সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি যিহোবাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার সুযোগ দেন?

আপনি কি যিহোবাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার সুযোগ দেন?

আপনি কি যিহোবাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার সুযোগ দেন?

বাইবেলে এমন শত শত প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলো হৃদয়ের একেবারে গভীরে গিয়ে পৌঁছায়। বস্তুতপক্ষে, স্বয়ং যিহোবা ঈশ্বর গুরুত্বপূর্ণ সত্যগুলো শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, কয়িনকে তার ধ্বংসাত্মক পথ সংশোধন করার জন্য সাবধান করে দেওয়ার সময় যিহোবা কিছু প্রশ্ন ব্যবহার করেছিলেন। (আদি. ৪:৬, ৭) একইভাবে, যিহোবার করা প্রশ্নগুলো যিশাইয়কে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করেছিল। “আমি কাহাকে পাঠাইব? আমাদের পক্ষে কে যাইবে?” যিহোবার এই প্রশ্নগুলো শুনে, ভাববাদী যিশাইয় উত্তর দিয়েছিলেন: “এই আমি, আমাকে পাঠাও।”—যিশা. ৬:৮.

এ ছাড়া, মহান শিক্ষক যিশুও কার্যকারীভাবে বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেছিলেন। সুসমাচারের বইগুলোতে যিশুর করা ২৮০টারও বেশি প্রশ্ন লিপিবদ্ধ রয়েছে। যদিও তিনি মাঝেমধ্যে তাঁর সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল তাঁর শ্রোতাদের হৃদয়ে পৌঁছানো এবং তাদেরকে নিজেদের আধ্যাত্মিক অবস্থা সম্বন্ধে গভীরভাবে চিন্তা করতে পরিচালিত করা। (মথি ২২:৪১-৪৬; যোহন ১৪:৯, ১০) একইভাবে, প্রেরিত পৌলও দৃঢ়প্রত্যয়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেছিলেন, যিনি খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র-এর ১৪টি বই লিখেছিলেন। (রোমীয় ১০:১৩-১৫) উদাহরণস্বরূপ, রোমীয়দের উদ্দেশে লেখা তার চিঠিতে অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে। পৌলের প্রশ্নগুলো তার পাঠকদেরকে “ঈশ্বরের ধনাঢ্যতা ও প্রজ্ঞা ও জ্ঞান কেমন অগাধ,” তা উপলব্ধি করতে পরিচালিত করে।—রোমীয় ১১:৩৩.

যদিও কিছু প্রশ্ন মৌখিক উত্তর দিতে প্রণোদিত করে, কিন্তু অন্যান্য প্রশ্ন গভীরভাবে চিন্তা করতে পরিচালিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে। সুসমাচারের বইগুলোতে, যিশুর করা দ্বিতীয় ধরনের প্রশ্নগুলোর ব্যাপক ব্যবহার সম্বন্ধে লিপিবদ্ধ করা আছে। একবার, যিশু তাঁর শিষ্যদের এই বলে সাবধান করেছিলেন: “তোমরা ফরীশীদের তাড়ীর বিষয়ে ও হেরোদের তাড়ীর বিষয়ে” অর্থাৎ তাদের কপটতা ও মিথ্যা শিক্ষাগুলোর বিষয়ে “সাবধান থাকিও।” (মার্ক ৮:১৫; মথি ১৬:১২) যিশুর শিষ্যরা বিষয়টা বুঝতে পারেনি আর তাই তারা রুটি আনতে ভুলে যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে তর্ক করতে শুরু করেছিল। এর পরেই সংক্ষিপ্ত কথোপকথনে যিশু যে-বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেন, তা লক্ষ করুন। “যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের রুটী নাই বলিয়া কেন তর্ক করিতেছ? তোমরা কি এখনও কিছু জানিতে পারিতেছ না, বুঝিতে পারিতেছ না? তোমাদের অন্তঃকরণ কি কঠিন হইয়া রহিয়াছে? চক্ষু থাকিতে কি দেখিতে পাও না? কর্ণ থাকিতে কি শুনিতে পাও না? . . . তোমরা কি এখনও বুঝিতে পারিতেছ না?” যিশুর এই প্রশ্নগুলোর উদ্দেশ্য ছিল তাদেরকে চিন্তা করতে পরিচালিত করা অর্থাৎ তাঁর শিষ্যদেরকে তাঁর কথাগুলোর প্রকৃত অর্থ নিয়ে গভীরভাবে বিবেচনা করতে অনুপ্রাণিত করা।—মার্ক ৮:১৬-২১.

“আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করি”

যিহোবা ঈশ্বর তাঁর দাস ইয়োবের চিন্তাভাবনাকে রদবদল করার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করেছিলেন। বেশ কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে, যিহোবা ইয়োবকে তার নির্মাতার তুলনায় ইয়োবের নগণ্যতা সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছিলেন। (ইয়োব, ৩৮-৪১ অধ্যায়) যিহোবা কি সেই প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর শোনার আশা করেছিলেন? সম্ভবত, না। এই ধরনের প্রশ্নগুলো যেমন, “যখন আমি পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করি, তখন তুমি কোথায় ছিলে?” স্পষ্টতই ইয়োবের চিন্তাভাবনা ও আবেগকে জাগিয়ে তোলার জন্য করা হয়েছিল। এইরকম একটার পর একটা প্রশ্ন ইয়োবকে প্রায় নির্বাক করে দিয়েছিল। তিনি শুধু বলেছিলেন: “তোমাকে কি উত্তর দিব? আমি নিজ মুখে হাত দিই।” (ইয়োব ৩৮:৪; ৪০:৪) ইয়োব বিষয়টা বুঝতে পেরেছিলেন ও নিজেকে নম্র করেছিলেন। কিন্তু, যিহোবা ইয়োবকে কেবল নম্র হতেই শিক্ষা দিচ্ছিলেন না। ইয়োবের চিন্তাভাবনাকেও সংশোধন করা হয়েছিল। কীভাবে?

যদিও ইয়োব ‘সিদ্ধ [“নির্দোষ,” NW] ও সরল [“ন্যায়নিষ্ঠ,” NW] লোক’ ছিলেন, কিন্তু একসময় তার কথাগুলো এক ভুল দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিল, যা ইলীহূ সেই সময় লক্ষ করেছিলেন, যখন তিনি ইয়োবকে ‘ঈশ্বর অপেক্ষা আপনাকে ধার্ম্মিক জ্ঞান করিবার’ কারণে ভর্ৎসনা করেছিলেন। (ইয়োব ১:৮; ৩২:২; ৩৩:৮-১২) এভাবে, যিহোবার প্রশ্নগুলো ইয়োবের বোধগম্যতাকেও সংশোধন করেছিল। ঘূর্ণবায়ুর মধ্যে থেকে ইয়োবের সঙ্গে কথা বলার সময় ঈশ্বর বলেছিলেন: “এ কে, যে জ্ঞানরহিত কথা দ্বারা মন্ত্রণাকে তিমিরাবৃত করে? তুমি এখন বীরের ন্যায় কটিবন্ধন কর; আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, তুমি আমাকে বুঝাইয়া দেও।” (ইয়োব ৩৮:১-৩) এরপর বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে, যিহোবা তাঁর অসীম প্রজ্ঞা ও শক্তির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়েছিলেন, যেগুলো তাঁর আশ্চর্য কাজগুলোর দ্বারা প্রদর্শিত হয়েছে। এই জ্ঞানালোক ইয়োবকে যিহোবার বিচার ও বিভিন্ন বিষয়কে তিনি যেভাবে পরিচালনা করেন, সেটার ওপর আগের চেয়ে আরও বেশি নির্ভর করতে সাহায্য করেছিল। ইয়োবের জন্য কী এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা আর তা হল স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন!

যেভাবে যিহোবাকে আমরা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার সুযোগ দিতে পারি

আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? আমরাও কি বাইবেলে লিপিবদ্ধ প্রশ্নগুলো থেকে উপকার লাভ করতে পারি? হ্যাঁ, পারি! সেই প্রশ্নগুলোকে আমরা যদি একটু থেমে আমাদেরকে চিন্তা করার সুযোগ দিই, তাহলে তা আমাদের জন্য প্রচুর আধ্যাত্মিক পুরস্কার নিয়ে আসতে পারে। ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত অন্তর্দৃষ্টিমূলক প্রশ্নগুলো এই বাক্যের কার্যকারিতায় অবদান রাখে। বস্তুতপক্ষে, “ঈশ্বরের বাক্য . . . কার্য্যসাধক, . . . এবং হৃদয়ের চিন্তা ও বিবেচনার সূক্ষ্ম বিচারক।” (ইব্রীয় ৪:১২) কিন্তু, সবচেয়ে বেশি উপকার লাভ করতে হলে, নিজেদেরকে সেই প্রশ্নগুলো এমনভাবে জিজ্ঞেস করতে হবে, যেন যিহোবাই আমাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্নগুলো করছেন। (রোমীয় ১৫:৪) আসুন আমরা কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করি।

“সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা কি ন্যায়বিচার করিবেন না?” (আদি. ১৮:২৫) সদোম ও ঘমোরার ওপর ঈশ্বরের বিচার উপস্থিত হওয়ার সময় অব্রাহাম যিহোবাকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন, যেটার উত্তর তিনি আশা করেননি। অব্রাহামের মনে কখনো এইরকম চিন্তাই আসেনি যে, যিহোবা কখনো অন্যায্যভাবে কাজ করতে পারেন—দুষ্টদের সঙ্গে ধার্মিকদেরও মৃত্যুদণ্ড দেবেন। অব্রাহামের প্রশ্ন যিহোবার ধার্মিকতার প্রতি তার গভীর বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে।

আজকেও, কেউ কেউ হয়তো যিহোবার ভবিষ্যতের বিচার সম্বন্ধীয় বিষয়গুলো নিয়ে অনুমান করতে পারে, যেমন নির্দিষ্টভাবে কারা আরমাগিদোন থেকে রক্ষা পাবে অথবা কারা পুনরুত্থিত হবে। এই ধরনের চিন্তাভাবনা দ্বারা বিঘ্নিত না হয়ে বরং আমরা অব্রাহামের প্রশ্নটা পুনরায় স্মরণ করতে পারি। অব্রাহামের মতো, যিহোবাকে একজন দয়ালু স্বর্গীয় পিতা হিসেবে জানা এবং তাঁর ন্যায়বিচার ও করুণার ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখা, আমাদেরকে অযথা উদ্‌বেগ, ক্রমশ দুর্বল করে দেয় এমন সন্দেহ আর অনর্থক তর্কবিতর্কের জন্য সময় ও শক্তি নষ্ট করা থেকে নিবৃত্ত করে।

“আর তোমাদের মধ্যে কে ভাবিত হইয়া আপন বয়স এক হস্তমাত্র বৃদ্ধি করিতে পারে?” (মথি ৬:২৭) শিষ্যরাসহ এক বিস্তর লোকের উদ্দেশে যিশু এই প্রশ্নটা ব্যবহার করেছিলেন, যা তাদেরকে যিহোবার প্রেমময় হস্তের নীচে সমর্পণ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষকাল অনেক ভাবনা বা উদ্‌বিগ্নতা নিয়ে আসে, কিন্তু সেগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা আমাদের জীবনের আয়ুকে বৃদ্ধি করবে না অথবা জীবনযাপনের গুণগত মানকেও উন্নত করবে না।

যখনই আমরা নিজেদের অথবা আমাদের প্রিয়জনদের জন্য উদ্‌বিগ্ন হই, তখন যিশুর এই প্রশ্নটা নিজেদের মনে করিয়ে দেওয়া আমাদের উদ্‌বিগ্নতাগুলোকে যথার্থ স্থানে রাখতে সাহায্য করতে পারে। এটা আমাদেরকে উদ্‌বিগ্ন না হওয়ার ও নেতিবাচক চিন্তাগুলো না করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, যেগুলো আমাদেরকে মানসিক, আবেগগত এবং শারীরিকভাবে নিঃশেষ করে দেয়। যিশু যেমন আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, আমাদের স্বর্গীয় পিতা, যিনি আকাশের পাখিদের আহার দেন ও ক্ষেত্রের তৃণকে বিভূষিত করেন, তিনি আমাদের প্রয়োজনের বিষয়ে পুরোপুরি জানেন।—মথি ৬:২৬-৩৪.

“কেহ যদি বক্ষঃস্থলে অগ্নি রাখে, তবে তাহার বস্ত্র কি পুড়িয়া যাইবে না?” (হিতো. ৬:২৭) হিতোপদেশ বইয়ের প্রথম নয়টা অধ্যায়ে আমরা কিছু বিজ্ঞ উপদেশ পাই, যেগুলো একজন পিতা তার পুত্রকে প্রদান করছেন। ওপরে উদ্ধৃত প্রশ্নটা পারদারিকতার তিক্ত পরিণতিগুলোকে নির্দেশ করে। (হিতো. ৬:২৯) আমরা যদি বুঝতে পারি যে, আমরা প্রেমের ভান করার মতো আচরণে জড়িয়ে পড়ছি অথবা কোনো অসংগত যৌন আকাঙ্ক্ষা পোষণ করছি, তাহলে এই প্রশ্ন আমাদেরকে বিপদ সম্বন্ধে সতর্ক করে দেবে। মূলত, এই প্রশ্ন সেই সময়ই জিজ্ঞেস করা যেতে পারে, যখনই একজন ব্যক্তি কোনো মূর্খতাপূর্ণ পথ গ্রহণ করার জন্য প্রলোভিত হন। এটা কত স্পষ্টভাবেই না বাইবেলের এই ব্যবহারিক নীতির ওপর জোর দেয়: ‘তুমি যাহা কিছু বুনিবে তাহাই কাটিবে’!—গালা. ৬:৭.

“তুমি কে, যে অপরের ভৃত্যের বিচার কর?” (রোমীয় ১৪:৪) রোমীয়দের উদ্দেশে লেখা তার চিঠিতে পৌল সেই সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, যেগুলো প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীতে দেখা দিয়েছিল। কিছু খ্রিস্টানের, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসার কারণে তাদের সহবিশ্বাসীদের সিদ্ধান্ত ও কাজগুলো নিয়ে বিচার করার প্রবণতা ছিল। পৌলের প্রশ্ন তাদেরকে পরস্পরকে সাদরে গ্রহণ করার ও বিচারের ভার যিহোবার হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল।

একইভাবে আজকেও, যিহোবার লোকেরা বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসে। কিন্তু, যিহোবা আমাদের মহামূল্যবান একতায় একত্রিত করেছেন। আমরা কি সেই একতায় অবদান রাখি? আমরা যদি একজন ভাইয়ের বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন কাজের প্রতি সহজেই অসন্তুষ্ট মনোভাব প্রকাশ করার প্রবণতা দেখাই, তাহলে নিজেদেরকে পৌলের ওপরোক্ত প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করা কতই না বিজ্ঞতার কাজ হবে!

যে-প্রশ্নগুলো আমাদেরকে যিহোবার আরও নিকটবর্তী করে

এই কয়েকটা উদাহরণ দেখায় যে, কীভাবে ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত প্রশ্নগুলো একজন ব্যক্তিকে নিজেকে পরীক্ষা করে দেখতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। প্রতিটা প্রশ্নের প্রসঙ্গ বিবেচনা করা আমাদেরকে নিজ পরিস্থিতিগুলোতে সেগুলো ব্যবহারিকভাবে কাজে লাগাতে সাহায্য করতে পারে। আর আমরা যতই বাইবেল পড়ব, ততই আমরা সাহায্যকারী আরও প্রশ্ন লক্ষ করব।—১৪ পৃষ্ঠায় দেওয়া বাক্সটা দেখুন।

ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত অন্তর্দৃষ্টিমূলক প্রশ্নগুলোকে আমরা যদি আমাদেরকে গভীরভাবে স্পর্শ করার সুযোগ দিই, তাহলে তা আমাদের মন ও হৃদয়কে যিহোবার ধার্মিক পথের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। যিহোবা ইয়োবকে প্রশ্ন করার পর, ইয়োব দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন: “পূর্ব্বে তোমার বিষয় কর্ণে শুনিয়াছিলাম, কিন্তু সম্প্রতি আমার চক্ষু তোমাকে দেখিল।” (ইয়োব ৪২:৫) হ্যাঁ, যিহোবা ইয়োবের কাছে আরও বেশি বাস্তব হয়ে উঠেছিলেন, ঠিক যেন তিনি তার চোখের সামনে রয়েছেন। পরবর্তী সময়ে শিষ্য যাকোব বিষয়টা এভাবে প্রকাশ করেছিলেন: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) আমরা যেন ঈশ্বরের বাকে প্রাপ্ত প্রশ্নসহ প্রতিটা অংশকে আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ করে দিই এবং যিহোবাকে আগের চেয়ে আরও স্পষ্টভাবে ‘দেখি’!

[১৪ পৃষ্ঠার বাক্স]

কীভাবে নিজেকে এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করা আপনাকে বিভিন্ন বিষয়ে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে?

▪ “সদাপ্রভুর রবে অবধান করিলে যেমন, তেমন কি হোমে ও বলিদানে সদাপ্রভু প্রসন্ন হন?”—১ শমূ. ১৫:২২.

▪ “যিনি চক্ষু গঠন করিয়াছেন, তিনি কি দেখিবেন না?”—গীত. ৯৪:৯.

▪ “তুমি কি নিজের দৃষ্টিতে জ্ঞানবান লোক দেখিতেছ?”—হিতো. ২৬:১২.

▪ “তুমি ক্রোধ করিয়া কি ভাল করিতেছ?”—যোনা ৪:৪.

▪ “মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে?” —মথি ১৬:২৬.

▪ “খ্রীষ্টের প্রেম হইতে কে আমাদিগকে পৃথক্‌ করিবে?”—রোমীয় ৮:৩৫.

▪ “যাহা না পাইয়াছ, এমনই বা তোমার কি আছে?”—১ করি. ৪:৭.

▪ “অন্ধকারের সহিত দীপ্তিরই বা কি সহভাগিতা?”—২ করি. ৬:১৪.

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার বিভিন্ন প্রশ্ন থেকে ইয়োব কোন শিক্ষা লাভ করেছিলেন?