সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর”

“সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর”

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

“সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর”

২ করিন্থীয় ১:৩, ৪

 জীবনে অনেক বিষয়—কষ্টভোগ, নিরাশা, একাকিত্ব—দুঃখ, এমনকি হতাশা নিয়ে আসতে পারে। এইরকম সময়গুলোতে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, ‘কোথায় আমি সাহায্য পেতে পারি?’ ২ করিন্থীয় ১:৩, ৪ পদে পাওয়া প্রেরিত পৌলের কথাগুলো সান্ত্বনার এক অব্যর্থ উৎস—যিহোবা ঈশ্বরের—প্রতি নির্দেশ করে।

৩ পদে, ঈশ্বরকে “করুণা-সমষ্টির পিতা” বলা হয়েছে। সেটার অর্থ কী? ‘করুণা-সমষ্টি’ হিসেবে অনুবাদিত গ্রিক শব্দটি অন্যদের দুঃখকষ্টের প্রতি সমবেদনা বোধ করার ধারণা প্রদান করতে পারে। * বাইবেলের একটি তথ্যগ্রন্থ বলে যে, এই শব্দটিকে “মমতা বোধ করেন” অথবা “অত্যন্ত চিন্তা করেন” হিসেবে অনুবাদ করা যেতে পারে। ঈশ্বরের ‘করুণা-সমষ্টি’ তাঁকে কাজ করতে পরিচালিত করে। ঈশ্বরের ব্যক্তিত্বের এই দিক সম্বন্ধে জানা আমাদেরকে তাঁর নিকটবর্তী হতে চাইতে পরিচালিত করে, তাই নয় কি?

এ ছাড়া, পৌল যিহোবাকে “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” হিসেবেও উল্লেখ করেন। এখানে পৌল যে-শব্দটি ব্যবহার করেন সেটি “সমস্যা বা কষ্টের মধ্যে রয়েছেন এমন কাউকে সান্ত্বনা দেওয়ার এবং তাকে সাহায্য করার অথবা উৎসাহ দেওয়ার জন্য কিছু করার ধারণাকে” অন্তর্ভুক্ত করে বলে কথিত রয়েছে। দি ইন্টারপ্রিটারস্‌ বাইবেল ব্যাখ্যা করে: “যখন আমরা একজন কষ্টভোগকারীকে তার কষ্ট সহ্য করার জন্য সাহস প্রদান করি, তখন আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে থাকি।”

আপনি হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘ঈশ্বর কীভাবে আমাদেরকে সান্ত্বনা দেন এবং কষ্ট সহ্য করার জন্য সাহস প্রদান করতে পারেন?’ তিনি প্রধানত তাঁর বাক্য বাইবেল এবং প্রার্থনা করার দানের মাধ্যমে তা করে থাকেন। পৌল আমাদের বলেন যে, ঈশ্বর প্রেমের সঙ্গে আমাদেরকে তাঁর বাক্য দিয়েছেন, যাতে করে ‘শাস্ত্রমূলক সান্ত্বনা দ্বারা আমরা প্রত্যাশা প্রাপ্ত হই।’ অধিকন্তু, আন্তরিক প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা “সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি,” তা লাভ করতে পারি।—রোমীয় ১৫:৪; ফিলিপীয় ৪:৭.

যিহোবা তাঁর লোকেদেরকে কতটা সান্ত্বনা প্রদান করেন? পৌল বলেন যে, ঈশ্বর “আমাদের সমস্ত ক্লেশের মধ্যে আমাদিগকে সান্ত্বনা করেন।” (২ করিন্থীয় ১:৪) আমরা যেধরনের চাপ, যন্ত্রণা অথবা কষ্টই ভোগ করি না কেন, তা সহ্য করার জন্য ঈশ্বর আমাদেরকে প্রয়োজনীয় সাহস ও শক্তি প্রদান করতে পারেন। এটা কি আশ্বাসজনক নয়?

ঈশ্বরদত্ত সান্ত্বনা, যে-ব্যক্তি লাভ করেন শুধু তার মধ্যেই তা সীমিত নয়। পৌল বলে চলেন যে, ঈশ্বর আমাদেরকে সান্ত্বনা দেন যাতে করে “আমরা নিজে ঈশ্বর-দত্ত যে সান্ত্বনায় সান্ত্বনাপ্রাপ্ত হই, সেই সান্ত্বনা দ্বারা সমস্ত ক্লেশের পাত্রদিগকে সান্ত্বনা করিতে পারি।” আমাদের ক্লেশের মধ্যে সান্ত্বনা লাভ করে, আমরা অন্যদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর জন্য সাহায্য পাই ও যাদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে, তাদেরকে সাহায্য করার জন্য অনুপ্রাণিত হই।

“সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” হিসেবে যিহোবা অপরিহার্যরূপে আমাদের সমস্যাগুলো অথবা যন্ত্রণাকে দূর করে দেন না। তবে, এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে: সান্ত্বনার জন্য আমরা যদি তাঁর শরণাপন্ন হই, তাহলে আমাদের জীবনে যেকোনো দুঃখকষ্ট অথবা সমস্যাই আসুক না কেন, সেটার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য তিনি আমাদেরকে শক্তি জোগাতে পারেন। এইরকম সমবেদনাময় একজন ঈশ্বর অবশ্যই আমাদের উপাসনা ও প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। (w০৮ ৯/১)

[পাদটীকা]

^ ঈশ্বরকে “করুণা-সমষ্টির পিতা [বা উৎস]” বলা হয়েছে। কারণ সমবেদনা তাঁর কাছ থেকেই উদ্ভূত হয় আর এটা হল তাঁর ব্যক্তিত্বের অংশ।