‘তাহার কার্য্য সকল তাহার সঙ্গে চলিয়া গিয়াছে’
‘তাহার কার্য্য সকল তাহার সঙ্গে চলিয়া গিয়াছে’
থিওডোর জারাস, যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য, ২০১০ সালের ৯ জুন বুধবার সকালে তার পার্থিব জীবন শেষ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর আর তিনি তার স্ত্রী মেলিটাকে রেখে গিয়েছেন, যার সঙ্গে তিনি ৫৩ বছর ধরে সংসার করেছেন। এ ছাড়া, তিনি তার বড়ো বোন ও সেইসঙ্গে একজন ভাগনে এবং দুজন ভাগনি রেখে গিয়েছেন।
ভাই জারাস ১৯২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির পাইক কাউন্টিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৪১ সালের ১০ আগস্ট ১৫ বছর বয়সে যিহোবার কাছে উৎসর্গিকরণের প্রতীক হিসেবে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। এর দু-বছর পর, ১৭ বছর বয়সে তিনি নিয়মিত অগ্রগামীর কাজে প্রবেশ করেছিলেন আর এভাবে পূর্ণসময়ের সেবায় প্রায় ৬৭ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ার শুরু করেছিলেন।
১৯৪৬ সালে, ২০ বছর বয়সে ভাই জারাস ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অভ্ গিলিয়েড-এর সপ্তম ক্লাসে যোগ দিয়েছিলেন। গ্র্যাজুয়েশনের পর ভাই জারাসকে একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫১ সালে তাকে অস্ট্রেলিয়ার শাখা অফিসে কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, যেখানে তিনি শাখা অফিসের কাজ তত্ত্বাবধান করতেন। যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক ১৯৮৩ (ইংরেজি) বইয়ে রিপোর্ট করা হয়েছিল যে, ভাই জারাস “ঈশতান্ত্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তার উদ্যোগ ও ক্ষেত্রে চমৎকার নেতৃত্বদানের মাধ্যমে পুরো দেশজুড়ে ভাইবোনদের প্রচুররূপে উৎসাহিত করেছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর ভাই জারাস ১৯৫৬ সালের ১০ ডিসেম্বর মেলিটা ল্যাসকোকে বিয়ে করেছিলেন। তারা ভ্রমণ কাজের মধ্য দিয়ে তাদের বিবাহিত জীবন শুরু করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের একটা বিরাট অংশের বিভিন্ন সীমায় ও জেলায় অধ্যবসায়ের সঙ্গে সেবা করেছিল। ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে ভাই জারাসকে যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
ভাই জারাসকে যিহোবার প্রতি উৎসর্গিকৃত ও অনুগত একজন দাস হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে স্মরণ করা হবে, যিনি সর্বান্তঃকরণে ঈশতান্ত্রিক কার্যকলাপের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রেখেছিলেন। তিনি একজন প্রেমময় ও যত্নবান স্বামী এবং সেইসঙ্গে একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি ছিলেন, যিনি নিজের চেয়ে অন্যদের বিষয়গুলোর প্রতি প্রথমে লক্ষ রাখতেন। (১ করি. ১৩:৪, ৫) অন্যদের প্রতি তার অকৃত্রিম আগ্রহ, তার এই গভীর চিন্তার দ্বারা প্রকাশ পেয়েছে যে, সকলের সঙ্গে যেন ন্যায্যভাবে ও করুণা সহকারে আচরণ করা হয়। এ ছাড়া, লোকেদের জন্য তার অদম্য প্রেম ও চিন্তা, ক্ষেত্রের পরিচর্যায় তার উদ্যোগের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।
যদিও বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃসমাজের ও বেথেল পরিবারের একজন কঠোর পরিশ্রমী, প্রিয় সদস্যকে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকার্ত কিন্তু ভাই জারাস দশকের পর দশক ধরে যিহোবার প্রতি অনুগত সেবা করে গিয়েছেন বলে আমরা আনন্দিত। আমরা এই আস্থা রাখতে পারি যে, তিনি ‘মরণ পর্য্যন্ত বিশ্বস্ত থাকিয়াছেন ও জীবন-মুকুট প্রাপ্ত হইয়াছেন।’ (প্রকা. ২:১০) আমরা এই বিষয়েও নিশ্চিত যে, ‘তাহার কার্য্য সকল তাহার সঙ্গে চলিয়া গিয়াছে।’—প্রকা. ১৪:১৩.