সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“সন্তানের আধ্যাত্মিক বিকাশের অধিকার”

“সন্তানের আধ্যাত্মিক বিকাশের অধিকার”

“সন্তানের আধ্যাত্মিক বিকাশের অধিকার”

সুইডিশ অ্যাকাডেমি ফর দ্যা রাইটস্‌ অভ্‌ দ্যা চাইল্ড, ২০০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর এক অসাধারণ সেমিনারের আয়োজন করেছিল, যেটার মূলভাব ছিল, “সন্তানের আধ্যাত্মিক বিকাশের অধিকার।” চার্চ অভ্‌ সুইডেন, খ্রিস্টীয়জগতের অন্যান্য সম্প্রদায়, ইসলাম এবং মানবতাবাদী আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত বক্তারা অনেক মতামত উপস্থাপন করেছিল।

বক্তাদের মধ্যে একজন পাদরি ছিলেন, যিনি বলেছিলেন: “সন্তানদের আধ্যাত্মিকতার ওপর বাইবেলের বিবরণগুলোর যে-বিরাট গুরুত্ব রয়েছে, সেই সম্বন্ধে একজন ব্যক্তি খুব কমই সত্য এবং সঠিক বর্ণনা দিতে পারেন।” কীভাবে শাস্ত্রীয় অংশগুলো সন্তানদের আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলো পূরণ করে?

“শাস্ত্রপদ এবং বিবরণগুলো সন্তানদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা ও ধ্যান করার জন্য বিষয়বস্তু জোগায়,” সেই পাদরি বলেছিলেন। তিনি “আদম ও হবা, কয়িন ও হেবল, দায়ূদ ও গলিয়াৎ, যিশুর জন্ম, করগ্রাহী সক্কেয়ের গল্প, অপব্যয়ী পুত্র ও প্রতিবেশীসুলভ শমরীয়ের নীতিগল্পকে” তালিকাবদ্ধ করেছিলেন। এগুলোকে “এমন কয়েকটা আদর্শ বিবরণ” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল, “যেগুলো মানুষের জীবনে প্রতারণা, ক্ষমা, প্রায়শ্চিত্ত, ঘৃণা, অবক্ষয়, ভুল সংশোধন, ভ্রাতৃপ্রেম এবং নিঃস্বার্থ প্রেমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে [একজন সন্তানের] চিন্তাধারার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।” তিনি আরও বলেছিলেন: “এই পাঠ্যাংশগুলো বিভিন্ন নমুনা প্রদান করে, যেগুলো একজনের জীবনে প্রয়োগ করা যেতে পারে অর্থাৎ তিনি সেগুলোকে কাজে পরিণত করেন ও সেগুলো সম্বন্ধে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা লাভ করেন।”

এটা ঠিক যে, বাইবেল পড়তে উৎসাহিত করা ভালো বিষয়। কিন্তু, সন্তানরা কি শাস্ত্র থেকে তারা যা পড়ে, সেটা নিয়ে আসলেই “ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা ও ধ্যান” করতে এবং সঠিক উপসংহারে পৌঁছাতে পারে?

এমনকী বড়োদের কাছেও শাস্ত্রের বিভিন্ন অংশ ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল আমাদেরকে এমন একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে বলে, যিনি “ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা ও ধ্যান করার” মাধ্যমে প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পাননি। সেই ব্যক্তিটি ছিলেন, একজন ইথিওপীয় কর্মকর্তা। তিনি যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্‌বাণী পড়ছিলেন কিন্তু এটির অর্থ বুঝতে পারেননি। যেহেতু তিনি ভাববাদীর বক্তব্য বুঝতে চেয়েছিলেন, তাই শিষ্য ফিলিপ তার কাছে যে-ব্যাখ্যা প্রদান করেছিলেন, সেটাকে তিনি সাগ্রহে গ্রহণ করেছিলেন। (প্রেরিত ৮:২৬-৪০) কেবল সেই ইথিওপীয় ব্যক্তিরই সাহায্যের প্রয়োজন ছিল না। আমাদের প্রত্যেককে—বিশেষ করে সন্তানদেরকে—শাস্ত্রের বিভিন্ন অংশের অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

বাইবেল আমাদের সতর্ক করে: “বালকের হৃদয়ে অজ্ঞানতা বাঁধা থাকে।” (হিতো. ২২:১৫) সন্তানদের পরিচালনা এবং নির্দেশনার প্রয়োজন আর তাদেরকে বাইবেল ও খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে যা শেখানো হয়, সেটার ওপর ভিত্তি করে নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদান করা তাদের বাবা-মার দায়িত্ব। সন্তানদের এই ধরনের প্রশিক্ষণ লাভ করার অধিকার রয়েছে। অল্পবয়স থেকেই, আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য বাইবেলের শিক্ষা অনুযায়ী এক দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলতে তাদের সাহায্যের প্রয়োজন, যাতে তারা ‘সিদ্ধবয়স্ক’ বা পরিপক্ব ব্যক্তি হতে পারে, “যাহাদের জ্ঞানেন্দ্রিয় সকল অভ্যাস প্রযুক্ত সদসৎ বিষয়ের বিচারণে পটু” বা প্রশিক্ষিত “হইয়াছে।”—ইব্রীয় ৫:১৪.