‘সদাপ্রভুর দূত চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন’
‘সদাপ্রভুর দূত চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন’
বলেছেন ক্রিস্টাবেল কনেল
আমরা ক্রিস্টোফারের বাইবেল সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ায় এতটাই মগ্ন ছিলাম যে, আমাদের মধ্যে কেউই লক্ষ করিনি কত রাত হয়ে গিয়েছে; কিংবা আমরা এটাও লক্ষ করিনি যে, ক্রিস্টোফার জানালার বাইরে নজর রাখছিলেন। অবশেষে, তিনি আমাদের দিকে ফিরে বলেছিলেন, “এখন বের হওয়াটা নিরাপদ।” এরপর, আমাদের সাইকেলগুলো যেখানে ছিল, সেখান পর্যন্ত তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে গিয়েছিলেন আর আমাদের বিদায় জানিয়েছিলেন। তিনি কী এমন বিপদজনক বিষয় লক্ষ করেছিলেন?
আমি ১৯২৭ সালে ইংল্যান্ডের শেফিল্ডে জন্মগ্রহণ করি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমাদের বাড়ি বোমায় বিধ্বস্ত হয় আর তাই আমাকে আমার দিদিমার সঙ্গে থাকার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে আমি স্কুলের পড়াশোনা শেষ করি। আমি যে-কনভেন্ট স্কুলে পড়তাম, সেখানে নানদের আমি সবসময় জিজ্ঞেস করতাম যে, কেন এত মন্দতা ও দৌরাত্ম্য রয়েছে। তারা কিংবা অন্যান্য ধর্মপ্রাণ লোক, যাদের কাছে আমি প্রশ্ন করতাম, তাদের কেউই আমাকে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, আমি একজন নার্স হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। আমি প্যাডিংটন জেনারেল হসপিটাল-এ কাজ করার জন্য লন্ডন চলে যাই, কিন্তু শহরে আমি আরও বেশি দৌরাত্ম্য দেখতে পাই। আমার ভাই কোরিয়ান যুদ্ধে যাওয়ার পর পরই আমি আমাদের হাসপাতালের ঠিক বাইরেই ভীষণ মারামারি হতে দেখি। যে-ব্যক্তি মার খাওয়ার ফলে সঙ্গেসঙ্গে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তাকে কেউই সাহায্য করেনি। সেই সময়ে, আমি আমার মার সঙ্গে এমন সভাগুলোতে যেতাম, যেখানে লোকেরা মাধ্যমের সাহায্যে মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করত, কিন্তু তখনও পর্যন্ত আমি বুঝতে পারিনি যে, কেন এত দুষ্টতা রয়েছে।
বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য উৎসাহিত করা হয়
একদিন আমার সবচেয়ে বড় দাদা জন আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন, যিনি একজন যিহোবার সাক্ষি হয়েছিলেন। “তুমি কি জানো কেন এইসমস্ত মন্দ বিষয় ঘটছে?” তিনি জিজ্ঞেস করেন। “না,” আমি উত্তর দিই। তিনি তার বাইবেল খোলেন এবং প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-১২ পদ পড়েন। তখন আমি বুঝতে পারি যে, জগতের মন্দতার জন্য মূলত শয়তান ও তার মন্দ দূতেরা দায়ী। তাই, জন দাদার পরামর্শ মেনে নিয়ে আমি শীঘ্র বাইবেল অধ্যয়নের প্রস্তাব গ্রহণ করি। কিন্তু, সেই সময়ে লোকভয়ের কারণে আমি বাপ্তিস্ম নেওয়া থেকে পিছিয়ে যাই।—হিতো. ২৯:২৫.
আমার দিদি ডরথিও একজন সাক্ষি হন। তিনি যখন নিউ ইয়র্কের আন্তর্জাতিক সম্মেলন (১৯৫৩) থেকে তার হবু বর বিল রবার্টসের সঙ্গে ফিরে আসেন, তখন আমি তাদের বলি যে, আমি বাইবেল অধ্যয়ন করতাম। আমার দাদাবাবু বিল আমাকে জিজ্ঞেস করেন: “তুমি কি সমস্ত শাস্ত্রপদ পরীক্ষা করে দেখেছ? তুমি কি বইয়ে দেওয়া উত্তরগুলোর নীচে দাগ দিয়েছ?” আমি যখন বলি যে, না, তখন তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: “তাহলে তুমি অধ্যয়নই করোনি! সেই বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করো এবং
আবারও শুরু করো!” সেই সময়েই মন্দদূতেরা আমাকে হয়রানি করতে শুরু করে। আমার মনে আছে যে, আমাকে সুরক্ষা করার ও তাদের প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য আমি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।স্কটল্যান্ড ও আয়ার্ল্যান্ডে অগ্রগামীর কাজ করা
আমি ১৯৫৪ সালের ১৬ জানুয়ারি বাপ্তিস্ম নিই, মে মাসে আমার নার্সিংয়ের চুক্তি শেষ হয় আর জুন মাসে আমি অগ্রগামীর কাজ শুরু করি। আট মাস পর, আমাকে একজন বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে স্কটল্যান্ডের গ্রেঞ্জমাউথে পাঠানো হয়। এই ধরনের এক বিচ্ছিন্ন কার্যভারে সেবা করার সময়ে আমি অনুভব করি যে, যিহোবার দূতেরা “চারিদিকে শিবির স্থাপন” করেছিল।—গীত. ৩৪:৭.
১৯৫৬ সালে আমাকে আয়ার্ল্যান্ডে সেবা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আরও দুজনের সঙ্গে আমাকে গল্ওয়ে শহরে কার্যভার দেওয়া হয়। একেবারে প্রথম দিনই আমার একজন যাজকের সঙ্গে দেখা হয়। কয়েক মিনিট পর, একজন পুলিশ আসেন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গীকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যান। আমাদের নাম ও ঠিকানা পাওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই তিনি টেলিফোনের কাছে যান। আমরা তাকে এই কথা বলতে শুনি, “হ্যাঁ ফাদার, তারা কোথায় থাকে, তা আমি জানি।” সেই যাজকই তাকে পাঠিয়েছিলেন! আমাদের বাড়িওয়ালাকে চাপ দেওয়া হয়, যাতে তিনি আমাদের উচ্ছেদ করেন আর তাই শাখা অফিস আমাদেরকে সেই জায়গা ছেড়ে আসতে পরামর্শ দেয়। রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাতে আমাদের দশ মিনিট দেরি হয়ে যায়। কিন্তু তখনও পর্যন্ত ট্রেন ছাড়েনি আর আমরা ট্রেনে চড়ি কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। গল্ওয়েতে থাকার মাত্র তিন সপ্তাহ পরই এই ঘটনা ঘটেছিল!
আমাদেরকে লিমারিক নামে আরেকটা শহরে কার্যভার দেওয়া হয়, যেখানে ক্যাথলিক চার্চ-এর দুর্দান্ত প্রতাপ ছিল। উচ্ছৃঙ্খল জনতা সবসময় আমাদেরকে উপহাস করত। অনেক লোক তাদের ঘরের দরজা খুলতে ভয় পেত। এর এক বছর আগে, কাছাকাছি এক ছোট্ট শহর ক্লুনলারায় একজন ভাইকে মারধর করা হয়। তাই, শুরুতে উল্লেখিত ক্রিস্টোফারের সঙ্গে যখন আমাদের দেখা হয়, যিনি তার বাইবেল সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন আলোচনা করার জন্য আমাদেরকে তার কাছে ফিরে যেতে বলেন, তখন আমরা অনেক আনন্দিত হই। আমাদের সাক্ষাতের সময় একজন যাজক ভিতরে আসেন এবং ক্রিস্টোফারকে নির্দেশ দেন যেন তিনি আমাদের চলে যেতে বলেন। যাজকের কথা গ্রাহ্য না করে তিনি বলেন: “এই মহিলাদেরকে আমার ঘরে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল আর তারা ঘরে ঢোকার আগে দরজায় কড়া নেড়েছিল। আপনি আমন্ত্রিতও নন কিংবা দরজায় কড়া নেড়েও ঢোকেননি।” এই কথা শুনে রাগান্বিত হয়ে সেই যাজক চলে যান।
আমরা জানতাম না যে, সেই যাজক বিরাট একদল পুরুষকে জড়ো করেছে, যারা ক্রিস্টোফারের বাড়ির বাইরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা যে রেগে আছে, তা জানায় ক্রিস্টোফার শুরুতে বর্ণিত কাজ করেছিলেন। তারা চলে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি আমাদের আটকে রেখেছিলেন। পরে আমরা জানতে পারি যে, তাকে ও তার পরিবারকে সেই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল আর তারা ইংল্যান্ডে চলে গিয়েছিল।
গিলিয়েডে আমন্ত্রণ জানানো হয়
আমি যখন ৩৩তম গিলিয়েড ক্লাসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাই, তখন আমি ইতিমধ্যেই ১৯৫৮ সালে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত ঈশ্বরের ইচ্ছা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে ফেলেছি। সম্মেলনের পর বাড়িতে ফিরে আসার পরিবর্তে, আমি ১৯৫৯ সালে গিলিয়েড স্কুল শুরু হওয়ার আগে কানাডার অন্টারিওর কলিংউড শহরে সেবা করি। তবে সম্মেলন চলাকালীন, আমার সঙ্গে এরিক কনেলের পরিচয় হয়। সে ১৯৫৭ সালে সত্য শেখে এবং ১৯৫৮ সালে অগ্রগামীর কাজ শুরু করে। সম্মেলনের পর, আমি কানাডায় থাকাকালীন এবং গিলিয়েড কোর্সের সময় সে প্রতিদিন আমাকে চিঠি লিখত। আমি সেই সময় ভাবছিলাম যে, আমি গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর আমাদের কী হবে।
গিলিয়েডে যোগদান করা আমার জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল। ডরথি দিদি ও তার স্বামীও একই ক্লাসে ছিল। তাদের পর্তুগালে কার্যভার দেওয়া হয়। আমাকে অবাক করে দিয়ে, আয়ার্ল্যান্ডে কার্যভার দেওয়া হয়। আমার বোনের সঙ্গে যেতে না পেরে আমি কত হতাশই না হই! একজন নির্দেশককে আমি জিজ্ঞেস করি যে, আমি কোনো ভুল করেছি কি না। “না,” তিনি উত্তর দেন। “তুমি ও তোমার সঙ্গী আইলিন মাওনি বিশ্বের যেকোনো জায়গায় যাওয়ার জন্য রাজি ছিলে” আর আয়ার্ল্যান্ড নিশ্চিতভাবেই তার অন্তর্ভুক্ত।
আবারও আয়ার্ল্যান্ডে
১৯৫৯ সালের আগস্ট মাসে আমি আবারও আয়ার্ল্যান্ডে পৌঁছাই আর আমাকে ডান লেরা মণ্ডলীতে কার্যভার দেওয়া হয়। এরিক ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডে ফিরে আসে আর এটা শুনে খুবই
খুশি হয় যে আমি এত কাছে রয়েছি। সেও একজন মিশনারি হতে চায়। সে যুক্তি করেছিল, আয়ার্ল্যান্ড যেহেতু সেই সময়ে মিশনারিদের ক্ষেত্র ছিল, তাই সেখানেই সে অগ্রগামীর কাজ করবে। সে ডান লেরায় চলে আসে আর আমরা ১৯৬১ সালে বিয়ে করি।ছয় মাস পর, এরিকের এক গুরুতর মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটে। তার মাথা ফেটে যায় আর তাকে বাঁচানো যাবে কি না, সেই বিষয়ে ডাক্তাররা নিশ্চিত ছিল না। হাসপাতালে তিন সপ্তাহ কাটানোর পর, সে সুস্থ হওয়ার আগে পাঁচ মাস আমি বাড়িতে তার যত্ন নিই। আর আমি যতটা সম্ভব পরিচর্যা করে চলি।
১৯৬৫ সালে আমাদেরকে উত্তর-পশ্চিম উপকূলীয় বন্দরনগরী স্লাইগোর একটা মণ্ডলীতে কার্যভার দেওয়া হয়, যেখানে আট জন প্রকাশক ছিল। তিন বছর পর, আমরা আরও উত্তরে লন্ডনডেরির একটা ছোট্ট মণ্ডলীতে চলে যাই। একদিন প্রচার থেকে ফিরে আমরা দেখতে পাই যে, আমরা যেখানে থাকতাম, সেই রাস্তার মাঝখানে একটা কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের অশান্ত অবস্থা শুরু হয়ে যায়। উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শহরটা ইতিমধ্যেই প্রোটেস্টান্ট ও ক্যাথলিক এলাকায় বিভক্ত ছিল। শহরের একটা এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাওয়া বিপদজনক হয়ে পড়ে।
অশান্ত অবস্থার মধ্যেও বেঁচে থাকা ও সাক্ষ্যদান করা
কিন্তু, পরিচর্যার কারণে আমরা সমস্ত জায়গাতেই যাই। আবারও আমরা অনুভব করি যে, স্বর্গদূতেরা আমাদের চারদিকে শিবির স্থাপন করেছে। যখনই আমরা এমন এলাকাগুলোতে চলে যেতাম, যেখানে দাঙ্গা শুরু হয়েছে, তখন আমরা দ্রুত সেই এলাকা পরিত্যাগ করতাম আর পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার সেখানে ফিরে যেতাম। একবার যখন আমাদের আ্যপার্টমেন্টের কাছে দাঙ্গা শুরু হয়, তখন কাছাকাছি একটা রঙের দোকান থেকে জ্বলন্ত জিনিসপত্র আমাদের জানালার চৌকাঠে এসে পড়ে। আমাদের আ্যপার্টমেন্টের ব্লকে আগুন ধরে যায় কি না, সেই ভয়ে আমরা ঘুমাতে পারিনি। ১৯৭০ সালে বেলফাস্টে চলে যাওয়ার পর আমরা শুনতে পাই যে, একটা পেট্রল বোমার কারণে রঙের দোকানে আগুন ধরে যায় আর সেই সময়ে আমাদের আগের আ্যপার্টমেন্ট বিল্ডিং পুড়ে যায়।
আরেক বার একজন বোন ও আমি যখন প্রচারে ছিলাম, তখন একটা জানালার চৌকাঠে আমরা অদ্ভুত ধরনের একটা পাইপ লক্ষ করি। আমরা হেঁটে চলে যাই। কয়েক মিনিট পর সেটা বিস্ফোরিত হয়। স্থানীয় লোকেরা, যারা বাইরে বের হয়ে আসে, তারা মনে করে যে আমরা সেখানে পাইপ বোমা রেখেছি! ঠিক সেই সময়ই ওই এলাকায় বসবাসরত একজন বোন আমাদেরকে তার ঘরে আমন্ত্রণ জানান। এটা তার প্রতিবেশীদের প্রমাণ দেয় যে, আমরা নির্দোষ।
১৯৭১ সালে আমরা একজন বোনের সঙ্গে দেখা করার জন্য লন্ডনডেরিতে ফিরে আসি। আমরা যে-রাস্তা দিয়ে ও ব্যারিকেড অতিক্রম করে এসেছি, সেই বিষয়ে আমরা যখন বর্ণনা করি, তখন তিনি জিজ্ঞেস করেন, “ব্যারিকেডে কি কেউ ছিল না?” আমরা যখন বলি যে, “ছিল, তবে তারা আমাদের কিছু বলেনি,” তখন তিনি খুব অবাক হয়ে যান। কেন? কারণ কয়েক দিন আগে একজন ডাক্তারের ও একজন পুলিশের গাড়ি ছিনতাই করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
১৯৭২ সালে আমরা কর্ক শহরে চলে যাই। পরে আমরা নাস এবং তারপর আর্কলোতে সেবা করি। সবশেষে, ১৯৮৭ সালে আমাদের ক্যাসেলবারে কার্যভার দেওয়া হয়, যেখানে আমরা এখন রয়েছি। এখানে আমরা একটা কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করার এক চমৎকার সুযোগ পাই। ১৯৯৯ সালে এরিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু, যিহোবার সাহায্যে এবং মণ্ডলীর সমর্থনে আমি আবারও সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমর্থ হই এবং তার যত্ন নিয়ে তাকে সুস্থ করে তুলি।
এরিক ও আমি দু-বার অগ্রগামী পরিচর্যা বিদ্যালয়-এ যোগ দিয়েছি। সে এখনও একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করছে। আমি প্রচণ্ড বাতের ব্যথায় ভুগছি আর আমার হিপ এবং দুই হাঁটুই প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যদিও আমি তিক্ত ধর্মীয় বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছি এবং আমাকে চরম রাজনৈতিক ও সামাজিক অশান্ত অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়েছে কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, আমাকে ড্রাইভিং ছেড়ে দিতে হয়েছে। এটা একটা পরীক্ষা ছিল কারণ এটা আমার স্বাধীনতার অনেকটা কেড়ে নিয়েছে। মণ্ডলী অনেক সাহায্য করেছে, প্রচুর সমর্থন জুগিয়েছে। এখন আমি লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটি আর একটু দূরে গেলে আমি একটা ব্যাটারিচালিত ট্রাইসাইকেল ব্যবহার করি।
এরিক ও আমি দুজনে মিলে সর্বমোট ১০০ বছরেরও বেশি সময় বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করেছি আর এর মধ্যে ৯৮ বছর আয়ার্ল্যান্ডে। আমরা কখনো অবসর নেওয়ার কথা চিন্তা করিনি। আমরা অলৌকিক কাজগুলোর ওপর নির্ভর করে থাকি না কিন্তু বিশ্বাস করি যে, যারা যিহোবাকে ভয় করে ও তাঁকে বিশ্বস্তভাবে সেবা করে, শক্তিশালী স্বর্গদূতেরা তাদের “চারিদিকে শিবির স্থাপন” করে।