সত্য ঈশ্বর সম্বন্ধে
যিশুর থেকে আমরা যা শিখি
সত্য ঈশ্বর সম্বন্ধে
ঈশ্বরের কি একটা নাম আছে?
যিশু শিখিয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের একটা নাম আছে। যিশু বলেছিলেন: “অতএব তোমরা এই মত প্রার্থনা করিও; হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক।” (মথি ৬:৯) বাইবেল দেখায় যে, ঈশ্বরের নাম হল যিহোবা। (যাত্রাপুস্তক ৩:১৫) তাঁর পিতার কাছে করা প্রার্থনায় তাঁর শিষ্যদের সম্বন্ধে বলার সময়, যিশু এভাবে বলেছিলেন: “আমি ইহাদিগকে তোমার নাম জানাইয়াছি।”—যোহন ১৭:২৬.
যিহোবা কে?
যিশু যিহোবাকে ‘একমাত্র সত্যময় ঈশ্বর’ বলে সম্বোধন করেছিলেন কারণ যিহোবা হলেন সৃষ্টিকর্তা। (যোহন ১৭:৩) যিশু বলেছিলেন: “তোমরা কি পাঠ কর নাই যে, সৃষ্টিকর্ত্তা আদিতে পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন।” (মথি ১৯:৪) যিশু আরও বলেছিলেন: “ঈশ্বর আত্মা।” (যোহন ৪:২৪) তাই ঈশ্বরকে আমরা দেখতে পাই না।—যাত্রাপুস্তক ৩৩:১৭-২০.
ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান?
যিশুকে যখন একজন ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আজ্ঞা কোনটি, তখন তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: “প্রথমটী এই, ‘হে ইস্রায়েল, শুন; আমাদের ঈশ্বর প্রভু [“যিহোবা,” NW] একই প্রভু [“যিহোবা,” NW]; আর তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত মন ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে [“যিহোবাকে,” NW] প্রেম করিবে।’ দ্বিতীয়টী এই, ‘তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।’”—মার্ক ১২:২৮-৩১.
কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা ঈশ্বরকে প্রেম করি?
যিশু বলেছিলেন: “আমি পিতাকে প্রেম করি।” কীভাবে তিনি তাঁর প্রেম দেখিয়েছিলেন? “পিতা আমাকে যেরূপ আজ্ঞা দিয়াছেন,” তিনি বলেছিলেন, “আমি সেইরূপ করি।” (যোহন ১৪:৩১) তিনি আরও বলেছিলেন: “আমি সর্ব্বদা তাঁহার সন্তোষজনক কার্য্য করি।” (যোহন ৮:২৯) ঈশ্বর সম্বন্ধে জানার দ্বারা আমরা তাঁকে খুশি করতে পারি। তাঁর শিষ্যদের জন্য প্রার্থনা করার সময়, যিশু বলেছিলেন: “আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে . . . জানিতে পায়।”—যোহন ১৭:৩; ১ তীমথিয় ২:৪.
কীভাবে আমরা ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে পারি?
ঈশ্বরকে জানার একটা উপায় হল, তাঁর সৃষ্টিগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা। উদাহরণস্বরূপ, যিশু বলেছিলেন: “আকাশের পক্ষীদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; তাহারা বুনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে সঞ্চয়ও করে না, তথাপি তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাহাদিগকে আহার দিয়া থাকেন; তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?” যিশু কী শেখাতে চেয়েছিলেন? আমাদের দৈহিক চাহিদাগুলোর জন্য উদ্বিগ্নতাকে ঈশ্বরের সেবা করা থেকে আমাদেরকে বিরত করতে সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।—মথি ৬:২৬-৩৩.
যিহোবাকে জানার সবচেয়ে ভাল উপায় হল তাঁর বাক্য বাইবেল অধ্যয়ন করা। যিশু শাস্ত্রকে “ঈশ্বরের বাক্য” বলেছিলেন। (লূক ৮:২১) ঈশ্বরকে যিশু বলেছিলেন: “তোমার বাক্যই সত্যস্বরূপ।”—যোহন ১৭:১৭; ২ পিতর ১:২০, ২১.
যিশু লোকেদেরকে যিহোবা সম্বন্ধে সত্য জানতে সাহায্য করেছিলেন। যিশুর সম্বন্ধে তাঁর একজন শিষ্য বলেছিলেন: “পথের মধ্যে যখন তিনি আমাদের সহিত কথা বলিতেছিলেন, আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ খুলিয়া দিতেছিলেন, তখন আমাদের অন্তরে আমাদের চিত্ত কি উত্তপ্ত হইয়া উঠিতেছিল না?” (লূক ২৪:৩২) ঈশ্বর সম্বন্ধে জানার জন্য আমাদের অবশ্যই নম্র হতে হবে, শেখার জন্য ইচ্ছুক হতে হবে। যিশু বলেছিলেন: “তোমরা যদি না ফির ও শিশুদের ন্যায় না হইয়া উঠ, তবে কোন মতে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে না।”—মথি ১৮:৩.
কেন ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞান সুখ নিয়ে আসে?
জীবনের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বোঝার জন্য আমাদের যে-চাহিদা রয়েছে, ঈশ্বর তা মেটান। যিশু বলেছিলেন: “ধন্য [“সুখী,” বাংলা জুবিলী বাইবেল] যাহারা আত্মাতে দীনহীন” বা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন “কারণ স্বর্গ-রাজ্য তাহাদেরই।” (মথি ৫:৩) জীবনের সর্বোত্তম পথ সম্বন্ধে যিহোবা আমাদের শিক্ষা দেন। যিশু বলেছিলেন, “ধন্য [“সুখী,” বাংলা জুবিলী বাইবেল] তাহারাই, যাহারা ঈশ্বরের বাক্য শুনিয়া পালন করে।”—লূক ১১:২৮; যিশাইয় ১১:৯. (w০৮ ২/১)
আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? * বইয়ের ১ অধ্যায় দেখুন।
[পাদটীকা]
^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।
[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]
“আমি ইহাদিগকে তোমার নাম জানাইয়াছি।” —যোহন ১৭:২৬
[১২, ১৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
সৃষ্টি এবং বাইবেল থেকে আমরা যিহোবা সম্বন্ধে জানতে পারি