সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

যিহোবা যেহেতু প্রতিমাপূজা নিষেধ করেছেন, তাহলে কেন তিনি সোনার বাছুর নির্মাণ করার জন্য হারোণকে শাস্তি দেননি?

যাত্রাপুস্তক ৩২ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ কথা অনুযায়ী, হারোণ যখন সোনার বাছুর নির্মাণ করেছিলেন, তখন তিনি প্রতিমাপূজা সম্বন্ধীয় ঈশ্বরের আইন লঙ্ঘন করেছিলেন। (যাত্রা. ২০:৩-৫) এর ফলে, ‘সদাপ্রভু হারোণকে বিনষ্ট করণার্থে তাঁহার উপরে অতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়াছিলেন, কিন্তু মোশি সেই সময়ে হারোণের জন্যও প্রার্থনা করিয়াছিলেন।’ (দ্বিতীয়. ৯:১৯, ২০) ধার্মিক ব্যক্তি মোশির প্রার্থনা কি হারোণের ক্ষেত্রে “মহাশক্তিযুক্ত” হয়েছিল? (যাকোব ৫:১৬) হ্যাঁ। এই প্রার্থনার ফলে ও সেইসঙ্গে অন্তত আরও দুটো কারণে মনে হয় যে, যিহোবা মোশির প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন এবং হারোণকে শাস্তি দেননি।

স্পষ্টতই, একটা কারণ ছিল হারোণের বিশ্বস্ততা সম্বন্ধীয় নথি। মোশিকে যখন ফরৌণের সামনে উপস্থিত হওয়ার এবং মিশর থেকে ইস্রায়েলীয়দের বের করে নিয়ে আসার কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, তখন যিহোবা হারোণকে মোশির সঙ্গে যাওয়ার এবং তার প্রতিনিধি হিসেবে কথা বলার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। (যাত্রা. ৪:১০-১৬) এই দুজন পুরুষ বাধ্যতা দেখিয়ে মিশরের রাজার সামনে অনেক বার উপস্থিত হয়েছিল এবং কঠিন হৃদয়সম্পন্ন ফরৌণের চাপ সহ্য করেছিল। তাই, মিশরে থাকার সময়ই হারোণ যিহোবার প্রতি আনুগত্য ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে সেবা করার এক নথি গড়ে তুলেছিলেন।—যাত্রা. ৪:২১.

এ ছাড়া, কোন বিষয়টা হারোণকে সোনার বাছুর নির্মাণ করতে পরিচালিত করেছিল, সেটাও বিবেচনা করুন। মোশি ৪০ দিন ধরে সীনয় পর্বতে ছিলেন। “পর্ব্বত হইতে নামিতে মোশির বিলম্ব হইতেছে দেখিয়া লোকেরা” তাদের জন্য একটা প্রতিমা নির্মাণ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে হারোণকে বাধ্য করেছিল। হারোণ এতে সহযোগিতা করেছিলেন এবং একটা সোনার বাছুরের মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। (যাত্রা. ৩২:১-৬) কিন্তু, হারোণের পরবর্তী কাজগুলো ইঙ্গিত করে যে, তিনি আসলে এই প্রতিমাপূজাকে অনুমোদন করেননি। স্পষ্টতই, তিনি চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, মোশি যখন নাটকীয়ভাবে প্রতিমাপূজার বিষয়টার সমাপ্তি ঘটিয়েছিলেন, তখন লেবির সমস্ত সন্তান—যাদের অন্তর্ভুক্ত হারোণ—দৃঢ়ভাবে যিহোবার পক্ষ নিয়েছিল। তিন হাজার প্রতিমাপূজক, যারা মূলত প্রতিমাপূজারূপ আচরণের জন্য দায়ী ছিল, তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল।—যাত্রা. ৩২:২৫-২৯.

এরপর মোশি লোকেদের বলেছিলেন: “তোমরা মহাপাপ করিলে।” (যাত্রা. ৩২:৩০) তাই, এই অন্যায় কাজের জন্য কেবল হারোণ একাই অনেকাংশে দায়ী ছিলেন না। তিনি এবং লোকেরা, উভয়েই যিহোবার অপার করুণা থেকে উপকৃত হয়েছিলেন।

সোনার বাছুর সংক্রান্ত ঘটনার পর, যিহোবা আদেশ দিয়েছিলেন, যেন হারোণকে মহাযাজক হিসেবে অধিষ্ঠিত করা হয়। “তুমি . . . হারোণকে পবিত্র বস্ত্র সকল পরাইবে এবং অভিষেক করিয়া পবিত্র করিবে,” ঈশ্বর মোশিকে বলেছিলেন, “তাহাতে [সে] আমার যাজনকর্ম্ম করিবে।” (যাত্রা. ৪০:১২, ১৩) স্পষ্টতই, যিহোবা হারোণকে তার দুর্বলতার জন্য ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আসলে, হারোণ বিদ্রোহী প্রতিমাপূজক নন বরং সত্য উপাসনার একজন অনুগত সমর্থক ছিলেন।