সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অবিবাহিত থাকার দানের মধ্যে যেভাবে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়

অবিবাহিত থাকার দানের মধ্যে যেভাবে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়

অবিবাহিত থাকার দানের মধ্যে যেভাবে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়

 “তারপর তাদের বিয়ে হল আর তারা সারাজীবন সুখেশান্তিতে বাস করতে লাগল।” এই ধরনের কথাগুলো দিয়ে ছোটোদের অনেক গল্প শেষ হয়ে থাকে। রোমান্টিক সিনেমা এবং উপন্যাসগুলো প্রায়ই একই ধরনের এক বার্তা প্রকাশ করে থাকে—সত্যিকারের সুখী হতে হলে আপনাকে বিয়ে করতে হবে! অধিকন্তু, বেশির ভাগ সংস্কৃতি বিবাহযোগ্য ব্যক্তিদেরকে বিয়ে করার জন্য অনেক চাপ দিয়ে থাকে। “লোকেরা আপনাকে এইরকম মনে করতে বাধ্য করবে যে, বিয়ে করাই হল একজন মেয়ের একমাত্র লক্ষ্য,” ডেবি নামে একটি মেয়ে বলেছিলেন, যখন তার বয়স ২০-এর কোঠার মাঝামাঝি ছিল। “তারা এই ধারণা প্রদান করে যে, বিয়ে করার পরই জীবন শুরু হয়।”

একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি এই ধরনের অযৌক্তিক নিয়মনীতি অনুসারে চলেন না। যদিও ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে বিয়ে করা একটা প্রথা ছিল, তবুও বাইবেল এমন অবিবাহিত পুরুষ ও নারীদের বিষয়ে বলে, যাদের জীবন খুবই পরিতৃপ্তিদায়ক ছিল। আজকে, কিছু খ্রিস্টান নিজেরাই অবিবাহিত জীবন বেছে নেয় আবার অন্যদিকে, অনেকে পরিস্থিতির কারণে অবিবাহিত থাকে। তাদের অবিবাহিত থাকার কারণ যা-ই হোক না কেন, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নটা রয়েই যায়: কীভাবে একজন খ্রিস্টান অবিবাহিত জীবনকে সফল করে তুলতে পারেন?

যিশু নিজে বিয়ে করেননি, যেটা তাঁকে যে-কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ যুক্তিসংগত। তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন যে, তাঁর অনুসারীদের মধ্যেও কেউ কেউ অবিবাহিত জীবন “গ্রহণ” করবে। (মথি ১৯:১০-১২) এভাবে যিশু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, অবিবাহিত জীবনকে সফল করতে হলে, এই ধরনের জীবনকে আমাদের মনেপ্রাণে মেনে নিতে বা গ্রহণ করতে হবে।

যিশুর পরামর্শ কি কেবলমাত্র এমন কারোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যিনি ঐশিক কার্যভারগুলোর প্রতি পুরোপুরি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে স্বেচ্ছায় সারাজীবনের জন্য অবিবাহিত থাকা বেছে নিয়েছেন? (১ করি. ৭:৩৪, ৩৫) নিশ্চয়ই না। এমন একজন খ্রিস্টানের বিষয়ে বিবেচনা করুন, যিনি হয়তো বিয়ে করতে চান কিন্তু বর্তমানে কোনো উপযুক্ত বিবাহসাথি খুঁজে পাচ্ছেন না। “সম্প্রতি একজন ন-সাক্ষি সহকর্মী অপ্রত্যাশিতভাবে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন,” একজন অবিবাহিত বোন আ্যনা বলেছিলেন, যার বয়স ৩০-এর কোঠায়। “যদিও আমি কিছুটা খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু সঙ্গেসঙ্গে আমি আমার অনুভূতিকে দমন করেছিলাম, কারণ আমি এমন একজনকে বিয়ে করতে চাই, যিনি আমাকে যিহোবার আরও নিকটবর্তী করবেন।”

“প্রভুতেই” বিয়ে করার আকাঙ্ক্ষা, আ্যনার মতো অনেক বোনকে একজন অবিশ্বাসীকে বিয়ে করা এড়াতে সাহায্য করে। * (১ করি. ৭:৩৯; ২ করি. ৬:১৪) ঈশ্বরের পরামর্শের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তারা অবিবাহিত জীবন গ্রহণ করে, অন্ততপক্ষে কিছু সময়ের জন্য। কীভাবে তারা সফলতার সঙ্গে তা করতে পারে?

ইতিবাচক দিক দেখতে শিখুন

আমাদের মনোভাব এমনকী সেই পরিস্থিতিকেও মেনে নিতে সাহায্য করতে পারে, যে-পরিস্থিতিটা আমাদের অনুকূল নয়। “আমার যা আছে, আমি তা উপভোগ করি আর আমার যা নেই, তা নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি না,” একজন অবিবাহিত বোন কারমেন বলেন, যার বয়স ৪০-এর কোঠায়। এটা ঠিক যে, কখনো কখনো আমরা হয়তো একাকী বা হতাশা বোধ করতে পারি। কিন্তু পৃথিবীতে সমগ্র ভ্রাতৃসমাজের মধ্যে অনেকেই যে একইরকম অভিজ্ঞতা লাভ করছে, তা জানা আমাদেরকে আস্থা সহকারে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে পারে। যিহোবা অনেক ব্যক্তিকে তাদের অবিবাহিত জীবনকে সফল করতে এবং অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছেন।—১ পিতর ৫:৯, ১০.

অনেক খ্রিস্টান ভাই ও বোন অবিবাহিত থাকার একটা ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছে। “আমার মনে হয় সুখের রহস্যটা হল, আপনি নিজেকে যেকোনো পরিস্থিতির মধ্যেই খুঁজে পান না কেন, তার ইতিবাচক দিকগুলোকে উপভোগ করতে পারা,” একজন অবিবাহিত বোন এস্টার বলেন, যার বয়স ৩০-এর কোঠায়। “আমি বিশ্বাস করি যে, আমি বিয়ে করি বা না করি, আমি যদি রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখি, তাহলে যিহোবা আমার মঙ্গল করা থেকে অস্বীকার করবেন না বা বিরত হবেন না,” কারমেন আরও বলেন। (গীত. ৮৪:১১) “আমি যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলাম, আমার জীবন হয়তো একেবারে সেইরকমই হয়নি কিন্তু আমি সুখী আর আমি সবসময়ই সুখী থাকব।”

অবিবাহিত থাকার বিষয়ে বাইবেলের উদাহরণগুলো

যিপ্তহের মেয়ে অবিবাহিত থাকার পরিকল্পনা করেননি। কিন্তু তার বাবার মানত তাকে তার যৌবনকাল থেকেই ধর্মধামে সেবা করতে বাধ্য করেছিল। নিঃসন্দেহে, এই অপ্রত্যাশিত কার্যভার তার নিজস্ব পরিকল্পনাগুলোকে বদলে দিয়েছিল এবং তার স্বাভাবিক অনুভূতির বিপরীত ছিল। যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি বিয়ে করতে পারবেন না আর তার কোনো পরিবার থাকবে না, তখন তিনি দু-মাস ধরে বিলাপ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি তার নতুন পরিস্থিতিকে মেনে নিয়েছিলেন এবং বাকি জীবন স্বেচ্ছায় সেবা করে কাটিয়েছিলেন। তার আত্মত্যাগমূলক মনোভাবের জন্য অন্যান্য ইস্রায়েলীয় নারীরা প্রতি বছর তার প্রশংসা করত।—বিচার. ১১:৩৬-৪০.

যিশাইয়ের সময়ে কেউ কেউ যারা নপুংসক ছিল, তারা হয়তো তাদের পরিস্থিতি সম্বন্ধে হতাশা বোধ করেছিল। বাইবেল তাদের নপুংসক হওয়ার কারণ সম্বন্ধে কিছু বলে না। প্রকৃত অর্থে, তারা পুরোপুরিভাবে ইস্রায়েলীয় সমাজের সদস্য হতে পারত না কিংবা তারা বিয়ে করতে বা সন্তানের বাবা হতে পারত না। (দ্বিতীয়. ২৩:১) তবুও, যিহোবা তাদের অনুভূতি বুঝেছিলেন আর তাই তাঁর চুক্তির প্রতি তাদের পূর্ণহৃদয়ের বাধ্যতার জন্য তিনি তাদের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি তাদের বলেছিলেন যে, তাঁর গৃহে তাদের জন্য একটা “উত্তম স্থান [“স্মারক,” বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন]” ও “অনন্তকালস্থায়ী নাম” থাকবে। অন্য কথায়, এই বিশ্বস্ত নপুংসকদের যিশুর মশীহ শাসনের অধীনে অনন্তজীবন উপভোগ করার নিশ্চিত আশা থাকবে। যিহোবা তাদের কখনোই ভুলে যাবেন না।—যিশা. ৫৬:৩-৫.

যিরমিয়ের পরিস্থিতি একেবারে আলাদা ছিল। যিরমিয়কে একজন ভাববাদী হিসেবে কার্যভার দেওয়ার পর, ঈশ্বর তাকে তিনি যে-সংকটপূর্ণ সময়ে বাস করতেন সেটার এবং তার কার্যভারের প্রকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে অবিবাহিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যিহোবা বলেছিলেন, “তুমি এই স্থানে বিবাহ করিও না, পুত্ত্রকন্যাদের জন্ম দিও না।” (যির. ১৬:১-৪) এই নির্দেশনাগুলো সম্বন্ধে যিরমিয়ের নিজস্ব অনুভূতির বিষয়ে বাইবেল কিছু প্রকাশ করে না, তবে এটি আমাদের আশ্বাস দেয় যে, তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি যিহোবার বাক্যে আনন্দ লাভ করতেন। (যির. ১৫:১৬) পরের বছরগুলোতে, যিরমিয় যখন যিরূশালেমের অবরোধের সময়ে ১৮ মাস ভয়ানক কষ্ট সহ্য করেছিলেন, তখন নিঃসন্দেহে তিনি অবিবাহিত থাকার বিষয়ে যিহোবার আদেশের বাধ্য হওয়ার মধ্যে প্রজ্ঞা দেখতে পেয়েছিলেন।—বিলাপ ৪:৪, ১০.

আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করার উপায়গুলো

ওপরে উল্লেখিত বাইবেলের চরিত্রগুলো অবিবাহিত ছিল, কিন্তু তারা যিহোবার সমর্থন উপভোগ করেছিল এবং নিজেদেরকে তাঁর সেবায় বিলিয়ে দিয়েছিল। একইভাবে আজকেও, অর্থপূর্ণ কাজকর্ম আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখতে পারে। বাইবেল ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিল যে, সুসমাচারের প্রচারিকাগণ মহাবাহিনী হয়ে উঠবে। (গীত. ৬৮:১১) এই দলগুলোর মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার অবিবাহিত বোন। তাদের পরিচর্যার উৎপাদিত ফল স্বরূপ, অনেকে আধ্যাত্মিক ছেলে-মেয়ের দ্বারা আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছে।—মার্ক ১০:২৯, ৩০; ১ থিষল. ২:৭, ৮.

“অগ্রগামীর কাজ আমাকে জীবনে চলার পথ দেখায়,” ১৪ বছর এইরকম পরিচর্যা করার পর ললি বলেন। “একজন অবিবাহিত বোন হিসেবে আমি এক ব্যস্ত, সক্রিয় জীবনযাপন করি, যা আমাকে একাকীত্ব এড়াতে সাহায্য করে। প্রতিটা দিনের শেষে আমি নিজেকে পরিতৃপ্ত বলে মনে করি কারণ আমি দেখতে পাই যে, আমার পরিচর্যা লোকেদেরকে প্রকৃতই সাহায্য করে। এটা আমাকে খুব আনন্দ দেয়।”

অনেক বোন নতুন কোনো ভাষা শিখতে পেরেছে আর বিদেশিভাষী লোকেদের কাছে প্রচার করার দ্বারা তাদের পরিচর্যাকে প্রসারিত করেছে। “আমি যে-শহরে বাস করি, সেখানে হাজার হাজার বিদেশি রয়েছে,” পূর্বে উল্লেখিত আ্যনা মন্তব্য করেন। তিনি ফ্রেঞ্চভাষী লোকেদের কাছে প্রচার করা উপভোগ করেন। “তাদের অনেকের সঙ্গে কথাবার্তা বলার জন্য ব্যবহার করা যায় এমন একটা ভাষা শেখা, কাজের এক নতুন ক্ষেত্র খুলে দিয়েছে এবং আমার প্রচার কাজকে খুবই আগ্রহজনক করে তুলেছে।”

যেহেতু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, অবিবাহিত থাকার অর্থ অপেক্ষাকৃত কম দায়দায়িত্ব থাকা, তাই কেউ কেউ যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করার জন্য তাদের পরিস্থিতির সদ্‌ব্যবহার করেছে। “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, যিহোবার সেবায় আপনি যত বেশি করবেন, নতুন নতুন বন্ধু পাওয়া ও অন্যেরা যে আপনাকে ভালোবাসে তা অনুভব করা, তত সহজ হবে,” লিডিয়ানা বলেন, যার বয়স ৩০-এর কোঠায় এবং যিনি অন্যান্য দেশে যেখানে বেশি প্রয়োজন রয়েছে সেখানে সেবা করেছিলেন। “আমি বিভিন্ন পটভূমি এবং জাতি থেকে আসা লোকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি আর এই বন্ধুত্ব আমার জীবনকে খুবই সমৃদ্ধ করেছে।”

বাইবেল সুসমাচার প্রচারক ফিলিপ সম্বন্ধে বলে, যার চার জন অবিবাহিত মেয়ে ছিল, যারা ভাববাণী বলত। (প্রেরিত ২১:৮, ৯) তাদেরও নিশ্চয়ই তাদের বাবার মতো উদ্যোগী মনোভাব ছিল। তারা কি তাদের ভাববাণী বলার বর বা দানকে কৈসরিয়ার সহখ্রিস্টানদের উপকারের জন্য ব্যবহার করেছিল? (১ করি. ১৪:১,) বর্তমানে অনেক অবিবাহিত বোন খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে নিয়মিত যোগ দেওয়ার এবং অংশগ্রহণ করার দ্বারা একইভাবে অন্যদেরকে গড়ে তোলে।

অন্যদিকে, ফিলিপীর লুদিয়া ছিলেন একজন প্রাথমিক খ্রিস্টান, যাকে বাইবেল তার আতিথেয়তার জন্য প্রশংসা করে। (প্রেরিত ১৬:১৪, ১৫, ৪০) লুদিয়া, যিনি সম্ভবত একজন অবিবাহিত অথবা বিধবা মহিলা ছিলেন, তার উদার মনোভাবের ফলে তিনি পৌল, সীল এবং লূকের মতো ভ্রমণ অধ্যক্ষদের সঙ্গে আনন্দদায়ক মেলামেশা উপভোগ করতে পেরেছিলেন। এই ধরনের মনোভাব বজায় রাখা আজকের দিনেও একই আশীর্বাদগুলো নিয়ে আসে।

ভালোবাসা পাওয়ার চাহিদাকে পূরণ করা

আমাদের জীবনকে ভরিয়ে রাখার জন্য অর্থপূর্ণ কাজ থাকা ছাড়াও, আমাদের সকলেরই ভালোবাসা এবং স্নেহ পাওয়ার চাহিদা রয়েছে। অবিবাহিত লোকেরা কীভাবে এই চাহিদাকে পূরণ করতে পারে? প্রথমত, যিহোবা সবসময়ই আমাদের ভালোবাসেন, শক্তিশালী করেন আর আমাদের কথা শোনেন। রাজা দায়ূদ কখনো কখনো “একাকী ও দুঃখী” বোধ করতেন, কিন্তু তবুও তিনি জানতেন যে, সমর্থনের জন্য তিনি সবসময় যিহোবার শরণাপন্ন হতে পারেন। (গীত. ২৫:১৬; ৫৫:২২) “আমার পিতামাতা আমাকে ত্যাগ করিয়াছেন, কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে তুলিয়া লইবেন,” তিনি লিখেছিলেন। (গীত. ২৭:১০) ঈশ্বর তাঁর সমস্ত দাসকে তাঁর নিকটবর্তী হতে, তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু হতে আমন্ত্রণ জানান।—গীত. ২৫:১৪; যাকোব ২:২৩; ৪:৮.

অধিকন্তু, বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃসমাজের মধ্যে আমরা আধ্যাত্মিক বাবা, মা, ভাই ও বোনদেরও খুঁজে পেতে পারি, যাদের প্রেম আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। (মথি ১৯:২৯; ১ পিতর ২:১৭) অনেক অবিবাহিত খ্রিস্টান দর্কার উদাহরণ অনুসরণ করে অনেক পরিতৃপ্তি লাভ করে থাকে, যিনি “নানা সৎক্রিয়া ও দানকার্য্যে ব্যাপৃতা ছিলেন।” (প্রেরিত ৯:৩৬, ৩৯) “যেখানেই যাই না কেন, আমি মণ্ডলীর মধ্যে প্রকৃত বন্ধুদের খুঁজে থাকি, আমি হতাশ হয়ে পড়লে যারা আমাকে ভালোবাসবে ও সমর্থন করবে,” ললি ব্যাখ্যা করেন। “এই ধরনের বন্ধুত্বকে দৃঢ় করার জন্য আমি অন্যদের প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহ দেখানোর চেষ্টা করি। আমি আটটা মণ্ডলীতে সেবা করেছি আর সবসময়ই সত্যিকারের বন্ধুদের খুঁজে পেয়েছি। প্রায়ই তারা আমার সমবয়সি বোন নয়—কখনো কখনো তারা ঠাকুরমার বয়সি অথবা কিশোর বয়সি।” প্রতিটা মণ্ডলীতেই এমন ব্যক্তিরা রয়েছে, যাদের স্নেহ এবং সাহচর্যের প্রয়োজন। এইরকম ব্যক্তিদের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ দেখানো হলে তা তাদের জন্য এক বিরাট সাহায্য হতে পারে এবং অন্যদেরকে ভালোবাসার ও অন্যদের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমাদের নিজেদের যে-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, সেটাকে পূরণ করতে পারে।—লূক ৬:৩৮.

ঈশ্বর ভুলে যাবেন না

বাইবেল ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা যে-কঠিন সময়ে বাস করছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত খ্রিস্টানকেই কিছুটা ত্যাগস্বীকার করতে হবে। (১ করি. ৭:২৯-৩১) যারা একমাত্র প্রভুতেই বিয়ে করার বিষয়ে ঐশিক আদেশের প্রতি বাধ্য থাকার দৃঢ়সংকল্পের জন্য অবিবাহিত থাকে, তারা বিশেষ সম্মান ও বিবেচনা পাওয়ার যোগ্য। (মথি ১৯:১২) কিন্তু প্রশংসনীয় এই ত্যাগস্বীকারের অর্থ এই নয় যে, তারা জীবনকে পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করতে পারবে না।

“আমার এক পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন রয়েছে, যা যিহোবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক এবং তাঁর প্রতি আমার সেবার ওপর নির্ভর করে,” লিডিয়ানা বলেন। “আমি এমন বিবাহিত ব্যক্তিদের চিনি যারা সুখী আবার এমন ব্যক্তিদেরও চিনি, যারা সুখী নয়। এই বাস্তব বিষয়টা আমাকে এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী করে যে, আমি ভবিষ্যতে বিয়ে করি বা না করি, সেটার ওপর আমার সুখ নির্ভর করে না।” যিশু যেমন উল্লেখ করেছিলেন, ‘সুখ’ নির্ভর করে মূলত দান করা এবং সেবা করার ওপর, এমন কিছু যা সমস্ত খ্রিস্টানই করতে পারে।—যোহন ১৩:১৪-১৬, ১৭, NW; প্রেরিত ২০:৩৫, NW.

নিঃসন্দেহে, আমাদের আনন্দের সবচেয়ে বড়ো কারণ হল এই বিষয়টা জানা যে, তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য আমরা যেকোনো ত্যাগস্বীকারই করি না কেন, যিহোবা আমাদের আশীর্বাদ করবেন। বাইবেল আমাদের আশ্বাস দেয়: “ঈশ্বর অন্যায়কারী নহেন; তোমাদের কার্য্য, এবং . . . তাঁহার নামের প্রতি প্রদর্শিত তোমাদের প্রেম, এই সকল তিনি ভুলিয়া যাইবেন না।”—ইব্রীয় ৬:১০.

[পাদটীকা]

^ যদিও আমরা এখানে খ্রিস্টান বোনদের বিষয়ে কথা বলছি কিন্তু নীতিগুলো ভাইদের প্রতিও প্রযোজ্য।

[২৫ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“আমার যা আছে, আমি তা উপভোগ করি আর আমার যা নেই, তা নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি না।”—কারমেন

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

ললি ও লিডিয়ানা যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করা উপভোগ করে

[২৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

ঈশ্বর তাঁর সমস্ত দাসকে তাঁর নিকটবর্তী হতে আমন্ত্রণ জানান