সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“একজন চমৎকার অধ্যক্ষ ও প্রিয় বন্ধু”

“একজন চমৎকার অধ্যক্ষ ও প্রিয় বন্ধু”

“একজন চমৎকার অধ্যক্ষ ও প্রিয় বন্ধু”

জন (জ্যাক) বার, যিনি যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য হিসেবে সেবা করেছেন, তিনি ২০১০ সালের ৪ ডিসেম্বর তার পার্থিব জীবন শেষ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। তাকে “একজন চমৎকার অধ্যক্ষ ও প্রিয় বন্ধু” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভাই জন বার স্কটল্যান্ডের এবারডিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি তিন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোটো ছিলেন। তার বাবা-মা দুজনেই অভিষিক্ত ব্যক্তি ছিল। ভাই বার প্রায়ই তার পরিবারের সঙ্গে থাকাকালীন ছেলেবেলার স্মৃতি সম্বন্ধে আনন্দের সঙ্গে উল্লেখ করতেন; তার প্রিয় বাবা ও মা তার জন্য চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছিল বলে তিনি কৃতজ্ঞ ছিলেন।

তিনি যখন কিশোর বয়সি, তখন অল্পবয়সি জনের পক্ষে অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা অনেক কঠিন বলে মনে হতো। তা সত্ত্বেও, তিনি এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেছিলেন এবং ১৯২৭ সালের কোনো এক রবিবার বিকেলে ১৪ বছর বয়সে তার বাবার কাছে গিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি তার সঙ্গে ঘরে ঘরে প্রচার কাজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। সেটাই ছিল তার সেবার শুরু। সেই দিন থেকে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ভাই বার সুসমাচারের একজন উদ্যোগী প্রচারক ছিলেন।

একটা মারাত্মক দুর্ঘটনা, যা তার মায়ের জীবন প্রায় কেড়েই নিয়েছিল, সেটা অল্পবয়সি জনকে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পরিচালিত করেছিল এবং ১৯২৯ সালে তিনি নিজেকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করেছিলেন এবং ১৯৩৪ সালের প্রথম সুযোগেই এই উৎসর্গীকরণের প্রতীক স্বরূপ বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। এরপর, ১৯৩৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের লন্ডনের বেথেল পরিবারের একজন সদস্য হয়েছিলেন। এভাবে তিনি পূর্ণসময়ের সেবার এক কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, যা ৭১ বছর ধরে স্থায়ী হয়েছে।

১৯৬০ সালের ২৯ অক্টোবর, ভাই বার তার কথা অনুযায়ী “এক মূল্যবান সম্পর্কে” প্রবেশ করেছিলেন, যখন তিনি মিলড্রেড উইলেট নামে একজন দীর্ঘ সময়ের উদ্যোগী অগ্রগামী ও মিশনারিকে বিয়ে করেছিলেন। ভাই ও বোন বার এক উদাহরণযোগ্য, একনিষ্ঠ বিবাহিত দম্পতি হিসেবে পরিচিত ছিল এবং ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে মিলড্রেড তার পার্থিব জীবন শেষ করার আগে পর্যন্ত তারা সেভাবেই ছিল। ভাই ও বোন বার তাদের বিবাহিত জীবনের প্রতিটা দিন বাইবেলের কিছু অংশ একসঙ্গে পড়ত।

যারা তাকে চেনেন, তাদেরকে জন বার নামটা এমন একজন ব্যক্তির কথা মনে করিয়ে দেয়, যিনি বিবেচনাপূর্ণ পরামর্শ—সবসময়ই ভারসাম্যপূর্ণ, সবসময়ই সদয় এবং শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে—দিতেন। তিনি একজন কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তি ছিলেন এবং একজন বিবেচক ও প্রেমময় অধ্যক্ষ আর সেইসঙ্গে একজন অনুগত বন্ধু ছিলেন। তার মন্তব্য, তার বক্তৃতা ও তার প্রার্থনা প্রকাশ করত যে, তিনি কতটা আধ্যাত্মিকমনা এবং যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ।

যদিও আমরা আমাদের প্রিয় ভাই বারের অভাব বোধ করি কিন্তু তিনি অমরতার দান—যে-বিশেষ সুযোগের জন্য তিনি অপেক্ষা করে ছিলেন ও যেটার বিষয়ে প্রায়ই কথা বলতেন, তা—লাভ করেছেন বলে আমরা তার সঙ্গে আনন্দিত। তিনি সবসময় মনেপ্রাণে এটাই চেয়েছিলেন।—১ করি. ১৫:৫৩, ৫৪. *

[পাদটীকা]

^ জন ই. বারের জীবনকাহিনির জন্য ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ২৬-৩১ পৃষ্ঠা দেখুন।