সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনার সন্তানদেরকে তাদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করতে সাহায্য করুন

আপনার সন্তানদেরকে তাদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করতে সাহায্য করুন

আপনার সন্তানদেরকে তাদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করতে সাহায্য করুন

আমাদের অল্পবয়সিরা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। তারা শয়তানের দুষ্ট জগতের আত্মার প্রভাবাধীনে রয়েছে আর তাদেরকে ‘যৌবনকালের অভিলাষের’ সঙ্গে লড়াই করতে হয়। (২ তীম. ২:২২; ১ যোহন ৫:১৯) অধিকন্তু, যেহেতু তারা ‘আপন সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করিবার জন্য’ কঠোর প্রচেষ্টা করে, তাই তাদেরকে সেইসব লোকেদের উপহাসের—এমনকী হয়রানির—সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়, যারা তাদের বিশ্বাসের বিরোধিতা করে। (উপ. ১২:১) ভিনসেন্ট নামে একজন ভাই তার ছেলেবেলার কথা স্মরণ করে বলেন: “আমি একজন সাক্ষি ছিলাম বলে সবসময়ই কেউ না কেউ আমাকে হয়রানি করত, উৎপীড়ন করত কিংবা গায়ে পড়ে ঝগড়া বাঁধাতো। অনেক সময় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ পর্যায়ে চলে যেত যে, আমি স্কুলে যেতে চাইতাম না।” *

জগতের চাপ ছাড়াও আমাদের ছেলে বা মেয়েদের হয়তো তাদের সঙ্গীসাথিদের মতো হয়ে ওঠার ব্যাপারে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। ক্যাথলিন নামে ১৬ বছর বয়সি একজন বোন বলে, “নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা দেখানো সবসময় সহজ নয়।” অ্যালেন নামে একজন অল্পবয়সি ভাই স্বীকার করে, “সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে প্রায়ই আমি আমার স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেতাম আর সত্যি সত্যি আমি যেতে চাইতাম।” এ ছাড়া, স্কুলের খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে অল্পবয়সিদের আকাঙ্ক্ষা খুবই তীব্র হতে পারে, যা সহজেই কুসংসর্গের দিকে পরিচালিত করতে পারে। “আমি খেলাধুলা অনেক পছন্দ করি,” তানিয়া নামে একজন অল্পবয়সি বোন বলে। “স্কুলের কোচরা সবসময় আমাকে স্কুলের টিমে নিতে চাইত। আর তাদেরকে না বলা কঠিন ছিল।”

কীভাবে আপনারা আপনাদের সন্তাদেরকে তাদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করার জন্য সাহায্য করতে পারেন? যিহোবা বাবা-মাদেরকে সন্তানদের নির্দেশনা দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। (হিতো. ২২:৬; ইফি. ৬:৪) ঈশ্বরভয়শীল বাবা-মাদের লক্ষ্য হল, সন্তানদের হৃদয়ে যিহোবার প্রতি বাধ্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা গড়ে তোলা। (হিতো. ৬:২০-২৩) এর ফলে, সন্তানরা জগতের চাপগুলো প্রতিরোধ করার প্রেরণা লাভ করবে, এমনকী সেই সময়েও যখন তাদের বাবা-মা তাদের সঙ্গে থাকে না।

বাবা-মাদের জন্য জীবিকার্জন করা, পরিবারের প্রতিপালন করা এবং মণ্ডলীর কাজকর্ম দেখাশোনা করা—আর এগুলো একইসময়ে করা—হল এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কাউকে কাউকে আবার এই কাজগুলো একজন একক বাবা অথবা মা হিসেবে অথবা অবিশ্বাসী সাথির কাছ থেকে বিরোধিতার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও করে যেতে হয়। তবুও, যিহোবা চান যে, বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার ও সাহায্য করার জন্য সময় আলাদা করে রাখে। তাই, আপনাদের সন্তানরা প্রতিদিন যেসমস্ত সঙ্গীসাথিদের চাপ, বিভিন্ন প্রলোভন এবং হয়রানির মুখোমুখি হয়, সেগুলো থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য আপনি কী করতে পারেন?

যিহোবার সঙ্গে এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক

সর্বপ্রথম, আমাদের সন্তানদের যিহোবাকে একজন বাস্তব ব্যক্তি হিসেবে জানতে হবে। ‘যিনি অদৃশ্য, তাঁহাকে দেখিবার’ জন্য তাদেরকে সাহায্য করা প্রয়োজন। (ইব্রীয় ১১:২৭) ভিনসেন্ট, যার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি স্মরণ করেন যে, কীভাবে তার বাবা-মা তাকে যিহোবার সঙ্গে এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। তিনি বলেন: “তারা আমাকে প্রার্থনার গুরুত্ব সম্বন্ধে শিখিয়েছিল। আমার মনে আছে যে, একেবারে ছোটো থেকেই আমি প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করতাম। যিহোবা আমার কাছে বাস্তব ছিলেন।” আপনারা কি আপনাদের সন্তানদের নিয়ে প্রার্থনা করেন? তারা তাদের ব্যক্তিগত প্রার্থনায় যিহোবাকে কী বলে, তা শুনুন না কেন? তারা কি একই কথা বার বার বলে থাকে? নাকি যিহোবা সম্বন্ধে তারা প্রকৃতপক্ষে যেরকম অনুভব করে, তা তারা তাদের প্রার্থনায় প্রকাশ করে? তাদের প্রার্থনা শোনার দ্বারা আপনারা হয়তো তাদের আধ্যাত্মিক অগ্রগতি নির্ণয় করতে পারবেন।

অল্পবয়সিদের জন্য যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার আরেকটা উপায় হল, ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের বাক্য পড়া। ক্যাথলিন, যার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বলে: “ছোটোবেলায় বাইবেল পড়া আমাকে সাহায্য করেছে। এটা আমাকে এই আস্থা প্রদান করেছে যে, এমনকী লোকেরা আমার বিরুদ্ধে গেলেও আমার প্রতি যিহোবার সমর্থন রয়েছে।” আপনার সন্তানদের কি ব্যক্তিগত বাইবেল পাঠের তালিকা রয়েছে?—গীত. ১:১-৩; ৭৭:১২.

এটা ঠিক যে, বাবা-মায়ের নির্দেশনার প্রতি সন্তানরা বিভিন্নরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। এ ছাড়া, তাদের আধ্যাত্মিক অগ্রগতি তাদের বয়সের ওপরও নির্ভর করতে পারে। তবে, নির্দেশনা ছাড়া অল্পবয়সিদের জন্য যিহোবাকে বাস্তব ব্যক্তি হিসেবে জানা কঠিন হবে। বাবা-মাদেরকে তাদের সন্তানদের হৃদয়ে ঈশ্বরের বাক্য গেঁথে দিতে হবে, যাতে তারা যেখানেই থাকুক না কেন, যেন এইরকম অনুভব করে যে, যিহোবা তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। (দ্বিতীয়. ৬:৬-৯) যিহোবা যে ব্যক্তিগতভাবে তাদের যত্ন নেন, তা আপনার সন্তানদের বিশ্বাস করতে হবে।

ভাববিনিময়—যেভাবে এটাকে অর্থপূর্ণ করে তোলা যায়

ভাববিনিময় হল আপনার সন্তানদের সাহায্য করার আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ উপায়। অবশ্য, উত্তম ভাববিনিময় বলতে আপনার সন্তানদের সঙ্গে শুধুমাত্র কথা বলা ছাড়াও আরও বেশি কিছুকে বোঝায়। এর অন্তর্ভুক্ত হল তাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা আর ধৈর্য ধরে তাদের উত্তরগুলো শোনা—এমনকী সেই উত্তরগুলো যদি আপনার মনের মতো না-ও হয়। “যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি বুঝতে পারি যে, তারা কী ভাবছে এবং তারা তাদের জীবনে কোন বিষয়গুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে থাকি,” দুই ছেলের মা অ্যান বলেন। আপনার সন্তানরা কি অনুভব করে যে, তারা যখন কথা বলে, তখন আপনি সত্যিই তা শোনেন? তানিয়া, যার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বলে: “আমার বাবা-মা সত্যিই আমার কথা শুনত এবং আমরা যে-বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতাম, সেগুলো মনে রাখত। তারা আমার সহপাঠীদের নাম জানত। তারা তাদের সম্বন্ধে এবং আগে আমরা যে-পরিস্থিতিগুলো নিয়ে কথা বলেছি, সেগুলো সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করত।” সফল ভাববিনিময় করার জন্য শোনা ও মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক পরিবার দেখেছে যে, খাওয়ার সময়টা অর্থপূর্ণ ভাববিনিময় করার উত্তম সুযোগ প্রদান করে। “আমাদের পরিবারে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল,” ভিনসেন্ট ব্যাখ্যা করেন। “আমাদের কাছ থেকে আশা করা হতো যে, যখনই সম্ভব আমরা পরিবারগতভাবে টেবিলে একত্রিত হব। খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখার, রেডিও শোনার বা পড়ার অনুমতি ছিল না। যেহেতু অধিকাংশ সময়ই সাধারণ কথাবার্তা হতো, তাই তা প্রতিদিন শান্ত পরিবেশ প্রদান করত, যা আমাকে স্কুলে আমি যে-বিশৃঙ্খলা ও চাপের মুখোমুখি হতাম, সেগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করত।” তিনি আরও বলেন: “খাওয়ার সময় আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলার অভ্যাস থাকা আমাকে সেই সময়ও তাদের সঙ্গে স্বচ্ছন্দে কথা বলতে সাহায্য করেছে, যখন আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমার সাহায্যের দরকার ছিল।”

নিজেদের জিজ্ঞেস করুন, ‘প্রতি সপ্তাহে কত বার আমরা পরিবারগতভাবে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করি?’ এই ক্ষেত্রটাতে রদবদল করা কি আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে আরও বেশি এবং উত্তম ভাববিনিময় করার সুযোগ করে দেবে?

যে-কারণে মহড়া পর্বগুলো অত্যন্ত মূল্যবান

সাপ্তাহিক পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যাও অর্থপূর্ণ ভাববিনিময় করতে উৎসাহিত করে আর অল্পবয়সিদেরকে নির্দিষ্ট সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। অ্যালেন, যার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বলে: “আমার বাবা-মা পারিবারিক অধ্যয়নের সময়টাকে আমাদের মনের কথা বের করে আনার জন্য ব্যবহার করত। তারা এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করত, যেগুলো আমরা যে-বিষয়গুলোর মুখোমুখি হচ্ছিলাম, সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল।” অ্যালেনের মা বলেন: “অধ্যয়নের কিছুটা সময় আমরা মহড়া পর্বগুলোর জন্য ব্যয় করতাম। এই মহড়া পর্বগুলো আমাদের সন্তানদেরকে তাদের বিশ্বাসের পক্ষ সমর্থন করতে এবং তারা যা বিশ্বাস করে, সেটাকে সত্য বলে প্রমাণ করতে সাহায্য করেছিল। এটা তাদেরকে, তাদের পথে আসা বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় আস্থা জুগিয়েছিল।”

প্রকৃতপক্ষে, সঙ্গীসাথিদের চাপের মুখোমুখি হলে, সন্তানদের শুধুমাত্র না বলে চলে যাওয়ার চাইতেও আরও বেশি কিছু করতে হবে। তাদের এই ধরনের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারা দরকার যেমন, কেন এবং কেন নয়। এ ছাড়া, তাদের বিশ্বাসের জন্য উপহাস করা হলে কী করতে হবে, সেই বিষয়েও তাদের আস্থাশীল হওয়া দরকার। তারা যদি তাদের বিশ্বাসের পক্ষ সমর্থন করতে না পারে, তাহলে সত্য উপসনার পক্ষে এক দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া তাদের জন্য কঠিন হবে। মহড়া পর্বগুলো সেই আস্থা গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করতে পারে।

১৮ পৃষ্ঠার বাক্সে কিছু দৃশ্যপট তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে, যেগুলোকে আপনার পারিবারিক উপসনার সন্ধ্যায় অভিনয় করে দেখানো যেতে পারে। আপনার সন্তানরা যে-উত্তরগুলো দেয়, সেগুলোতে আপত্তি জানানোর দ্বারা এই মহড়া পর্বগুলোকে বাস্তবসম্মত করে তুলুন। এই ধরনের মহড়া পর্বের সঙ্গে বাইবেলের যে-উদাহরণগুলো ব্যবহারিক শিক্ষা দেয়, সেগুলো বিবেচনা করুন। কোনো সন্দেহ নেই যে, বাড়িতে দেওয়া এই ধরনের প্রশিক্ষণ আপনার সন্তানদের স্কুলে ও অন্যান্য জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে সজ্জিত করবে।

ঘর—এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল?

আপনার ঘর কি এমন এক জাগয়া, যেখানে আপনার সন্তানরা প্রতিদিন স্কুলের পর ফিরে আসতে চায়? যদি এটা এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়, তাহলে তা আপনার সন্তানদেরকে তাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হতে সাহায্য করবে। এক বিবাহিত বোন, যিনি এখন বেথেল পরিবারের একজন সদস্য, তিনি বলেন: “আমি বড়ো হয়ে ওঠার সময়, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটা ছিল, আমাদের ঘর হল এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল। স্কুলের পরিস্থিতি যতই খারাপ থাকুক না কেন, আমি জানতাম যে, ঘরে ফিরে আসলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।” আপনার ঘরের পরিবেশ কেমন? এটা কি এমন এক জায়গা, যেখানে “রাগ, প্রতিযোগিতা [এবং] বিচ্ছিন্নতা” সাধারণ ব্যাপার, নাকি এটা ‘প্রেম, আনন্দ এবং শান্তির’ জন্য পরিচিত? (গালা. ৫:১৯-২৩) যদি প্রায়ই শান্তি বিঘ্নিত হয়, তাহলে আপনি কি এটা জানার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন যে, আপনার সন্তানদের জন্য ঘরকে এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে তুলতে কোন রদবদলগুলো করা প্রয়োজন?

আপনার সন্তানদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করতে সাহায্য করার আরেকটা উপায় হল, তাদেরকে গঠনমূলক সাহচর্য প্রদান করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি মণ্ডলীর কিছু আধ্যাত্মিকমনা ভাই ও বোনকে আপনার পরিবারের বিনোদনমূলক কাজে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন? অথবা আপনি কি ভ্রমণ অধ্যক্ষ বা পূর্ণসময়ের সেবায় রত রয়েছে এমন অন্যান্য ভাইবোনকে আপনার বাড়িতে খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারেন? আপনি কি এমন কোনো মিশনারি বা বেথেলকর্মীকে চেনেন, যার সঙ্গে আপনার সন্তানরা বন্ধুত্ব করতে পারে আর এমনকী যদি তা শুধুমাত্র চিঠি, ই-মেল বা মাঝেমধ্যে ফোন করেও হয়? এই ধরনের সম্পর্ক আপনার সন্তানদেরকে তাদের পাদবিক্ষেপ স্থির করতে এবং আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলো স্থাপন করার জন্য সাহায্য করতে পারে। অল্পবয়সি তীমথিয়ের ওপর প্রেরিত পৌল যে-উত্তম প্রভাব ফেলেছিলেন, তা চিন্তা করে দেখুন। (১ তীম. ১:১৩; ৩:১০) পৌলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তীমথিয়কে আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে সাহায্য করেছিল।—১ করি. ৪:১৭.

আপনার সন্তানদের প্রশংসা করুন

শয়তানের জগৎ থেকে আসা চাপ সত্ত্বেও, অল্পবয়সিরা যা সঠিক সেটার পক্ষ নেয় দেখে যিহোবা খুশি হন। (গীত. ১৪৭:১১; হিতো. ২৭:১১) কোনো সন্দেহ নেই যে, আমাদের অল্পবয়সিরা বিজ্ঞ পথ বেছে নেয় দেখে আপনিও আনন্দিত হন। (হিতো. ১০:১) আপনি আপনার সন্তানদের সম্বন্ধে কেমন বোধ করেন, সেটা তাদের জানান এবং মন খুলে প্রেমের সঙ্গে তাদের প্রশংসা করুন। বাবা-মাদের জন্য যিহোবা এক উত্তম উদাহরণ রেখেছেন। যিশুর বাপ্তিস্মের সময় যিহোবা বলেছিলেন: “তুমিই আমার প্রিয় পুত্ত্র, তোমাতেই আমি প্রীত।” (মার্ক ১:১১) তাঁর পিতার দেওয়া আশ্বাস যিশুকে আসন্ন বহু প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে কতই না শক্তি জুগিয়েছিল! একইভাবে, আপনার সন্তানদের বলুন যে, আপনি তাদের ভালোবাসেন এবং তারা যা-কিছু সম্পাদন করছে, সেগুলোর প্রতি উপলব্ধি দেখান।

এটা ঠিক যে, আপনি আপনার সন্তানদের পুরোপুরিভাবে বিভিন্ন চাপ, হয়রানি ও উপহাস থেকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারবেন না। তবুও, তাদের সাহায্য করার জন্য আপনি অনেক কিছু করতে পারেন। কোন কোন উপায়ে? যিহোবার সঙ্গে এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তাদের সাহায্য করুন। অর্থপূর্ণ আলোচনার এক পরিবেশ সৃষ্টি করুন। পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যাকে বাস্তব করে তুলুন এবং আপনার ঘরকে এক নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত করুন। কোনো সন্দেহ নেই যে, তা করা আপনার সন্তানদেরকে তাদের সামনে আসা বহু প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মোকাবিলা করতে সজ্জিত করবে।

[পাদটীকা]

^ এই প্রবন্ধে কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[১৮ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

মহড়া পর্বগুলো সাহায্য করতে পারে

এখানে কিছু পরিস্থিতির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, যেগুলোর মুখোমুখি আমাদের অল্পবয়সিরা হয়ে থাকে। আপনার পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যাগুলোতে এই দৃশ্যপটগুলোর কয়েকটা মহড়া করে দেখুন না কেন?

▸ একজন কোচ আপনার মেয়েকে স্কুলের টিমে যোগ দিতে বলেন।

▸ স্কুল থেকে ফেরার পথে আপনার ছেলেকে কেউ সিগারেট খেতে আমন্ত্রণ জানায়।

▸ কিছু ছেলে হুমকি দেয় যে, তারা যদি আপনার ছেলেকে আবার প্রচার করতে দেখে, তাহলে তারা তাকে মারধর করবে।

▸ আপনার মেয়ে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় ঘরে ঘরে কাজ করার সময় একজন সহপাঠীকে পায়।

▸ পুরো ক্লাসের সামনে আপনার মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, কেন সে পতাকা অভিবাদন করে না।

▸ আপনার ছেলে সাক্ষি বলে একটা ছেলে সবসময় তাকে উপহাস করে।

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনার সন্তানদের কি ব্যক্তিগত বাইবেল পাঠের তালিকা রয়েছে?

[১৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনি কি আপনার বিনোদনমূলক কার্যক্রমগুলোতে আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেন?