সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

কী আপনার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে?

কী আপনার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে?

কী আপনার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে?

 কে নি একটা শীর্ষস্থানীয় দালালি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন, তিনি বেশ দামি একটা বিদেশি গাড়ি চালাতেন আর একটা বড় শহরের বিত্তশালী এলাকায় তার একটা বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ছিল। একজন অভিজ্ঞ স্কাইডাইভার হিসেবে, তিনি হাজার হাজার ফুট উঁচু থেকে মাটিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার রোমাঞ্চ উপভোগ করতেন। এই সমস্তকিছু কি তাকে এক পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন এনে দিয়েছিল? দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুসারে, তিনি বলেছিলেন: “আমার বয়স ৪৫ বছর আর আমার কোনো প্রকৃত ভবিষ্যৎ নেই . . . আমার জীবন শূন্য।”

এলিন একজন দক্ষ আইস স্কেটার হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। শেষপর্যন্ত তিনি একজন বিখ্যাত আইস স্কেটার হয়ে উঠেছিলেন। এলিন তার কাঙ্ক্ষিত খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। “কিন্তু কোথায় সেইসব সুখ যা আমার পাওয়া উচিত ছিল?” তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন। “আমার ভীষণ একা লাগত। ধীরে ধীরে আমি বৃদ্ধ হব আর যদিও আমি আর্থিক দিক দিয়ে সুরক্ষিত ছিলাম কিন্তু এটাই যদি আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তা হলে আমার জীবন একেবারেই ব্যর্থ হবে।”

হিডিও যিনি দক্ষতার সঙ্গে রং ব্যবহার করার কারণে সুপরিচিত ছিলেন, তিনি চিত্রকর্ম তৈরি করার জন্য তার জীবনকে নিয়োজিত করেছিলেন। তিনি তার চিত্রকর্মগুলো বিক্রি করেননি; তিনি মনে করেছিলেন যে, তা করলে তার শিল্পী সত্তার সঙ্গে আপোশ করা হবে। তার ৯৮ বছরের জীবনের শেষের দিকে তিনি তার বেশির ভাগ চিত্রকর্মই একটা জাদুঘরকে দান করেছিলেন। শৈল্পিক লক্ষ্যগুলোর জন্য তিনি তার জীবনকে নিয়োজিত করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি তার চিত্রকর্মগুলোকে কখনোই নিখুঁত করতে পারবেন না এই কথা ভেবে তিনি পরিতৃপ্ত ছিলেন না।

কিছু লোক অন্যদেরকে সাহায্য করার ব্যাপারে অনেক বেশি জড়িত হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, হলিউডের চলচ্চিত্রের একজন নির্বাহী কর্মকর্তার কথা চিন্তা করুন। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটার সহসভাপতি হিসেবে তিনি জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন এবং একটা বিলাসবহুল আবাসিক এলাকায় থাকতেন। তিনি যখন কাম্বোডিয়ায় ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন, তখন পুনাম পেনের একটা ক্যাফেতে খাবার খাওয়ার সময় একটা মেয়ে তার কাছে পয়সা ভিক্ষা চাইতে এসেছিল। তিনি তাকে একটা ডলার এবং ঠাণ্ডা পানীয় দিয়েছিলেন। মেয়েটি তাতে খুশি হয়েছিল। কিন্তু, পরের দিন রাতে মেয়েটি আবার সেখানে এসেছিল, তখনও ভিক্ষা করছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, সাময়িক সাহায্যের চেয়ে আরও বেশি কিছুর দরকার ছিল।

এক বছর পর, এই নির্বাহী কর্মকর্তা তার পেশা পরিবর্তন করার—বিনোদন জগতে কাজ করার পরিবর্তে কাম্বোডিয়ায় দরিদ্র লোকেদের সাহায্য করার—সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি একটা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেটা আবাসন, খাদ্য এবং শিক্ষা জুগিয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও, তিনি অনবরত তার আবেগঅনুভূতির সঙ্গে—তিনি যা সম্পাদন করছেন, সেটার আনন্দ ও পরিতৃপ্তি আর সেইসঙ্গে তাকে যে-বৃদ্ধিরত সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতেই হয় সেগুলোর কারণে আসা হতাশা ও বিষণ্ণতার সঙ্গে—লড়াই করছেন।

এইমাত্র যে-চারজনের কথা বলা হল, তারা সকলেই ভেবেছিল যে, তারা কীসের জন্য জীবনযাপন করছে, তা জানে। তা সত্ত্বেও, তারা যে-লক্ষ্য অর্জন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল, শেষপর্যন্ত তা অর্জন করার পরও তারা নিজেদের শূন্য বলে মনে করেছিল। আপনি কীসের জন্য জীবনযাপন করছেন? কোন বিষয়টা আপনার জীবনে প্রথম স্থানে রয়েছে? আপনি কি নিশ্চিত যে, আপনি যেভাবে জীবনযাপন করছেন তার জন্য আপনি পরে আপশোস করবেন না?