প্রত্যক্ষ দর্শনের ওপর কথা নেই
প্রত্যক্ষ দর্শনের ওপর কথা নেই
“একজন অজ্ঞেয়বাদী হলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি মনে করেন যে, বিভিন্ন বিষয় যেমন ঈশ্বর ও ভবিষ্যৎ জীবন, যেগুলোর বিষয়ে খ্রিস্টধর্ম ও অন্যান্য ধর্ম উদ্বিগ্ন, সেগুলো সম্বন্ধে সত্য জানা অসম্ভব। অথবা যদি একেবারেই অসম্ভব না-ও হয়ে থাকে কিন্তু এখন তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।” —দার্শনিক বারট্রেন্ড রাসেল, ১৯৫৩.
“অজ্ঞেয়বাদী” শব্দটির উদ্ভাবন যে-ব্যক্তি করেছেন, তিনি হচ্ছেন টমাস হাক্সলি নামে একজন প্রাণীবিজ্ঞানী। হাক্সলি ১৮২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আর তিনি চার্লস ডারউইনের সমসাময়িক ব্যক্তি এবং বিবর্তনবাদ শিক্ষার একজন সমর্থক ছিলেন। হাক্সলি ১৮৬৩ সালে লিখেছিলেন যে, তিনি এমন কোনো প্রমাণ দেখতে পান না যে একজন ঈশ্বর রয়েছেন, যিনি “আমাদের ভালবাসেন এবং আমাদের জন্য চিন্তা করেন, যেমনটা খ্রিস্টধর্ম দাবি করে থাকে।”
আজকে অনেকেই প্রভাববিস্তারকারী সেই ব্যক্তিদের মতামতকে এই বলে মেনে নেবে যে, তারা কেবল সেটাই বিশ্বাস করবে, যা তারা দেখতে পায়। প্রমাণ নেই এমন কোনো ব্যক্তি কিংবা বিষয়কে বিশ্বাস করাটা প্রতারিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা হয়তো বলতে পারে।
বাইবেল কি বলে যে, আমরা অন্ধের মতো ঈশ্বরে বিশ্বাস করি? বরং একেবারে বিপরীতটাই বলে থাকে। বাইবেল দেখায় যে, প্রমাণিত নয় এমন দাবিগুলোকে বিশ্বাস করা হল প্রতারিত হওয়া—এমনকি বোকামি। “যে অবোধ, সে সকল কথায় বিশ্বাস করে,” বাইবেল বলে, “কিন্তু সতর্ক লোক নিজ পাদক্ষেপের প্রতি লক্ষ্য রাখে।”—হিতোপদেশ ১৪:১৫.
তাহলে, ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা সম্বন্ধে কী বলা যায়? এই বিষয়ে কি কোনো প্রমাণ আছে যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে, আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং চিন্তা রয়েছে সেই কথা না হয় বাদই রইল?
ঈশ্বরের গুণাবলি প্রকাশিত হয়েছে
বাইবেল লেখক পৌল আথীনীর উচ্চশিক্ষিত এক দল লোকের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছিলেন যে, ঈশ্বর “জগৎ ও তন্মধ্যস্থ সমস্ত বস্তু নির্ম্মাণ করিয়াছেন।” পৌল তার সন্দেহপ্রবণ শ্রোতাদের বলেছিলেন যে, ঈশ্বর মানবজাতির প্রতি আগ্রহী আর বস্তুতপক্ষে “তিনি আমাদের কাহারও হইতে দূরে নহেন।”—প্রেরিত ১৭:২৪-২৭.
কেন পৌল এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন যে, ঈশ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে এবং তিনি তাঁর সৃষ্ট মানুষের প্রতি আগ্রহী? রোম শহরে তার সহখ্রিস্টানদের উদ্দেশে চিঠি লেখার সময় পৌল একটা কারণ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ঈশ্বর সম্বন্ধে রোমীয় ১:২০.
বলেছিলেন: “তাঁহার অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে।”—পরবর্তী পৃষ্ঠাগুলোতে ঈশ্বরের তিনটে গুণ সম্বন্ধে তুলে ধরা হয়েছে, যেগুলো তাঁর সৃষ্ট বিভিন্ন বিষয় থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। এই উদাহরণগুলো পরীক্ষা করার সময় নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘ঈশ্বরের এই গুণাবলি সম্বন্ধে শেখা আমাকে কীভাবে প্রভাবিত করে?’ (w০৮ ৫/১)
[৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
বাইবেল বলে না যে, আমরা অন্ধের মতো ঈশ্বরে বিশ্বাস করি