সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এক নিষ্ঠুর জগতে সমবেদনা দেখানো

এক নিষ্ঠুর জগতে সমবেদনা দেখানো

এক নিষ্ঠুর জগতে সমবেদনা দেখানো

 বুরুন্ডিতে একজন ব্যক্তি ম্যালেরিয়ার কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু তিনি কীভাবে যাবেন? তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়িই পাওয়া যায়নি। তার দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তারা তাকে সাইকেলে বসিয়ে অনেক কষ্ট করে পাঁচ ঘন্টা ধরে পাহাড়ি পথের ওপর দিয়ে ঠেলে নিয়ে যায়। এরপর তারা তাকে একটা বাসে তোলে, যেটা তাকে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। বেশ কিছুদিন পরে তিনি অনেকটাই সেরে ওঠেন।

পৃথিবীর অন্য প্রান্তে, ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে হ্যারিকেন ক্যাটরিনা যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় এলাকা বিধ্বস্ত করে দেওয়ার পর, স্বেচ্ছাসেবকদের একটা দল একটা বাড়ি খুঁজে পায়, যেটা উপড়ে পড়া গাছপালার নীচে চাপা পড়েছিল। সেই বাড়ির মালিকের কাছে একবারেই অপরিচিত এই স্বেচ্ছাসেবকরা সারাদিন ধরে যন্ত্রচালিত করাতের সাহায্যে উপড়ে পড়া গাছপালা আর ধ্বংসস্তূপ সরিয়েছিল। “আমি এই [লোকেদের] প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ,” সেই মালিকের স্ত্রী বলেন।

প্রচারমাধ্যমের চাঞ্চল্যকর রিপোর্টগুলো বেশির ভাগ সময়ই নৃশংসতা ও বর্বরতার কাজগুলো সম্বন্ধে তুলে ধরে। রোজকার সমবেদনাপূর্ণ ও দয়ার কাজগুলো প্রায়ই এই বিবরণগুলোর দ্বারা ম্লান হয়ে যায়। কিন্তু, এটা এই বাস্তব বিষয়টাকে বদলে দিতে পারে না যে, সমস্ত জায়গাতেই লোকেরা স্নেহ, ভালবাসা এবং সহানুভূতির জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছে। আমরা সমবেদনা লাভ করতে আকুল আকাঙ্ক্ষী! এই ধরনের আবেগ-অনুভূতি হয়তো বড়দিনের মরসুমে আরও স্বাভাবিক বিষয় হয়ে থাকে, যখন অনেক লোক কথায় বা গানের মধ্যে ‘মানুষের শান্তি এবং মঙ্গল হোক’ এই কথাগুলো বলে থাকে।—লূক ২:১৪, কিং জেমস ভারসন।

এমন এক জগতে সমবেদনা দেখানো হয়তো কঠিন, যে-জগৎকে মূলত আবেগহীন ও আতিথ্যবিমুখ বলে মনে হয়। সর্বত্র এই মনোভাব বিদ্যমান যে, নিষ্ঠুরতা ও সংবেদনহীনতা, সফলতা ও জয়ের জন্য পথ খুলে দেয়। অনেক লোক এই মতবাদ অনুযায়ী জীবনযাপন করে বলে মনে হয় যে, সমবেদনাপূর্ণ হওয়ার চেয়ে নিষ্ঠুর হওয়া আরও বিজ্ঞতার কাজ। লোভ ও অহংকার সমবেদনা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সহজেই বাধা দিতে পারে।

ফলস্বরূপ, অনেক লোক এমনকি অন্যদের অনুভূতি অথবা আগ্রহগুলো উপেক্ষা করে নিজেদেরকে প্রথম স্থানে রাখে। খেলাধুলা বা বিনোদন জগতের নায়কদের প্রায়ই “প্রকৃত পুরুষ” (পৌরুষ প্রদর্শনকারী) হিসেবে তুলে ধরা হয়, যারা কোমল স্নেহ দেখায় না। কিছু রাজনৈতিক নেতাও একইরকম আচরণ করে থাকে।

তাই, আমাদের জিজ্ঞেস করা উচিত: কেন আমরা সহানুভূতিশীল হব? উত্তম কাজ করার ক্ষেত্রে সমবেদনা কি এক ক্ষমতা? আর সমবেদনা দেখানোর জন্য কী আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? পরবর্তী প্রবন্ধ এই প্রশ্নগুলো আলোচনা করবে।

[৩ পৃষ্ঠার বাক্স]

• সমবেদনা দেখানো কি এক দুর্বলতা?

• সমবেদনার কি কোনো ক্ষমতা রয়েছে?

• কোন ব্যবহারিক উপায়গুলোতে আপনি সহানুভূতি দেখাতে পারেন?