সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

‘সদাপ্রভু, আমার পরীক্ষা কর’

‘সদাপ্রভু, আমার পরীক্ষা কর’

‘সদাপ্রভু, আমার পরীক্ষা কর’

 “সদাপ্রভুই চিত্তের পরীক্ষা করেন।” (হিতোপদেশ ১৭:৩) এটা আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত আশ্বাসদায়ক হওয়া উচিত। কেন? কারণ কেবলমাত্র বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করে থাকে এমন মানুষের বিপরীতে, আমাদের স্বর্গীয় পিতা “অন্তঃকরণের প্রতি দৃষ্টি করেন।”—১ শমূয়েল ১৬:৭.

প্রকৃতপক্ষে, এমনকি আমরা নিজেরাও আমাদের গভীরতম মনোভাব ও অন্তরের প্রবণতাগুলোর সর্বোত্তম মূল্যায়নকারী নই। কেন? কারণ আমাদের “অন্তঃকরণ সর্ব্বাপেক্ষা বঞ্চক, তাহার রোগ অপ্রতিকার্য্য, কে তাহা জানিতে পারে?” কিন্তু, ঈশ্বর তা জানেন কারণ তিনি ঘোষণা করেন: “আমি সদাপ্রভু অন্তঃকরণের অনুসন্ধান করি, আমি মর্ম্মের [“বৃক্কের,” NW] পরীক্ষা করি।” (যিরমিয় ১৭:৯, ১০) হ্যাঁ, যিহোবা আমাদের ‘অন্তঃকরণ’—যার অন্তর্ভুক্ত আমাদের ভিতরের মনোভাবগুলো—ও সেইসঙ্গে ‘বৃক্ক’ অর্থাৎ আমাদের গভীরতম চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিগুলো বোঝেন।

কেন পরীক্ষিত হয়?

তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, প্রাচীনকালের রাজা দায়ূদ ঈশ্বরকে বলেছিলেন: “সদাপ্রভু, আমার পরীক্ষা করিয়া প্রমাণ লও, আমার মর্ম্ম [“বৃক্কগুলো,” NW] ও চিত্ত নির্ম্মল কর।” (গীতসংহিতা ২৬:২) দায়ূদ কি তার কাজে ও কথাবার্তায় সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধ ছিলেন, যার ফলে যিহোবা যদি তাকে পরীক্ষা করেন, তা হলে তার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই? অবশ্যই না! আমাদের সকলের মতো দায়ূদও অসিদ্ধ ছিলেন এবং ঈশ্বরের মানগুলো নিখুঁতভাবে মেনে চলতে অসমর্থ ছিলেন। দায়ূদ তার দুর্বলতার কারণে কয়েকটা গুরুতর ভুল করেছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি ‘চিত্তের সিদ্ধতায় [“নীতিনিষ্ঠায়,” NW] চলিতেন।’ (১ রাজাবলি ৯:৪) কীভাবে? অনুযোগ মেনে নিয়ে এবং তার পথ সংশোধন করে। এভাবে তিনি দেখিয়েছিলেন যে, তিনি যিহোবাকে অকৃত্রিমভাবে ভালবাসেন। ঈশ্বরের প্রতি তার একাগ্র ভক্তি ছিল।

আজকে আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? যিহোবা জানেন যে, আমরা অসিদ্ধ আর তাই আমরা হয়তো কথায় ও কাজে পাপ করে ফেলতে পারি। কিন্তু, আমাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আগে থেকে জানার বিষয়ে তাঁর ক্ষমতাকে ব্যবহার করে তিনি আমাদের জীবনধারা নির্ধারণ করেন না। তিনি আমাদেরকে নৈতিক দিক দিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি আমাদের স্বাধীন ইচ্ছাকে সম্মান করেন আর এটা হল এমন এক উপহার, যা তিনি উদারভাবে আমাদের দিয়েছেন।

তা সত্ত্বেও, যিহোবা মাঝে মাঝে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মনোভাবসহ আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা করেন। তিনি হয়তো আমাদের হৃদয়ের অবস্থা প্রকাশ করে দেয় এমন সুযোগগুলো করে দেওয়ার মাধ্যমে তা করতে পারেন। এ ছাড়া, তিনি হয়তো আমাদের অন্তরের প্রবণতাগুলো প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘটতে দিতে পারেন। এটা, আমাদের যিহোবাকে দেখানোর সুযোগ দেয় যে, আমরা কতটা একান্তভাবে নিয়োজিত ও অনুগত। যিহোবার দ্বারা ঘটতে দেওয়া এই ধরনের পরীক্ষা হয়তো আমাদের বিশ্বাসের গুণগত মানের প্রমাণ দিতে পারে যে, আমরা “সিদ্ধ ও সম্পূর্ণ” কি না আর আমাদের ‘কোনো বিষয়ে অভাব নাই।’—যাকোব ১:২-৪.

প্রাচীনকালে বিশ্বাসের এক পরীক্ষা

বিশ্বাস ও মনোভাবের পরীক্ষা যিহোবার দাসদের জন্য নতুন কিছু নয়। কুলপতি অব্রাহামের কথা বিবেচনা করুন। “ঈশ্বর অব্রাহামের পরীক্ষা করিলেন।” (আদিপুস্তক ২২:১) যখন সেই কথাগুলো বলা হয়েছিল, তখন ইতিমধ্যেই ঈশ্বরের প্রতি অব্রাহামের বিশ্বাস পরীক্ষিত হয়েছিল। এর কয়েক দশক আগে, যিহোবা অব্রাহামকে তার পরিবার নিয়ে সমৃদ্ধশালী ঊর নগর থেকে এক অজানা দেশে যেতে বলেছিলেন। (আদিপুস্তক ১১:৩১; প্রেরিত ৭:২-৪) অব্রাহাম, যিনি হয়তো ঊরে একটা বাড়ির মালিক ছিলেন, কনানে কোনো স্থায়ী বাসস্থান কেনেননি, যেখানে তিনি দশকের পর দশক ধরে বাস করেছিলেন। (ইব্রীয় ১১:৯) যাযাবর হিসেবে অব্রাহামের অবস্থান তাকে এবং তার পরিবারকে দুর্ভিক্ষ, সশস্ত্র দল ও সেই এলাকার পৌত্তলিক শাসকদের কাছ থেকে আসা কিছু ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল। এই সমস্তকিছুর মাধ্যমে অব্রাহামের বিশ্বাস সর্বোত্তম মানের বলে প্রমাণিত হয়েছিল।

এরপর যিহোবা অব্রাহামের ওপর আরও বড় এক পরীক্ষা ঘটতে দিয়েছিলেন। ‘তুমি আপন পুত্ত্রকে, তোমার অদ্বিতীয় পুত্ত্রকে, যাহাকে তুমি ভাল বাস, সেই ইস্‌হাককে লইয়া যাও, এবং তাহাকে হোমার্থে বলিদান কর।’ (আদিপুস্তক ২২:২) অব্রাহামের কাছে ইস্‌হাক কোনো সাধারণ সন্তান ছিলেন না। তিনি অব্রাহাম ও তার স্ত্রী সারার একমাত্র সন্তান ছিলেন। ইস্‌হাক ছিলেন প্রতিজ্ঞাত সন্তান আর অব্রাহামের একমাত্র আশা ছিল যে, তার “সন্তান” ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুসারে কনান দেশ অধিকার করবে এবং অনেকের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হবে। বস্তুতপক্ষে, ইস্‌হাকই ছিলেন সেই সন্তান, যাকে লাভ করার প্রত্যাশা অব্রাহাম করেছিলেন এবং যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে একটা অলৌকিক ঘটনা ঘটার পরই জন্মগ্রহণ করেছিলেন!—আদিপুস্তক ১৫:২-৪, ৭.

আপনারা কল্পনা করতে পারেন যে, অব্রাহামের জন্য এই আদেশের অর্থ বোঝা কত কষ্টকর হয়েছিল। যিহোবা কি একটা মানব বলি চেয়েছিলেন? কেনই বা যিহোবা অব্রাহামের শেষ বয়সে তাকে একটা সন্তান লাভ করার মধুর আনন্দ উপভোগ করতে দিয়ে আবার সেই একই সন্তানকে বলি দিতে বলেছিলেন? *

এই প্রশ্নগুলোর স্পষ্ট উত্তর না জানা সত্ত্বেও অব্রাহাম সঙ্গে সঙ্গে বাধ্য হয়েছিলেন। নির্ধারিত পর্বতে যেতে তার তিন দিন সময় লেগেছিল। সেখানে তিনি একটা যজ্ঞবেদি তৈরি করেছিলেন এবং এর ওপর কাঠ রেখেছিলেন। তখনই পরীক্ষার চরম মুহূর্ত এসেছিল। অব্রাহাম খড়্গ হাতে নিয়েছিলেন কিন্তু যখনই তিনি তার সন্তানকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তখনই যিহোবা একজন স্বর্গদূতের মাধ্যমে তাকে থামিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন: “এখন আমি বুঝিলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে আপনার অদ্বিতীয় পুত্ত্র দিতেও অসম্মত নও।” (আদিপুস্তক ২২:৩, ১১, ১২) সেই কথাগুলো শুনে অব্রাহাম কত আনন্দিত হয়েছিলেন, তা একটু চিন্তা করুন! তার বিশ্বাস সম্বন্ধে যিহোবার পূর্বমূল্যায়ন সঠিক ছিল। (আদিপুস্তক ১৫:৫, ৬) এরপর, অব্রাহাম ইস্‌হাকের পরিবর্তে একটা মেষ বলি দিয়েছিলেন। তারপর যিহোবা অব্রাহামের বংশ সম্বন্ধে প্রতিজ্ঞাত চুক্তির বিষয়টা নিশ্চিত করেছিলেন। উপযুক্তভাবেই, অব্রাহাম যিহোবার বন্ধু হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।—আদিপুস্তক ২২:১৩-১৮; যাকোব ২:২১-২৩.

আমাদের বিশ্বাসও পরীক্ষিত হয়

আমরা সকলেই উপলব্ধি করি যে, আজকে ঈশ্বরের দাসেরা পরীক্ষাগুলো এড়াতে পারে না। কিন্তু, আমাদের ক্ষেত্রে যিহোবা আমাদের যা করতে বলেন, সেগুলোর চেয়ে বরং তিনি যা ঘটতে দেন, সেগুলোর কারণে বেশির ভাগ পরীক্ষা আসে।

প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “যত লোক ভক্তিভাবে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন ধারণ করিতে ইচ্ছা করে, সেই সকলের প্রতি তাড়না ঘটিবে।” (২ তীমথিয় ৩:১২) এই ধরনের তাড়না হয়তো সহছাত্র-ছাত্রী, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী অথবা ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে এমন সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসতে পারে। এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে মৌখিক দুর্ব্যবহার ও শারীরিক নির্যাতন এবং সেইসঙ্গে একজন খ্রিস্টান জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে যে-বাধাগুলোর সম্মুখীন হন, সেগুলো। এ ছাড়া, সত্য খ্রিস্টানরা মানবজাতির সাধারণ সমস্যাগুলোও ভোগ করে থাকে, যেমন অসুস্থতা, হতাশা এবং অবিচার। এইসমস্ত দুর্দশাই একজনের বিশ্বাসকে পরীক্ষা করে।

প্রেরিত পিতর একজনের বিশ্বাস পরীক্ষিত হওয়ার ইতিবাচক দিকগুলোর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়েছিলেন: “তোমরা . . . নানাবিধ পরীক্ষায় দুঃখার্ত্ত হইতেছ, যেন, যে সুবর্ণ নশ্বর হইলেও অগ্নি দ্বারা পরীক্ষিত হয়, তাহা অপেক্ষাও মহামূল্য তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষাসিদ্ধতা যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশকালে প্রশংসা, গৌরব ও সমাদরজনক হইয়া প্রত্যক্ষ হয়।” (১ পিতর ১:৬, ৭) হ্যাঁ, পরীক্ষার প্রভাবগুলোকে অগ্নি দ্বারা সোনার পরিশোধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়। পরিশোধন প্রক্রিয়া, কোনটা খাঁটি তা প্রকাশ করে এবং খাদ দূর করে। যখন আমরা পরীক্ষিত হই, তখন আমাদের বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও একইরকম বিষয় ঘটে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, কোনো দুর্ঘটনা অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়তো কষ্ট নিয়ে আসতে পারে। তা সত্ত্বেও, যাদের প্রকৃত বিশ্বাস রয়েছে, তারা অযথা উদ্বিগ্নতার কারণে ভেঙে পড়ে না। তারা যিহোবার এই আশ্বাসের মধ্যে সান্ত্বনা খুঁজে পায়: “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।” (ইব্রীয় ১৩:৫) তারা আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলে, এই আস্থা রাখে যে, তাদের আসলেই যা প্রয়োজন সেগুলো লাভ করার জন্য যিহোবা ঈশ্বর তাদের প্রচেষ্টাগুলোতে আশীর্বাদ করবেন। তাদের বিশ্বাস তাদেরকে কঠিন সময়ের মধ্যেও টিকিয়ে রাখে এবং অযথা উদ্বেগের দ্বারা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলা থেকে নিবৃত্ত করে।

পরীক্ষাগুলো যে আমাদের বিশ্বাসের দুর্বলতা প্রকাশ করে দিতে পারে, এই বিষয়টা উপকারীও হতে পারে, যদি আমরা এভাবে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখতে পাই। একজন ব্যক্তির নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘কীভাবে আমি আমার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারি? আমার কি ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে প্রার্থনাপূর্বক বিবেচনা ও ধ্যান করার জন্য আরও বেশি সময় ব্যয় করা প্রয়োজন? আমি কি সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থাগুলো থেকে পূর্ণ উপকার লাভ করে থাকি? আমি কি সেই সময় নিজের ওপর নির্ভর করি, যখন কিনা আমার চিন্তার বিষয়গুলো প্রার্থনায় যিহোবা ঈশ্বরকে জানানো উচিত?’ কিন্তু, এই ধরনের আত্মপরীক্ষা কেবলমাত্র শুরু।

একজনের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার জন্য হয়তো তার আধ্যাত্মিক ক্ষুধাকে বাড়ানোর, “পারমার্থিক অমিশ্রিত দুগ্ধের” জন্য “লালসা” দেখানোর প্রয়োজন হতে পারে। (১ পিতর ২:২; ইব্রীয় ৫:১২-১৪) আমাদের সেই ব্যক্তির মতো হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত, যার সম্বন্ধে গীতরচক বর্ণনা করেছিলেন: “[সে] সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় আমোদ করে, তাঁহার ব্যবস্থা দিবারাত্র ধ্যান করে।”—গীতসংহিতা ১:২.

এর জন্য শুধুমাত্র বাইবেল পড়ার চেয়ে আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কী বলে, তা নিয়ে চিন্তা করা এবং প্রদত্ত পরামর্শ কাজে লাগানো গুরুত্বপূর্ণ। (যাকোব ১:২২-২৫) ফলস্বরূপ, ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে, আমাদের প্রার্থনা আরও সুনির্দিষ্ট ও ব্যক্তিগত হবে এবং তাঁর প্রতি আমাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হবে।

পরীক্ষিত বিশ্বাসের মূল্য

ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করার জন্য বিশ্বাস যে এক অপরিহার্য বিষয়, তা উপলব্ধি করা বিশ্বাসকে দৃঢ় করার এক জোরালো উদ্দীপক। বাইবেল আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়: “বিনা বিশ্বাসে প্রীতির পাত্র হওয়া কাহারও সাধ্য নয়; কারণ যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহার ইহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।” (ইব্রীয় ১১:৬) তাই, আমাদের সেই ব্যক্তির মতো বোধ করা উচিত, যিনি যিশুর কাছে মিনতি করেছিলেন: “আমার অবিশ্বাসের প্রতীকার করুন।”—মার্ক ৯:২৪.

এ ছাড়া, আমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা অন্যদেরও সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, একজন খ্রিস্টান যখন মৃত্যুতে কোনো প্রিয়জনকে হারান, তখন পুনরুত্থান সম্বন্ধে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞায় তার দৃঢ় বিশ্বাস তাকে টিকিয়ে রাখে। যদিও তিনি শোক করেন কিন্তু তিনি ‘যাহাদের প্রত্যাশা নাই, সেই অন্য সকল লোকের মত দুঃখার্ত্ত হন না।’ (১ থিষলনীকীয় ৪:১৩, ১৪) অন্যরা যারা একজন খ্রিস্টানের বিশ্বাসের টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা লক্ষ করে, তারা হয়তো উপলব্ধি করতে পারে যে, তিনি এমন কিছুর অধিকারী, যা সত্যিই মূল্যবান। এটা তাদের মধ্যেও একইরকম বিশ্বাস রাখার আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলতে পারে এবং তাদেরকে ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে শেখার ও যিশু খ্রিস্টের শিষ্য হয়ে ওঠার জন্য পরিচালিত করতে পারে।

যিহোবা জানেন যে, পরীক্ষিত বিশ্বাসের অনেক মূল্য রয়েছে। তা ছাড়া, বিশ্বাসের পরীক্ষা আমাদের এটা দেখতে সমর্থ করে যে, আমাদের বিশ্বাসের প্রকৃতই টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা রয়েছে কি না। আমরা আমাদের বিশ্বাসের দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য লাভ করি আর তা আমাদেরকে বিষয়গুলো সংশোধন করতে সমর্থ করে। সবশেষে, আমরা যদি সফলভাবে পরীক্ষাগুলো অতিক্রম করি, তা হলে সেটা হয়তো অন্যদের যিশুর শিষ্য হতে সাহায্য করতে পারে। তাই, আমরা যেন সেই দৃঢ় বিশ্বাস বজায় রাখার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি, যে-বিশ্বাস একটার পর একটা পরীক্ষায় পড়ার পরও “যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশকালে প্রশংসা, গৌরব ও সমাদরজনক হইয়া প্রত্যক্ষ হয়।”—১ পিতর ১:৭.

[পাদটীকা]

^ ইস্‌হাকের “বলিদানের” রূপক তাৎপর্য সম্বন্ধে ১৯৮৯ সালের ১লা জুলাই প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ২২ পৃষ্ঠা দেখুন।

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

অব্রাহামের বিশ্বাসের কাজগুলো তাকে যিহোবার বন্ধু করে তুলেছিল

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

পরীক্ষাগুলো প্রমাণ করতে পারে যে, আমাদের বিশ্বাসের প্রকৃতই টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা রয়েছে

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

From the Illustrated Edition of the Holy Scriptures, by Cassell, Petter, & Galpin