সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

জন মিলটনের হারিয়ে যাওয়া গবেষণামূলক গ্রন্থ

জন মিলটনের হারিয়ে যাওয়া গবেষণামূলক গ্রন্থ

জন মিলটনের হারিয়ে যাওয়া গবেষণামূলক গ্রন্থ

 অন্য আর খুব কম লেখকই বিশ্বে প্যারাডাইস লস্ট নামক ইংরেজি মহাকাব্যের লেখক জন মিলটনের মতো এতখানি প্রভাব বিস্তার করেছে। একজন জীবনীলেখকের কথা অনুসারে, মিলটন “অনেকের ভালবাসা পেয়েছেন, কারো কারো দ্বারা ঘৃণিত হয়েছেন, তবে শুধু অল্প কিছু লোকের কাছেই অজ্ঞাত রয়েছেন।” আজ পর্যন্ত, ইংরেজি সাহিত্য ও সংস্কৃতি তার সাহিত্যকর্মগুলোর কাছে ঋণী।

কীভাবে জন মিলটন এই ধরনের প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন? কোন বিষয়টা খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর (ইংরেজি) নামক তার শেষ বইটিকে এতটাই বিতর্কিত করে তুলেছিল যে, ১৫০ বছর ধরে এটি অপ্রকাশিতই থেকে গিয়েছিল?

তার ছেলেবেলা

জন মিলটন ১৬০৮ সালে লন্ডনের এক স্বচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। “আমার বাবা একেবারে ছেলেবেলাতেই আমাকে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন আর আমি সাহিত্য পড়তে এতটাই উৎসুক ছিলাম যে, আমার বারো বছর বয়স থেকে এমন দিন খুব কমই হয়েছে, যখন পড়াশোনার কারণে মধ্যরাতের আগে আমি বিছানায় গিয়েছি,” মিলটন স্মরণ করেছিলেন। তিনি অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলেন ও ১৬৩২ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। এরপর, তিনি ইতিহাস এবং প্রাচীন গ্রিক ও রোমীয় সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন।

মিলটন একজন কবি হতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই সময়ে ইংল্যান্ড বিপ্লব ঘটানোর জন্য সংগ্রাম করছিল। প্রাথমিকভাবে অলিভার ক্রমওয়েলের দ্বারা পরিচালিত আইনসভা একটা আদালতকে নিযুক্ত করেছিল, যে-আদালত ১৬৪৯ সালে রাজা চার্লস ১ম-কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। দৃঢ়প্রত্যয়জনক প্রবন্ধ রচনা করে মিলটন এই কাজকে সঠিক বলে তুলে ধরেছিলেন ও ক্রমওয়েল সরকারের একজন মুখপাত্র হয়ে উঠেছিলেন। বস্তুতপক্ষে, একজন কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করার আগে জন মিলটন ইতিমধ্যেই রাজনীতি ও নৈতিকতার ওপর তার লিখিত ট্র্যাক্টগুলোর জন্য সুপরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।

রাজতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, ১৬৬০ সালে চার্লস ২য়-র রাজ্যাভিষেকের সময় ক্রমওয়েলের সঙ্গে মিলটনের পূর্বের সম্পর্ক, তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল। মিলটন আত্মগোপন করেছিলেন এবং শুধুমাত্র প্রভাবশালী বন্ধুদের সাহায্যেই তিনি মৃত্যুদণ্ড এড়াতে পেরেছিলেন। এই সমস্তকিছুর মধ্যে দিয়েও, ধর্মীয় বিষয়ের প্রতি তার জোরালো আগ্রহ অক্ষুণ্ণ ছিল।

“বাইবেলের মান”

আধ্যাত্মিক বিষয়ে তার আগের আগ্রহের কথা বর্ণনা করে মিলটন লিখেছিলেন: “আমি যখন কিশোর ছিলাম, তখন থেকে মূল ভাষায় পুরাতন ও নূতন নিয়ম গুরুত্বের সঙ্গে অধ্যয়ন করতে শুরু করেছিলাম।” মিলটন পবিত্র শাস্ত্রকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের একমাত্র নির্ভরযোগ্য নির্দেশিকা হিসেবে গণ্য করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু, তার সময়ে সর্বজনস্বীকৃত ঈশ্বরতত্ত্ব বিষয়ক বইগুলো নিয়ে অধ্যয়ন করা তাকে সম্পূর্ণরূপে হতাশ করেছিল। “আমার মনে হয়েছিল যে, আমার ধর্মীয় বিশ্বাস বা পরিত্রাণের আশার জন্য এই ধরনের নির্দেশিকাগুলোর ওপর আমি যথার্থভাবে নির্ভর করতে পারব না,” তিনি পরে লিখেছিলেন। তার বিশ্বাসগুলোকে সম্পূর্ণরূপে “বাইবেলের মান” অনুযায়ী মূল্যায়ন করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়ে মিলটন মূল শাস্ত্রপদগুলোকে সাধারণ শিরোনামের অধীনে তালিকাবদ্ধ করতে শুরু করেছিলেন ও এই তালিকাগুলো থেকে বাইবেলের পদগুলোকে উদ্ধৃতি করেছিলেন।

আজকে, জন মিলটনকে মূলত প্যারাডাইস লস্ট রচনার জন্য স্মরণ করা হয়, যেটি হচ্ছে সিদ্ধতা থেকে মানুষের পতনের বিষয়ে বাইবেলের বর্ণনার ওপর ভিত্তি করে এক কাব্যিক রচনা। (আদিপুস্তক, ৩ অধ্যায়) ১৬৬৭ সালে প্রকাশিত মূলত এই বইটিই মিলটনকে বিশেষ করে ইংরেজিভাষী বিশ্বে লেখক হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছিল। পরে তিনি এরই এক ধারাবাহিক কবিতার বই প্যারাডাইস রিগেইন্‌ড্‌ প্রকাশ করেন। এই কবিতাগুলো মানুষের জন্য ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্যকে—এক পরমদেশ পৃথিবীতে সিদ্ধ জীবন উপভোগ করাকে—তুলে ধরে এবং খ্রিস্টের মাধ্যমে পৃথিবীতে পরমদেশ পুনর্স্থাপনের বিষয় উল্লেখ করে। উদাহরণস্বরূপ, প্যারাডাইস লস্ট বইয়ে প্রধান স্বর্গদূত মীখায়েল এমন এক সময় সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন, যখন খ্রিস্ট “তাঁর বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করবেন এবং তাদের স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে পরমসুখ দেবেন, কারণ এরপর পুরো পৃথিবী পরমদেশ হবে, যা এদনের চেয়ে বেশি সুখশান্তিপূর্ণ জায়গা হবে এবং আরও বেশি সুখশান্তিপূর্ণ দিন হবে।”

খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর

বেশ অনেক বছর ধরে, মিলটন খ্রিস্টীয় জীবন ও মতবাদের ওপর বিস্তারিত আলোচনাসহ একটি বই লিখতে চেয়েছিলেন। ১৬৫২ সালের মধ্যে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও, তিনি ১৬৭৪ সালে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একাধিক সচিবের সাহায্যে এই প্রকল্পের ওপর কাজ করেছিলেন। মিলটন তার শেষ বইটির নাম দিয়েছিলেন, খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর এক গবেষণামূলক গ্রন্থ, যা শুধুমাত্র পবিত্র শাস্ত্র থেকে সংকলিত (ইংরেজি)। এটির ভূমিকায় তিনি লিখেছিলেন: “অধিকাংশ গ্রন্থকার, যারা এই বিষয়টা নিয়ে লেখালেখি করেছে . . . তারা মার্জিনাল নোটে শুধুমাত্র সেই অধ্যায় ও পদের সংক্ষিপ্ত রেফারেন্স, শাস্ত্রীয় পাঠ্যাংশগুলো উল্লেখ করেছিল, যেগুলোর ওপর তারা যা কিছু শিক্ষা দেয়, সেগুলো পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। অন্যদিকে, আমি বাইবেলের সমস্ত অংশ থেকে উদ্ধৃতিগুলো নিয়ে পৃষ্ঠাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ করার চেষ্টা করেছি।” মিলটনের কথার সত্যতাস্বরূপ, খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইটিতে ৯,০০০রেরও বেশি বার শাস্ত্র থেকে পরোক্ষভাবে বা সরাসরি উদ্ধৃতি করা হয়েছে।

যদিও মিলটন আগে তার বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করতে ইতস্তত করেননি কিন্তু এই গবেষণামূলক গ্রন্থটি প্রকাশ করাকে তিনি স্থগিত রেখেছিলেন। কেন? একটা কারণ হচ্ছে, তিনি জানতেন যে, এটির শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যাগুলো গির্জার স্বীকৃত শিক্ষার চেয়ে বেশ ভিন্ন ছিল। অধিকন্তু, রাজতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সরকারের সুনজর থেকেও বঞ্চিত হয়েছিলেন। তাই, তিনি হয়তো অধিকতর শান্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যা-ই হোক, মিলটনের মৃত্যুর পর তার সচিব ল্যাটিন পাণ্ডুলিপিটি এমন একজন প্রকাশকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, যিনি এটি ছাপাতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর একজন ইংরেজ মন্ত্রী পাণ্ডুলিপিটি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন ও এটিকে ফাইলবন্দি করে রেখেছিলেন। মিলটনের গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রায় দেড়শো বছর পর আবিষ্কৃত হয়েছিল।

১৮২৩ সালে, দলিলপত্র সংরক্ষণের একজন কর্মচারী, মোড়ানো অবস্থায় থাকা বিখ্যাত কবির এই পাণ্ডুলিপিটি হঠাৎ করেই খুঁজে পেয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের তখনকার শাসনকারী রাজা জর্জ ৪র্থ আদেশ দিয়েছিলেন যে, সেই বইটিকে যেন ল্যাটিন ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয় ও জনসাধারণের কাছে বিতরণ করা হয়। দুবছর পর, এটি যখন ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছিল, তখন সেই পাণ্ডুলিপিটি ঈশ্বরতত্ত্ব ও সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী লোকেদের মধ্যে বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। একজন বিশপ সঙ্গে সঙ্গে সেই পাণ্ডুলিপিটিকে প্রতারণাপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন, এটা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করেছিলেন যে, মিলটন—অনেকের দ্বারা সমাদৃত ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় কবি—গির্জার পবিত্র মতবাদগুলোকে এত দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। এই ধরনের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আগে থেকেই বুঝতে পেরে এবং মিলটনই যে সেটির লেখক তার নিশ্চিত প্রমাণস্বরূপ অনুবাদক সেই সংস্করণটিতে অনেক পাদটীকা যুক্ত করেছিলেন, যেখানে খ্রিস্টীয় মতবাদ এবং প্যারাডাইস লস্ট বই দুটির মধ্যে যে ৫০০টা বিষয়ে সাদৃশ্য রয়েছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন। *

মিলটনের বিশ্বাসগুলো

মিলটন যে-সময়ে বাস করতেন, সেই সময়ের মধ্যে ইংল্যান্ড ইতিমধ্যেই প্রটেস্টান্ট সংস্কারকে গ্রহণ করে নিয়েছিল এবং রোমান ক্যাথলিক গির্জার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। প্রটেস্টান্টরা সাধারণত বিশ্বাস করত যে, বিশ্বাস ও নীতির মতো বিষয়গুলোর উৎস কেবলমাত্র পবিত্র শাস্ত্র, পোপ নন। তবে খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইয়ে মিলটন দেখিয়েছিলেন যে, অনেক প্রটেস্টান্ট শিক্ষা ও অভ্যাসও শাস্ত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না। বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে, তিনি স্বাধীন ইচ্ছার বিষয়টাকে সমর্থন করার জন্য জন ক্যালভিনের অদৃষ্টবাদের মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তার লেখাগুলোতে, ঈশ্বরের নাম যিহোবা বারংবার ব্যবহার করার দ্বারা তিনি এর সম্মানজনক ব্যবহারকে উৎসাহিত করেছিলেন।

মিলটন শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, মানুষের মধ্যে এমন কোনো অদৃশ্য অংশ নেই, যা অমর ও দেহের মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে। আদিপুস্তক ২:৭ পদের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন: “মানুষকে এভাবে সৃষ্টি করার পর, শাস্ত্র শেষে বলেছিল: এভাবে মানুষ এক সজীব প্রাণী হয়ে উঠল। . . . মানুষের মধ্যে দুটো অংশ নেই বা সে বিভাজ্য নয়: যেমনটা সাধারণভাবে মনে করা হয় যে, মানুষ দুটো আলাদা ও স্বতন্ত্র উপাদান, এক অদৃশ্য অংশ ও দেহ নিয়ে গঠিত, সেই কথা সঠিক নয়।” এরপর মিলটন এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন: “পুরো মানুষই কি মারা যায়, নাকি শুধু দেহ মারা যায়?” মিলটন শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, মানুষের এমন কোনো অদৃশ্য অংশ নেই, যেটা অমর ও দেহের মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে। এ ছাড়া, মিলটন লূক ২০:৩৭ এবং যোহন ১১:২৫ পদের মতো শাস্ত্রপদগুলোর উল্লেখ করেছিলেন এই বিষয়টা দেখাতে যে, মৃত মানবজাতির আশা, মৃত্যুর নিদ্রা থেকে ভবিষ্যৎ পুনরুত্থানের মধ্যেই নিহিত।

কোন বিষয়টা খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইটি সম্বন্ধে সবচেয়ে জোরালো প্রতিক্রিয়ার উদ্রেক করেছিল? এটা ছিল মিলটনের সরল কিন্তু জোরালো বাইবেলভিত্তিক প্রমাণ যে, ঈশ্বরের পুত্র খ্রিস্ট হচ্ছেন পিতা ঈশ্বরের চেয়ে নিম্নপদস্থ। যোহন ১৭:৩ এবং যোহন ২০:১৭ পদের উদ্ধৃতি করে মিলটন জিজ্ঞেস করেন: “পিতা যদি খ্রিস্টের ঈশ্বর ও আমাদের ঈশ্বর হয়ে থাকেন এবং শুধুমাত্র যদি একজন ঈশ্বরই থেকে থাকেন, তা হলে পিতা ছাড়া আর কেই বা ঈশ্বর হতে পারেন?”

এ ছাড়া, মিলটন আরও বলেন: “স্বয়ং পুত্র ও তাঁর প্রেরিতরা, যা কিছু বলেছে ও লিখেছে, তাতে তারা স্বীকার করে যে, পিতা সমস্ত দিক দিয়ে পুত্রের চেয়ে মহান। (যোহন ১৪:২৮) “বস্তুতপক্ষে, খ্রিস্টই মথি ২৬:৩৯ পদে বলেন: হে আমার পিতা, যদি সম্ভব হয়, তা হলে এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূরে যাক; তা সত্ত্বেও, আমার ইচ্ছামতো না হোক, তোমার ইচ্ছামতো হোক। . . . তিনি যদি সত্যিই ঈশ্বর হয়ে থাকেন, তা হলে নিজের কাছে না করে কেন তিনি শুধুমাত্র পিতার কাছেই প্রার্থনা করেছিলেন? তিনি যদি স্বয়ং মানুষ ও সর্বোচ্চ ঈশ্বর হয়ে থাকেন, তা হলে কেন তিনি আদৌ এমন কিছুর জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, যা তাঁর নিজের শক্তির মধ্যেই রয়েছে? . . . যেহেতু পুত্র সব জায়গায় শুধুমাত্র পিতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন, তাই তিনি আমাদেরকেও একই বিষয় করতে শিক্ষা দেন।”

মিলটনের সীমাবদ্ধতাগুলো

জন মিলটন সত্য অন্বেষণ করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও, তিনি মানব সীমাবদ্ধতাগুলোর অধীন ছিলেন এবং তার কিছু কিছু দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো জীবনে ঘটে যাওয়া মন্দ অভিজ্ঞতার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, তিনি বিয়ে করার পর পরই তার নববধূ, যিনি রাজসরকারের সমর্থক জমিদারের যুবতী মেয়ে ছিলেন, তাকে ছেড়ে প্রায় তিন বছরের জন্য নিজ পরিবারের কাছে চলে গিয়েছিলেন। এই সময়ে মিলটন শুধুমাত্র বৈবাহিক অবিশ্বস্ততার—যিশুর দেওয়া একমাত্র মানের—কারণেই নয় বরং সেইসঙ্গে মতের অমিলের কারণেও বিবাহবিচ্ছেদ করাকে সমর্থন করে বিভিন্ন ট্র্যাক্ট রচনা করেছিলেন। (মথি ১৯:৯) মিলটন খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইটিতেও একই ধারণা তুলে ধরেছিলেন।

মিলটনের ভুলভ্রান্তি সত্ত্বেও, খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইটিতে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার ওপর বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আজ পর্যন্ত তার গবেষণামূলক গ্রন্থটি এটির পাঠকদেরকে তাদের বিশ্বাসগুলোকে পবিত্র শাস্ত্রের নিখুঁত মান অনুযায়ী মূল্যায়ন করে দেখতে বাধ্য করে।

[পাদটীকা]

^ খ্রিস্টীয় মতবাদের ওপর বইটির নতুন অনুবাদ, যেটি ইয়েল ইউনিভারসিটির দ্বারা ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, সেটি মিলটনের মূল ল্যাটিন পাণ্ডুলিপির সঙ্গে আরও বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ।

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

মিলটন বাইবেলের একজন উৎসুক ছাত্র ছিলেন

[সৌজন্যে]

Courtesy of The Early Modern Web at Oxford

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

“প্যারাডাইস লস্ট” কবিতাটি মিলটনকে খ্যাতি এনে দিয়েছিল

[সৌজন্যে]

Courtesy of The Early Modern Web at Oxford

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

মিলটনের শেষ বইটি ১৫০ বছর ধরে হারিয়ে গিয়েছিল

[সৌজন্যে]

Image courtesy of Rare Books and Special Collections, Thomas Cooper Library, University of South Carolina

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Image courtesy of Rare Books and Special Collections, Thomas Cooper Library, University of South Carolina