সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আমাদের অতীতের রত্নগুলো সংরক্ষণ করে রাখা

আমাদের অতীতের রত্নগুলো সংরক্ষণ করে রাখা

আমাদের আর্কাইভ থেকে

আমাদের অতীতের রত্নগুলো সংরক্ষণ করে রাখা

যিহোবার লোকেদের এক সমৃদ্ধশালী আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার রয়েছে। সেই উত্তরাধিকারের চমৎকার নথি কেবল আমাদের প্রকাশনা থেকেই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে এমন সব ছবি, চিঠি, ব্যক্তিগত ঘটনা এবং নিদর্শন থেকে নেওয়া যেতে পারে, যেগুলো আমাদের উপাসনা, আমাদের প্রচার কাজ এবং আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু, এই ধরনের বিষয়বস্তু সংরক্ষণ করে রাখা এবং অতীত নিয়ে গবেষণা করার উপকার কী? আসলে, প্রাচীন ইস্রায়েলে পরিবারের মস্তকদের তাদের সন্তানদেরকে যিহোবার আইন ও বিস্ময়কর কাজগুলো জানাতে হতো, যেন ‘তাহারা ঈশ্বরে প্রত্যাশা রাখিতে’ পারে।—গীত. ৭৮:১-৭.

আর্কাইভের বিষয়গুলো বা আমাদের অতীতের মূল্যবান তথ্যগুলো নিয়ে গবেষণা করা, যিহোবার উদ্দেশ্য সম্পাদন করার ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে এক ভূমিকা পালন করে আসছে। উদাহরণস্বরূপ, বিরোধীরা যখন যিরূশালেম মন্দিরের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তখন মাদীয় প্রদেশ অক্‌মথায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অতীতের মূল্যবান তথ্যগুলো অনুসন্ধান করে, এই ধরনের নির্মাণ প্রকল্পের ব্যাপারে কোরস রাজার দ্বারা জারি করা এক নথি পাওয়া গিয়েছিল। (ইষ্রা ৬:১-৪, ১২) এভাবে, ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। এ ছাড়া, সুসমাচার লেখক লূকও আর্কাইভের উৎসগুলো ব্যবহার করেছিলেন, যিনি ‘প্রথম হইতে সকল বিষয় সবিশেষ অনুসন্ধান করিতেন।’—লূক ১:১-৪.

পরিচালকগোষ্ঠী আমাদের ঈশতান্ত্রিক ইতিহাসের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী। আমাদের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করা, সেগুলোর তথ্য প্রস্তুত করা এবং অন্যদেরকে তা প্রদান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য বলেছিলেন: “আমরা কোথায় যাচ্ছি, তা জানতে হলে, আমরা কোথা থেকে এসেছি, তা জানতে হবে।” এই কারণে, নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে অবস্থিত বিশ্ব প্রধান কার্যালয়ে সম্প্রতি রাইটিং আর্কাইভ নামে একটা ডিপার্টমেন্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং এটা রাইটিং কমিটি-র নির্দেশনাধীনে রয়েছে।

আমাদের “পারিবারিক অ্যালবাম” এবং “পারিবারিক সম্পত্তি”

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অতীত ম্লান হয়ে যায় আর আমাদের মধ্যে অধিকাংশই সম্ভবত ব্যক্তিগত পারিবারিক নথি পুরোপুরিভাবে ধরে রাখতে চাই। রাইটিং আর্কাইভের মধ্যে আমাদের সমৃদ্ধশালী ও বৃদ্ধিরত উত্তরাধিকার সংরক্ষণ এবং সেগুলোর তথ্য প্রস্তুত করার জন্য এখন অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ চলছে। আর্কাইভের মধ্যে সতর্কতার সঙ্গে রাখা ছবিগুলোকে আমাদের ‘পারিবারিক অ্যালবামের’ অংশ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। আমাদের আগের প্রকাশনাদিতে, সরাসরি নিজেদের বলা রোমাঞ্চকর বিবরণ এবং অমূল্য স্মৃতিগুলোও সেই রত্নগুলোর অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো আর্কাইভে রাখা হয়েছে। এই ধরনের বিষয়গুলো হচ্ছে “পারিবারিক সম্পত্তি,” যেগুলো আমাদের ঈশতান্ত্রিক উত্তরাধিকার সম্বন্ধে জ্ঞানালোক প্রদান করে এবং আমাদের আধ্যাত্মিক পরিবারের ভবিষ্যতের দিকে আস্থা সহকারে তাকাতে সাহায্য করে।

আমরা “আমাদের আর্কাইভ থেকে” নামক নতুন বৈশিষ্ট্যটির মাধ্যমে আপনাদেরকে রাইটিং আর্কাইভ দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই বিষয়টা প্রহরীদুর্গ পত্রিকার অধ্যয়ন সংস্করণে নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রকাশ করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, আগামী সংখ্যায় আমরা ছবিসহ এক বিবরণ প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছি, যাতে এই প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়া যায় যেমন, ডউন মোবাইল কী? কে এটা ব্যবহার করেছিলেন? কখন এটা ব্যবহার করা হয়েছিল এবং কোন উদ্দেশ্যে?

পরিবারের স্মৃতি ধরে রাখে এমন এক অ্যালবামের মতো অতীতের মূল্যবান তথ্যগুলো আমাদেরকে নিজেদের সম্বন্ধে এবং আমাদের আধ্যাত্মিক পূর্বপুরুষদের সম্বন্ধে অনেক কিছু জানায়—আমাদের পূর্বে সেবা করেছে এমন ব্যক্তিদের বিশ্বাস এবং সাহস সম্বন্ধে, আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতাকে সেবা করার আনন্দ এবং বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্বন্ধে আর সেইসঙ্গে তাঁর লোকেদের প্রতি ঈশ্বরের পরিচালনা ও নিশ্চিত সমর্থন সম্বন্ধে। (দ্বিতীয়. ৩৩:২৭) আমাদের আস্থা রয়েছে যে, যিহোবা আমাদের আধ্যাত্মিক ইতিহাসকে সংরক্ষণ করার এই ক্রমাগত প্রচেষ্টাকে আশীর্বাদ করবেন, যাতে আমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য আগের চেয়ে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী হই।

[৩১ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

আরও ভালো করে দেখা

খ্রিস্টীয় সাহিত্যাদি, বিভিন্ন ডিভিডি এবং অন্যান্য বাইবেল ভিত্তিক বিষয়বস্তু প্রস্তুত করার সময় আমাদের লেখকরা, শিল্পীরা, গবেষকরা এবং অন্যান্যরা আর্কাইভের তথ্যগুলো ব্যবহার করে থাকে। সেই কারণে, রাইটিং আর্কাইভ বিভিন্ন উৎস থেকে যেমন, শাখা অফিস, বেথেলের বিভিন্ন বিভাগ, মণ্ডলী, ব্যক্তি বিশেষ এবং জাগতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রাপ্ত ব্যাপক সংখ্যক ঐতিহাসিক বিষয়বস্তু সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করার জন্য বিশেষ যত্ন এবং ব্যবহারিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে থাকে। নীচে এই কাজের যে-সারবর্ণনা রয়েছে, তা বিবেচনা করুন।

অর্জন এবং বিশ্লেষণ: স্বতন্ত্র বিষয়গুলো ক্রমাগতভাবে আর্কাইভে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই স্বেচ্ছাকৃতভাবে দান করা হয়েছে বা সেই ব্যক্তি-বিশেষদের কাছে থেকে ধার হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যাদের পরিবারের অনেক দশক ধরে যিহোবাকে বিশ্বস্তভাবে সেবার করার এক নথি রয়েছে। এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ এবং তুলনা করা আমাদের ইতিহাস সম্বন্ধে এবং যারা সেই সময়ে বাস করেছিলেন তাদের সম্বন্ধে আমাদের বোধগম্যতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

শ্রেণীভুক্ত করা: রাইটিং আর্কাইভ-এর সংগ্রহ হাজার হাজার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে, কিছু বিষয়বস্তু একশ বছরেরও বেশি পুরোনো। এগুলোর বিভিন্ন গঠন, আকার এবং বিন্যাস রয়েছে আর তাই ভবিষ্যতে ব্যবহার করার জন্য এগুলোকে যত্নের সঙ্গে শ্রেণীভুক্ত করতে হয়।

পুনর্স্থাপন এবং সংরক্ষণ: পুনর্স্থাপনের দক্ষ পদ্ধতি ব্যবহার করে, জীর্ণ বই এবং নিদর্শনগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। বিভিন্ন নথিপত্র, ছবি, সংবাদপত্রের বিভিন্ন অংশ বিশেষ, বিভিন্ন চলচ্চিত্র এবং রেকর্ডিংগুলো কম্পিউটারে রাখার উপযোগী করা হচ্ছে। এর ফলে, এগুলো কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে, যাতে করে মূল নথিপত্রগুলো অথবা ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে, এমন সামগ্রীগুলো সরাসরি ব্যবহার করা এড়ানো যেতে পারে।

সংগ্রহ এবং তথ্য আহরণ: আর্কাইভের বিষয়বস্তু যাতে হারিয়ে না যায় এবং আলো ও আর্দ্রতা থেকে সুরক্ষিত থাকে, সেজন্য এক সুশৃঙ্খল ও সুরক্ষিত উপায়ে এগুলোকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। গবেষণার কাজে সাহায্য করার জন্য এবং আমাদের অতীতের এই মূল্যবান রত্নগুলোকে আহরণ করার জন্য একটা ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে।

[৩২ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

১. “ফটো-ড্রামা অভ্‌ ক্রিয়েশন”-এর জন্য পোস্টার। ২. গ্রাহক নিবন্ধীকরণ। ৩. লাউডস্পীকার লাগানো গাড়ি। ৪. ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার প্রচ্ছদ। ৫. জে. এফ. রাদারফোর্ডের কারাগার সংক্রান্ত নোটিশ। ৬. ডব্লিউবিবিআর মাইক্রোফোন। ৭. ফোনোগ্রাফ। ৮. বই বহনকারী বাক্স। ৯. ব্যক্তিগত নোট। ১০. জে.এফ. রাদারফোর্ডের কাছে পাঠানো টেলিগ্রাম।