সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

ইস্রায়েলীয়রা কি অপরাধীদের দণ্ডে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিত?

▪ প্রাচীনকালে অনেক জাতি কোনো কোনো অপরাধীকে একটা দণ্ড বা খুঁটিতে বিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দিত। রোমীয়রা এইরকম একজন ব্যক্তিকে একটা দণ্ডের সঙ্গে বেঁধে রাখত অথবা বিদ্ধ করত, যেখানে হয়তো তিনি যন্ত্রণা, তৃষ্ণা, ক্ষুধা এবং আবহাওয়ার কারণে তার সহ্যশক্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কয়েক দিন ধরে বেঁচে থাকতেন। রোমীয়রা বিদ্ধ করাকে এমন এক লজ্জাজনক শাস্তি বলে গণ্য করত, যেটা সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধীরা পাওয়ার যোগ্য ছিল।

প্রাচীন ইস্রায়েলের সম্বন্ধে কী বলা যায়? ইস্রায়েলীয়রা কি অপরাধীদের দণ্ডে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিত? মোশির ব্যবস্থায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল: “যদি কোন মনুষ্য প্রাণদণ্ডের যোগ্য পাপ করে, আর তাহার প্রাণদণ্ড হয়, এবং তুমি তাহাকে গাছে টাঙ্গাইয়া দেও, তবে তাহার শব রাত্রিতে গাছের উপরে থাকিতে দিবে না, কিন্তু নিশ্চয় সেই দিনই তাহাকে কবর দিবে।” (দ্বিতীয়. ২১:২২, ২৩) তাই, স্পষ্টতই, ইব্রীয় শাস্ত্র লেখার সময়কালে যে-ব্যক্তি মৃত্যুর যোগ্য ছিলেন, তাকে প্রথমে বধ করা হতো আর এরপর তার দেহ একটা দণ্ডে বা গাছে ঝুলিয়ে রাখা হতো।

এই বিষয়ে লেবীয় পুস্তক ২০:২ পদ বলে: “ইস্রায়েল-সন্তানগণের কোন ব্যক্তি কিম্বা ইস্রায়েলের মধ্যে প্রবাসকারী কোন বিদেশী লোক যদি আপন বংশের কাহাকেও মোলক দেবের উদ্দেশে উৎসর্গ করে, তবে তাহার প্রাণদণ্ড অবশ্য হইবে, দেশের লোকেরা তাহাকে প্রস্তরাঘাতে বধ করিবে।” যারা “ভূতড়িয়া কিম্বা গুণী” ছিল, তাদেরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো। কীভাবে? ‘তাহাদিগকে প্রস্তরাঘাত’ করার মাধ্যমে।—লেবীয়. ২০:২৭.

দ্বিতীয় বিবরণ ২২:২৩, ২৪ পদে আমরা পড়ি: “যদি কেহ পুরুষের প্রতি বাগ্দত্তা কোন কুমারীকে নগরমধ্যে পাইয়া তাহার সহিত শয়ন করে; তবে তোমরা সেই দুই জনকে বাহির করিয়া নগরদ্বারের নিকটে আনিয়া প্রস্তরাঘাতে বধ করিবে; সেই কন্যাকে বধ করিবে, কেননা নগরের মধ্যে থাকিলেও সে চীৎকার করে নাই, এবং সেই পুরুষকে বধ করিবে, কেননা সে আপন প্রতিবাসীর স্ত্রীকে মানভ্রষ্টা করিয়াছে; এইরূপে তুমি আপনার মধ্য হইতে দুষ্টাচার লোপ করিবে।” তাহলে, প্রাথমিক ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে জঘন্য অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার একটা প্রধান পদ্ধতি ছিল প্রস্তরাঘাত করা। *

দ্বিতীয় বিবরণ ২১:২৩ পদ বলে, “যে ব্যক্তিকে টাঙ্গান যায়, সে ঈশ্বরের শাপগ্রস্ত।” “ঈশ্বরের শাপগ্রস্ত,” বলে গণ্য করা হতো এমন একজন দুষ্কর্মকারীর মৃতদেহ জনসমক্ষে টাঙিয়ে দেওয়া নিশ্চিতভাবেই ইস্রায়েলীয়দের ওপর প্রভাব ফেলত। বস্তুতপক্ষে, এই ধরনের একজন মৃত ব্যক্তির দেহ একটা দণ্ডে বা গাছে ঝুলিয়ে রাখা অন্যদের জন্য এক সাবধানবাণী হিসেবে কাজ করত।

[পাদটীকা]

^ অনেক পণ্ডিত ব্যক্তির মতানুসারে, ব্যবস্থার অধীনে একজন অপরাধীকে প্রথমে বধ করা হতো এবং এরপর তার মৃতদেহ দণ্ডে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। কিতু, এই প্রমাণ পাওয়া যায় যে, প্রথম শতাব্দীতে যিহুদিরা কিছু অপরাধীকে জীবিত অবস্থায়ই বিদ্ধ করেছিল এবং এরপর দণ্ডে ঝুলন্ত অবস্থায়ই তারা মারা গিয়েছিল।

[১৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

স্পষ্টতই, ইব্রীয় শাস্ত্র লেখার সময়কালে যে-ব্যক্তি মৃত্যুর যোগ্য ছিলেন, তাকে প্রথমে বধ করা হতো আর এরপর তার দেহ একটা দণ্ডে বা গাছে ঝুলিয়ে রাখা হতো