সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অসুস্থতা যেন আপনার আনন্দ কেড়ে না নেয়

অসুস্থতা যেন আপনার আনন্দ কেড়ে না নেয়

অসুস্থতা যেন আপনার আনন্দ কেড়ে না নেয়

ক  ল্পনা করুন, একদিন সকালে আপনি ঘুম থেকে জেগে উঠে আশা করছেন যে, দিনটা শুরু না হয়ে যদি শেষ হতো, তাহলে ভাল হতো। কারণ, আপনাকে আরেকটা দিন শারীরিক অথবা মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। আপনি হয়তো এমনকী ইয়োবের মতো অনুভব করতে পারেন, যিনি বলেছিলেন: “আমার এই সমস্ত ব্যথার চেয়ে বরং মরণেই প্রীত!” (ইয়োব [যোব] ৭:১৫, জুবিলী বাইবেল) কী হবে যদি এই অবস্থা থেকেই যায়, এমনকী বছরের পর বছর?

রাজা দায়ূদের বন্ধু যোনাথনের ছেলে মফীবোশতের ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছিল। মফীবোশতের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তিনি ‘পতিত হইয়া খঞ্জ হইয়াছিলেন।’ (২ শমূ. ৪:৪) আবেগগত যন্ত্রণা তার অক্ষমতার কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল, যখন পরে তাকে রাজার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল আর এর ফলে তিনি বস্তুগত সম্পত্তি হারিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি দুর্বলতা, অপবাদ এবং হতাশার সঙ্গে মোকাবিলা করার এবং এগুলোকে তার আনন্দ কেড়ে নিতে না দেওয়ার মাধ্যমে ক্রমাগত এক চমৎকার উদাহরণ দেখিয়েছিলেন।—২ শমূ. ৯:৬-১০; ১৬:১-৪; ১৯:২৪-৩০.

আরেকটা উদাহরণ হল প্রেরিত পৌল। একবার তিনি “মাংসে একটা কন্টক” সম্বন্ধে লিখেছিলেন, যেটার সঙ্গে তাকে লড়াই করতে হয়েছিল। (২ করি. ১২:৭) তিনি যে-কন্টক সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, সেটা হতে পারে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান কোনো অক্ষমতা অথবা সেই লোকেরা, যারা তার প্রেরিত পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। যা-ই হোক না কেন, সমস্যাটা দীর্ঘসময় ধরে ছিল এবং এটা যে-শারীরিক বা আবেগগত কষ্ট নিয়ে এসেছিল, সেটার সঙ্গে তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছিল।—২ করি. ১২:৯, ১০.

দীর্ঘদিন ধরে থাকা মারাত্মক অসুস্থতা অথবা আবেগগত চাপ বর্তমানে ঈশ্বরের কিছু দাসদের কষ্ট দিয়ে থাকে। ১৮ বছর বয়সে ম্যাগডেলেনার সিস্‌টেমেটিক লুপ্যাস এরিথেম্যাটোসাস্‌ নামক একটা রোগ ধরা পড়ে আর এটা এমন এক রোগ, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এর নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেই আক্রমণ করে। “আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম,” তিনি বলেন। “সময় পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার অবস্থা আরও খারাপই হতে থাকে আর হজমে গণ্ডগোল, মুখে আলসার এবং থাইরয়েডের সমস্যা বাড়তে থাকে।” অন্যদিকে, ইজাবেলাকে এমন অবস্থাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়, যেগুলো অতটা স্পষ্ট বোঝা যায় না। তিনি ব্যাখ্যা করেন: “ছোটোবেলা থেকেই আমি বিষণ্ণতায় ভুগছি। এর ফলে আমি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ি, আমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয় এবং পেটে ব্যথা হয়। এই কারণে আমি সবসময় পরিশ্রান্ত বোধ করি।”

বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া

অসুস্থতা এবং দুর্বলতা আপনার জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। যখন এইরকমটা হয়ে থাকে, তখন একটু বসে অকপটভাবে আপনার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে দেখা উপকারজনক হবে। আপনার সীমাবদ্ধতাগুলো মেনে নেওয়া সহজ না-ও হতে পারে। ম্যাগডেলেনা বলেন: “আমার রোগটা খারাপের দিকেই যেতে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই আমি এতটাই পরিশ্রান্ত বোধ করি যে, আমি বিছানা থেকে উঠতে পারি না। আমার রোগটা এমন যে, যেকোনো সময়ই যেকোনোকিছু ঘটে যেতে পারে আর তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আমার জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হল, যিহোবার সেবায় আগে আমি যতটুকু করতে পারতাম এখন আর ততটুকু করতে পারি না।”

বিগনিইভ ব্যাখ্যা করেন: “বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রিউম্যাটয়েড আর্থরাইটিস (বাতের ব্যথা) আমার শক্তিকে হ্রাস করে দেয় এবং একটার পর একটা জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। মাঝে মাঝে এই যন্ত্রণা এতটাই তীব্র আকার ধারণ করে যে, আমি এমনকী সামান্য কাজও করতে পারি না। এর ফলে আমি হতাশ হয়ে পড়ি।”

কয়েক বছর আগে বারবারার ব্রেইন টিউমার ধরা পরে। “আমার শরীরে হঠাৎ পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে,” তিনি মন্তব্য করেন। “আমি পরিশ্রান্ত বোধ করি, আমার প্রায়ই মাথাব্যথা হয় এবং মনোযোগ দিতে সমস্যা হয়। আমার এই সাম্প্রতিক সীমাবদ্ধতাগুলোর কারণে আমাকে সমস্তকিছু পুনরায় মূল্যায়ন করে দেখতে হয়েছিল।”

এরা সবাই যিহোবার উৎসর্গীকৃত দাস। তাদের কাছে তাঁর ইচ্ছা পালন করাই অগ্রাধিকারের বিষয়। তারা সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে এবং তাঁর সমর্থন থেকে উপকার লাভ করে।—হিতো. ৩:৫, ৬.

যিহোবা সাহায্য করেন—কীভাবে?

আমাদের এইরকম চিন্তা করা এড়িয়ে চলা উচিত যে, ব্যক্তিগতভাবে কোনো কষ্ট ভোগ করা হচ্ছে ঈশ্বরের অসন্তোষের প্রমাণ। (বিলাপ ৩:৩৩) “সিদ্ধ ও সরল [“নির্দোষ ও সৎ,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]” হওয়া সত্ত্বেও ইয়োবকে যে-বিষয়গুলো ভোগ করতে হয়েছিল, তা চিন্তা করে দেখুন। (ইয়োব ১:৮) ঈশ্বর মন্দ বিষয়ের দ্বারা কারো পরীক্ষা করেন না। (যাকোব ১:১৩) সমস্ত অসুস্থতা—যার অন্তর্ভুক্ত দীর্ঘদিন ধরে থাকা অসুস্থতা এবং আবেগগত কষ্ট—আমাদের আদি পিতামাতা আদম ও হবার কাছে থেকে প্রাপ্ত এক বেদনাদায়ক উত্তরাধিকার।—রোমীয় ৫:১২.

কিন্তু, যিহোবা ও যিশু ধার্মিক ব্যক্তিদেরকে অসহায় অবস্থায় ফেলে রাখেন না। (গীত. ৩৪:১৫) বিশেষভাবে আমাদের জীবনের কঠিন সময়গুলোতে, আমরা এই বিষয়টাকে উপলব্ধি করি যে, ঈশ্বর ‘আমাদের আশ্রয়, আমাদের দুর্গ।’ (গীত. ৯১:২) তাহলে, সহজেই সমাধান করা যায় না এমন অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় কী আপনাকে আনন্দ বজায় রাখার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে?

প্রার্থনা: ঈশ্বরের প্রাচীনকালের বিশ্বস্ত দাসদের উদাহরণ অনুসরণ করে, আপনি প্রার্থনায় আমাদের স্বর্গীয় পিতার ওপর আপনার ভার অর্পণ করতে পারেন। (গীত. ৫৫:২২) তা করার মাধ্যমে আপনি “সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি,” তা অনুভব করতে পারেন। সেই মনের শান্তি ‘আপনার হৃদয় ও মন রক্ষা করিবে।’ (ফিলি. ৪:৬, ৭) প্রার্থনায় ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করার মাধ্যমে ম্যাগডেলেনা তার মারাত্মক রোগের সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করেন। তিনি বলেন: “যিহোবার কাছে হৃদয় উজার করে কথা বলা আমার জন্য স্বস্তি নিয়ে আসে এবং আমি আনন্দ ফিরে পাই। সময় পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন আমি বুঝতে পারি যে, ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করার অর্থ আসলে কী।”—২ করি. ১:৩, ৪.

আপনার প্রার্থনার উত্তরে যিহোবা তাঁর পবিত্র আত্মা, তাঁর বাক্য এবং খ্রিস্টীয় ভ্রাতৃসমাজের মাধ্যমে আপনাকে শক্তি প্রদান করতে পারেন। আপনি এইরকমটা আশা করবেন না যে, ঈশ্বর অলৌকিকভাবে আপনার অসুস্থতা দূর করে দেবেন। তবে, প্রতিটা দুর্দশার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য তিনি যে আপনাকে প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা এবং শক্তি দেবেন, সেই ব্যাপারে আপনি তাঁর ওপর নির্ভর করতে পারেন। (হিতো. ২:৭) তিনি আপনাকে “পরাক্রমের উৎকর্ষ [“অসাধারণ মহাশক্তি,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]” দান করার মাধ্যমে আপনাকে বল দিতে পারেন।—২ করি. ৪:৭.

পরিবার: ঘরের মধ্যে প্রেম ও সমবেদনা রয়েছে এমন এক পরিবেশ আপনাকে অসুস্থতা সহ্য করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু, মনে রাখবেন যে, আপনার প্রিয়জনরাও কষ্টভোগ করছে। তারাও হয়তো আপনার মতো অসহায় বোধ করে। তা সত্ত্বেও, তারা আপনার পাশে রয়েছে, এমনকী কঠিন সময়েও। একত্রে প্রার্থনা করা আপনাকে এক শান্ত হৃদয় বজায় রাখতে সাহায্য করবে।—হিতো. ১৪:৩০.

বারবারা তার মেয়ে এবং মণ্ডলীর অন্যান্য যুবতী বোনদের সম্বন্ধে বলেন: “তারা আমাকে পরিচর্যায় সমর্থন করে। তাদের উদ্যোগ আমার মনকে আনন্দিত করে।” বিগনিইভ তার স্ত্রীর সমর্থনকে অমূল্য বলে গণ্য করেন। “ঘরের বেশিরভাগ কাজের দেখাশোনা সে-ই করে। এ ছাড়া, সে আমাকে পোশাক পরতে সাহায্য করে এবং প্রায়ই খ্রিস্টীয় সভা ও পরিচর্যায় আমার ব্যাগ বহন করে থাকে।”

সহবিশ্বাসীরা: আমরা যখন আমাদের সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে থাকি, তখন আমরা উৎসাহিত হই এবং সান্ত্বনা লাভ করি। কিন্তু, আপনি যদি আপনার অসুস্থতার কারণে সভাগুলোতে যোগ দিতে না পারেন, তাহলে? ম্যাগডেলেনা বলেন: “মণ্ডলী থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন আমি অডিও রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে সভাগুলো থেকে উপকার লাভ করি। আমাকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তারা আর কি করতে পারে, সেটার জন্য আমার সহউপাসকরা প্রায়ই আমাকে ফোন করে। এ ছাড়া, তারা আমার জন্য উৎসাহজনক চিঠি পাঠায়। তারা যে আমার কথা মনে রাখে এবং আমার মঙ্গলের বিষয়ে ভাবে, সেই বিষয়টা চিন্তা করাই আমাকে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করে।”

ইজাবেলা, যিনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন, তিনি বলেন: “মণ্ডলীর মধ্যেই আমার অনেক ‘বাবা’ এবং ‘মা’ রয়েছে, যারা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে এবং আমাকে বোঝার চেষ্টা করে। মণ্ডলীই আমার পরিবার—এখানেই আমি শান্তি ও আনন্দ লাভ করি।”

যারা বিভিন্ন পরীক্ষা ভোগ করে, তাদের ‘নিজেদেরকে পৃথক’ করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে, তারা মণ্ডলীর সঙ্গে তাদের মেলামেশাকে মূল্যবান বলে গণ্য করে। (হিতো. ১৮:১) এভাবে তারা অন্যদের জন্য অনেক উৎসাহের উৎস হয়ে ওঠে। প্রথম প্রথম আপনি হয়তো ভাইবোনদেরকে আপনার প্রয়োজনগুলো সম্বন্ধে জানানোর ব্যাপারে একটু সংকোচ বোধ করতে পারেন। তবে, খোলাখুলিভাবে কথা বললে আপনার সহবিশ্বাসীরা সেটার প্রতি উপলব্ধি দেখাবে। এটা তাদেরকে “অকল্পিত” বা অকপট “ভ্রাতৃপ্রেম” দেখানোর সুযোগ করে দেবে। (১ পিতর ১:২২) তাদেরকে বলুন না কেন যে, সভাতে যাওয়ার জন্য আপনার সাহায্যের প্রয়োজন, পরিচর্যায় তাদের সঙ্গে কাজ করতে চান অথবা তাদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে চান? অবশ্য, আমাদের অতিরিক্ত দাবি করা উচিত নয় বরং তাদের সাহায্যের জন্য উপলব্ধি দেখানো উচিত।

ইতিবাচক হোন: আনন্দ না হারিয়ে দীর্ঘদিন ধরে থাকা অসুস্থতার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার মূল চাবিকাঠি বেশিরভাগ সময়ই আপনার হাতে থাকে। বিষণ্ণতা এবং হতাশার কারণে আপনি নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করার দিকে পরিচালিত হতে পারেন। বাইবেল বলে: “মানুষের আত্মা তাহার পীড়া সহিতে পারে, কিন্তু ভগ্ন আত্মা কে বহন করিতে পারে?”—হিতো. ১৮:১৪.

ম্যাগডেলেনা বলেন: “আমার সমস্যাগুলোর ওপর মনোযোগ দেওয়ার বিষয়টা এড়ানোর জন্য আমি কঠোর প্রচেষ্টা করি। আমি যখন একটু ভালো বোধ করি, তখন দিনগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করি। আমি সেই ব্যক্তিদের জীবনকাহিনি পাঠ করার মাধ্যমে উৎসাহ পাই, যারা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও বিশ্বস্ত রয়েছে।” ইজাবেলা এই বিষয়টা চিন্তা করে শক্তি লাভ করেন যে, যিহোবা তাকে ভালোবাসেন এবং তাকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন। তিনি বলেন: “আমি জানি যে, যিহোবার সেবায় আমি যা করি সেটাকে তিনি মূল্যবান বলে গণ্য করেন এবং জীবনে আমার এক উদ্দেশ্য রয়েছে। এ ছাড়া, ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আমার এক চমৎকার আশা রয়েছে।”

বিগনিইভ বলেন: “আমার অসুস্থতা আমাকে নম্রতা এবং বাধ্যতা সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছে। এটা আমাকে অন্তর্দৃষ্টি এবং উত্তম বিচারবুদ্ধি দেখাতে ও সেইসঙ্গে হৃদয় থেকে ক্ষমা করার শিক্ষা প্রদান করেছে। আত্মকরুণার অনুভূতি ছাড়াই আমি যিহোবার সেবায় আনন্দ খুঁজে পেতে শিখেছি। বস্তুতপক্ষে, আমি আধ্যাত্মিক উন্নতি করে চলার ব্যাপারে অনুপ্রেরণা লাভ করেছি।”

মনে রাখবেন যে, যিহোবা মনোযোগের সঙ্গে আপনার ধৈর্য লক্ষ করেন। আপনি যখন কষ্ট ভোগ করেন, তখন তিনি আপনার জন্য সমবেদনা অনুভব করেন এবং আপনার জন্য চিন্তা করেন। তিনি ‘আপনার কার্য্য, এবং তাঁহার নামের প্রতি প্রদর্শিত আপনার প্রেম, এই সকল ভুলিয়া যাইবেন না।’ (ইব্রীয় ৬:১০) সেই প্রতিজ্ঞার প্রতি মনোযোগ দিন, যা তিনি তাঁকে ভয় করে এমন ব্যক্তিদের কাছে করেছেন: “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।”—ইব্রীয় ১৩:৫.

আপনি যদি মাঝেমধ্যে নিরাশ হয়ে পড়েন, তাহলে নতুন জগতে বাস করার চমৎকার আশার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। সেই সময় খুব দ্রুত এগিয়ে আসছে, যখন আপনি পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যের আশীর্বাদগুলো নিজের চোখে দেখতে পাবেন!

[২৮, ২৯ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তারা প্রচার করে চলছে

“আমি আর নিজে নিজে হাঁটতে পারি না, তাই আমার স্ত্রী অথবা অন্য ভাই ও বোনেরা পরিচর্যায় আমার সঙ্গে যায়। আমি উপস্থাপনা এবং বাইবেলের বিভিন্ন পদ মুখস্থ করি।”—ইশি, যিনি চোখে কম দেখেন।

“টেলিফোনে সাক্ষ্যদান করা ছাড়াও, আমি চিঠি লিখি এবং নিয়মিতভাবে কিছু আগ্রহী ব্যক্তির সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করি। আমি যখন হাসপাতালে থাকি, তখন সবসময় আমার বিছানার পাশে বাইবেল এবং প্রকাশনাদি রাখি। এই বিষয়টা আমাকে উত্তম আলোচনা শুরু করতে সাহায্য করেছে।”—ম্যাগডেলেনা, যার সিস্‌টেমেটিক লুপ্যাস্‌ এরিথেম্যাটোসাস্‌ নামক রোগ ধরা পড়েছে।

“আমি ঘরে ঘরে প্রচার করতে পছন্দ করি কিন্তু আমি যখন সুস্থ বোধ করি না, তখন টেলিফোনে সাক্ষ্যদান করি।”—ইজাবেলা, যিনি ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে ভুগছেন।

“আমার পুনর্সাক্ষাৎ করতে এবং বাইবেল অধ্যয়নে সাহায্য করতে ভালো লাগে। যে-দিনগুলোতে আমি ভালো থাকি, সেই দিনগুলোতে আমি ঘরে ঘরে সাক্ষ্য দিতে পছন্দ করি।”—বারবারা, যার ব্রেইন টিউমার রয়েছে।

“আমি আমার ব্যাগের মধ্যে সামান্য কয়েকটা পত্রিকা নিই। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি জয়েন্টে ব্যথা সহ্য করতে পারি, ততক্ষণ আমি বাইরে থাকি।”—বিগনিইভ, রিউম্যাটয়েড আর্থরাইটিসের রোগী।

[৩০ পৃষ্ঠার চিত্র]

ছোটো-বড়ো সকলেই উৎসাহের উৎস হতে পারে