সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

লূক একজন প্রিয় সহকারী

লূক একজন প্রিয় সহকারী

লূক একজন প্রিয় সহকারী

 সময়টা ছিল সা.কা. ৬৫ সাল। জায়গাটা ছিল রোম। লূক নিজেকে প্রেরিত পৌলের একজন বন্ধু হিসেবে শনাক্ত করার ঝুঁকিগুলোর বিষয়ে জানতেন, কারণ সেই সময়ে পৌল তার বিশ্বাসের কারণে বিচারাধীন ছিলেন। মনে হচ্ছিল যে, পৌলকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। কিন্তু সেই সংকটময় সময়ে লূক—হ্যাঁ, একা লূকই—প্রেরিতের সঙ্গে ছিলেন।—২ তীমথিয় ৪:৬, ১১.

বাইবেলের পাঠক-পাঠিকাদের কাছে লূক নামটি পরিচিত কারণ তিনি যে-সুসমাচারটি লিখেছিলেন, সেটি তারই নাম বহন করে। লূক পৌলের সঙ্গে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করেছিলেন, যিনি তাকে “সেই প্রিয় চিকিৎসক” এবং একজন ‘সহকারি’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। (কলসীয় ৪:১৪; ফিলীমন ২৪) শাস্ত্র লূকের সম্বন্ধে অল্প কিছু তথ্য সরবরাহ করে, শুধুমাত্র তিন বার তার নাম উল্লেখ করে। কিন্তু, গবেষণা লূকের সম্বন্ধে যা ইঙ্গিত করে, তা যখন আপনি পরীক্ষা করে দেখেন, তখন সম্ভবত আপনিও এই বিশ্বস্ত খ্রিস্টানের জন্য পৌলের মতো একইরকম উপলব্ধি প্রকাশ করবেন।

লেখক ও মিশনারি

লূকের সুসমাচার এবং প্রেরিতদের কার্য-বিবরণ বইটি থিয়ফিলের উদ্দেশে বলা হয়েছে আর তা ইঙ্গিত করে যে, ঐশিকভাবে অনুপ্রাণিত এই দুটো বইই লূক লিখেছিলেন। (লূক ১:৩; প্রেরিত ১:১) লূক নিজেকে যিশু খ্রিস্টের পরিচর্যার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করেন না। এর পরিবর্তে লূক বলেন যে, তিনি প্রত্যক্ষ সাক্ষিদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছিলেন এবং ‘প্রথম হইতে সকল বিষয় সবিশেষ অনুসন্ধান করিয়া বলিয়াছিলেন।’ (লূক ১:১-৩) তাই, সম্ভবত সা.কা. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনের কিছু সময় পর লূক খ্রিস্টের একজন অনুসারী হয়েছিলেন।

কেউ কেউ মনে করে যে, লূক সুরিয়ার আন্তিয়খিয়ার লোক ছিলেন। তারা লক্ষ করে যে, প্রেরিত বইটি সেই শহরে ঘটা ঘটনাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেয় এবং সেই বইটি সাত জন “সুখ্যাতিপন্ন” ব্যক্তির মধ্যে একজনকে “আন্তিয়খিয়াস্থ যিহূদী-ধর্ম্মাবলম্বী” বলে উল্লেখ করে, যেখানে বাকি ছয় জনের শহরের বিষয় নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। অবশ্য, আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না যে, এই বিষয়টা লূকের নিজ শহর হিসেবে আন্তিয়খিয়ার প্রতি বিশেষ আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।—প্রেরিত ৬:৩-৬.

যদিও প্রেরিত বইয়ে লূকের নাম পাওয়া যায় না কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকাংশ “আমরা,” “আমাদের” এই সর্বনামগুলো ব্যবহার করে, যা ইঙ্গিত করে যে, এই বইয়ে বর্ণিত কিছু ঘটনাতে তিনিও জড়িত ছিলেন। লূক যখন এশিয়া মাইনরের মধ্যে দিয়ে পৌল ও তার সঙ্গীদের যাত্রা করা পথের বিষয়ে বর্ণনা করেন, তখন তিনি বলেন: “তাঁহারা মুশিয়া দেশ ছাড়িয়া ত্রোয়াতে চলিয়া গেলেন।” এই ত্রোয়াতেই পৌল এক মাকিদনীয় পুরুষের দর্শন পেয়েছিলেন, যিনি বিনতি করেছিলেন: “পার হইয়া মাকিদনিয়াতে আসিয়া আমাদের উপকার করুন।” লূক আরও বলেন: “তিনি সেই দর্শন পাইলে আমরা অবিলম্বে মাকিদনীয়া দেশে যাইতে চেষ্টা করিলাম।” (প্রেরিত ১৬:৮-১০) “তাঁহারা” শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে “আমরা” শব্দটির ব্যবহার ইঙ্গিত করে যে, লূক ত্রোয়াতে পৌলের সঙ্গীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর লূক উত্তম পুরুষ বহুবচনে ফিলিপীতে প্রচার কাজের বর্ণনা করেছিলেন, যেটা ইঙ্গিত করে যে, তিনি তাতে অংশ নিয়েছিলেন। “বিশ্রামবারে” তিনি লেখেন, আমরা “নগর-দ্বারের বাহিরে নদীতীরে গেলাম, মনে করিলাম, সেখানে প্রার্থনাস্থান আছে; আর আমরা বসিয়া সমাগত স্ত্রীলোকদের কাছে কথা কহিতে লাগিলাম।” এর ফলস্বরূপ, লুদিয়া ও তার পরিবারের সকলে সুসমাচার গ্রহণ করেছিল এবং বাপ্তাইজিত হয়েছিল।—প্রেরিত ১৬:১১-১৫.

ফিলিপীতে তারা বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল, যেখানে পৌল এক দাসীকে সুস্থ করেছিলেন, যে ‘দৈবজ্ঞ আত্মার’ প্রভাবে ভাগ্য-কথন বা ভবিষ্যদ্বাণী করত। তার কর্তারা যখন দেখেছিল যে, তাদের লাভের উৎস বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তখন তারা পৌল ও সীলকে গ্রেপ্তার করেছিল, যাদেরকে পরে মারধর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। স্পষ্টতই, লূককে গ্রেপ্তার করা হয়নি, কারণ তিনি তার সঙ্গীদের কঠোর পরীক্ষাকে প্রথম পুরুষে বর্ণনা করেন। তাদের মুক্তির পর, “তাঁহারা [পৌল ও সীল] . . . [ভ্রাতৃগণকে] আশ্বাস দিলেন; পরে প্রস্থান করিলেন।” পরবর্তী সময়ে পৌল ফিলিপীতে ফিরে আসার পরই লূক পুনরায় নিজেকে সেই বর্ণনায় যুক্ত করেছিলেন। (প্রেরিত ১৬:১৬-৪০; ২০:৫, ৬) সম্ভবত লূক ফিলিপীর কাজ দেখাশোনা করার জন্য সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন।

তথ্য সংগ্রহ করা

লূক কীভাবে তার সুসমাচার ও প্রেরিত বইয়ের জন্য বিষয়বস্তু পেয়েছিলেন? প্রেরিত বইয়ে যে-বিভাগগুলোর বর্ণনায় লূক নিজেকে যুক্ত করেছিলেন সেই বিভাগ ইঙ্গিত করে যে, তিনি ফিলিপী থেকে যিরূশালেমে আসার পথে পৌলের সঙ্গেই ছিলেন, যেখানে প্রেরিত পৌলকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পথিমধ্যে, পৌল ও তার সঙ্গীরা কৈসরিয়াতে সুসমাচার-প্রচারক ফিলিপের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়েছিল। (প্রেরিত ২০:৬; ২১:১-১৭) লূক শময়রিয়ায় প্রাথমিক মিশনারি কাজকর্ম সম্বন্ধে তার বিবরণের জন্য হয়তো ফিলিপের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন, যিনি সেখানে প্রচার কাজের অগ্রভাগে ছিলেন। (প্রেরিত ৮:৪-২৫) কিন্তু লূকের অন্যান্য উৎস কারা ছিল?

যে-দুবছর পৌল কৈসরিয়াতে কারাগারে বন্দি ছিলেন, সেই সময়টা সম্ভবত লূককে তার সুসমাচারের বিবরণের জন্য গবেষণা করার সুযোগ দিয়েছিল। যিরূশালেম তেমন একটা দূরে ছিল না, যেখানে গিয়ে তিনি যিশুর বংশবৃত্তান্তের নথিগুলো পরীক্ষা করতে পারতেন। লূক যিশুর জীবনী ও পরিচর্যা সম্বন্ধীয় এমন অনেক ঘটনার বিষয় লিপিবদ্ধ করেছেন, যেগুলো শুধুমাত্র তার সুসমাচারেই পাওয়া যায়। একজন পণ্ডিত ব্যক্তি এইরকম কমপক্ষে ৮২টা বাক্যাংশের বিষয় উল্লেখ করেছেন, যেগুলোতে যিশুর জীবন ও পরিচর্যা সম্বন্ধে অদ্বিতীয় পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে।

সম্ভবত, লূক যোহন বাপ্তাইজকের মা ইলীশাবেতের কাছ থেকে যোহনের জন্ম সম্বন্ধীয় বিষয়গুলো জেনেছিলেন। যিশুর জন্ম ও ছেলেবেলা সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ হয়তো যিশুর মা মরিয়মের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। (লূক ১:৫-৮০) সম্ভবত পিতর, যাকোব অথবা যোহন মাছ ধরার অলৌকিক ঘটনাটার বিষয় লূককে বলেছিলেন। (লূক ৫:৪-১০) কেবল লূকের সুসমাচারেই আমরা যিশুর কয়েকটা নীতিগল্প সম্বন্ধে জানতে পারি, যেমন প্রতিবেশীসুলভ শমরীয়, হারানো সিকি, অপব্যয়ী পুত্র এবং ধনী ব্যক্তি ও লাসার।—লূক ১০:২৯-৩৭; ১৩:২৩, ২৪; ১৫:৮-৩২; ১৬:১৯-৩১.

লূক লোকেদের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। তিনি মরিয়মের শুচিকরণ বলি উৎসর্গের কথা, এক বিধবার ছেলেকে পুনরুত্থিত করার বিষয়ে এবং একজন স্ত্রীলোক যে তেল দিয়ে যিশুর চরণ অভিষিক্ত করেছেন, সেই বিষয় লিপিবদ্ধ করেছেন। লূক সেই স্ত্রীলোকদের বিষয়ে উল্লেখ করেন, যারা খ্রিস্টের পরিচর্যা করেছিল এবং আমাদের জানান যে, মার্থা ও মরিয়ম তাদের বাড়িতে তাঁর প্রতি আতিথেয়তা দেখিয়েছিল। লূকের সুসমাচার একজন কুঁজো স্ত্রীলোককে এবং একজন জলোদরী ব্যক্তিকে সুস্থ করার ও সেইসঙ্গে দশ জন কুষ্ঠরোগীকে শুচি করার বিষয়ে বলে। লূক আমাদেরকে বেঁটে ব্যক্তি সক্কেয়র বিষয় বলেন, যিনি যিশুকে দেখার জন্য একটা গাছে উঠেছিলেন আর তিনি খ্রিস্টের পাশে বিদ্ধ একজন অপরাধীর অনুতপ্ত মনোভাবের কথাও লিপিবদ্ধ করেন।—লূক ২:২৪; ৭:১১-১৭, ৩৬-৫০; ৮:২, ৩; ১০:৩৮-৪২; ১৩:১০-১৭; ১৪:১-৬; ১৭:১১-১৯; ১৯:১-১০; ২৩:৩৯-৪৩.

এটা লক্ষণীয় যে, লূকের সুসমাচার যিশুর দৃষ্টান্তের প্রতিবেশীসুলভ শমরীয় ব্যক্তির দ্বারা একজন আহত ব্যক্তির চিকিৎসার বিষয় উল্লেখ করে। স্পষ্টতই চিকিৎসক হিসেবে আগ্রহের কারণে, লূক প্রদেয় সেবা সম্বন্ধে যিশুর বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল আ্যন্টিসেপটিক হিসেবে দ্রাক্ষারস, উপশমকারী গুণের কারণে তেল এবং ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতস্থান বেঁধে দেওয়া।—লূক ১০:৩০-৩৭.

একজন কারাবন্দির সঙ্গী

লূক প্রেরিত পৌলের সম্বন্ধে চিন্তিত ছিলেন। পৌল যখন কৈসরিয়াতে আবদ্ধ বা বন্দি ছিলেন, তখন রোমীয় দেশাধ্যক্ষ ফীলিক্স “[পৌলের] কোন আত্মীয়কে ইহার সেবা করণার্থে আসিতে” নিষেধ “না” করার আদেশ দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ২৪:২৩) সম্ভবত লূক সেই পরিচারকদের মধ্যে একজন ছিলেন। যেহেতু পৌলের স্বাস্থ্য সবসময় ভাল থাকত না, তাই তার যত্ন নেওয়া হয়তো ‘সেই প্রিয় চিকিৎসকের’ একটা কাজ হয়ে উঠেছিল।—কলসীয় ৪:১৪; গালাতীয় ৪:১৩.

পৌল যখন কৈসরের কাছে আপিল করেছিলেন, তখন রোমীয় দেশাধ্যক্ষ ফীষ্ট প্রেরিতকে রোমে পাঠিয়েছিলেন। ইতালির উদ্দেশে দীর্ঘ যাত্রাপথে লূক অনুগতভাবে এই কারাবন্দির সঙ্গী হয়েছিলেন এবং তাদের যে-জাহাজডুবির অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে এক সুস্পষ্ট বিবরণ লিখেছিলেন। (প্রেরিত ২৪:২৭; ২৫:৯-১২; ২৭:১, ৯-৪৪) রোমে গৃহবন্দি থাকার সময়ে, পৌল বেশ কিছু অনুপ্রাণিত চিঠি লিখেছিলেন আর এগুলোর দুটোতে লূকের বিষয় উল্লেখ করেছিলেন। (প্রেরিত ২৮:৩০; কলসীয় ৪:১৪; ফিলীমন ২৪) সম্ভবত এই দুবছর সময়কালেই লূক প্রেরিত বইটি লিখেছিলেন।

রোমে পৌলের গৃহ নিশ্চিতভাবেই আধ্যাত্মিক কাজকর্মে পূর্ণ ছিল। সেখানে লূক নিশ্চয়ই পৌলের অন্য সহকারীদের কয়েক জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন, সেই সহকারীদের মধ্যে তুখিক, আরিষ্টার্খ, মার্ক, যুষ্ট, ইপাফ্রা এবং ওনীষীম হচ্ছে মাত্র কয়েক জনের নাম।—কলসীয় ৪:৭-১৪.

পৌলের দ্বিতীয়বার কারাবরণের সময় যখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার মৃত্যু আসন্ন, তখন অনুগত ও সাহসী লূক তার পাশে ছিলেন, যদিও অন্যেরা প্রেরিতকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। লূক হয়তো তার নিজ স্বাধীনতা হারানোর ঝুঁকি নিয়েও তার সঙ্গে ছিলেন। সম্ভবত একজন লেখক হিসেবে কাজ করে, লূক পৌলের এই কথাগুলো লিখেছিলেন: “একা লূক মাত্র আমার সঙ্গে আছেন।” পরম্পরাগত উৎস অনুসারে, এরপর শীঘ্রই পৌলের শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল।—২ তীমথিয় ৪:৬-৮, ১১, ১৬.

লূক ছিলেন আত্মত্যাগী ও বিনয়ী। তিনি তার জ্ঞানকে জাহির করেননি অথবা লোকেদের মনোযোগ পাওয়ার চেষ্টা করেননি। হ্যাঁ, তিনি একজন চিকিৎসকের জীবনধারা অনুধাবন করতে পারতেন কিন্তু তিনি রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াকে বেছে নিয়েছিলেন। লূকের মতো, আমরা যেন নিঃস্বার্থভাবে সুসমাচার ঘোষণা করি এবং নম্রভাবে যিহোবার গৌরবার্থে সেবা করি।—লূক ১২:৩১.

[১৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

থিয়ফিল কে ছিলেন?

লূক তার সুসমাচার এবং প্রেরিতদের কার্য-বিবরণ দুটি বইই থিলফিলের উদ্দেশে লিখেছিলেন। লূকের সুসমাচারে, এই ব্যক্তিকে “মহামহিম থিয়ফিল” বলে সম্বোধন করা হয়েছে। (লূক ১:৩) “মহামহিম” ছিল প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং রোমীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অভিহিত করার এক উপাধি। প্রেরিত পৌল যিহূদার রোমীয় দেশাধ্যক্ষ ফীষ্টকে একইভাবে সম্বোধন করেছিলেন।—প্রেরিত ২৬:২৫.

স্পষ্টতই, থিয়ফিল যিশুর সম্বন্ধে বার্তা শুনেছিলেন এবং এই বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। লূক আশা করেছিলেন যে, তার সুসমাচারের বিবরণ থিয়ফিলকে “[তিনি] যে সকল বিষয় শিক্ষা পাইয়াছেন, সেই সকল বিষয়ের নিশ্চয়তা জ্ঞাত হইতে” সমর্থ করবে।—লূক ১:৪.

গ্রিক পণ্ডিত ব্যক্তি রিচার্ড ল্যানস্কির কথা অনুসারে, লূক যখন থিয়ফিলকে “মহামহিম” বলে সম্বোধন করেছিলেন, তখন তিনি একজন বিশ্বাসী ছিলেন না কারণ “সমস্ত খ্রিস্টীয় সাহিত্যে, . . . কোনো খ্রিস্টান ভাইকে কখনো এইরকম এক সম্মানীয় উপাধি দ্বারা সম্বোধন করা হয়নি।” পরে লূক যখন প্রেরিত বইটি লিখেছিলেন, তখন তিনি “মহামহিম” উপাধিটি ব্যবহার করেননি কিন্তু শুধু বলেছিলেন: “হে থিয়ফিল।” (প্রেরিত ১:১) ল্যানস্কি উপসংহার করেন: “লূক যখন থিয়ফিলের উদ্দেশে তার সুসমাচার লিখেছিলেন, তখন পর্যন্ত এই বিশিষ্ট ব্যক্তি একজন খ্রিস্টান হননি কিন্তু খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলোর সম্বন্ধে খুবই আগ্রহী ছিলেন; কিন্তু লূক যখন প্রেরিত বইটি তার কাছে পাঠিয়েছিলেন, তখন থিয়ফিল ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।”