সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পিতৃহীনদের পিতা

পিতৃহীনদের পিতা

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

পিতৃহীনদের পিতা

যাত্রাপুস্তক ২২:২২-২৪

 “ঈ শ্বর আপন পবিত্র বাসস্থানে পিতৃহীনদের পিতা।” (গীতসংহিতা ৬৮:৫) এই অনুপ্রাণিত কথাগুলো যিহোবা ঈশ্বরের বিষয়ে এক হৃদয়গ্রাহী শিক্ষা প্রদান করে—সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের চাহিদাগুলোর প্রতি তিনি সংবেদনশীল। তিনি ইস্রায়েলকে যে-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, তাতে সেই সন্তানদের প্রতি তাঁর চিন্তা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান ছিল, যারা মৃত্যুতে তাদের বাবা কিংবা মাকে হারিয়েছে। আসুন আমরা ‘পিতৃহীনের’ বিষয়ে বাইবেলের প্রথম উল্লেখটি পরীক্ষা করে দেখি, যা যাত্রাপুস্তক ২২:২২-২৪ পদে পাওয়া যায়।

ঈশ্বর সতর্ক করেন: “তোমরা কোন . . . পিতৃহীনকে দুঃখ দিও না।” (২২ পদ) এটা কেবলমাত্র মানব কল্যাণমূলক কাজ করার জন্য এক অনুরোধ ছিল না; এটা ছিল এক ঐশিক আদেশ। একজন সন্তান যে তার বাবাকে—আর এই কারণে তার রক্ষককে—হারিয়েছে, সে অরক্ষিত ছিল। কেউই এই ধরনের এক সন্তানকে কোনোভাবে “দুঃখ” দিতে পারত না। অন্যান্য বাইবেল অনুবাদে, “দুঃখ” শব্দটিকে “কষ্ট”, “দুর্ব্যবহার” এবং “ক্ষতি” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। একজন পিতৃহীন সন্তানের প্রতি অন্যায় করা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এক গুরুতর বিষয় ছিল। কতটা গুরুতর?

ব্যবস্থা আরও বলে: “তাহাদিগকে কোন মতে দুঃখ দিলে যদি তাহারা আমার নিকটে ক্রন্দন করে, তবে আমি অবশ্য তাহাদের ক্রন্দন শুনিব।” (২৩ পদ) ইব্রীয় ভাষার মূল পাঠ্যাংশে ২২ পদে বহুবচনে “তোমরা” রয়েছে কিন্তু ২৩ পদে তা একবচনে রয়েছে। তাই মূল ভাষা দেখায় যে, ব্যক্তি বিশেষের এবং পুরো জাতির এই ঐশিক আইন মেনে চলার সমান দায়িত্ব ছিল। যিহোবা দেখছিলেন; তিনি পিতৃহীনদের কথা মন দিয়ে শুনেছিলেন এবং সাহায্যের জন্য তাদের ক্রন্দনের প্রতি সাড়া দিতে তিনি সবসময় প্রস্তুত ছিলেন।—গীতসংহিতা ১০:১৪; হিতোপদেশ ২৩:১০, ১১.

তাই, কেউ যদি কোনো পিতৃহীনের প্রতি অন্যায় করে আর এর ফলে সেই সন্তান ঈশ্বরের কাছে ক্রন্দন করে, তাহলে কী হবে? “আমার ক্রোধ প্রজ্বলিত হইবে,” যিহোবা বলেন, “এবং আমি তোমাদিগকে খড়গ দ্বারা বধ করিব।” (২৪ পদ) বাইবেল সম্বন্ধীয় একটি তথ্যগ্রন্থ বলে যে, এটি “আক্ষরিকভাবে হল, ‘আর আমার নাসিকা উত্তপ্ত হয়ে উঠবে,’ যা হচ্ছে প্রচণ্ড রাগ বোঝানোর জন্য এক বাগ্‌ধারা।” লক্ষ করুন যে, এই আইন কার্যকর করার বিষয়টা যিহোবা ইস্রায়েলের মানব বিচারকদের ওপর ছেড়ে দেননি। স্বয়ং ঈশ্বর এমন যেকোনো ব্যক্তির ওপর বিচার কার্যকর করবেন, যিনি অসহায় কোনো সন্তানের ক্ষতি করেন।—দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১৭, ১৮.

যিহোবার পরিবর্তন হয়নি। (মালাখি ৩:৬) তিনি সেই সন্তানদের জন্য সহানুভূতি বোধ করেন, যারা বাবা-মায়ের মধ্যে একজনকে কিংবা দুজনকেই হারিয়েছে। (যাকোব ১:২৭) এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন—নির্দোষ সন্তানরা দুর্ব্যবহারের শিকার হলে, পিতৃহীনদের পিতার ন্যায্য ক্রোধ প্রজ্বলিত হবে। যারা কোনো অরক্ষিত সন্তানকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে, তারা “সদাপ্রভুর ক্রোধাগ্নি” থেকে রক্ষা পাবে না। (সফনিয় ২:২) এই ধরনের দুষ্ট ব্যক্তিরা জানতে পারবে যে, “জীবন্ত ঈশ্বরের হস্তে পতিত হওয়া ভয়ানক বিষয়।”—ইব্রীয় ১০:৩১. (w০৯ ৪/১)