সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

বার্ষিক পরিচর্যা রিপোর্টে যে-তথ্যগুলো দেওয়া হয়, সেগুলোর অর্থ কী?

প্রতি বছর বর্ষপুস্তক (ইংরেজি) বইয়ে এবং ফেব্রুয়ারি মাসের আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা-য় প্রকাশিত পরিচর্যার রিপোর্টের জন্য আমরা অধীর অপেক্ষায় থাকি। এটা দেখা রোমাঞ্চকর যে, বিশ্বব্যাপী রাজ্যের প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার কাজে যিহোবার লোকেরা দলগতভাবে কী সম্পাদন করেছে। কিন্তু, এই রিপোর্ট থেকে ভালোভাবে উপকৃত হওয়ার জন্য আমাদের সেখানে লিপিবদ্ধ প্রতিটা বিষয় সম্বন্ধে সঠিকভাবে বুঝতে হবে ও সেইসঙ্গে তথ্যগুলো সম্বন্ধে ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে হবে। কিছু উদাহরণ বিবেচনা করুন।

পরিচর্যা বছর। সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত একটা পরিচর্যা বছর। রিপোর্টে সবসময় আগের পরিচর্যা বছরের রিপোর্ট থাকে। তাই, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের রাজ্যের পরিচর্যা-য় ২০১০ সালের পরিচর্যা বছরের রিপোর্ট রয়েছে, যা ২০০৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত।

শীর্ষ প্রকাশক ও গড় প্রকাশক। “প্রকাশকদের” অন্তর্ভুক্ত হল, বাপ্তাইজিত যিহোবার সাক্ষিরা ও সেইসঙ্গে রাজ্যের প্রচারক হওয়ার মতো যোগ্য অবাপ্তাইজিত ব্যক্তিরা। শীর্ষ প্রকাশক হল, পরিচর্যা বছরের যেকোনো এক মাসে রিপোর্ট দিয়েছে এমন প্রকাশকদের সর্বোচ্চ সংখ্যা এবং এর মধ্যে আগের মাসের সেই বিলম্বিত রিপোর্টগুলোও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যেগুলোকে আগের মাসের রিপোর্টে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে কিছু প্রকাশককে হয়তো দু-বার গণনা করা হতে পারে। অন্যদিকে, শীর্ষ প্রকাশকদের সংখ্যায় সেই প্রকাশকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, যারা আসলে পরিচর্যায় অংশ নিয়েছে, কিন্তু তাদের রিপোর্ট দিতে ভুলে গিয়েছে। এটা এই বিষয়ের ওপর জোর দেয় যে, প্রত্যেক প্রকাশকের জন্য প্রতি মাসের রিপোর্ট অবিলম্বে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। “গড় প্রকাশক” হল সেই প্রকাশকদের সংখ্যা, যা পুরো বছরের সর্বমোট রিপোর্টকে ১২ দ্বারা ভাগ করে পাওয়া যায়।

মোট ঘন্টা। ২০১১ সালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, যিহোবার সাক্ষিরা ক্ষেত্রের পরিচর্যায় ১৬০ কোটি ঘন্টারও বেশি ব্যয় করেছে। কিন্তু, এই মোট ঘন্টা আমাদের উপাসনায় ব্যয়িত সমস্ত সময়কে তুলে ধরে না কারণ এর মধ্যে সেই সময় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, যে-সময়টা আমরা নিয়মিতভাবে এই কাজগুলো করার জন্য নিয়োজিত করে থাকি যেমন, পালকীয় কাজ, সভাগুলোতে যোগদান, ব্যক্তিগত বাইবেল অধ্যয়ন এবং ধ্যান করা।

ব্যয়িত অর্থ। ২০১০ সালের পরিচর্যা বছরে যিহোবার সাক্ষিরা তাদের ক্ষেত্রের পরিচর্যার কাজে বিশেষ অগ্রগামী, মিশনারি এবং ভ্রমণ অধ্যক্ষদের যত্ন নেওয়ার জন্য ১৫ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু, এই অর্থের মধ্যে আমরা যে-বাইবেলভিত্তিক প্রকাশনাদি ছাপিয়ে থাকি, সেগুলো ছাপানোর খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি; কিংবা এর মধ্যে সেই খরচও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা বিশ্বব্যাপী শাখা অফিসগুলোতে কর্মরত ২০,০০০-রেরও বেশি বেথেল স্বেচ্ছাসেবকের যত্ন নেওয়ার জন্য ব্যয় করা হয়েছে।

স্মরণার্থের প্রতীক গ্রহণকারী। এটা হচ্ছে সেই বাপ্তাইজিত ব্যক্তিদের সংখ্যা, যারা বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে থাকে। এই সংখ্যা কি পৃথিবীতে অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মোট সংখ্যাকে তুলে ধরে? সবসময় তা বলা যায় না। বেশ কিছু বিষয়—পূর্বের ধর্মীয় বিশ্বাস অথবা এমনকী মানসিক বা আবেগগত ভারসাম্যহীনতা—হয়তো কাউকে কাউকে ভুলভাবে এটা ভাবতে পরিচালিত করে যে, তাদের স্বর্গীয় আহ্বান রয়েছে। তাই, আমাদের পৃথিবীতে অভিষিক্ত ব্যক্তিদের একেবারে সঠিক সংখ্যা জানার উপায় নেই; আর আমাদের তা জানার প্রয়োজনও নেই। পরিচালকগোষ্ঠী সেইসমস্ত ব্যক্তিদের নামের তালিকা রাখে না, যারা স্মরণার্থ সভায় রুটি ও দ্রাক্ষারস গ্রহণ করে থাকে। *

আমরা যেটা জানি তা হল, যখন মহাক্লেশের ধ্বংসাত্মক বায়ু ছেড়ে দেওয়া হবে, তখনও পৃথিবীতে “আমাদের ঈশ্বরের” অভিষিক্ত কিছু ‘দাস’ থাকবে। (প্রকা. ৭:১-৩) সেই সময় পর্যন্ত, অভিষিক্ত ব্যক্তিরা সেই কাজে—মানবইতিহাসের সর্বমহৎ প্রচার ও শিক্ষাদান কাজে—নেতৃত্ব দেবে, যা আমাদের বার্ষিক পরিচর্যা রিপোর্টের মাধ্যমে সুবিন্যস্তভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়।

[পাদটীকা]

^ ২০০৯ সালের ১৫ জুন প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৪ পৃষ্ঠায় দেওয়া “বিশ্বস্ত গৃহাধ্যক্ষ এবং এর পরিচালকগোষ্ঠী” শিরোনামের প্রবন্ধ দেখুন।