সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস”

“আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস”

“আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস”

“আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস। . . . যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক।”—প্রকা. ২২:১৭.

১, ২. রাজ্যের বিষয়গুলো আমাদের জীবনে কোন স্থানে থাকা উচিত এবং কেন?

 রাজ্যের বিষয়গুলো আমাদের জীবনে কোন স্থানে থাকা উচিত? যিশু তাঁর অনুসারীদের ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করিবার’ জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং সেইসঙ্গে তাদের এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তারা যদি তা করে, তাহলে ঈশ্বর তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জোগাবেন। (মথি ৬:২৫-৩৩) তিনি ঈশ্বরের রাজ্যকে অতি মূল্যবান এক মুক্তার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যেটা পাওয়ার পর একজন বণিক ‘সর্ব্বস্ব বিক্রয় করিয়া তাহা ক্রয় করিয়াছিল।’ (মথি ১৩:৪৫, ৪৬) রাজ্যের প্রচার ও শিষ্য তৈরির কাজের ওপর কি আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা উচিত নয়?

আগের দুটো প্রবন্ধে আমরা যেমন দেখেছি যে, পরিচর্যায় সাহসের সঙ্গে কথা বলা এবং দক্ষতার সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করা দেখায় যে, আমরা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছি। এ ছাড়া, রাজ্যের প্রচার কাজে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রেও এই আত্মা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসুন আমরা দেখি যে, সেটা কীভাবে।

এক মুক্ত আমন্ত্রণ!

৩. কোন ধরনের জলের কাছে ‘আসিবার’ জন্য সমস্ত মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে?

মানুষকে পবিত্র আত্মার মাধ্যমে এক মুক্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭.) এটা হল, ‘আসিবার’ এবং এক বিশেষ ধরনের জলের দ্বারা তৃষ্ণা মেটানোর আমন্ত্রণ। এটা কোনো সাধারণ জল নয়, যা দুই ভাগ হাইড্রোজেন এবং এক ভাগ অক্সিজেন দ্বারা গঠিত। যদিও পৃথিবীতে জীবন টিকিয়ে রাখার জন্য আক্ষরিক জল অপরিহার্য কিন্তু যিশুর মনে এক ভিন্ন ধরনের জলের কথা ছিল, যখন তিনি একটা কুয়োর কাছে একজন শমরীয় স্ত্রীলোককে এই কথাগুলো বলেছিলেন: “আমি যে জল দিব, তাহা যে কেহ পান করে, তাহার পিপাসা আর কখনও হইবে না; বরং আমি তাহাকে যে জল দিব, তাহা তাহার অন্তরে এমন জলের উনুই হইবে, যাহা অনন্ত জীবন পর্য্যন্ত উথলিয়া উঠিবে।” (যোহন ৪:১৪) যে-অসাধারণ জল গ্রহণ করার জন্য মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা অনন্তজীবন প্রদান করে।

৪. কীভাবে জীবন-জলের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল এবং জল কোন বিষয়কে চিত্রিত করে?

এই ধরনের জীবন-জলের প্রয়োজন সেই সময়ে দেখা দিয়েছিল, যখন প্রথম মানুষ আদম তার স্ত্রী হবার সঙ্গে যোগ দিয়ে তাঁর—যিহোবা ঈশ্বরের—অবাধ্য হয়েছিল, যিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন। (আদি. ২:১৬, ১৭; ৩:১-৬) প্রথম দম্পতিকে তাদের উদ্যানরূপ গৃহ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, “পাছে [আদম] হস্ত বিস্তার করিয়া জীবনবৃক্ষের ফলও পাড়িয়া ভোজন করে ও অনন্তজীবী হয়।” (আদি. ৩:২২) মানবজাতির আদিপুরুষ হিসেবে আদম পরিশেষে পুরো মানবজাতির জন্য মৃত্যু নিয়ে এসেছিল। (রোমীয় ৫:১২) জীবন-জল ঈশ্বরের সেইসমস্ত ব্যবস্থাকে চিত্রিত করে, যা তিনি পাপ ও মৃত্যু থেকে অবাধ্য মানুষদের মুক্ত করার এবং তাদেরকে পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্ত সিদ্ধ জীবন দান করার জন্য করেছেন। এই ব্যবস্থাগুলোর মূলে রয়েছে, যিশু খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান।—মথি ২০:২৮; যোহন ৩:১৬; ১ যোহন ৪:৯, ১০.

৫. আসার এবং ‘বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করিবার’ আমন্ত্রণ কার কাছ থেকে এসেছে? ব্যাখ্যা করুন।

আসার বিষয়ে এবং ‘বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করিবার’ জন্য কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন? খ্রিস্টের হাজার বছর রাজত্বের সময় যখন যিশুর মাধ্যমে জীবনের সমস্ত ব্যবস্থা পুরোপুরি পাওয়া যায়, তখন সেগুলোকে “‘জীবন-জলের নদী’ . . . তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল” হিসেবে চিত্রিত করা হয়। সেই নদীকে ‘ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন হইতে নির্গত হইয়া বহিয়া’ যাইতে দেখা যায়। (প্রকা. ২২:১) তাই, জীবনদাতা যিহোবাই হলেন সেই জলের উনুই বা উৎস, যা জীবন দান করে। (গীত. ৩৬:৯) তিনিই এই জলকে “মেষশাবক” যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে প্রাপ্তিসাধ্য করেছেন। (যোহন ১:২৯) এই রূপক নদী হচ্ছে, আদমের অবাধ্যতার কারণে মানবজাতির ওপর আসা সমস্ত ক্ষতি দূর করার জন্য যিহোবার মাধ্যম। হ্যাঁ, যিহোবা ঈশ্বরই হলেন “আইস” আমন্ত্রণ জানানোর উৎস।

৬. কখন “জীবন-জলের নদী” বইতে শুরু করেছে?

যদিও “জীবন-জলের নদী” খ্রিস্টের হাজার বছর রাজত্বের সময় পূর্ণ অর্থে বইবে কিন্তু এটা “প্রভুর দিনে” বইতে শুরু করেছে, যা ১৯১৪ সালে “মেষশাবক” স্বর্গীয় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার সময় শুরু হয়েছে। (প্রকা. ১:১০) তাই, এর পর থেকে মানুষেরা জীবনের কিছু ব্যবস্থা লাভ করতে সমর্থ হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে বাইবেলের বার্তাও রয়েছে, কারণ এই বার্তাকে ‘জল’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। (ইফি. ৫:২৬) রাজ্যের সুসমাচার শোনার ও তাতে সাড়া দেওয়ার মাধ্যমে ‘জীবন-জল গ্রহণ করিবার’ আমন্ত্রণ সকলের জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু, প্রভুর দিনে কারা প্রকৃত আমন্ত্রণ জানাচ্ছে?

“কন্যা” বলেন, “আইস”

৭. “প্রভুর দিনে” প্রথমে কারা “আইস” আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং কাদেরকে জানিয়েছে?

কন্যা বা কনে শ্রেণীর সদস্যরা—আত্মায় অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা—হল প্রথম ব্যক্তি, যারা “আইস” আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কাদেরকে জানিয়েছে? কনে নিশ্চয়ই নিজেকে “আইস” বলছেন না। তার বাক্যগুলো সেই ব্যক্তিদের উদ্দেশে, যারা ‘সর্ব্বশক্তিমান্‌ ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধ’ সংগঠিত হওয়ার পর, পৃথিবীতে অনন্তজীবন লাভ করার আশা রাখে।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪, ১৬.

৮. কী দেখায় যে, অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা সেই ১৯১৮ সাল থেকে যিহোবার আমন্ত্রণ জানিয়ে যাচ্ছে?

খ্রিস্টের অভিষিক্ত অনুসারীরা সেই ১৯১৮ সাল থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে। সেই বছর, “লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি, যারা এখন জীবিত আছে, তারা কখনো মরবে না” শিরোনামের বক্তৃতা এই আশা প্রদান করেছিল যে, আরমাগিদোন যুদ্ধের পরে অনেকে এক পরমদেশ পৃথিবীতে জীবন লাভ করবে। ১৯২২ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর সিডার পয়েন্টে বাইবেল ছাত্রদের সম্মেলনে প্রদত্ত একটা বক্তৃতায় শ্রোতাদেরকে ‘রাজা এবং তাঁর রাজ্যকে ঘোষণা করার’ জন্য জোরালো পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এই আবেদন কনে শ্রেণীর অবশিষ্টাংশকে আরও বেশি লোকের কাছে সেই আমন্ত্রণ পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে। ১৯২৯ সালের ১৫ মার্চ প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকায় “সদয় আমন্ত্রণ” শিরোনামের একটি প্রবন্ধ ছিল, যেটির মূলভাবের শাস্ত্রপদ ছিল প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭ পদ। সেই প্রবন্ধের একটা অংশে বলা হয়েছিল: “বিশ্বস্ত অবশিষ্টাংশ শ্রেণী [পরাৎপরের] সঙ্গে সদয় আমন্ত্রণে যোগ দেয় এবং বলে ‘আইস।’ এই বার্তা সেই ব্যক্তিদের কাছে ঘোষণা করতে হবে, যাদের ধার্মিকতা ও সত্যের প্রতি আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আর এটা এখনই করতে হবে।” এখন পর্যন্ত কনে শ্রেণী সেই আমন্ত্রণ জানিয়ে যাচ্ছে।

“যে শুনে, সেও বলুক, আইস”

৯, ১০. যারা আমন্ত্রণ শোনে, তাদেরকে উত্তরে “আইস” বলার জন্য কীভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে?

সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা “আইস” আমন্ত্রণ শোনে। উত্তরে, তারাও “আইস” বলার জন্য আমন্ত্রিত। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩২ সালের ১ আগস্ট প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ২৩২ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছিল: “অভিষিক্তরা যেন সেইসমস্ত ব্যক্তিকে উৎসাহিত করে, যারা রাজ্যের সুসমাচার সম্বন্ধে বলায় অংশগ্রহণ করবে। প্রভুর বার্তা ঘোষণা করার জন্য তাদেরকে যে প্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তি হতে হবে এমন নয়। এখন এটা জানা যিহোবার সাক্ষিদের জন্য এক বড়ো সান্ত্বনা যে, তাদেরকে সেই শ্রেণীর লোকেদের কাছে জীবন-জল নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাদেরকে হয়তো আরমাগিদোন থেকে রক্ষা করা হবে এবং পৃথিবীতে অনন্তজীবন দেওয়া হবে।”

১০ “আইস” বলার ব্যাপারে শ্রোতার দায়িত্বের প্রতি নির্দেশ করে ১৯৩৪ সালের ১৫ আগস্ট প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ২৪৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছিল: “যিহোনাদব শ্রেণীর লোকেদের অবশ্যই রূপক যেহূ শ্রেণীর লোকেদের অর্থাৎ অভিষিক্তদের সঙ্গে যেতে হবে এবং রাজ্যের বার্তা ঘোষণা করতে হবে, এমনকী যদিও তারা যিহোবার অভিষিক্ত সাক্ষি নয়।” ১৯৩৫ সালে, প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-১৭ পদে উল্লেখিত ‘বিস্তর লোকের’ পরিচয়কে স্পষ্ট করা হয়েছিল। এটা ঈশ্বরের আমন্ত্রণ অন্যদেরকে জানানোর কাজে অসাধারণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। সেই সময় থেকে, সত্য উপাসকদের বৃদ্ধিরত বিস্তর লোক, যাদের সংখ্যা বর্তমানে ৭০ লক্ষেরও বেশি, তারা সেই আমন্ত্রণের প্রতি সাড়া দিয়েছে। উপলব্ধি সহকারে বার্তা শোনার পর তারা ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকরণ করেছে, জলে নিমজ্জিত হয়ে বাপ্তিস্ম নিয়েছে এবং অন্যদেরকে “আইস” বলার এবং বিনামূল্যে জীবন-জল গ্রহণ করার জন্য সক্রিয়ভাবে আমন্ত্রণ জানানোর কাজে কনে শ্রেণীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

“আত্মা” বলে, “আইস”

১১. সাধারণ কাল প্রথম শতাব্দীতে, কীভাবে পবিত্র আত্মা প্রচার কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল?

১১ নাসরতের এক সমাজগৃহে প্রচার করার সময় যিশু ভাববাদী যিশাইয়ের পুস্তক খোলেন এবং পড়েন: “প্রভুর [“যিহোবার,” NW] আত্মা আমাতে অধিষ্ঠান করেন, কারণ তিনি আমাকে অভিষিক্ত করিয়াছেন, দরিদ্রদের কাছে সুসমাচার প্রচার করিবার জন্য; তিনি আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন, বন্দিগণের কাছে মুক্তি প্রচার করিবার জন্য, অন্ধদের কাছে চক্ষুর্দ্দান প্রচার করিবার জন্য, উপদ্রুতদিগকে নিস্তার করিয়া বিদায় করিবার জন্য, প্রভুর [“যিহোবার,” NW] প্রসন্নতার বৎসর ঘোষণা করিবার জন্য।” এরপর তিনি এই বলে কথাগুলো নিজের প্রতি প্রয়োগ করেন: “অদ্যই এই শাস্ত্রীয় বচন তোমাদের কর্ণগোচরে পূর্ণ হইল।” (লূক ৪:১৭-২১) স্বর্গারোহণ করার আগে যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা . . . পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।” (প্রেরিত ১:৮) প্রথম শতাব্দীতে, পবিত্র আত্মা প্রচার কাজের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল।

১২. কীভাবে ঈশ্বরের আত্মা আমাদের দিনে আমন্ত্রণ জানানোর কাজে জড়িত?

১২ কীভাবে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আমাদের দিনে মানুষকে আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রে জড়িত রয়েছে? যিহোবা হলেন পবিত্র আত্মার উৎস। তাঁর বাক্য বাইবেল বোঝার জন্য কনে শ্রেণীর হৃদয় ও মনকে খুলে দিতে তিনি আত্মা ব্যবহার করেন। আত্মা সেই ব্যক্তিদেরকে আমন্ত্রণ জানানোর এবং তাদের কাছে শাস্ত্রীয় সত্য ব্যাখ্যা করার জন্য তাদেরকে অনুপ্রাণিত করে, যাদের পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার প্রত্যাশা রয়েছে। সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে, যিশু খ্রিস্টের শিষ্য হয় এবং বাকি যারা রয়েছে, তাদেরকে আমন্ত্রণ জানায়? তাদের ক্ষেত্রেও আত্মা জড়িত রয়েছে। “পবিত্র আত্মার নামে” বাপ্তাইজিত হওয়ায়, তারা অন্যান্য ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য পবিত্র আত্মার পরিচালনার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করে এবং আত্মার ওপর নির্ভর করে। (মথি ২৮:১৯) এ ছাড়া, সেই বার্তা সম্বন্ধে চিন্তা করুন, যা অভিষিক্ত ব্যক্তিরা এবং বৃদ্ধিরত বিস্তর লোক প্রচার করছে। এই বার্তার উৎস হল বাইবেল—যে-বইটি সরাসরি ঈশ্বরের আত্মার অনুপ্রেরণায় লেখা হয়েছে। তাই, সেই আমন্ত্রণ পবিত্র আত্মার মাধ্যমে জানানো হয়। বস্তুতপক্ষে, আমরা সেই আত্মার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছি। এই বিষয়টা আমরা আমন্ত্রণের কাজে কতটা সময় ব্যয় করি, তাতে কীভাবে প্রভাব ফেলে?

তারা ‘কহিতেছে, আইস’

১৩. “আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস,” বিবৃতিটি কোন বিষয়কে ইঙ্গিত করে?

১৩ “আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস।” এটা নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের আমন্ত্রণ জানিয়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করে। সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা আমন্ত্রণ শোনে এবং গ্রহণ করে? তারাও বলে, “আইস।” সত্য উপাসকদের বিস্তর লোক সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, তারা ‘দিবারাত্র ঈশ্বরের মন্দিরে আরাধনা করে।’ (প্রকা. ৭:৯, ১৫) কোন অর্থে ‘দিবারাত্র আরাধনা’ করে? (পড়ুন, লূক ২:৩৬, ৩৭; প্রেরিত ২০:৩১; ২ থিষলনীকীয় ৩:৮.) বৃদ্ধ ভাববাদিনী হান্না এবং প্রেরিত পৌলের উদাহরণ দেখায় যে, ‘দিবারাত্র আরাধনা’ বলতে অবিরতভাবে পরিচর্যা করে চলাকে ও তাতে আন্তরিক প্রচেষ্টা করাকে ইঙ্গিত করে।

১৪, ১৫. কীভাবে দানিয়েল নিয়মিতভাবে উপাসনা করার গুরুত্ব প্রদর্শন করেছিলেন?

১৪ ভাববাদী দানিয়েলও নিয়মিতভাবে উপাসনা করার গুরুত্ব প্রদর্শন করেছিলেন। (পড়ুন, দানিয়েল ৬:৪-১০, ১৬.) দানিয়েল এমনকী এক মাসের জন্যও তার আধ্যাত্মিক তালিকা—“দিনের মধ্যে তিনবার . . . যেমন পূর্ব্বে করিতেন” ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার অভ্যাস—পরিবর্তন করেননি, যদিও এর অর্থ ছিল সিংহের গর্তে নিক্ষিপ্ত হওয়া। তার পদক্ষেপ প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে কত স্পষ্টভাবেই না এই ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, নিয়মিতভাবে যিহোবার উপাসনা করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কোনো কিছুই নেই!—মথি ৫:১৬.

১৫ দানিয়েল সিংহের গর্তে এক রাত কাটানোর পর, রাজা নিজে সেখানে গিয়েছিলেন এবং আর্তস্বর করে বলেছিলেন: “হে জীবন্ত ঈশ্বরের সেবক দানিয়েল, তুমি অবিরত যাঁহার সেবা কর, তোমার সেই ঈশ্বর কি সিংহের মুখ হইতে তোমাকে রক্ষা করিতে পারিয়াছেন?” দানিয়েল সঙ্গেসঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন: “হে রাজন্‌, চিরজীবী হউন। আমার ঈশ্বর আপন দূত পাঠাইয়া সিংহগণের মুখ বদ্ধ করিয়াছেন, তাহারা আমার হিংসা করে নাই; কেননা তাঁহার সাক্ষাতে আমার নির্দ্দোষতা লক্ষিত হইল; এবং হে রাজন্‌, আপনার সাক্ষাতেও আমি কোন অপরাধ করি নাই।” দানিয়েল “অবিরত” সেবা করার কারণে যিহোবা তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন।—দানি. ৬:১৯-২২.

১৬. দানিয়েলের উদাহরণ আমাদেরকে পরিচর্যায় নিজেদের অংশগ্রহণ সম্বন্ধে কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে প্রণোদিত করে?

১৬ দানিয়েল তার আধ্যাত্মিক তালিকাকে উপেক্ষা করার চেয়ে বরং মৃত্যুবরণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন। আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? অবিরত ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার সম্বন্ধে ঘোষণা করার জন্য আমরা কোন কোন ত্যাগস্বীকার করছি বা করতে ইচ্ছুক আছি? যিহোবা সম্বন্ধে আমরা অন্যদের কাছে কথা বলিনি এমন একটা মাসও যেন না যায়! সম্ভব হলে, প্রত্যেক সপ্তাহে পরিচর্যায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমাদের কি আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত নয়? এমনকী শারীরিক দিক দিয়ে যদি আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে এবং এর ফলে সেই মাসে মাত্র ১৫ মিনিট সাক্ষ্যদান করে থাকি, তাহলেও আমরা রিপোর্ট দিতে পারি। কেন? কারণ আত্মা ও কনের সঙ্গে আমরা “আইস” বলে চলার আকাঙ্ক্ষা করি। হ্যাঁ, একজন নিয়মিত প্রকাশক হিসেবে থাকার জন্য আমরা আমাদের যথাসাধ্য করতে চাই।

১৭. যিহোবার আমন্ত্রণ জানানোর কোন সুযোগগুলো আমাদের হাতছাড়া করা উচিত নয়?

১৭ জনসাধারণ্যে পরিচর্যার জন্য আমরা যে-সময় আলাদা করে রেখেছি, শুধুমাত্র সেই সময়েই নয় বরং প্রতিটা সুযোগে আমাদের যিহোবার আমন্ত্রণ জানানোর চেষ্টা করা উচিত। অন্যান্য সময়েও যেমন কেনাকাটার, ভ্রমণের, ছুটি কাটানোর, কাজ করার অথবা স্কুলে যাওয়ার সময় তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিদেরকে ‘আসিবার এবং বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করিবার’ আমন্ত্রণ জানানো কী এক বিশেষ সুযোগ! এমনকী কর্তৃপক্ষরা যদি আমাদের কাজের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে, তবুও আমরা বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রচার করে চলি—হতে পারে একই সময়ে সব ঘরে না গিয়ে অল্প কয়েকটা ঘরে কাজ করে তারপর অন্য এলাকায় চলে গিয়ে বা আমাদের রীতিবহির্ভূত সাক্ষ্যদানকে বাড়িয়ে।

বলে চলুন, “আইস”

১৮, ১৯. কীভাবে আপনি দেখান যে, ঈশ্বরের সহকার্যকারী হওয়ার বিশেষ সুযোগকে আপনি মূল্যবান বলে গণ্য করেন?

১৮ নব্বই বছরেরও বেশি সময় ধরে আত্মা ও কনে জীবন-জলের জন্য পিপাসিত এমন যেকোনো ব্যক্তিকে বলে চলেছে, “আইস।” আপনি কি তাদের রোমাঞ্চকর আমন্ত্রণ শুনেছেন? তাহলে, অন্যদেরও এই আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আপনাকে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

১৯ আমরা জানি না যে, যিহোবার এই প্রেমময় আমন্ত্রণ জানানোর কাজ কতদিন ধরে চলবে, কিন্তু “আইস” বলার এই আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়া আমাদেরকে ঈশ্বরের সহকার্যকারী করে তোলে। (১ করি. ৩:৬,) এটা কী এক বিশেষ সুযোগ! আমরা যেন দেখাই যে, আমরা সেই বিশেষ সুযোগকে মূল্যবান বলে গণ্য করি ও নিয়মিতভাবে প্রচার করার মাধ্যমে “ঈশ্বরের উদ্দেশে নিয়ত স্তব-বলি . . . উৎসর্গ করি।” (ইব্রীয় ১৩:১৫) আমাদের মধ্যে যাদের পার্থিব আশা রয়েছে, আসুন আমরা কনে শ্রেণীর সঙ্গে একত্রে বলে চলি, “আইস।” আর আরও অনেকে যেন ‘বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করে’!

আপনি কী শিখেছেন?

• “আইস” বলার আমন্ত্রণ কাদেরকে জানানো হয়েছে?

• কেন বলা যেতে পারে যে, “আইস” বলার আমন্ত্রণ যিহোবা জানিয়েছেন?

• “আইস” বলার আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রে পবিত্র আত্মা কোন ভূমিকা পালন করে?

• কেন আমাদের পরিচর্যায় নিয়মিত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]

[১৬ পৃষ্ঠার তালিকা/চিত্রগুলো]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

বলে চলুন, “আইস”

১৯১৪

৫,১০০ জন প্রকাশক

১৯১৮

অনেকে পরমদেশ পৃথিবীতে জীবন লাভ করবে

১৯২২

“রাজা এবং তাঁর রাজ্যকে ঘোষণা করো, ঘোষণা করো, ঘোষণা করো”

১৯২৯

বিশ্বস্ত অবিষ্টাংশরা বলে, “আইস”

১৯৩২

অভিষিক্ত ব্যক্তিরা ছাড়াও অন্যদেরকে “আইস” বলার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে

১৯৩৪

যিহোনাদব শ্রেণীকে প্রচার করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়

১৯৩৫

‘বিস্তর লোককে’ শনাক্ত করা হয়

২০০৯

৭৩,১৩,১৭৩ জন প্রকাশক