সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গ্রহ-নক্ষত্রগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

গ্রহ-নক্ষত্রগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

গ্রহ-নক্ষত্রগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

এক পরিষ্কার রাতে, মনুষ্যসৃষ্ট কোনো আলো থেকে অনেক দুরে আকাশকে লক্ষ করলে মনে হয়, দিগন্ত বিস্তৃত একটা কালো মখমলের ওপর হাজার হাজার হিরের টুকরো চকচক করছে। বিগত মাত্র সাড়ে তিনশো বছর ধরে মানুষ নক্ষত্রগুলোর আকারের বিশালতা ও আমাদের থেকে সেগুলোর দূরত্ব সম্পর্কে বুঝতে শুরু করেছে। আমরা শুধুমাত্র এই বিপুল পরিমাণ শক্তিকে বুঝতেই শিখেছি যা এই বিস্ময়কর জায়গা, যেটা হল আমাদের নিখিলবিশ্ব, সেটা জুড়ে কাজ করে।

প্রাচীন কাল থেকেই, মানুষ রাতের আকাশে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর নির্ভুল গতিবিধি ও নভোমণ্ডলে সেগুলোর অবস্থানে ঋতুভিত্তিক পরিবর্তনগুলো লক্ষ করেছে। (আদিপুস্তক ১:১৪) অনেকেই ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের মতো সেই একই অনুভূতি প্রকাশ করেছে যিনি প্রায় ৩,০০০ বছর আগে লিখেছিলেন: “আমি তোমার অঙ্গুলি-নির্ম্মিত আকাশমণ্ডল, তোমার স্থাপিত চন্দ্র ও তারকামালা নিরীক্ষণ করি, [বলি], মর্ত্ত্য কি যে, তুমি তাহাকে স্মরণ কর?”—গীতসংহিতা ৮:৩, ৪.

তবুও, আমরা বুঝতে পারি বা না পারি, এই গ্রহ-নক্ষত্রগুলো ও সেগুলোর গতিবিধি আমাদের জীবনকে বিভিন্নভাবে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র সূর্য, যেটার চারদিকে পৃথিবী কক্ষপথ ধরে ঘোরে, সেই সূর্য মানুষের সময় নির্ধারণ করার সবচেয়ে মৌলিক এককগুলোকে—আমাদের দিনের ও বছরের ব্যাপ্তি—স্থির করে। “ঋতুর জন্য” চাঁদ রয়েছে। (গীতসংহিতা ১০৪:১৯) আর দিকনির্ণয়, এমনকী মহাকাশচারীদেরকে তাদের মহাকাশযানের দিক স্থির করার ক্ষেত্রেও নক্ষত্রগুলো হল নির্ভরযোগ্য নির্দেশক। এই কারণে, অনেকে ভাবে যে, গ্রহ-নক্ষত্রগুলো সময়কাল ও ঋতু জানানোর এবং ঈশ্বরের সৃজনশীল কাজের প্রতি আমাদের উপলব্ধিকে বৃদ্ধি করার চেয়েও আমাদের জন্য প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি কিছু করতে পারে কি না। সেগুলো কি আমাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আগে থেকে বলতে অথবা বিপর্যয়গুলো সম্বন্ধে সাবধান করতেও পারে?

জ্যোতিষবিদ্যার উৎপত্তি ও উদ্দেশ্য

পৃথিবীতে জীবনের পথে নির্দেশনা দিতে শুভ-অশুভ লক্ষণের জন্য গ্রহ-নক্ষত্র দেখার রীতির উৎপত্তি হয়েছিল প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায়, যেটা সম্ভবত সা.কা.পূ. তৃতীয় সহস্রাব্দের সময়কার। প্রাচীন সময়ের জ্যোতিষীরা গ্রহ-নক্ষত্রের মনোযোগী পর্যবেক্ষক ছিল। গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর গতিবিধির ছক আঁকার, গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানের তালিকা করার, ক্যালেন্ডার তৈরির এবং গ্রহণগুলো সম্বন্ধে আগে থেকে বলার বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টাগুলো থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের উৎপত্তি হয়েছিল। কিন্তু জ্যোতিষবিদ্যা আমাদের পরিবেশের ওপর সূর্য ও চাঁদের প্রাকৃতিক প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা ছাড়াও আরও বেশি কিছু করে। এটা দাবি করে যে, সূর্য, চাঁদ, গ্রহগুলো, নক্ষত্রগুলো এবং নক্ষত্রপূঞ্জের অবস্থান ও বিন্যাস শুধু পৃথিবীতে বড়ো বড়ো ঘটনাগুলোকেই প্রভাবিত করে না কিন্তু সেইসঙ্গে ব্যক্তিবিশেষের জীবনকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কোন কোন ভাবে?

কিছু জ্যোতিষবিদ্যা চর্চাকারী ভবিষ্যতের বিষয়ে ইঙ্গিত বা সাবধানবাণীগুলোর জন্য গ্রহ-নক্ষত্রগুলোকে দেখার মাধ্যম হিসেবে জ্যোতিষবিদ্যাকে ব্যবহার করে থাকে, যেগুলোকে, যারা এই ধরনের ইঙ্গিতগুলো সম্বন্ধে জানে তারা ব্যবহার করতে এবং বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হতে পারে। অন্যেরা মনে করে যে, জ্যোতিষবিদ্যা আসলে দেখায় যে, আমরা কী করার জন্য পূর্বনির্ধারিত অথবা এটা নির্দিষ্ট কাজকর্মে রত হওয়ার কিংবা নির্দিষ্ট প্রকল্পগুলো শুরু করার শুভক্ষণ নির্ধারণ করতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। বলা হয় যে, মুখ্য গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর বিন্যাস লক্ষ্য করার ও সেগুলোর একটার সঙ্গে অন্যটার এবং পৃথিবীর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক “গণনা করার” দ্বারা এই ধরনের তথ্য লাভ করা যায়। বলা হয় যে, নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর সেগুলোর প্রভাব, সেই ব্যক্তির জন্মের সময়ে গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর বিন্যাসের ওপর নির্ভর করে।

প্রাচীন কালের জ্যোতিষীরা মনে করত যে, পৃথিবী ছিল নিখিলবিশ্বের কেন্দ্র এবং গ্রহ ও নক্ষত্রগুলো ক্রমান্বয়ে প্রসারিত গোলাকার কক্ষপথগুলোর মধ্যে আবদ্ধ ছিল যেগুলো পৃথিবীর চারদিকে আবর্তন করত। এ ছাড়া তারা এও মনে করত যে, বার্ষিক সঞ্চারের সময়ে সূর্য আকাশে নক্ষত্র ও নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্য দিয়ে এক নির্দিষ্ট পথে ভ্রমণ করত। তারা আপাতদৃষ্টিতে সূর্যের এই সঞ্চারপথকে ক্রান্তিবৃত্ত বলেছিল এবং সেটাকে ১২টা বলয় বা অংশে বিভক্ত করেছিল। প্রতিটা অংশের নামকরণ সেই অংশের নক্ষত্রপুঞ্জের নাম অনুসারে দেওয়া হয়েছিল যেটার মধ্য দিয়ে সূর্য গমন করত। এভাবে রাশিচক্রের ১২টা রাশির উদ্ভব হয়েছিল। এই বলয়গুলোকে নির্দিষ্ট দেব-দেবীদের বাসস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হতো। অবশ্য পরে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছিল যে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে না বরং পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে। এই আবিষ্কার বিজ্ঞান হিসেবে জ্যোতিষবিদ্যার ওপর এক মৃত্যুজনক আঘাত নিয়ে এসেছিল।

মেসোপটেমিয়ায় এটার উৎপত্তির পর থেকে, জ্যোতিষবিদ্যার এই অভ্যাস বিশ্বের প্রায় সমস্ত প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছিল এবং বাস্তবিকভাবে, মানবজাতির প্রধান প্রধান সমস্ত সভ্যতার মধ্যে বিভিন্ন রূপে দৃঢ়ভাবে গেঁথে গিয়েছিল। পারসিকদের বাবিল জয় করার পর, জ্যোতিষবিদ্যা মিশর, গ্রিস এবং ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। ভারত থেকে, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মধ্য এশিয়া, চিন, তিব্বত, জাপান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিয়ে গিয়েছিল। যদিও মায়া সভ্যতায় এটা কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল তা জানা যায়নি, কিন্তু সেই সভ্যতা বাবিলীয়দের মতোই একইভাবে জ্যোতিষবিদ্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণগুলোকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছিল। জ্যোতিষবিদ্যার “আধুনিক” রূপ আপাতদৃষ্টিতে গ্রিক সংস্কৃতি অধ্যুষিত মিশরেই গড়ে উঠেছিল এবং যিহুদিধর্ম, ইসলামধর্ম এবং খ্রিস্টীয়জগতের নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের চিন্তাধারার ওপর এক তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল।

এমনকী সা.কা.পূ. সপ্তম শতাব্দীতে, বাবিলে বন্দিত্বে যাওয়ার পূর্বেও ইস্রায়েল জাতি জ্যোতিষবিদ্যার প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল না। বাইবেল আমাদেরকে লোকেদের মধ্য থেকে “সূর্য্যের ও চন্দ্রের এবং গ্রহগণের ও আকাশের সমস্ত বাহিনীর উদ্দেশে” বলি উৎসর্গ করার অভ্যাস দূর করার ব্যাপারে বিশ্বস্ত রাজা যোশিয়ের প্রচেষ্টাগুলো সম্বন্ধে বলে।—২ রাজাবলি ২৩:৫.

জ্যোতিষবিদ্যার উৎস

জ্যোতিষবিদ্যা নিখিলবিশ্বের গঠন ও কার্যপ্রণালী সম্বন্ধীয় গুরুতর ভুল ধারণাগুলোর ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই, স্পষ্টতই এটা ঈশ্বর থেকে হতে পারে না। যেহেতু এটার মৌলিক ভিত্তি মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত, তাই জ্যোতিষবিদ্যা ভবিষ্যৎ সম্বন্ধীয় তথ্যের এক সঠিক উৎস হতে পারে না। এর ব্যর্থতাকে দুটো আগ্রহজনক ঐতিহাসিক ঘটনার দ্বারা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বাবিলীয় রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের রাজত্বের সময়ে, মন্ত্রবেত্তা ও জ্যোতির্ব্বেত্তারা রাজা যে-স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটার অর্থ বলতে ব্যর্থ হয়েছিল। সত্য ঈশ্বর যিহোবার একজন ভাববাদী দানিয়েল এই বলে সেই সমস্যার কারণটা উল্লেখ করেছিলেন: “মহারাজ যে নিগূঢ় কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছেন, তাহা বিদ্বান্‌ কি গণক কি মন্ত্রবেত্তা কি জ্যোতির্ব্বেত্তারা মহারাজকে জানাইতে পারে না; কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গে আছেন, তিনি নিগূঢ় বিষয় প্রকাশ করেন, আর উত্তরকালে যাহা যাহা ঘটিবে, তাহা তিনি মহারাজ নবূখদ্‌নিৎসরকে জানাইয়াছেন।” (দানিয়েল ২:২৭, ২৮) হ্যাঁ, দানিয়েল যিহোবা ঈশ্বর, যিনি “নিগূঢ় বিষয় প্রকাশ করেন” তাঁর ওপর নির্ভর করেছিলেন—সূর্য, চাঁদ বা গ্রহ-নক্ষত্রের ওপর নয়—আর তিনি রাজাকে সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছিলেন।—দানিয়েল ২:৩৬-৪৫.

মায়া সভ্যতার জ্যোতিষবিদ্যা সংক্রান্ত একেবারে সঠিক গণনাগুলো সেই সভ্যতাকে সা.কা.পূ. নবম শতাব্দীতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারেনি। এই ব্যর্থতাগুলো কেবল এটাই দেখায় না যে, জ্যোতিষবিদ্যা হল প্রতারণাপূর্ণ, যেকোনো বিষয়ে সঠিকভাবে আগে থেকে বলতে অসমর্থ কিন্তু সেইসঙ্গে এটার প্রকৃত উদ্দেশ্যকেও উন্মোচন করে: ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সঠিক তথ্যের জন্য ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করা থেকে দূরে রাখা।

জ্যোতিষবিদ্যা যে মিথ্যাগুলোর ওপর প্রতিষ্ঠিত এই বিষয়টাও আমাদেরকে এটার প্রতিষ্ঠাতাকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। যিশু দিয়াবল সম্বন্ধে বলেছিলেন: “সে . . . সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা।” (যোহন ৮:৪৪) শয়তান “দীপ্তিময় দূতের” ভান করে এবং মন্দদূতেরা “ধার্ম্মিকতার পরিচারকদের” ছদ্মবেশ ধারণ করে। বাস্তবে, তারা লোকেদেরকে প্রতারণার জালে ফেলার উদ্দেশ্যে প্রতারণা করে। (২ করিন্থীয় ১১:১৪, ১৫) ঈশ্বরের বাক্য “মিথ্যার সমস্ত পরাক্রম ও নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণ”-কে ‘শয়তানের কার্য্য’ হিসেবে প্রকাশ করে।—২ থিষলনীকীয় ২:৯.

যে-কারণে আপনার এটা এড়িয়ে চলা উচিত

জ্যোতিষবিদ্যা মিথ্যাগুলোর ওপর প্রতিষ্ঠিত আর তাই এটা সত্যের ঈশ্বর যিহোবার কাছে ঘৃণিত। (গীতসংহিতা ৩১:৫) সেই কারণে, বাইবেল স্পষ্টভাবে এটার নিন্দা করে এবং এটার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখার জন্য লোকেদেরকে জোরালো পরামর্শ দেয়। দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২ পদে ঈশ্বর স্পষ্টভাবে বলেন: “তোমার মধ্যে যেন এমন কোন লোক পাওয়া না যায়, যে . . . মোহক, বা মায়াবী, . . . ভূতড়িয়া, বা গুণী বা প্রেতসাধক। কেননা সদাপ্রভু এই সকল কার্য্যকারীকে ঘৃণা করেন।”

যেহেতু শয়তান ও মন্দদূতেরাই হল সেই শক্তি যেটা জ্যোতিষবিদ্যার পিছনে রয়েছে, তাই এতে জড়িত হওয়া একজন ব্যক্তিকে তাদের প্রভাবের মুখে ফেলে। ঠিক যেমন মাদকদ্রব্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা একজনকে মাদকদ্রব্য কারবারীদের নিয়ন্ত্রণাধীনে নিয়ে আসতে পারে, ঠিক তেমনই জ্যোতিষবিদ্যা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা একজনকে প্রধান প্রতারক শয়তানের নিয়ন্ত্রণাধীনে নিয়ে আসতে পারে। তাই, যারা ঈশ্বর ও সত্যকে ভালোবাসে তাদের অবশ্যই জ্যোতিষবিদ্যাকে পুরোপুরিভাবে প্রত্যাখ্যান করতে ও পরিবর্তে বাইবেলের এই পরামর্শ মেনে চলতে হবে: “মন্দকে ঘৃণা কর ও উত্তমকে ভালবাস।”—আমোষ ৫:১৫.

জ্যোতিষবিদ্যা ভবিষ্যৎ জানার জন্য লোকেদের ইচ্ছাকে বৃদ্ধি করে। ভবিষ্যৎ জানা কি সম্ভব? আর যদি তাই হয়, তাহলে কীভাবে? বাইবেল আমাদের জানায় যে, আগামীকাল, পরের মাস বা পরের বছর ব্যক্তিগতভাবে আমাদের প্রতি কী ঘটবে, তা আমরা জানতে পারি না। (যাকোব ৪:১৪) তা সত্ত্বেও, নিকট ভবিষ্যতে মানবজাতির প্রতি কী ঘটবে সেই সম্বন্ধে বাইবেল আমাদের কাছে এক সাধারণ চিত্র প্রকাশ করে। এটি আমাদের জানায় যে, প্রভুর প্রার্থনায় যে-রাজ্যের বিষয়ে আমরা প্রার্থনা করি, সেই রাজ্য শীঘ্র আসবে। (দানিয়েল ২:৪৪; মথি ৬:৯, ১০) এ ছাড়া, এটি আমাদের এও বলে যে, মানুষের দুঃখকষ্ট শীঘ্র শেষ হবে এবং সেগুলো আমাদের আর কখনোই কষ্ট দেবে না। (যিশাইয় ৬৫:১৭; প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) মানুষের জীবন পূর্বেই নির্ধারণ করার পরিবর্তে, ঈশ্বর সমস্ত জায়গার লোকেদেরকে তাঁর সম্বন্ধে এবং তাদের উপকারের জন্য তিনি যা করবেন সেই সম্বন্ধে শেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। কীভাবে আমরা তা জানি? বাইবেল এই বিষয়টা স্পষ্ট করে যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা হল যেন “সমুদয় মনুষ্য পরিত্রাণ পায়, ও সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পর্য্যন্ত পঁহুছিতে পারে।”—১ তীমথিয় ২:৪.

চমৎকার আকাশমণ্ডল এবং সেগুলোর মধ্যে থাকা সমস্তকিছুকে আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্থাপন করা হয়নি। এর পরিবর্তে, সেগুলো যিহোবার পরাক্রম ও ঈশ্বরত্বকে নির্দেশ করে। (রোমীয় ১:২০) এক সফল জীবনের জন্য নির্ভরযোগ্য নির্দেশনা ও পরিচালনা দিতে সেগুলো আমাদেরকে মিথ্যাগুলোকে প্রত্যাখ্যান করতে আর ঈশ্বর এবং তাঁর বাক্য বাইবেলের ওপর নির্ভর করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। “তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।”—হিতোপদেশ ৩:৫, ৬. (w১০-E ০৬/০১)

[২৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

মায়া সভ্যতা জ্যোতিষবিদ্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণগুলোকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছিল

[২৪ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“ঈশ্বর স্বর্গে আছেন, তিনি নিগূঢ় বিষয় প্রকাশ করেন, আর উত্তরকালে যাহা যাহা ঘটিবে, তাহা তিনি . . . জানাইয়াছেন”

[২৪ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

মায়া সভ্যতার জ্যোতিষবিদ্যা সংক্রান্ত সঠিক গণনাগুলো সেই সভ্যতাকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারেনি

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

এল ক্যারাকল মানমন্দির, চিচেন ইটজা, ইয়ুকাতান, মেক্সিকো, সা.কা. ৭৫০-৯০০

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

পৃষ্ঠা ২২ ও ২৩, বাম দিক থেকে ডান দিকে: গ্রহ-নক্ষত্রগুলো: NASA, ESA, and A. Nota (STScI); মায়া-জাতীয় ক্যালেন্ডার: © Lynx/Iconotec com/age fotostock; মায়া-জাতীয় জ্যোতির্বিদ: © Albert J. Copley/age fotostock; মায়া-জাতীয় মানমন্দির: El Caracol (The Great Conch) (photo), Mayan/Chichen Itza, Yucatan, Mexico/Giraudon/The Bridgeman Art Library