সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবা চান যেন আপনি “কুশলে” থাকেন

যিহোবা চান যেন আপনি “কুশলে” থাকেন

যিহোবা চান যেন আপনি “কুশলে” থাকেন

যখন ইতিহাসের সবচেয়ে বিপদজনক ঘটনা হঠাৎ করে শুরু হবে, তখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর লক্ষ রাখবেন যেন তাঁর অনুমোদনপ্রাপ্ত সকলে ‘রক্ষা পায়।’ (যোয়েল ২:৩২) কিন্তু, যিহোবা আসলে সবসময়ই লোকেদেরকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। যেহেতু “[তাঁহারই] কাছে জীবনের উনুই আছে,” তাই তিনি সমস্ত মানুষকে খুবই মূল্যবান, সুরক্ষা করার যোগ্য বলে মনে করেন।—গীত. ৩৬:৯.

প্রাচীনকালে ঈশ্বরের বিশ্বস্ত দাসেরাও জীবন সম্বন্ধে তাঁর মতো একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করত। আদিপুস্তক ৩৩:১৮ পদ অনুসারে, যাকোব এবং তার পরিবার “কুশলে” বা নিরাপদে এক বিপদজনক যাত্রা শেষ করেছিল। যাকোব সুরক্ষার জন্য যিহোবার ওপর নির্ভর করেছিলেন কিন্তু সেইসঙ্গে তিনি যারা তার সঙ্গে যাত্রা করেছিল, তাদের সকলের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন ব্যবহারিক পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। (আদি. ৩২:৭, ৮; ৩৩:১৪, ১৫) বাইবেলের নীতিগুলো কাজে লাগানোর দ্বারা আপনি নিজের ও অন্যদের নিরাপত্তাকে জোরদার করতে পারেন। আসুন আমরা দেখি যে, কীভাবে এই সত্যটা সেই ব্যক্তিদের বেলায় প্রযোজ্য, যারা কিংডম হল নির্মাণ ও একইরকম প্রকল্পগুলোতে কাজ করে এবং দুর্যোগের সময় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে।

মোশির ব্যবস্থার অধীনে নিরাপত্তা

মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী ঈশ্বরের লোকেদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি মেনে চলতে হতো। উদাহরণস্বরূপ, একজন ইস্রায়েলীয় যখন একটা বাড়ি নির্মাণ করতেন, তখন তাকে ছাদের চারপাশে আলিশা অর্থাৎ নিচু প্রাচীর নির্মাণ করতে বা রেলিং দিতে হতো। যেহেতু লোকেদেরকে প্রায়ই বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের বাড়ির সমতল ছাদের ওপরে থাকতে হতো, তাই আলিশা তাদেরকে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করত। (১ শমূ. ৯:২৬; মথি ২৪:১৭) নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই আইন মেনে না চলার কারণে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত, তাহলে যিহোবা সেই বাড়ির গৃহকর্তার কাছ থেকে নিকাশ নিতেন।—দ্বিতীয়. ২২:৮.

ব্যবস্থায় উল্লেখিত শাস্তিগুলো গৃহপালিত পশু যখন আঘাত করত সেই ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ছিল। একটা গরু বা ষাঁড় যদি শিং দিয়ে গুঁতিয়ে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করত, তাহলে সেই ষাঁড়ের মালিককে অন্য লোকদেরকে রক্ষা করার জন্য ষাঁড়টাকে মেরে ফেলতে হতো। যেহেতু তিনি সেটার মাংস খেতে পারতেন না অথবা খাদ্য হিসেবে অন্যদের কাছে বিক্রি করতে পারতেন না, তাই সেই পশুকে মেরে ফেলা অনেক লোকসানের ব্যাপার ছিল। কিন্তু ধরুন, একটা ষাঁড় একজন ব্যক্তিকে আঘাত করার পরও, সেটার মালিক সেই পশুটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখেননি। তাহলে কী হতো? সেই একই ষাঁড় যদি পরে অন্য কাউকে হত্যা করত, তাহলে সেই ষাঁড় এবং সেটার মালিক উভয়কেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো। সেই আইন এমন যেকাউকে তার আচরণ পুনর্বিবেচনা করে দেখার সুযোগ দিয়েছিল, যিনি সাধারণত নিজ পশুপালের ব্যাপারে অসতর্ক ছিলেন।—যাত্রা. ২১:২৮, ২৯.

এ ছাড়া, ব্যবস্থা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহার করতেও উৎসাহিত করেছিল। অনেক ইস্রায়েলীয় জ্বালানি কাঠ কাটার জন্য কুড়াল ব্যবহার করত। যদি একটা কুড়ালের ফলক দুর্ঘটনাবশত এর হাতল থেকে খসে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো ব্যক্তির গায়ে আঘাত করত ও তার ফলে তিনি মারা যেতেন, তাহলে কাঠুরিয়াকে একটা আশ্রয়-নগরে পালিয়ে যেতে হতো। তাকে সেখানে মহাযাজকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত থাকতে হতো, যেটার অর্থ ছিল যে, একজন অনিচ্ছাকৃত নরঘাতককে কয়েক বছরের জন্য তার পরিবার ও বাড়ি থেকে পৃথক থাকতে হতো। এই ব্যবস্থা সেই জাতিকে এই শিক্ষা প্রদান করেছিল যে, যিহোবার কাছে জীবন হল পবিত্র। যে-ব্যক্তি জীবন সম্বন্ধে ঈশ্বরের মতো একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন, তিনি যন্ত্রপাতিগুলো ভালো অবস্থায় রাখতেন ও সেগুলো সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতেন।—গণনা. ৩৫:২৫; দ্বিতীয়. ১৯:৪-৬.

এই আইনগুলোর দ্বারা যিহোবা এই বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, তিনি চান যেন তাঁর লোকেরা বাড়ির ভিতরে ও বাইরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মগুলো মেনে চলে। যাদের কারণে অন্যদের মৃত্যু ঘটত এবং অন্যেরা আহত হতো, এমনকী তা যদি দুর্ঘটনাবশতও হতো, তবুও তাদেরকে তাঁর কাছে নিকাশ দিতে হতো। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোর ব্যাপারে যিহোবার চিন্তাধারা পরিবর্তিত হয়নি। (মালাখি ৩:৬) তিনি এখনও চান যেন লোকেরা নিজেদের ও অন্যদের আহত না করে। এটা বিশেষ করে সেই সময় প্রযোজ্য, যখন আমরা তাঁর সত্য উপাসনার জন্য উৎসর্গীকৃত ভবনগুলো নির্মাণ ও সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করি।

নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে নিরাপত্তা

কিংডম হল, সম্মেলন হল ও শাখা অফিসের ভবনগুলো নির্মাণ এবং সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করাকে আমরা এক বিশেষ সুযোগ হিসেবে দেখে থাকি। দুর্যোগের সময় ত্রাণসামগ্রী বিতরণের প্রকল্পগুলোতে আমরা যে-কাজ সম্পাদন করি, সেটার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যেতে পারে। আমরা সবসময়ই দক্ষতার সঙ্গে আমাদের কাজ করে যেতে চাই কারণ দক্ষতার অভাব, এমনকী ছোটোখাটো কাজগুলো সম্পাদন করার ক্ষেত্রেও, নিজেদের ও অন্যদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। (উপ. ১০:৯) বস্তুতপক্ষে, সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার দ্বারা আমরা আহত হওয়া এড়াতে পারি।

বাইবেল বলে: “যুবকদের বলই তাহাদের শোভা, আর পক্ককেশ বৃদ্ধ লোকদের শ্রী।” (হিতো. ২০:২৯) ভারী ভারী কাজ সম্পাদন করার জন্য যৌবনকালের শক্তির প্রয়োজন। কিন্তু পক্ককেশ রয়েছে এমন কর্মীরা—নির্মাণকাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা—তাদের হাত ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সূক্ষ্ম কাজগুলো করে থাকে। আর এখন যাদের বয়স হয়ে গিয়েছে, তারা একটা সময়ে ভারী ভারী কাজ সম্পাদন করার জন্য তাদের যৌবনকালের শক্তিকে ব্যবহার করেছে। আপনি যদি একজন নতুন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে থাকেন, তাহলে সেই অভিজ্ঞ কর্মীরা কীভাবে তাদের কাজ করে, তা লক্ষ করুন এবং তাদের নির্দেশনা মেনে চলুন। আপনি যদি শিখতে চান, তাহলে নির্মাণ কাজে অভিজ্ঞ ভাইয়েরা আপনাকে অনেক কিছু শেখাবে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হল, ঝুঁকিপূর্ণ সামগ্রীগুলো সতর্কতার সঙ্গে সামলানো এবং ভারী ভারী জিনিস উত্তোলন করা। এভাবে আপনি কার্যকারীভাবে, নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।

নির্মাণস্থলের কর্মীদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। সেখানকার পরিস্থিতিগুলো দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এক সময় যেখানে শক্ত জায়গা ছিল, সেখানে হয়তো এখন একটা গর্ত তৈরি করা হয়েছে। দলের অন্যেরা হয়তো একটা ল্যাডার, কাঠের তক্তা অথবা রঙের বালতি সরিয়ে রেখেছে। আপনি যদি অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন, তাহলে সহজেই আহত হতে পারেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মাবলি অনুযায়ী সাধারণত আশা করা হয় যে, নির্মাণস্থলের কর্মীরা ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করবে। নিরাপত্তামূলক চশমা, একটা শক্ত টুপি এবং উপযুক্ত জুতো পরা, আপনাকে নির্মাণস্থলে ঘটা অনেক বিপদ থেকে সুরক্ষা করতে পারে। কিন্তু, একমাত্র তখনই আপনি সুরক্ষিত থাকবেন, যদি আপনি এই ধরনের সরঞ্জামগুলো ভালো অবস্থায় রাখেন এবং সেগুলো পরিধান করেন।

যদিও অনেক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা খুবই সহজ বলে মনে হতে পারে কিন্তু সেগুলো সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের প্রয়োজন। আপনার প্রয়োজন রয়েছে এমন একটা যন্ত্র সম্পর্কে আপনার যদি কোনো অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইকে তা বলুন। তিনি আপনার জন্য সঠিক প্রশিক্ষণ লাভ করার ব্যবস্থা করবেন। আপনার সীমাবদ্ধতাগুলোকে জানা হল এক কাম্য গুণ। বস্তুতপক্ষে, এটা হল এক চাহিদা, যদি কিনা আপনি নির্মাণস্থলে নিজেকে ও অন্যদেরকে আহত করার হাত থেকে রক্ষা করতে চান।—হিতো. ১১:২.

নির্মাণ কাজগুলোতে আহত হওয়ার একটা বড়ো কারণ হল পড়ে যাওয়া। ল্যাডারে চড়ার অথবা কাঠের ভারার ওপর পা রাখার আগে, এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, সরঞ্জামের নিরাপত্তামূলক সমস্ত ব্যবস্থা ঠিকমতো স্থাপন করা হয়েছে ও সেগুলো ভালো অবস্থায় রয়েছে। আপনাকে যদি কাঠের ভারার অথবা ছাদের ওপর কাজ করতে হয়, তাহলে নির্দেশিকা অনুসারে আপনাকে হয়তো সেফটি বেল্ট পরতে অথবা নিরাপত্তামূলক রেলিং লাগাতে হতে পারে। উঁচু জায়গাগুলোতে কাজ করার বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জিজ্ঞেস করুন। *

যারা যিহোবার সেবা করে, পৃথিবীব্যাপী তাদের সংখ্যা যেহেতু বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই সত্য উপাসনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত কিংডম হল ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা কিংডম হল নির্মাণস্থল ও এইরকম প্রকল্পগুলোর কাজ দেখাশোনা করে, তাদেরকে যিহোবার সেইসমস্ত মূল্যবান মেষকে সুরক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা তাদের নির্দেশাধীনে কাজ করে থাকে। (যিশা. ৩২:১, ২) আপনি যদি কোনো নির্মাণ প্রকল্পে আপনার ভাইবোনদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য বিশেষ সুযোগ পেয়ে থাকেন, তাহলে নিরাপত্তার গুরুত্বের বিষয়টা কখনো ভুলে যাবেন না। লক্ষ রাখুন যেন নির্মাণস্থল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে ও সেখানে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকে। যাদের অনুস্মারকগুলোর প্রয়োজন রয়েছে, তাদের কাছে সদয়ভাবে তবে দৃঢ়তার সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করুন। অল্পবয়সি বা অনভিজ্ঞ কর্মীদেরকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রবেশ করতে দেবেন না। কোনো কর্মীদল যে-বিপদগুলোর মুখোমুখি হবে, সেগুলোর বিষয়ে আগে থেকে চিন্তা করুন এবং তাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত করুন। মনে রাখবেন, আমাদের লক্ষ্য হল একটুও আহত না হয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা।

প্রেমের ভূমিকা

সত্য উপাসনায় ব্যবহৃত কিংডম হল ও অন্যান্য ভবন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কাজে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, যারা এই প্রকল্পগুলোতে অংশ নেয়, তাদের সতর্ক হতে হবে। বাইবেলের নীতিগুলোর প্রতি সম্মান দেখানোর, কাজের জন্য নির্ধারিত নির্দেশিকা মেনে চলার এবং উত্তম বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি বিপদ এড়াতে ও সেইসঙ্গে আপনার সহকর্মীদেরও ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষা করতে পারবেন।

নিরাপত্তার বিষয়টাকে উচ্চমূল্য দেওয়ার পিছনে মুখ্য প্রেরণাটা কী? এটা হল প্রেম। হ্যাঁ, যিহোবার প্রতি প্রেমই আমাদেরকে জীবনকে তাঁর মতো করে মূল্যবান হিসেবে গণ্য করতে অনুপ্রাণিত করে। আর লোকেদের প্রতি প্রেম আমাদেরকে অসতর্কভাবে এমন যেকোনো কিছু করা থেকে বিরত রাখে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে। (মথি ২২:৩৭-৩৯) তাই, আসুন আমরা আমাদের নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে যারা কাজ করে তাদেরকে “কুশলে” বা নিরাপদে রাখার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি।

[পাদটীকা]

^ ৩০ পৃষ্ঠায় “যেভাবে ল্যাডারের ওপর নিরাপদে কাজ করা যায়” নামক বাক্সটা দেখুন।

[৩০ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

যেভাবে ল্যাডারের ওপরে নিরাপদে কাজ করা যায়

যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরে, ১,৬০,০০০-রেরও বেশি কর্মী ল্যাডার থেকে পড়ে আহত হয়েছে। এ ছাড়া, প্রায় ১৫০ জন এভাবে পড়ে মারা গিয়েছে। আপনি যেখানেই বাস করুন এবং কাজ করুন না কেন, এখানে কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হল, যেগুলো আপনাকে ল্যাডার থেকে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

◇ নড়বড়ে অথবা নষ্ট ল্যাডার ব্যবহার করবেন না আর এই ধরনের ল্যাডার মেরামতও করবেন না। সেটা নষ্ট করে ফেলুন।

◇ সমস্ত ল্যাডারেরই নির্দিষ্ট পরিমাণ ভার বহনের ক্ষমতা রয়েছে। লক্ষ রাখবেন যে, আপনার এবং সেইসঙ্গে আপনার যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীগুলোর ওজন যেন আপনার দ্বারা ব্যবহৃত ল্যাডারের সীমার অতিরিক্ত না হয়।

◇ সমতল ও শক্ত জমির ওপর আপনার ল্যাডার রাখুন। কোনো নড়বড়ে জায়গার ওপর এটা রাখবেন না, যেমন কোনো কাঠের ভারার অথবা বালতি এবং বাক্সের ওপর।

◇ ওঠার অথবা নামার সময় সর্বদা ল্যাডারের দিকে মুখ রাখুন।

◇ কোনো ল্যাডারের সবচেয়ে ওপরের দুটো ধাপের ওপর দাঁড়াবেন না অথবা বসবেন না।

◇ ছাদ বা কোনো সমতল স্থানে ওঠার বা সেখান থেকে নামার জন্য যখন ল্যাডার ব্যবহার করা হয়, তখন ল্যাডারটা যেন ছাদ বা যে-সমতল স্থানের ওপর এটাকে স্থাপন করা হয়, সেখান থেকে অন্ততপক্ষে ১ মিটার পর্যন্ত লম্বা থাকে। ল্যাডারের পায়া যাতে ফসকে না যায়, সেইজন্য নীচে পায়া দুটোকে শক্ত করে বাঁধুন অথবা সেগুলোর সামনে একটা কাঠের তক্তা আটকে দিন। আপনি যদি এই উপায়ে ল্যাডারটাকে নিরাপদ করতে না পারেন, তাহলে আপনি যখন এটার ওপর উঠে কাজ করেন, তখন কাউকে সেটাকে ধরে রাখতে বলুন। ল্যাডারের উপরিভাগ শক্ত করে বাঁধুন, যাতে সেটা কোনো দিকেই সরে না যায়।

◇ ল্যাডারের ধাপগুলোতে কাঠের তক্তা রেখে সেটাতে চড়ে কাজ করবেন না।

◇ উঁচুতে কাজ করার সময় আপনি যখন হাত-পা বাড়িয়ে কাজ করেন, তখন আপনি হয়তো ল্যাডারটা নড়বড়ে করে ফেলতে পারেন। এভাবে হাত-পা বাড়িয়ে কাজ করা বিপদজনক বলে তা এড়িয়ে চলুন। আপনার কাজের জায়গার কাছাকাছি নেওয়ার জন্য যত বার প্রয়োজন ল্যাডারটাকে সরিয়ে কাজ করুন।

◇ আপনাকে যদি বন্ধ দরজার সামনে ল্যাডারের ওপর উঠে কাজ করতেই হয়, তাহলে দরজার সামনে একটা সতর্কীকরণ চিহ্ন রাখুন ও দরজা তালাবন্ধ করে রাখুন। তালাবন্ধ করে রাখা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে সেখানে কাউকে দাঁড় করিয়ে রাখুন, যাতে যাদের সেখান দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাদেরকে তিনি সাবধান করে দিতে পারেন।

◇ একই সময়ে দুজন কর্মীর ব্যবহার করার যোগ্য ল্যাডার না হলে কেবল একজন ব্যক্তিকেই ল্যাডার ব্যবহার করতে দিন। *

[পাদটীকা]

^ ল্যাডারের ওপর উঠে কাজ করার বিষয়ে আরও অনুস্মারকসহ একটা তালিকা ১৯৯৯ সালের ৮ আগস্ট সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ২২-২৪ পৃষ্ঠায় পাওয়া যেতে পারে।

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

মোশির ব্যবস্থায় বলা হয়েছিল যে, সমতল ছাদের চারপাশে যেন নিচু প্রাচীর দেওয়া হয়