্ক ১:৩৫; লূক ৫:১৬; ২২:৪১) পৃথিবীতে তাঁর পরিচর্যা চলাকালীন, যিশু প্রার্থনা করার জন্য স্বেচ্ছায় সময় করে নিতেন। শিষ্য মথি লিখেছিলেন: “[যিশু] লোকদিগকে বিদায় করিয়া বিরলে প্রার্থনা করিবার নিমিত্ত পর্ব্বতে উঠিলেন।” (মথি ১৪:২৩) তাঁর স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে নীরবে ভাববিনিময় করার সেই মুহূর্তগুলো থেকে যিশু শক্তি লাভ করেছিলেন। (মথি ২৬:৩৬-৪৪) আজকে, আধ্যাত্মিকমনা লোকেরাও একইভাবে ঈশ্বরের সঙ্গে ভাববিনিময় করার সুযোগগুলো খুঁজে থাকে, তারা জানে যে, এটা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে এবং তাদের চিন্তাধারায় আরও বেশি খ্রিস্টতুল্য হতে তাদেরকে সাহায্য করবে।

প্রায়ই যিশু প্রার্থনায় অনেকটা সময় ব্যয় করতেন। (যোহন ১৭:১-২৬) উদাহরণস্বরূপ, ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁর প্রেরিত হিসেবে মনোনীত করার আগে যিশু “প্রার্থনা করণার্থে বাহির হইয়া পর্ব্বতে গেলেন, আর ঈশ্বরের নিকটে প্রার্থনা করিতে করিতে সমস্ত রাত্রি যাপন করিলেন।” (লূক ৬:১২) যদিও প্রার্থনায় সমস্ত রাত ব্যয় করার প্রয়োজন নেই, তবুও যারা আধ্যাত্মিকমনা তারা যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করে। তাদের জীবনে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার জন্য যথেষ্ট সময় নিয়ে থাকে, সেই মনোনয়নগুলো করার জন্য পবিত্র আত্মার নির্দেশনা খোঁজার চেষ্টা করে, যা তাদের আধ্যাত্মিকতাকে আরও দৃঢ় করবে।

প্রার্থনা করার সময় যিশুও আন্তরিক অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন, যা আমাদের প্রার্থনার সময় অনুকরণ করা উচিত। যিশু তাঁর মৃত্যুর আগের রাতে যেভাবে প্রার্থনা করেছিলেন, সেই সম্বন্ধে লূক যা লিপিবদ্ধ করেছেন, তা লক্ষ করুন। “তিনি মর্ম্মভেদী দুঃখে মগ্ন হইয়া আরও একাগ্রভাবে প্রার্থনা করিলেন; আর তাঁহার ঘর্ম্ম যেন রক্তের ঘনীভূত বড় বড় ফোঁটা হইয়া ভূমিতে পড়িতে লাগিল।” (লূক ২২:৪৪) আগেও যিশু একাগ্রভাবে প্রার্থনা করেছিলেন কিন্তু এই উপলক্ষে পার্থিব জীবনে চরম পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে তিনি “আরও একাগ্রভাবে” প্রার্থনা করেছিলেন আর তাঁর প্রার্থনার উত্তর দেওয়া হয়েছিল। (ইব্রীয় ৫:৭) আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তিরা যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করে। বিশেষভাবে চরম পরীক্ষাগুলোর মুখোমুখি হয়ে তারা পবিত্র আত্মা, নির্দেশনা এবং সমর্থনের জন্য ঈশ্বরের কাছে “আরও একাগ্রভাবে” প্রার্থনা করে থাকে।

যেহেতু যিশু এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন, যিনি নিয়মিতভাবে প্রার্থনা করতেন, তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, তাঁর শিষ্যরাও এই বিষয়ে তাঁকে অনুকরণ করতে চেয়েছিল। সেইজন্য তারা তাঁকে বলেছিল: “প্রভু, আমাদিগকে প্রার্থনা করিতে শিক্ষা দিউন।” (লূক ১১:১) একইভাবে, আজকে যারা আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে মূল্যবান বলে গণ্য করে এবং ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হতে চায়, তারা যেভাবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, তাতে যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করে। প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা এবং প্রার্থনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

আধ্যাত্মিকতা এবং সুসমাচার প্রচার

মার্কের সুসমাচারে, আমরা একটা বিবরণ পাই যেখানে যিশু অনেক রাত পর্যন্ত বহু অসুস্থ লোককে সুস্থ করেছিলেন। পরের দিন ভোরবেলায় তিনি যখন একা প্রার্থনা করছিলেন, তাঁর প্রেরিতরা এসে তাঁকে বলে যে, অনেক লোক তাঁকে খুঁজছে, সম্ভবত তারা সুস্থ হতে চেয়েছিল। কিন্তু, যিশু তাদের বলেছিলেন: “চল, আমরা অন্য অন্য স্থানে, নিকটবর্ত্তী সকল গ্রামে যাই, আমি সে সকল স্থানেও প্রচার করিব।” তারপর যিশু কেন তা করতে হবে, এই কথা বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন: ‘আমি সেই জন্যই বাহির হইয়াছি।’ (মার্ক ১:৩২-৩৮; লূক ৪:৪৩) যদিও লোকেদের সুস্থ করা যিশুর কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল কিন্তু ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা ছিল যিশুর প্রধান দায়িত্ব।—মার্ক ১:১৪, ১৫.

আজকে, ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে অন্যদের কাছে কথা বলা, এখনও সেই ব্যক্তিদের এক শনাক্তকারী চিহ্ন, যাদের খ্রিস্টের মন রয়েছে। যারা তাঁর অনুসারী হতে চায়, তাদের সকলকে যিশু আদেশ দিয়েছিলেন: “অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর . . . আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।” (মথি ২৮:১৯, ২০) এ ছাড়া, যিশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) যেহেতু, ঈশ্বরের বাক্য ইঙ্গিত করে যে, প্রচার কাজ পবিত্র আত্মার শক্তিতেই সম্পাদিত হয়ে থাকে, তাই সেই কাজে এক অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ করা হল প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার এক চিহ্ন।—প্রেরিত ১:৮.

বিশ্বব্যাপী লোকেদের কাছে রাজ্যর বার্তা প্রচার করার জন্য লক্ষ লক্ষ লোকের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। (যোহন ১৭:২০, ২১) যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাদের শুধুমাত্র আধ্যাত্মিকমনা হলেই চলবে না কিন্তু বিশ্বব্যাপী সুসংগঠিতও হতে হবে। আপনি কি সেই লোকেদের শনাক্ত করতে পারেন, যারা খ্রিস্টের পদচিহ্ন অনুসরণ করছে এবং সারা বিশ্বে রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করছে?

আপনি কীভাবে চাহিদাগুলো পূরণ করছেন?

অবশ্য, অন্য আরও বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যেগুলো একজন ব্যক্তিকে প্রকৃত আধ্যাত্মিকমনা হিসেবে শনাক্ত করে কিন্তু, ইতিমধ্যেই আলোচিত চাহিদাগুলোকে আপনি কীভাবে পূরণ করছেন? তা জানার জন্য নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘আমি কি নিয়মিত ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ি এবং যা আমি পড়ি, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করি? আমি কি আমার জীবনে আত্মার ফল প্রদর্শন করি? আমি কি নিয়মিতভাবে প্রার্থনা করি? যারা বিশ্বব্যাপী ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে চলেছে, আমি কি তাদের সঙ্গে মেলামেশা করতে চাই?’

এক সৎ আত্মপরীক্ষা হয়তো আপনাকে আপনার আধ্যাত্মিকতার গভীরতা নির্ণয় করতে সাহায্য করবে। আমরা আপনাকে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জোরালো পরামর্শ দিই, যাতে আপনি “জীবন ও শান্তি” লাভ করতে পারেন।—রোমীয় ৮:৬; মথি ৭:১৩, ১৪; ২ পিতর ১:৫-১১.

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

আধ্যাত্মিকতার চিহ্নগুলো

◆ ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি ভালবাসা থাকা

◆ আত্মার ফল প্রদর্শন করা

◆ ঈশ্বরের কাছে নিয়মিতভাবে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে প্রার্থনা করা

◆ অন্যদের কাছে রাজ্যের সুসমাচার জানানো

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

বাইবেল আপনাকে “খ্রীষ্টের মন” জানতে সাহায্য করে