সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

হাজার হাজার বছর ধরে, নানা মহামারী মানবজাতিকে আক্রান্ত করেছে। কিছু লোক মনে করে যে, এগুলো ছিল ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের এক চিহ্ন আর অন্যায়কারীদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্যই এগুলো পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে করা দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও মনোযোগপূর্বক গবেষণা প্রকাশ করেছে যে, এই মহামারীর প্রধান কারণ প্রায়ই ক্ষুদ্র প্রাণীরা, যেগুলো আমাদের আশেপাশেই বাস করে।

চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষকরা আবিষ্কার করেছে যে, ছুঁচো, ইঁদুর, আরশোলা ও মশামাছি রোগ ছড়াতে পারে। এ ছাড়া, তারা এও লক্ষ করেছে যে, লোকেরা প্রায়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে নিজেরাই সংক্রামক রোগব্যাধি ডেকে আনে। তাই আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় যে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জীবন বাঁচাতে পারে।

স্পষ্টতই, রীতিনীতি ও পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মান ভিন্ন হয়ে থাকে। যে-এলাকাগুলোতে জল সরবরাহের বা উপযুক্ত পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা সত্যিই এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যখন তারা প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ করছিল—কল্পনা করলে বোঝা যায় যে, ভালোমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য তা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি ছিল!

কেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈশ্বরের কাছে গুরুত্বপূর্ণ? পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্বন্ধে যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি কী? রোগব্যাধি কমানোর জন্য আপনি ও আপনার পরিবার কোন সাধারণ সাবধানতাগুলো অবলম্বন করতে পারেন?

 ছোট্ট স্যাম, * স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরে এসেছে। খিদে পেটে সে তার সাদামাটা বাড়িতে ঢোকে, সেখানে থাকা পোষা কুকুরটাকে জড়িয়ে ধরে, তার স্কুলব্যাগ ডাইনিং রুমের টেবিলে রাখে এবং বসে বসে খাবারের জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করতে থাকে।

রান্নাঘর থেকে তার মা, স্যামের আসার শব্দ শুনতে পান এবং এক প্লেট গরম ভাত ও ডাল নিয়ে আসেন। কিন্তু, তার চেহারা পালটে যায়, যখন তিনি দেখেন যে, স্যামের স্কুলব্যাগ পরিষ্কার টেবিলের ওপর পড়ে রয়েছে। তিনি তার ছেলের দিকে তাকিয়ে চাপাস্বরে বলেন, “স্যা-আ্য-আ্য-ম” তার ছেলে বুঝে ফেলে এবং সঙ্গেসঙ্গে ব্যাগটা সরিয়ে নেয় ও তার হাত ধোয়ার জন্য দৌড়ে যায়। একটু পরই সে খাওয়ার জন্য ফিরে আসে, যেজন্য সে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিল। “দুঃখিত মা, ভুল হয়ে গিয়েছে,” সে দোষী বোধ করে মিনমিন করে বলে।

স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে একজন যত্নশীল মা অনেক কিছু করতে পারেন, তবে তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া প্রয়োজন। স্যামের ঘটনাটা যেমন দেখায় যে, দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ আবশ্যক কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টা দরকার আর এই বিষয়টা ছেলে-মেয়েদেরকে বার বার মনে করিয়ে দিতে হয়।

স্যামের মা বুঝতে পারেন যে, খাবার বিভিন্নভাবে দূষিত হতে পারে। তাই, খাবারদাবার প্রস্তুত করার আগে তিনি শুধু ভালো করে তার নিজের হাতই ধোন না, কিন্তু সেইসঙ্গে মাছির দ্বারা দূষিত হওয়াকে প্রতিরোধ করার জন্য খাবারদাবার ঢেকেও রাখেন। খাবারদাবার ঢেকে রাখার এবং ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কারণে তার ঘরে ছুঁচো, ইঁদুর ও আরশোলার তেমন উপদ্রব নেই।

স্যামের মায়ের এতটা সতর্ক থাকার পিছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল যে, তিনি ঈশ্বরকে খুশি করতে চান। “বাইবেল বলে যে, ঈশ্বরের লোকেদের পবিত্র হতে হবে কারণ ঈশ্বর হলেন পবিত্র,” তিনি ব্যাখ্যা করেন। (১ পিতর ১:১৬) “পবিত্রতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সমরূপ,” তিনি আরও বলেন। “তাই, আমি চাই যেন আমার ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে এবং এও চাই যে, আমার পরিবারকেও যেন পরিচ্ছন্ন দেখায়। অবশ্য, পরিবারের প্রত্যেকে সাহায্য করে বলেই তা সম্ভবপর হয়।”

পারিবারিক সহযোগিতা অপরিহার্য

স্যামের মা যেমন বলেন, পারিবারিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হচ্ছে এক পারিবারিক প্রকল্প। মাঝে মাঝে কিছু পরিবার, তাদের কী কী প্রয়োজন রয়েছে এবং ঘরের ভিতরে ও বাইরে কোন কোন বিষয়ে উন্নতি করা যেতে পারে, সেই সম্বন্ধে একসঙ্গে বসে আলোচনা করে থাকে। এ ছাড়া, এটা পরিবারকে ঐক্যবদ্ধও করে এবং সকলের মঙ্গলের জন্য যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে প্রত্যেককে তাদের নিজ নিজ দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, মা হয়তো বড়ো ছেলেমেয়েদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারেন যে, কেন তাদের টয়লেট ব্যবহারের ও টাকাপয়সার মতো জিনিসপত্র ধরার পর এবং খাবার খাওয়ার আগে হাত ধুতে হবে। অন্যদিকে, বড়ো ছেলেমেয়েরা খেয়াল রাখতে পারে যে, ছোটোরা বিষয়টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে কি না।

পরিবারের প্রত্যেকের মধ্যে বিভিন্ন কাজ ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। পরিবার হয়তো প্রতি সপ্তাহে নিয়মিতভাবে ঘর পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিতে এবং বছরে এক বা দু-বার খুব ভালোমতো খুঁটিনাটি পরিষ্কার করার তালিকা তৈরি করতে পারে। আর ঘরের বাইরের পরিবেশ সম্বন্ধে কী বলা যায়? পরিবেশ সংরক্ষক স্টুয়ার্ট এল. উডাল যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছিলেন: “আমরা এমন এক দেশে বাস করছি, যেখানকার সৌন্দর্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, ময়লা বৃদ্ধি পাচ্ছে, খোলা জায়গা হ্রাস পাচ্ছে এবং দূষণ ও শব্দ আর ক্ষয়ের কারণে দিন দিন মারাত্মকভাবে সামগ্রিক পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।”

আপনার আশেপাশের পরিবেশ সম্বন্ধে কি আপনার একইরকম অনুভূতি রয়েছে? প্রাচীনকালে ও এমনকী বর্তমানে মধ্য আফ্রিকার কিছু শহরে, পৌরসভার একজন কর্মী লোকেদের মনোযোগ লাভের জন্য ঘন্টা বাজিয়ে থাকেন। জোরে চিৎকার করে, তিনি শহরের লোকেদের সেই শহর পরিষ্কার করার, পয়ঃপ্রণালী (ড্রেন বা পয়োনালি) পরিষ্কার করার, গাছগাছালি ছেঁটে দেওয়ার, আগাছা তুলে ফেলার এবং ময়লা-আবর্জনা ফেলার কথা মনে করিয়ে দেন।

ময়লা-আবর্জনা ফেলা পৃথিবীজুড়েই একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অনেক কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যার সমাধান করা রীতিমতো এক দুঃস্বপ্নের মতো। কিছু পৌরসভা ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করায় ব্যর্থ হয় আর এর ফলে সেগুলো রাস্তাগুলোর ওপর স্তূপীকৃত হতে থাকে। এই ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে হয়তো আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে। উত্তম নাগরিক হিসেবে, খ্রিস্টানরাই প্রথমে সাড়া দিয়ে থাকে এবং কোনোরকম অভিযোগ না করে সরকারি আদেশের বাধ্য হয়। (রোমীয় ১৩:৩, ৫-৭) এই ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য সত্য খ্রিস্টানরা তাদেরকে যা করতে বলা হয়েছে, তার চেয়ে আরও বেশি করতে ইচ্ছুক হয়। তারা এক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের প্রতি আগ্রহী এবং পরিষ্কার করার ব্যাপারে নিজে থেকে পদক্ষেপ নিয়ে থাকে, সবসময় কোনো পৌরসভার কর্মীকে তা মনে করিয়ে দিতে হয় না। তারা বুঝতে পারে যে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হচ্ছে উত্তম প্রশিক্ষণ ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণের এক প্রতিফলন। এটা শুরু হয় প্রত্যেক ব্যক্তি ও প্রত্যেক পরিবার থেকে। বাড়ির চারিদিকটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আরও ভালো স্বাস্থ্যের দিকে পরিচালিত করবে ও সেইসঙ্গে সার্বিক পারিপার্শ্বিক অবস্থাকেও উন্নত করবে।

ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেই ঈশ্বরকে সম্মানিত করে, যাঁকে আমরা উপাসনা করি

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত বেশভূষা হল আমাদের উপাসনার এক প্রতিফলন আর প্রায়ই তা অন্যদের নজর কাড়ে। প্রায় ১৫ জন যুবক-যুবতীর একটা দল ফ্রান্সের টুলুজ শহরে অনুষ্ঠিত যিহোবার সাক্ষিদের একটা সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকেছিল। তাদের পাশের টেবিলে বসা এক বয়স্ক দম্পতি মনে করেছিল যে, তারা হইচই করবে ও অন্যদেরকে উত্যক্ত করবে। কিন্তু, মার্জিত পোশাক-আশাক পরিহিত এই যুবক-যুবতীদের ভদ্র আচরণ ও গঠনমূলক কথাবার্তা তাদের ওপর গভীর ছাপ ফেলেছিল। সেই দলটা যখন চলে যাচ্ছিল, তখন সেই দম্পতি তাদের উত্তম আচরণের জন্য তাদের প্রশংসা করেছিল এবং তাদের মধ্যে থাকা এক যুবককে বলেছিল যে, আজকের দিনে এইরকম উদাহরণযোগ্য আচরণ খুবই বিরল।

যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিস, ছাপাখানা এবং তাদের আবাসিক বিল্ডিংগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সেখানে পরিদর্শন করতে আসা ব্যক্তিদের ওপর প্রায়ই ছাপ ফেলে থাকে। সেখানে যে-স্বেচ্ছাসেবকরা থাকে ও কাজ করে, তাদের পরিষ্কার কাপড়চোপড় পরা এবং নিয়মিত হাত-মুখ ধোয়া ও স্নান করা আবশ্যক। ডিওডারেন্ট ও পারফিউমের ব্যবহার শরীরকে ভালোমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিকল্প হতে পারে না। পূর্ণসময়ের পরিচারক এই স্বেচ্ছাসেবকরা যখন সন্ধ্যাবেলা বা সপ্তাহান্তগুলোতে তাদের প্রতিবেশীদের কাছে প্রচার করে থাকে, তখন তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বাহ্যিক বেশভূষা তারা যে-বার্তা প্রচার করে, সেটার ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে।

“তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও”

খ্রিস্টানদের জোরালো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, “তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও।” (ইফিষীয় ৫:১) ভাববাদী যিশাইয় একটা দর্শন লিপিবদ্ধ করেছিলেন, যেটাতে স্বর্গদূতেরা সৃষ্টিকর্তাকে “পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র” বলে বর্ণনা করেছিল।” (যিশাইয় ৬:৩) এই বর্ণনা ঈশ্বরের সর্বোৎকৃষ্ট শুদ্ধতা ও পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেয়। সেই কারণে ঈশ্বর চান যেন তাঁর সমস্ত দাস পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয়। “তোমরা পবিত্র হইবে, কারণ আমি পবিত্র,” তিনি তাদের বলেন।—১ পিতর ১:১৬.

বাইবেল খ্রিস্টানদের ‘উপযুক্ত পোশাক পরতে’ উৎসাহিত করে। (১ তীমথিয় ২:৯, বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন) তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, প্রকাশিত বাক্য বইয়ে ‘উজ্জ্বল ও শুচি মসীনা-বস্ত্র’ সেই ব্যক্তিদের ধার্মিক কাজকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে বলা হয়েছে, যাদেরকে ঈশ্বর পবিত্র হিসেবে গণ্য করেন। (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৮) অন্যদিকে, শাস্ত্রে পাপকে প্রায়ই দাগ বা ময়লার দ্বারা চিত্রিত করা হয়েছে।—হিতোপদেশ ১৫:২৬; যিশাইয় ১:১৬; যাকোব ১:২৭.

আজকে লক্ষ লক্ষ লোক সেই এলাকাগুলোতে বাস করে, যেখানে শারীরিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য ক্রমাগত লড়াই করতে হয়। এই সমস্যার এক চূড়ান্ত সমাধান তখন আসবে, যখন ঈশ্বর ‘সকলই নূতন করিবেন।’ (প্রকাশিত বাক্য ২১:৫) সেই প্রতিজ্ঞা যখন পরিপূর্ণ হবে, তখন সব ধরনের নোংরা বস্তু ও অপরিচ্ছন্নতা চিরকালের জন্য দূর হয়ে যাবে। (w০৮ ১২/১)

[পাদটীকা], [পাদটীকাগুলো]

^ নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[১০ পৃষ্ঠার ক্যাপশন]

ঈশ্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আশা করেন

[১০ পৃষ্ঠার ক্যাপশন]

প্রান্তরে ভ্রমণ করার সময় ইস্রায়েলীয়দের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যেন মলত্যাগ করার সময় তারা যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করে। উদাহরণস্বরূপ, তাদেরকে শিবিরের বাইরে মলত্যাগ করে তা ঢেকে রাখতে হতো। (দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১২-১৪) যেহেতু শিবিরে প্রায় ত্রিশ লক্ষ লোক বাস করত, তাই এটা নিশ্চয়ই এক ক্লান্তিকর কাজ ছিল, কিন্তু এটা করা নিঃসন্দেহে টাইফয়েড জ্বর ও কলেরার মতো রোগব্যাধিকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেছিল।

লোকেদেরকে পশুপাখির শবের সংস্পর্শে আসা যেকোনো জিনিসকে ধুতে বা নষ্ট করে ফেলতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও তারা হয়তো এইরকম করার কারণটা বুঝতে পারেনি, কিন্তু এর মাধ্যমে ইস্রায়েলীয়দেরকে যেকোনো সংক্রমণ ও রোগ এড়াতে সাহায্য করা হয়েছিল।—লেবীয় পুস্তক ১১:৩২-৩৮.

আবাসে তাদের দায়িত্ব পালন করার আগে যাজকদেরকে তাদের হাত ও পা ধুতে হতো। এইজন্য পিতলের প্রক্ষালন-পাত্রে জল রাখা থাকত আর সেটা ভরা নিশ্চয়ই সহজ কাজ ছিল না কিন্তু হাত ও পা ধোয়া আবশ্যক ছিল।—যাত্রাপুস্তক ৩০:১৭-২১.

[১১ পৃষ্ঠার ক্যাপশন]

একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে পাওয়া অনুস্মারকগুলো

[১১ পৃষ্ঠার ক্যাপশন]

জীবনের জন্য জল অপরিহার্য কিন্তু দূষিত জল অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ক্যামেরুনের দুয়ালা বন্দরের চিকিৎসা বিভাগের প্রধান ডা. জে. এমবাঙ্গা লোবে একটা সাক্ষাৎকারে কিছু ব্যবহারিক পরামর্শ দিয়েছেন।

“সন্দেহ লাগলে পানীয় জল ফুটিয়ে নিন।” কিন্তু তিনি সাবধান করেছিলেন: “ব্লিচ বা অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ঠিকমতো ব্যবহার করা না হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। খাওয়ার আগে ও টয়লেট ব্যবহার করার পর, সবসময় সাবান ও জল দিয়ে হাত ধোবেন। একটা সাবান কিনতে অনেক পয়সা লাগে না, তাই এমনকী দরিদ্র লোকেরাও তা কিনতে পারে। ত্বকের সমস্যা বা চর্মরোগ থাকলে গরম জল দিয়ে কাপড়চোপড় নিয়মিত ধোবেন।”

“পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের, ঘরে ও ঘরের চারপাশে ভালোমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত,” সেই ডাক্তার আরও বলেন। “টয়লেট ও বাড়ির গুদামঘরগুলোকে প্রায়ই অবহেলা করা হয়ে থাকে আর এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই সেগুলো আরশোলা ও মাছিদের বাসস্থান হয়ে ওঠে।” ছোটো ছেলে-মেয়েদের সম্বন্ধে একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য যুক্ত করে, তিনি সাবধান করেছিলেন: “তোমাদের এলাকায় ছোটো ছোটো নদীগুলোতে স্নান করার ব্যাপারে সাবধান। সেগুলো বিপদজনক সব জীবাণুতে পরিপূর্ণ। ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতি রাতে হাত-মুখ ধোবে, রাতে ভালো করে দাঁত ব্রাশ করবে এবং মশারি টাঙিয়ে ঘুমাবে।” এই সমস্ত মন্তব্য করার পিছনে আসল উদ্দেশ্য হল আগে থেকেই চিন্তা করা, পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে চলা।

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

কাপড়চোপড় ধোয়া ত্বকের সমস্যা এবং চর্মরোগকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

খ্রিস্টানরা তাদের বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার করার ব্যাপারে নিজে থেকে উদ্যোগ নেয়

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

নিজের বাড়িঘর পরিষ্কারের বিষয়ে একজন যত্নশীল মা অনেক কিছু করতে পারেন