সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-প্রার্থনাগুলো ঈশ্বর শোনেন, সেই সম্বন্ধে

যে-প্রার্থনাগুলো ঈশ্বর শোনেন, সেই সম্বন্ধে

যিশুর কাছ থেকে আমরা যা শিখি

যে-প্রার্থনাগুলো ঈশ্বর শোনেন, সেই সম্বন্ধে

 যিশু প্রার্থনা করার জন্য প্রায়ই এক নিরিবিলি জায়গা খুঁজে নিতেন আর তিনি তাঁর অনুসারীদেরও তা-ই করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাইবেল বলে: “এক সময়ে তিনি কোন স্থানে প্রার্থনা করিতেছিলেন; যখন শেষ করিলেন, তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে এক জন তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু, আমাদিগকে প্রার্থনা করিতে শিক্ষা দিউন, . . . তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বলিও, পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক।” (লূক ৫:১৬; ১১:১, ২) এভাবে যিশু দেখিয়েছিলেন যে, প্রার্থনা তাঁর পিতা, যিহোবার কাছে করা উচিত। একমাত্র তিনিই আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং “প্রার্থনা-শ্রবণকারী।”—গীতসংহিতা ৬৫:২.

সমস্ত প্রার্থনাই কি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে?

মুখস্থ করা প্রার্থনাগুলোর পুনরাবৃত্তি করা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে না। যিশু বলেছিলেন: “প্রার্থনাকালে তোমরা অনর্থক পুনরুক্তি করিও না।” (মথি ৬:৭) আমাদের স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে আমাদেরকে অবশ্যই হৃদয় থেকে কথা বলতে হবে। একবার, যিশু তাঁর অনুসারীদের কাছে এই বিষয়টা সম্বন্ধে জোর দিয়েছিলেন যে, ধর্মীয় রীতিনীতি সতর্কতার সঙ্গে পালন করেছেন এমন একজন অহংকারী ব্যক্তির প্রার্থনার তুলনায় বরং সেই পাপী ব্যক্তির প্রার্থনা ঈশ্বরের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য, যিনি আন্তরিকভাবে পরিবর্তিত হতে চেয়েছিলেন। (লূক ১৮:১০-১৪) আমরা যদি চাই যে আমাদের প্রার্থনা শোনা হোক, তাহলে ঈশ্বর আমাদেরকে যা বলেন, নম্রভাবে তা করার চেষ্টা করতে হবে। এমনকী যিশু এও বলেছিলেন: “পিতা আমাকে যেমন শিক্ষা দিয়াছেন, তদনুসারে এই সকল কথা কহি . . . আমি সর্ব্বদা তাঁহার সন্তোষজনক কার্য্য করি।” (যোহন ৮:২৮, ২৯) যিশু প্রার্থনায় বলেছিলেন: “আমার ইচ্ছা নয়, তোমারই ইচ্ছা সিদ্ধ হউক।”—লূক ২২:৪২.

আমাদের কীসের জন্য প্রার্থনা করা উচিত?

যেহেতু ঈশ্বরের নামের অপবাদ দেওয়া হয়েছে, তাই যিশু বলেছিলেন: “অতএব তোমরা এই মত প্রার্থনা করিও; হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক, তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:৯, ১০) ঈশ্বরের রাজ্য আসার জন্য আমাদের প্রার্থনা করা উচিত কারণ এটাই হল সেই সরকার, যেটাকে ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা স্বর্গে ও পৃথিবীতে পূর্ণ হওয়ার জন্য ব্যবহার করবেন। যিশু বলেছিলেন যে, ‘আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যের’ জন্য আমরা প্রার্থনা করতে পারি। এ ছাড়া, আমরা যিহোবার কাছে চাকরি, বাসস্থান, কাপড়চোপড়, স্বাস্থ্যগত বিষয়সহ আরও অন্যান্য চিন্তার বিষয়েও বলতে পারি। অধিকন্তু, যিশু বলেছিলেন যে, পাপের ক্ষমার জন্য আমাদের প্রার্থনা করা উচিত।—লূক ১১:৩, ৪.

আমাদের কি অন্যদের জন্য প্রার্থনা করা উচিত?

যিশু অন্যদের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। বাইবেল আমাদের বলে: “কতকগুলি শিশু তাঁহার নিকটে আনীত হইল, যেন তিনি তাহাদের উপরে হস্তার্পণ করেন ও প্রার্থনা করেন।” (মথি ১৯:১৩) যিশু প্রেরিত পিতরকে বলেছিলেন: “আমি তোমার নিমিত্ত বিনতি করিয়াছি, যেন তোমার বিশ্বাসের লোপ না হয়।” (লূক ২২:৩২) যিশু তাঁর অনুসারীদেরকে অন্যদের জন্য প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করেছিলেন, এমনকী সেই ব্যক্তিদের জন্যও প্রার্থনা করতে বলেছিলেন, যারা তাদের তাড়না এবং নিন্দা করছিল।—মথি ৫:৪৪; লূক ৬:২৮.

কেন আমাদের প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকা উচিত?

যিশু প্রার্থনা করার জন্য সময় আলাদা করে রেখেছিলেন এবং তাঁর অনুসারীদের ‘সর্ব্বদাই প্রার্থনা করিতে, নিরুৎসাহিত না হইতে’ উৎসাহিত করেছিলেন। (লূক ১৮:১) যিহোবা আমাদেরকে নিজেদের চিন্তার বিষয়গুলো তাঁর কাছে বার বার বলার মাধ্যমে তাঁর ওপর আমাদের আস্থা প্রকাশ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। “যাচ্ঞা কর” বা করে চলো “তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে,” যিশু বলেছিলেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, যারা তাঁকে একজন পিতা হিসেবে ভালোবাসে এবং সম্মান করে, তাদের প্রতি যিহোবা সাড়া প্রদানে অনিচ্ছুক। এর পরিবর্তে, যিশু বলেছিলেন: “তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে পবিত্র আত্মা দান করিবেন।”—লূক ১১:৫-১৩. (w০৯ ২/১)

আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১৭ অধ্যায় দেখুন। *

[পাদটীকা]

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।