সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনার কি শুধু বর্তমানের জন্যই জীবনযাপন করা উচিত?

আপনার কি শুধু বর্তমানের জন্যই জীবনযাপন করা উচিত?

আপনার কি শুধু বর্তমানের জন্যই জীবনযাপন করা উচিত?

 “আমি কখনো ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করি না। কারণ এটা খুব শীঘ্রই চলে আসে।” প্রায়ই উদ্ধৃত এই কথাগুলো বিখ্যাত বিজ্ঞানী আ্যলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন। অনেক লোকই একই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। “ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা করার কী দরকার?” তারা হয়তো বলতে পারে। অথবা আপনি হয়তো লোকেদের এইরকম বলতে শুনেছেন: “রোজকার কাজকর্ম চালিয়ে যাও।” “বর্তমানের জন্যই জীবনযাপন করো।” “ভবিষ্যতের কথা ভুলে যাও।”

অবশ্য, এই সাধারণ মনোভাবটা নতুন কিছু নয়। “খাওদাও, ফুর্তি করো। আর কোনোকিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়।” এটাই ছিল প্রাচীন ইপিকুরেয়দের আদর্শবাণী। প্রেরিত পৌলের সমসাময়িক কিছু ব্যক্তি ঠিক একইরকম দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করত। “আইস, আমরা ভোজন পান করি, কেননা কল্য মরিব।” (১ করিন্থীয় ১৫:৩২) তারা মনে করত যে, আমাদের এই সংক্ষিপ্ত জীবনই সবকিছু, তাই তারা এই ধারণাকে তুলে ধরেছিল, আমাদের জীবনকে সম্পূর্ণরূপে ভোগ করা উচিত।

পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ অধিবাসীর কাছে এই জীবনকে ভোগ করার অর্থ নিশ্চিতভাবেই এক আনন্দবাদীর মতো আমোদপ্রমোদ খোঁজা নয়। অনেক লোক যারা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, তারা এমন এক জীবনযাপন করে থাকে, যা বেঁচে থাকার জন্য এক অবিরত, কষ্টকর সংগ্রাম ছাড়া কিছুই নয়। তাই, কেন তারা “কল্য” অর্থাৎ ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করবে, যেটাকে প্রায়ই অত্যন্ত অন্ধকারময় এবং হতাশাজনক বলে মনে হয়?

আমাদের কি ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করা উচিত?

এমনকি যে-লোকেরা কম কষ্টকর পরিস্থিতিতে রয়েছে, তারাও ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করাকে অর্থহীন বলে মনে করে। “এত চিন্তার করার কি দরকার?” তারা হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে। কেউ কেউ হয়তো যুক্তি দেখাতে পারে যে, যারা পরিকল্পনা করে, শেষপর্যন্ত তাদেরকে মোহভঙ্গ ও হতাশ হতে হয়। এমনকি প্রাচীনকালের কুলপতি ইয়োবও খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, যখন তিনি দেখেছিলেন যে, তার অভিপ্রায় বা পরিকল্পনাগুলো “ভগ্ন” হয়েছে, তার এবং তার পরিবারের জন্য সুখী ভবিষ্যৎ নিয়ে আসতে পারত এমন বিষয়গুলো নষ্ট হয়েছে।—ইয়োব ১৭:১১; উপদেশক ৯:১১.

স্কটিশ কবি রবার্ট বার্নস আমাদের কঠিন পরিস্থিতিকে মাঠের এমন একটা ছোট্ট ইঁদুরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যেটার বাসা বার্নস অসাবধানতাবশত তার লাঙলের ফলা দিয়ে ভেঙে ফেলেছিলেন। সেই ইঁদুরটার জগৎ সম্পূর্ণরূপে পালটে যাওয়ার পর, সে তার জীবন নিয়ে পালিয়েছিল। ‘হ্যাঁ,’ কবি চিন্তা করেছিলেন, ‘আমরা কতবার আমাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ঘটনাগুলোর মুখোমুখি হয়ে নিজেদেরকে অসহায় বলে মনে করি, এমনকি তখন সুচিন্তিত পরিকল্পনাগুলোও প্রায়ই সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়।’

তা হলে, ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করা কি অর্থহীন? প্রকৃত বিষয়টা হল যে, যখন হারিকেন বা অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় আঘাত হানে, তখন পর্যাপ্ত পরিকল্পনার অভাব ধ্বংসাত্মক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। এটা ঠিক যে, হারিকেন ক্যাটরিনাকে কেউই প্রতিরোধ করতে পারেনি। কিন্তু, উত্তম দূরদৃষ্টির দ্বারা এবং পরিকল্পনা করার ফলে কি শহর ও এর অধিবাসীদের ওপর সেই ঝড়ের প্রভাব অনেকটাই কমে যায়নি?

আপনি কী মনে করেন? শুধু বর্তমানের জন্য জীবনযাপন করা আর ভবিষ্যৎকে উপেক্ষা করা কি যুক্তিযুক্ত? এই বিষয়ে পরবর্তী প্রবন্ধ কী বলে, তা বিবেচনা করুন।

[৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

“খাওদাও, ফুর্তি করো। আর কোনোকিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়”

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

দূরদৃষ্টি ও পরিকল্পনা কি হারিকেন ক্যাটরিনার প্রভাবকে কমিয়ে দিয়েছে?

[সৌজন্যে]

U.S. Coast Guard Digital