সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

নতুন জগতে জীবনযাপনের জন্য এখনই প্রস্তুত হোন

নতুন জগতে জীবনযাপনের জন্য এখনই প্রস্তুত হোন

‘তাহাদিগকে এই আজ্ঞা দেও, যেন পরের উপকার করে, যেন, যাহা প্রকৃতরূপে জীবন, তাহাই ধরিয়া রাখিতে পারে।’—১ তীম. ৬:১৭-১৯.

গান সংখ্যা: ৪৩, ৪০

১, ২. (ক) আপনি পরমদেশে কী করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।) (খ) আমরা নতুন জগতে কোন বিষয়টা করে সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাভ করব?

আমরা সত্যিকার অর্থেই ‘অনন্ত জীবনের’ জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি। প্রেরিত পৌল এটাকে “প্রকৃতরূপে জীবন” বলে উল্লেখ করেছিলেন। (পড়ুন, ১ তীমথিয় ৬:১২, ১৯.) অধিকাংশ ব্যক্তির জন্য এর অর্থ হবে পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার সুযোগ। পরমদেশে প্রতিদিন সকালে সুস্থসবল দেহ এবং আনন্দ ও পরিতৃপ্তির অনুভূতি নিয়ে জেগে উঠতে কেমন লাগবে, তা এখন কল্পনা করা কঠিন। (যিশা. ৩৫:৫, ৬) একটু চিন্তা করুন, আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটাতে কতই-না ভালো লাগবে, যাদের মধ্যে পুনরুত্থিত ব্যক্তিরাও থাকবেন! (যোহন ৫:২৮, ২৯; প্রেরিত ২৪:১৫) সেই সময়ে আপনার হাতে নতুন নতুন বিষয় শেখার জন্য সময় থাকবে আর আপনি যে-বিষয়গুলো করতে পছন্দ করেন, সেই বিষয়ে আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি বিজ্ঞান সমন্ধে আরও শিখতে পারবেন। কিংবা আপনি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে অথবা নিজের বাড়ির নকশা তৈরি করার বিষয়েও শিখতে পারবেন।

যদিও আমরা এই উত্তম বিষয়গুলো করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, তবে যে-বিষয়টা করে আমরা সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাভ করব তা হল, যিহোবার উপাসনা করা। যখন সকল লোক যিহোবার নামকে পবিত্র বলে গণ্য করবে এবং যিহোবাকে তাদের শাসক হিসেবে মেনে নেবে, তখন জীবন কেমন হবে, তা একটু কল্পনা করে দেখুন। (মথি ৬:৯, ১০) আমরা এটা দেখে অনেক রোমাঞ্চিত হব, ঈশ্বরের উদ্দেশ্য অনুযায়ী পুরো পৃথিবী সিদ্ধ লোকেদের দ্বারা পরিপূর্ণ হবে। আর আমরা যখন ধীরে ধীরে সিদ্ধতায় পৌঁছাব, তখন যিহোবার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তোলা আমাদের জন্য কতটা সহজ হবে, তা একটু চিন্তা করে দেখুন!—গীত. ৭৩:২৮; যাকোব ৪:৮.

৩. এখন আমাদের কীসের জন্য প্রস্তুত হতে হবে?

যিহোবা যে এইসমস্ত চমৎকার বিষয় সম্পাদন করবেন, সেই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত কারণ “ঈশ্বরের সকলই সাধ্য।” (মথি ১৯:২৫, ২৬) আমরা যদি নতুন জগতে চিরকাল বেঁচে থাকতে চাই, তাহলে এখনই আমাদের অনন্তজীবন ‘ধরিয়া রাখিতে’ হবে। আমরা জানি, শেষ শীঘ্র আসতে যাচ্ছে। তাই আমাদের এমনভাবে জীবনযাপন করতে হবে, যা প্রকাশ করে, শেষ যেকোনো সময় আসতে পারে আর আমরা সেই অপেক্ষাতেই আছি। নতুন জগতে জীবনযাপনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার ব্যাপারে আমাদের এখনই যথাসাধ্য করতে হবে। কীভাবে আমরা এখনই প্রস্তুত হতে পারি? আসুন আমরা তা লক্ষ করি।

যেভাবে প্রস্তুত হওয়া যায়

৪. কীভাবে আমরা এখনই নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হতে পারি? একটা উদাহরণ দিন।

কীভাবে আমরা এখনই নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হতে পারি? আমরা যদি অন্য কোনো দেশে গিয়ে বাস করার পরিকল্পনা করি, তাহলে আমরা হয়তো সেই দেশে জীবনযাপনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা হয়তো এখনই সেখানকার লোকেদের ভাষা ও রীতিনীতি সম্বন্ধে শিখতে শুরু করব এবং তাদের কিছু খাবার খেয়ে দেখার চেষ্টা করব। একইভাবে, আমরা ইতিমধ্যেই নতুন জগতে আছি এমনভাবে জীবনযাপন করার মাধ্যমে, আমরা এখনই নতুন জগতে জীবনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারি। আসুন আমরা তা করার কিছু উপায় পরীক্ষা করে দেখি।

৫, ৬. যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনার প্রতি বাধ্য হতে শেখা, কীভাবে আমাদেরকে নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে?

বর্তমান জগতে, শয়তান লোকেদের মধ্যে এমন চিন্তা ঢুকিয়ে দিতে চায়, তারা যা খুশি তা করতে পারে। অনেকে মনে করে, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ আর ঈশ্বরের বাধ্য হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এর ফল কী হয়েছে? লোকেরা অনেক দুঃখকষ্ট ও যন্ত্রণা ভোগ করছে। (যির. ১০:২৩) কিন্তু, যিহোবা হলেন একজন প্রেমময় শাসক। নতুন জগতে সকলে যখন তাঁর বাধ্য থাকবে, তখন জীবন আরও কত আনন্দদায়কই-না হবে!

নতুন জগতে, আমরা এই পৃথিবীকে এক অপূর্ব পরমদেশে পরিণত করার এবং পুনরুত্থিত ব্যক্তিদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে নির্দেশনা লাভ করব। সেই নির্দেশনা অনুসরণ করা আমাদের কাছে উপভোগ্য হবে। যিহোবা আমাদের অনেক কাজ করতে দেবেন। কিন্তু, সেখানে নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরা যদি আমাদের এমন কিছু করতে বলেন যা আমরা করতে পছন্দ করি না, তাহলে? আমরা কি তখন তাদের বাধ্য হব? আমরা কি আনন্দের সঙ্গে আমাদের সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য যথাসাধ্য করব? নতুন জগতে অনন্তজীবন লাভের বিষয়ে প্রস্তুত হওয়ার জন্য, যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনার প্রতি আমাদের এখন বাধ্য থাকতে হবে।

৭, ৮. (ক) কেন আমাদের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে? (খ) কোনো কোনো খ্রিস্টানের জীবনে কোন ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে? (গ) নতুন জগতে আমরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি?

আমরা যদি নতুন জগতে জীবনযাপনের জন্য প্রস্তুত হতে চাই, তাহলে আমাদের সন্তুষ্ট হতে শিখতে হবে এবং যিহোবার সংগঠন ও সেইসঙ্গে পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের যখন কোনো নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন আমরা সাধারণত স্বেচ্ছায় তা করার জন্য সহযোগিতা করি এবং আনন্দের সঙ্গে ও সন্তুষ্ট মন নিয়ে সেই কাজ করার জন্য যথাসাধ্য করি। আমরা যদি এখন নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে সহযোগিতা করি, তাহলে সম্ভবত নতুন জগতেও আমরা একই বিষয় করব। (পড়ুন, ইব্রীয় ১৩:১৭.) ইস্রায়েলীয়রা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করেছিল, তখন তারা কোন জায়গায় বাস করবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। (গণনা. ২৬:৫২-৫৬; যিহো. ১৪:১, ২) নতুন জগতে আমাদের প্রত্যেককে ঠিক কোন জায়গায় থাকার জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, তা আমরা জানি না। কিন্তু আমরা যদি সহযোগিতা করতে শিখি, তাহলে যেখানেই থাকি না কেন, আমরা যিহোবার ইচ্ছা পালন করে আনন্দিত হব।

ঈশ্বরের নতুন জগতে রাজ্য শাসনের অধীনে সেবা করা কতই-না সম্মানের বিষয় হবে, তা একটু কল্পনা করে দেখুন! এই কারণে, আমরা এখনই আনন্দের সঙ্গে যিহোবার সংগঠনের সঙ্গে সহযোগিতা করি এবং আমাদের যে-দায়িত্ব দেওয়া হয়, তা পালন করি। কিন্তু কখনো কখনো, আমাদের দায়িত্ব পরিবর্তন হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বেথেলকর্মীকে ক্ষেত্রে সেবা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, বয়স অথবা অন্যান্য পরিস্থিতির কারণে কোনো কোনো ভ্রমণ অধ্যক্ষকে বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা তাদের নতুন দায়িত্ব পেয়ে আনন্দিত এবং যিহোবা তাদের আশীর্বাদ করছেন। আমরা যদি যিহোবার সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করি, তাঁর সেবা করার জন্য যথাসাধ্য করি এবং আমাদের যে-দায়িত্বই দেওয়া হোক না কেন, সন্তুষ্ট মনে তা করি, তাহলে আমরা সুখী হব এবং যিহোবা আমাদের আশীর্বাদ করবেন। (পড়ুন, হিতোপদেশ ১০:২২.) নতুন জগতে, আমরা যদি থাকার জন্য কোনো একটা জায়গা পছন্দ করি আর যিহোবার সংগঠন যদি আমাদের অন্য জায়গায় যেতে বলে, তাহলে? সেই সময়ে, আমরা যেখানেই থাকি না কেন অথবা যা-ই করি না কেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে না। বরং নতুন জগতে বাস করার সুযোগ পেয়েছি বলেই আমরা তখন কৃতজ্ঞ থাকব।—নহি. ৮:১০.

৯, ১০. (ক) কেন নতুন জগতে আমাদের হয়তো ধৈর্যের প্রয়োজন হবে? (খ) কীভাবে এখন আমরা দেখাতে পারি, আমরা ধৈর্যশীল?

নতুন জগতে, কখনো কখনো আমাদের হয়তো ধৈর্যের প্রয়োজন হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সেখানে আমরা হয়তো কাউকে কাউকে অনেক রোমাঞ্চিত হয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব পুনরুত্থিত হয়েছে এমন ঘটনা বলতে শুনব। কিন্তু, আমাদের প্রিয়জনরা তখনও পুনরুত্থিত না-ও হতে পারে আর আমাদের হয়তো আরও অপেক্ষা করতে হবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে আমরা কি তাদের আনন্দের অংশী হব এবং ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করব? (রোমীয় ১২:১৫) আমরা যদি যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য এখন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করি, তাহলে এটা আমাদের সেই সময়ে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করবে।—উপ. ৭:৮.

১০ এ ছাড়া, বাইবেলের সত্য সম্বন্ধে আমাদের বোধগম্যতায় যখন কোনো রদবদল করা হয়, তখন ধৈর্য ধরার মাধ্যমে আমরা নতুন জগতের জন্য প্রস্তুত হতে পারি। আমরা কি নতুন বিষয়বস্তু অধ্যয়ন করি এবং তা পুরোপুরি বুঝতে না পারলেও ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করি? যদি তা করি, তাহলে নতুন জগতে যিহোবা যখন আমাদের নতুন নতুন নির্দেশনা দেবেন, তখন আমাদের পক্ষে ধৈর্য ধরা আরও সহজ হবে।—হিতো. ৪:১৮; যোহন ১৬:১২.

১১. কেন আমাদের এখন অন্যদের ক্ষমা করা শিখতে হবে এবং এটা কীভাবে আমাদের নতুন জগতে সাহায্য করবে?

১১ নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আরেকটা উপায় হল, ক্ষমা করতে শেখা। খ্রিস্টের হাজার বছরের রাজত্বের সময়ে, সকলকে সিদ্ধ অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। (প্রেরিত ২৪:১৫) সেই সময়ে আমরা কি পরস্পরের প্রতি প্রেম দেখাব ও একে অন্যকে ক্ষমা করব? আমরা যদি এখন অন্যদের ক্ষমা করি এবং তাদের সঙ্গে উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখি, তাহলে নতুন জগতে তা করা আরও সহজ হবে।—পড়ুন, ইফিষীয় ৪:২, ৩২.

১২. কেন নতুন জগতে জীবনের জন্য আমাদের এখনই প্রস্তুত হতে হবে?

১২ নতুন জগতে আমরা হয়তো সবসময় আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সব কিছু পাব না অথবা আমাদের হয়তো তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা যে-পরিস্থিতিতেই থাকি না কেন, আমাদের কৃতজ্ঞ ও সন্তুষ্ট হতে হবে। আসলে, যিহোবা এখন আমাদের যে-সমস্ত গুণ দেখানোর জন্য শিক্ষা দিচ্ছেন, নতুন জগতে আমাদের সেই একই গুণাবলি প্রয়োজন হবে। তাই, এখন সেইসমস্ত গুণ প্রকাশ করার মাধ্যমে আমরা প্রমাণ দিই যে, নতুন জগৎ আমাদের কাছে বাস্তব এবং আমরা অনন্তজীবন লাভ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। (ইব্রীয় ২:৫; ১১:১) এ ছাড়া, আমরা এটাও প্রকাশ করি, আমরা সত্যিই এমন এক জগতে বেঁচে থাকতে চাই, যেখানে সকলে যিহোবার বাধ্য হবে।

যিহোবার সেবার প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখুন

উদ্যোগের সঙ্গে সুসমাচার প্রচার করুন

১৩. নতুন জগতে আমরা কোন বিষয়টাকে আমাদের জীবনে প্রথমে রাখব?

১৩ নতুন জগতে, জীবন উপভোগ করার মতো সমস্ত কিছুই আমাদের থাকবে। কিন্তু, যিহোবার সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণেই আমরা তখন সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাভ করতে পারব। (মথি ৪:৪) আমরা যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকব এবং আনন্দ সহকারে তাঁর সেবা করব। (গীত. ৩৭:৪) তাই এখন, যিহোবাকে আমাদের জীবনে প্রথমে রাখার মাধ্যমে আমরা নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।—পড়ুন, মথি ৬:১৯-২১.

১৪. অল্পবয়সিরা যিহোবার সেবায় কোন কোন লক্ষ্যস্থাপন করতে পারে?

১৪ কীভাবে আমরা যিহোবার সেবা আরও বেশি উপভোগ করতে পারি? তা করার একটা উপায় হচ্ছে, বিভিন্ন লক্ষ্যস্থাপন করা। তুমি যদি একজন অল্পবয়সি হয়ে থাকো, তাহলে তোমার জীবন যিহোবার সেবায় নিয়োজিত করার বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করো। তুমি কি বিভিন্ন ধরনের পূর্ণসময়ের সেবার বিষয়ে আমাদের প্রকাশনা থেকে গবেষণা করতে পারো? তুমি সেখান থেকে একটা লক্ষ্যস্থাপন করতে পারো। * অনেক বছর ধরে যিহোবার জন্য পূর্ণসময়ের সেবা করছেন এমন কারো সঙ্গে কথা বলো। তুমি যদি যিহোবার সেবায় তোমার জীবন ব্যবহার করো, তাহলে তুমি মূল্যবান প্রশিক্ষণ লাভ করবে। এই অভিজ্ঞতা তোমাকে নতুন জগতে যিহোবার সেবা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

যিহোবার সেবায় বিভিন্ন লক্ষ্যস্থাপন করুন

১৫. যিহোবার সেবায় আমরা আর কোন লক্ষ্যস্থাপন করতে পারি?

১৫ যিহোবার সেবায় আমরা বিভিন্ন লক্ষ্যস্থাপন করতে পারি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা পরিচর্যায় কোনো নতুন দক্ষতা গড়ে তোলার লক্ষ্যস্থাপন করতে পারি। এ ছাড়া, আমরা বাইবেলের নীতিগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার এবং নিজেদের জীবনে সেগুলো কাজে লাগানোর জন্য চেষ্টা করতে পারি। আমরা আমাদের সভায় জনসমক্ষে পাঠ করার দক্ষতায় উন্নতি করার জন্য অথবা আমাদের বক্তৃতার কিংবা মন্তব্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করার জন্য চেষ্টা করতে পারি। মূল বিষয়টা হল: আপনি যখন যিহোবার সেবায় বিভিন্ন লক্ষ্যস্থাপন করেন, তখন সেটা আপনাকে আরও উদ্যোগী হতে এবং নতুন জগতে জীবনের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে।

এখনই সর্বোত্তম জীবন উপভোগ করুন

আধ্যাত্মিক খাদ্যের জন্য উপলব্ধি দেখান

১৬. কেন যিহোবার সেবা করা হচ্ছে জীবনের সর্বোত্তম পথ?

১৬ ঈশ্বরের নতুন জগতে জীবনের জন্য এখনই প্রস্তুত হওয়ার সময়, আমরা কি আরও ভালো কোনো কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি? না! যিহোবাকে সেবা করা হচ্ছে জীবনের সর্বোত্তম পথ। কেউ আমাদের জোর করেছে বলে অথবা শুধুমাত্র মহাক্লেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা তাঁর সেবা করি না। যিহোবার সঙ্গে যখন আমাদের উত্তম সম্পর্ক থাকে, তখন আমাদের জীবন আরও আনন্দপূর্ণ হয় এবং আমরা আরও সুখী হই। তিনি এভাবে জীবন উপভোগ করার জন্যই আমাদের সৃষ্টি করেছিলেন। ঈশ্বরের প্রেম লাভ করা এবং আমাদের জীবনে তাঁর নির্দেশনা লাভ করা অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে আরও ভালো। (পড়ুন, গীতসংহিতা ৬৩:১-৩.) সর্বান্তঃকরণে যিহোবার উপাসনা করার ফলে যে-আনন্দ লাভ করা যায়, আমরা সকলে তা অনুভব করতে পারি। অনেক বছর ধরে তাঁর সেবা করেছেন এমন কেউ কেউ বলেছেন, এটাই হচ্ছে জীবনের সর্বোত্তম পথ।—গীত. ১:১-৩; যিশা. ৫৮:১৩, ১৪.

বাইবেল থেকে নির্দেশনা খুঁজুন

১৭. পরমদেশে ব্যক্তিগত আগ্রহের বিষয় এবং বিনোদন কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে?

১৭ পরমদেশে আমরা ব্যক্তিগত আগ্রহ এবং বিনোদনের পিছনে কিছুটা সময় ব্যয় করতে পারব। কারণ যিহোবাই আমাদের এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন, যেন আমরা নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করি এবং তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি “সমুদয় প্রাণীর বাঞ্ছা পূর্ণ” করবেন। (গীত. ১৪৫:১৬; উপ. ২:২৪) এটা ঠিক, আমাদের বিনোদন এবং বিশ্রাম প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যখন যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে প্রথমে রাখি, তখন আমরা সেগুলো আরও বেশি উপভোগ করি। নতুন জগতেও একই বিষয় ঘটবে। তাই, ‘প্রথমে তাঁহার রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা’ করা এবং যিহোবার সেবা করার মাধ্যমে আমরা যে-সমস্ত আশীর্বাদ লাভ করি, সেগুলোর প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা বিজ্ঞতার কাজ হবে।—মথি ৬:৩৩.

১৮. আমরা যে পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি, তা আমরা কীভাবে প্রকাশ করতে পারি?

১৮ নতুন জগতে আমাদের জীবন, আমাদের কল্পনার চেয়েও আরও উপভোগ্য হবে। “যাহা প্রকৃতরূপে জীবন” সেটার জন্য এখনই প্রস্তুত হওয়ার মাধ্যমে আসুন আমরা দেখাই, আমরা সেখানে থাকার জন্য কতটা উদগ্রীব। যিহোবা আমাদের যে-সমস্ত গুণ প্রকাশ করার জন্য শিক্ষা দিচ্ছেন, আসুন আমরা সেইসমস্ত গুণ গড়ে তুলি এবং উদ্যোগের সঙ্গে সুসমাচার প্রচার করি। আমাদের জীবনে যিহোবার উপাসনাকে প্রথমে রাখার মাধ্যমে যে-আনন্দ লাভ করা যায়, আসুন আমরা তা উপভোগ করি। নতুন জগতে যিহোবা যে তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞা পরিপূর্ণ করবেন, সেই বিষয়ে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তাই আসুন আমরা এখন এমনভাবে জীবনযাপন করি, যেন আমরা সেখানেই আছি!

^ অনু. 14 যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে, খণ্ড ২ (ইংরেজি) বইয়ের ৩১১-৩১৮ পৃষ্ঠা, ২০১০ সালের ১৫ নভেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় “অল্পবয়সিরা—তোমরা তোমাদের জীবনকে কীভাবে কাজে লাগাবে” শিরোনামের প্রবন্ধ এবং ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৩০ পৃষ্ঠায় দেওয়া “বিভিন্ন ধরনের পূর্ণসময়ের সেবা” শিরোনামের বাক্স দেখুন।