সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত”

“আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত”

“আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত”

 “ব হুপুস্তক রচনার শেষ হয় না।” (উপদেশক ১২:১২) এই কথাগুলো যখন লেখা হয়েছিল সেই সময়ের মতো, বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে যে-ছাপানো তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলো আজকের দিনেও এই কথাগুলোকে সত্য বলে প্রমাণ করে। তা হলে, কীভাবে একজন বিচক্ষণ পাঠক নির্ণয় করতে পারেন যে, কোন বিষয়টা তার মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য?

কোনো একটি বই তারা পড়বে কি পড়বে না, সেই বিষয়ে ভাবার সময়, অনেক পাঠক সেটির গ্রন্থকার সম্বন্ধে কিছু জানতে চায়। প্রকাশকরা হয়তো একটা ছোট্ট অনুচ্ছেদ যোগ করতে পারে, যেখানে লেখকের জন্মস্থান, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং তার লেখা বইগুলোর এক তালিকা থাকে। একজন লেখকের পরিচয় জানা গুরুত্বপূর্ণ, যা এই বিষয়টা থেকে বোঝা যায় যে, পূর্বের শতাব্দীগুলোতে লেখিকারা প্রায়ই একজন পুরুষের ছদ্মনাম ব্যবহার করে লিখত, যাতে পাঠকরা সেই বইটির লেখিকা একজন মহিলা বলে শুধুমাত্র এই কারণে বইটিকে নিকৃষ্ট বলে বিচার না করে।

দুঃখের বিষয় যে, আগের প্রবন্ধে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু ব্যক্তি ইব্রীয় শাস্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করে কারণ তারা মনে করে যে, ইব্রীয় শাস্ত্রে বর্ণিত ঈশ্বর হলেন এমন একজন নিষ্ঠুর দেবতা, যিনি নির্দয়ভাবে তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করেছেন। * আসুন আমরা বিবেচনা করি যে, ইব্রীয় শাস্ত্র ও খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র বাইবেলের গ্রন্থকার সম্বন্ধে কী জানায়।

গ্রন্থকার সম্বন্ধে

ইব্রীয় শাস্ত্র অনুসারে, ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে বলেছিলেন: “আমি সদাপ্রভু, আমার পরিবর্ত্তন নাই।” (মালাখি ৩:৬) প্রায় ৫০০ বছর পরে, বাইবেল লেখক যাকোব ঈশ্বর সম্পর্কে লেখেন: ‘তাঁহাতে অবস্থান্তর কিম্বা পরিবর্ত্তনজনিত ছায়া হইতে পারে না।’ (যাকোব ১:১৭) তা হলে, কেন কেউ কেউ মনে করে যে, ইব্রীয় শাস্ত্রে প্রকাশিত ঈশ্বর, খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্রে বলা ঈশ্বরের চেয়ে আলাদা?

এই প্রশ্নের উত্তরটা হল যে, ঈশ্বরের ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক বাইবেলের বিভিন্ন অংশে প্রকাশ করা হয়েছে। শুধুমাত্র আদিপুস্তকেই তাঁর সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, তিনি “মনঃপীড়া পাইলেন,” “স্বর্গমর্ত্ত্যের অধিকারী” এবং “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা।” (আদিপুস্তক ৬:৬; ১৪:২২; ১৮:২৫) এই বিভিন্ন বর্ণনা কি একই ঈশ্বরকে নির্দেশ করে? অবশ্যই।

উদাহরণস্বরূপ: স্থানীয় একজন বিচারককে হয়তো সেই ব্যক্তিরা সবচেয়ে ভাল করে চিনবে, যারা আদালতে একজন কঠোর আইন বলবৎকারী হিসেবে তার মুখোমুখি হয়েছে। অন্যদিকে, তার ছেলেমেয়েরা হয়তো তাকে একজন প্রেমময়, উদার বাবা হিসেবে দেখে থাকে। আবার তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব হয়তো তাকে একজন রসিক, বন্ধুত্বপরায়ণ ব্যক্তি হিসেবে জানে। বিচারক, বাবা এবং বন্ধু সকলে সেই একই ব্যক্তি। এগুলো হচ্ছে তার ব্যক্তিত্বের কেবলমাত্র ভিন্ন ভিন্ন দিক, যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

একইভাবে ইব্রীয় শাস্ত্র, যিহোবাকে “স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্‌” বলে বর্ণনা করে। তা সত্ত্বেও, আমরা এও জানতে পারি যে, “তিনি অবশ্য . . . দণ্ড দেন।” (যাত্রাপুস্তক ৩৪:৬, ৭) এই দুটো দিক ঈশ্বরের নামের অর্থকে প্রতিফলিত করে। “যিহোবা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল, “তিনি অস্তিত্বে আনেন।” অর্থাৎ তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলোকে পরিপূর্ণ করার জন্য ঈশ্বরকে যা-ই হতে হোক না কেন, তিনি তা-ই হন। (যাত্রাপুস্তক ৩:১৩-১৫) কিন্তু তিনি সেই একই ঈশ্বর হিসেবে বিদ্যমান থাকেন। যিশু বলেছিলেন: “আমাদের ঈশ্বর যিহোবা হলেন একই যিহোবা।”—মার্ক ১২:২৯, NW.

ইব্রীয় শাস্ত্রের জায়গায় কি অন্যকিছু এসেছে?

বর্তমানে, পাঠ্যপুস্তকগুলোর জায়গায় অন্যকিছু আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়, যখন নতুন নতুন গবেষণার তথ্য প্রাপ্তিসাধ্য হয় অথবা জনপ্রিয় মতামতগুলো পালটে যায়। খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র কি সেভাবে ইব্রীয় শাস্ত্রের জায়গায় এসেছে? না।

যিশু যদি চাইতেন যে, তাঁর পরিচর্যা সম্বন্ধীয় বিবরণ এবং তাঁর শিষ্যদের লেখাগুলো ইব্রীয় শাস্ত্রের জায়গায় আসবে, তা হলে তিনি নিশ্চয় সেই বিষয়ে ইঙ্গিত দিতেন। কিন্তু, যিশুর স্বর্গারোহণের ঠিক আগে, তাঁর সম্বন্ধে লূক বর্ণনা করেন: “তিনি মোশি হইতে ও [ইব্রীয় শাস্ত্রের] সমুদয় ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা [তাঁহার দুইজন শিষ্যকে] বুঝাইয়া দিলেন।” এরপর, যিশু তাঁর বিশ্বস্ত প্রেরিত ও অন্যদের দেখা দিয়েছিলেন। সেই বিবরণ বলে চলে: “পরে তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের সঙ্গে থাকিতে থাকিতে আমি তোমাদিগকে যাহা বলিয়াছিলাম, আমার সেই বাক্য এই, মোশির ব্যবস্থায় ও ভাববাদিগণের গ্রন্থ এবং গীতসংহিতায় আমার বিষয়ে যাহা যাহা লিখিত আছে, সে সকল অবশ্য পূর্ণ হইবে।” (লূক ২৪:২৭, ৪৪) ইব্রীয় শাস্ত্র যদি সেকেলেই হয়ে যেত, তা হলে কেন যিশু তাঁর পার্থিব পরিচর্যার শেষে ইব্রীয় শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি করছিলেন?

খ্রিস্টীয় মণ্ডলী প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর, যে-ভবিষ্যদ্বাণীগুলো তখনও পরিপূর্ণ হয়নি, মোশির ব্যবস্থার নীতিগুলো, যেগুলো মূল্যবান শিক্ষা প্রদান করে এবং ঈশ্বরের প্রাচীন দাসদের বিবরণ, যাদের উত্তম উদাহরণগুলো খ্রিস্টানদের বিশ্বস্ত থাকতে উৎসাহ দেয়, সেগুলোর প্রতি জোর দেওয়ার জন্য যিশুর অনুসারীরা তখনও ইব্রীয় শাস্ত্র ব্যবহার করে চলেছিল। (প্রেরিত ২:১৬-২১; ১ করিন্থীয় ৯:৯, ১০; ইব্রীয় ১১:১–১২:১) “প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি” প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “ঈশ্বর-নিশ্বসিত . . . আবার . . . উপকারী।” * (২ তীমথিয় ৩:১৬) কীভাবে ইব্রীয় শাস্ত্র আজকের দিনেও উপকারী বলে প্রমাণিত হয়?

রোজকার জীবনযাপনের বিষয়ে পরামর্শ

বর্তমান সময়ের বর্ণভেদের সমস্যাটা বিবেচনা করুন। পূর্ব ইউরোপের একটা শহরে, ২১ বছর বয়সি একজন ইথিওপীয় ব্যক্তি বলেন: “আমরা যেখানেই যেতে চাই না কেন, আমাদেরকে একটা দল হিসেবে যেতে হয়। সম্ভবত একটা দলের মধ্যে থাকলে তারা আমাদের আক্রমণ করবে না।” তিনি বলে চলেন: “আমরা সন্ধ্যে ৬টার পর, বাইরে বের হতে পারি না, বিশেষ করে সাবওয়েতে। লোকেরা যখন আমাদের দিকে তাকায়, তখন তারা শুধু আমাদের চামড়ার রং দেখে।” ইব্রীয় শাস্ত্র কি এই জটিল সমস্যাটা নিয়ে কিছু বলে?

প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দের বলা হয়েছিল: “কোন বিদেশী লোক যদি তোমাদের দেশে তোমাদের সহিত বাস করে, তোমরা তাহার প্রতি উপদ্রব করিও না। তোমাদের নিকটে তোমাদের স্বদেশীয় লোক যেমন, তোমাদের সহপ্রবাসী বিদেশী লোকও তেমনি হইবে; তুমি তাহাকে আপনার মত প্রেম করিও; কেননা মিসর দেশে তোমরাও বিদেশী ছিলে।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:৩৩, ৩৪) হ্যাঁ, প্রাচীন ইস্রায়েলে সেই আইন অনুসারে অভিবাসীদের অর্থাৎ ‘বিদেশী লোকের’ প্রতি বিবেচনা দেখাতে হতো আর এটা ইব্রীয় শাস্ত্রে সংরক্ষিত করা হয়েছে। আপনি কি একমত হবেন না যে, সেই আইনের অন্তর্ভুক্ত নীতিগুলো আজকের বর্ণভেদ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করার ভিত্তি হতে পারে?

যদিও সেই নীতিগুলো অর্থনৈতিক বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দেয় না কিন্তু ইব্রীয় শাস্ত্রে টাকাপয়সা খরচ করার বিজ্ঞ উপায় সম্বন্ধে ব্যবহারিক নির্দেশনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হিতোপদেশ ২২:৭ পদে আমরা পড়ি: “ঋণী মহাজনের দাস হয়।” আজকে অনেক অর্থ উপদেষ্টা এই ব্যাপারে একমত যে, মূর্খের মতো ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

অধিকন্তু, পরিণতির কথা না ভেবে ধনসম্পত্তির পিছনে ছোটার—আজকের বস্তুবাদিতাপূর্ণ জগতে খুবই সাধারণ বিষয়—সম্বন্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন, রাজা শলোমন যথার্থভাবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “যে ব্যক্তি রৌপ্য ভালবাসে, সে রৌপ্যে তৃপ্ত হয় না; আর যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না; ইহাও অসার।” (উপদেশক ৫:১০) কী এক বিজ্ঞ সতর্কবাণী!

ভবিষ্যতের জন্য আশা

সমগ্র বাইবেলের মূল বিষয়বস্তু একটাই: যিশু খ্রিস্টের অধীনে রাজ্যই হল সেই মাধ্যম, যেটার দ্বারা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের ন্যায্যতা প্রতিপাদন ও তাঁর নামের পবিত্রীকরণ সম্পন্ন হবে।—দানিয়েল ২:৪৪; প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫.

ইব্রীয় শাস্ত্রের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে জীবনের বিস্তারিত বিষয় সম্বন্ধে শিখি, যা আমাদেরকে সান্ত্বনা জোগায় এবং সান্ত্বনার উৎস, যিহোবা ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী করে। উদাহরণস্বরূপ, যিশাইয় ভাববাদী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, সেখানে পশুপাখি ও মানুষের মধ্যে শান্তি থাকবে: “কেন্দুয়াব্যাঘ্র মেষশাবকের সহিত একত্র বাস করিবে; চিতাব্যাঘ্র ছাগবৎসের সহিত শয়ন করিবে; গোবৎস, যুবসিংহ ও হৃষ্টপুষ্ট পশু একত্র থাকিবে; এবং ক্ষুদ্র বালক তাহাদিগকে চালাইবে।” (যিশাইয় ১১:৬-৮) কতই না চমৎকার এক প্রত্যাশা!

আর বর্ণগত বা সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের কারণে, গুরুতর অসুস্থতার ফলে বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অর্থসংকটের দরুণ সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের বিষয়ে কী বলা যায়? ইব্রীয় শাস্ত্র খ্রিস্ট যিশু সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণীমূলকভাবে এই কথা বলে: “তিনি আর্ত্তনাদকারী দরিদ্রকে, এবং দুঃখী ও নিঃসহায়কে উদ্ধার করিবেন। তিনি দীনহীন ও দরিদ্রের প্রতি দয়া করিবেন, তিনি দরিদ্রগণের প্রাণ নিস্তার করিবেন।” (গীতসংহিতা ৭২:১২, ১৩) এই প্রতিজ্ঞাগুলো বাস্তব, কারণ এগুলো সেই ব্যক্তিদেরকে আশা ও আস্থা সহকারে ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে সাহায্য করে, যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে।—ইব্রীয় ১১:৬.

তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, প্রেরিত পৌল এই কথা লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “পূর্ব্বকালে যাহা যাহা লিখিত হইয়াছিল, সে সকল আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত হইয়াছিল, যেন শাস্ত্রমূলক ধৈর্য্য ও সান্ত্বনা দ্বারা আমরা প্রত্যাশা প্রাপ্ত হই”! (রোমীয় ১৫:৪) হ্যাঁ, ইব্রীয় শাস্ত্র এখনও ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য বাইবেলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকে আমাদের কাছে এটির প্রকৃত মূল্য রয়েছে। আমরা আশা করি যে, সমগ্র বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়, সেই বিষয়ে আরও শেখার জন্য আপনি প্রাণপণ চেষ্টা করবেন আর এইভাবে এটির গ্রন্থকার যিহোবা ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী হবেন।—গীতসংহিতা ১১৯:১১১, ১১২.

[পাদটীকাগুলো]

^ এই প্রবন্ধে, আমরা পুরাতন নিয়মকে ইব্রীয় শাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করছি। (৬ পৃষ্ঠায় দেওয়া “পুরাতন নিয়ম অথবা ইব্রীয় শাস্ত্র?” নামক বাক্সটি দেখুন।) একইভাবে, যিহোবার সাক্ষিরা নূতন নিয়মকে সাধারণত খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে থাকে।

^ ইব্রীয় শাস্ত্রে এমন অনেক নীতি রয়েছে, যেগুলো আজকে খুবই মূল্যবান। কিন্তু, এটা উল্লেখ্য যে, ঈশ্বর মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েল জাতিকে যে-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, খ্রিস্টানরা সেই ব্যবস্থার অধীন নয়।

[৬ পৃষ্ঠার বাক্স]

পুরাতন নিয়ম অথবা ইব্রীয় শাস্ত্র?

‘পুরাতন নিয়ম’ অভিব্যক্তিটি ২ করিন্থীয় ৩:১৪ পদে পাওয়া যায়। এখানে “নিয়ম” শব্দটি, গ্রিক শব্দ ডিয়াথেকে-কে প্রতিনিধিত্ব করে। ২ করিন্থীয় ৩:১৪ পদে উল্লেখিত ‘পুরাতন নিয়ম’ অভিব্যক্তিটির অর্থ কী?

আভিধানিক এডওয়ার্ড রবিনসন বলেছিলেন: “যেহেতু প্রাচীন চুক্তি মোশির লেখা বইগুলোতে রয়েছে, তাই [ডিয়াথেকে] শব্দটি চুক্তিপুস্তক, মোশির লেখা বইগুলো অর্থাৎ আইনগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে। ২ করিন্থীয় ৩:১৪ পদে, প্রেরিত পৌল মোশির ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করছিলেন, যেটি হচ্ছে প্রাক্‌খ্রিস্টীয় শাস্ত্রের কেবল এক অংশ।

তা হলে, পবিত্র বাইবেলের প্রথম ৩৯টি বইয়ের জন্য আরও উপযুক্ত শব্দটি কী? বাইবেলের এই অংশটুকু সেকেলে বা পুরনো হয়ে গিয়েছে, এইরকম ইঙ্গিত দেওয়ার পরিবর্তে যিশু খ্রিস্ট ও তাঁর অনুসারীরা এই পাঠ্যাংশগুলোকে ‘শাস্ত্র’ এবং ‘পবিত্র শাস্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছিল। (মথি ২১:৪২; রোমীয় ১:২) তাই, এই অনুপ্রাণিত কথাগুলোর সঙ্গে মিল রেখে, যিহোবার সাক্ষিরা পুরাতন নিয়মকে ইব্রীয় শাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে, কারণ বাইবেলের ওই অংশটুকু প্রথমে মূলত ইব্রীয় ভাষায় লেখা হয়েছিল। একইভাবে, তারা তথাকথিত নূতন নিয়মকে গ্রিক শাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে, কারণ যে-ব্যক্তিরা বাইবেলের সেই অংশটুকু লেখার জন্য ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল, তারা গ্রিক ভাষা ব্যবহার করেছিল।

[৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

একজন ব্যক্তি এক কঠোর বিচারক, এক প্রেমময় বাবা এবং এক বন্ধু হিসেবে পরিচিত হতে পারেন

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিশু তাঁর সমগ্র পরিচর্যায় ইব্রীয় শাস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

বাইবেলের কোন নীতিগুলো একজন ব্যক্তিকে সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করতে পারে?