সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি

যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি

আপনাদের সন্তনদের শিক্ষা দিন

যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি

তুমি কি কখনো নিরুৎসাহিত হয়ে কাজ পরিত্যাগ করার কথা ভেবেছ?— * অনেকে তা ভেবে থাকে। অল্পবয়সি যিরমিয় তা ভেবেছিলেন। কিন্তু, অন্যেরা যা বলেছিল বা করেছিল, সেই বিষয়গুলোকে তিনি তার হাল ছেড়ে দেওয়ার কারণ হতে দেননি। এসো, আমরা আলোচনা করে দেখি যে, ঈশ্বরের কাছে একজন বিশেষ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করার কথা ভেবেছিলেন।

যিরমিয়ের জন্মের আগেই, সত্য ঈশ্বর যিহোবা তাকে একজন ভাববাদী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, যিনি লোকেদের এই বিষয়ে সাবধান করবেন যে, তারা ঈশ্বরকে খুশি করছে না। তুমি কি জান, যিরমিয় কয়েক বছর পর যিহোবাকে কী বলেছিলেন?— “আমি কথা কহিতে জানি না, কেননা আমি বালক।”

যিহোবা যিরমিয়কে কীভাবে উত্তর দিয়েছিলেন বলে তুমি মনে করো?— সদয় অথচ দৃঢ়ভাবে তিনি বলেছিলেন: “‘আমি বালক,’ এমন কথা বলিও না; কিন্তু আমি তোমাকে যাহার কাছে পাঠাইব, তাহারই কাছে তুমি যাইবে, এবং তোমাকে যাহা আজ্ঞা করিব, তাহাই বলিবে। . . . ভীত হইও না।” কেন? “তোমার উদ্ধারার্থে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি,” যিহোবা বলেছিলেন।—যিরমিয় ১:৪-৮.

তবুও, যিরমিয় পরবর্তী সময়ে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন, যেমনটা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। এর কারণ হল, তিনি ঈশ্বরের সেবা করছিলেন বলে তাকে উপহাস করা হয়েছিল। “আমি সমস্ত দিন উপহাসের পাত্র হইয়াছি, সকলেই আমাকে ঠাট্টা করে,” তিনি বলেছিলেন। তাই, তিনি তার কার্যভার পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। “[সদাপ্রভুর] বিষয় আর উল্লেখ করিব না, তাঁহার নামে আর কিছু কহিব না,” তিনি বলেছিলেন। কিন্তু, তিনি কি সত্যিই তার কার্যভার পরিত্যাগ করেছিলেন?

যিরমিয় বলেছিলেন, ‘আমার হৃদয়ে সদাপ্রভুর বাক্য যেন দাহকারী অগ্নি অস্থিমধ্যে রুদ্ধ হয়; তাহা সহ্য করিতে করিতে আমি ক্লান্ত হইয়া পড়ি।’ (যিরমিয় ২০:৭-৯) যদিও যিরমিয় মাঝেমধ্যে ভয় পেয়েছিলেন কিন্তু যিহোবার প্রতি তার ভালোবাসা তাকে কখনো তার কার্যভার পরিত্যাগ করতে দেয়নি। এসো দেখি, যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি বলে তাকে কীভাবে রক্ষা করা হয়েছিল।

যিহোবা যিরমিয়কে বলেছিলেন যেন তিনি লোকেদের এই বিষয়ে সাবধান করেন যে, তারা যদি তাদের মন্দ পথ পরিবর্তন না করে, তাহলে যিরূশালেমকে ধ্বংস করা হবে। যিরমিয় যখন এই সাবধানবাণী ঘোষণা করেছিলেন, তখন লোকেরা রেগে গিয়ে বলেছিল: “এই ব্যক্তি প্রাণদণ্ডের যোগ্য।” কিন্তু, যিরমিয় তাদেরকে ‘সদাপ্রভুর রবে অবধান করিতে’ মিনতি করেছিলেন। এরপর তিনি বলেছিলেন: ‘নিশ্চয় জানিও, যদি তোমরা আমাকে বধ কর, তবে তোমরা নির্দ্দোষের রক্তপাত করিবে, কেননা সদাপ্রভু বলিবার জন্য আমাকে তোমাদের নিকটে প্রেরণ করিয়াছেন।’ এরপর কী হয়েছিল, তুমি কি তা জানো?—

বাইবেল বলে: “অধ্যক্ষগণ ও সমস্ত প্রজালোক যাজকদিগকে ও ভাববাদিগণকে কহিল, এ ব্যক্তি প্রাণদণ্ডের যোগ্য নয়, কেননা ইনি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে আমাদের কাছে কথা বলিয়াছেন।” তাই, যিরমিয় যখন ভয়ের কারণে তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি, তখন যিহোবা তাকে রক্ষা করেছিলেন। এসো এখন দেখি যে, যিহোবার আরেকজন ভাববাদী ঊরিয়ের প্রতি কী ঘটেছিল, যিনি একেবারে বিপরীত আচরণ করেছিলেন।

‘ঊরিয় যিরমিয়ের সমস্ত বাক্যের ন্যায় যিরূশালেমের বিরুদ্ধে ভাববাণী বলিয়াছিলেন,’ বাইবেল বলে। কিন্তু, রাজা যিহোয়াকীম যখন ঊরিয়ের ওপর রেগে গিয়েছিলেন, তখন ঊরিয় কী করেছিলেন, তা কি তুমি জানো?— তিনি ভয় পেয়েছিলেন, ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্পাদন করার কার্যভার পরিত্যাগ করেছিলেন এবং মিশরে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাই, রাজা তাকে খুঁজে বের করে ফিরিয়ে আনার জন্য সেখানে লোকেদের পাঠিয়েছিলেন। তারা যখন তা করেছিল, তখন দুষ্ট রাজা কী করেছিলেন, তা কি তুমি জানো?— তিনি ঊরিয়কে খড়্গ দ্বারা হত্যা করেছিলেন!—যিরমিয় ২৬:৮-২৪.

তুমি কি বলতে পারো, কেন যিহোবা যিরমিয়কে রক্ষা করেছিলেন কিন্তু ঊরিয়কে করেননি?— এটা ঠিক যে, যিরমিয়ও হয়তো ঊরিয়ের মতো ভয় পেয়েছিলেন কিন্তু যিরমিয় যিহোবাকে সেবা করার ক্ষেত্রে হাল ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যাননি। তিনি তার কার্যভার পরিত্যাগ করেননি। যিরমিয়ের উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি বলে তুমি মনে করো?— আমরা এটাই শিখি যে, ঈশ্বর আমাদের যা বলেন, তা করা মাঝেমধ্যে আমাদের কাছে কঠিন বলে মনে হতে পারে কিন্তু আমাদের সবসময় তাঁর ওপর নির্ভর করা ও তাঁর বাধ্য হওয়া উচিত। (w০৯-E ১২/০১)

[পাদটীকা]

^ আপনি যদি সন্তানদের সঙ্গে এই প্রবন্ধটি পড়েন, তাহলে ড্যাশগুলো আপনাকে একটু থামতে ও তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করার বিষয়টা মনে করিয়ে দেয়।

প্রশ্নাবলি:

❍ ঈশ্বর যিরমিয়ের জন্য কোন কাজ বাছাই করেছিলেন?

❍ কেন যিরমিয় তার কার্যভার পরিত্যাগ করার কথা ভেবেছিলেন?

❍ কেন যিরমিয়কে রক্ষা করা হয়েছিল কিন্তু ঊরিয়কে করা হয়নি?

❍ যিরমিয়ের উদাহরণ থেকে তুমি কী শিখেছো?