সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আত্মিক প্রাণীরা যেভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে

আত্মিক প্রাণীরা যেভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে

যিশুর কাছ থেকে আমরা যা শিখি

আত্মিক প্রাণীরা যেভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে

“জগৎ হইবার পূর্ব্বে” যিশু তাঁর পিতার সঙ্গে আত্মিক রাজ্যে বাস করতেন। (যোহন ১৭:৫) তাই, নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য তিনি সুযোগ্য।

স্বর্গদূতেরা কি আমাদের বিষয়ে আগ্রহী?

▪ যিশুর কাছ থেকে আমরা শিখি যে, স্বর্গদূতেরা লোকেদের বিষয়ে গভীরভাবে আগ্রহী। তিনি বলেছিলেন: “এক জন পাপী মন ফিরাইলে ঈশ্বরের দূতগণের সাক্ষাতে আনন্দ হয়।”—লূক ১৫:১০.

যিশু প্রকাশ করেছিলেন যে, স্বর্গদূতদেরকে ঈশ্বরের দাসদের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের বিষয়টা দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই, যিশু যখন অন্যদের বিঘ্নিত করার বিষয়ে তাঁর শিষ্যদেরকে সাবধান করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন: “দেখিও, এই ক্ষুদ্রগণের মধ্যে একটীকেও তুচ্ছ করিও না; কেননা আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, তাহাদের দূতগণ স্বর্গে সতত আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখ দর্শন করেন।” (মথি ১৮:১০, ১১) এই কথাগুলোর দ্বারা যিশু অবশ্যই বোঝাতে চাননি যে, তাঁর প্রত্যেক অনুসারীর এক রক্ষক স্বর্গদূত রয়েছে। কিন্তু যিশু দেখিয়েছিলেন যে, যে-স্বর্গদূতেরা ঈশ্বরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে, তারা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর সদস্যদের বিষয়ে আগ্রহী।

কীভাবে দিয়াবল আমাদের ক্ষতি করতে পারে?

▪ যিশু তাঁর অনুসারীদের সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, শয়তান লোকেদেরকে ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্য শেখা থেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। “যখন কেহ সেই রাজ্যের বাক্য শুনিয়া না বুঝে,” যিশু বলেছিলেন, “তখন সেই পাপাত্মা” বা দুষ্ট ব্যক্তি “আসিয়া, তাহার হৃদয়ে যাহা বপন করা হইয়াছিল, তাহা হরণ করিয়া লয়।”—মথি ১৩:১৯.

লোকেদেরকে প্রতারিত করার শয়তানের একটা উপায়কে যিশু প্রকাশ করে দিয়েছিলেন যখন তিনি লোকেদেরকে একজন ব্যক্তির দৃষ্টান্ত বলেছিলেন, যিনি তার ক্ষেত্রে গোম বুনেছিলেন। সেই ব্যক্তিটি যিশুকে প্রতিনিধিত্ব করেছিল আর গোম সেই সত্য খ্রিস্টানদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল, যারা যিশুর সঙ্গে স্বর্গে শাসন করবে। কিন্তু যিশু বলেছিলেন যে, এক শত্রু এসে ‘ঐ গোমের মধ্যে শ্যামাঘাসের বীজ বপন করিয়াছিল।’ শ্যামাঘাস মিথ্যা খ্রিস্টানদের বোঝায়। “যে শত্রু তাহা বুনিয়াছিল, সে দিয়াবল।” (মথি ১৩:২৫, ৩৯) ঠিক যেমন শ্যামাঘাস অঙ্কুরিত গোমের মতোই দেখাতে পারে, তেমনই যারা খ্রিস্টান বলে দাবি করে তাদেরকেও হয়তো সত্য উপাসকদের মতোই মনে হতে পারে। যে-ধর্মগুলো মিথ্যা মতবাদগুলো শিক্ষা দিয়ে থাকে, সেগুলো লোকেদেরকে ঈশ্বরের অবাধ্য হওয়ার জন্য প্ররোচিত করে। যিহোবার সঙ্গে লোকেদের বন্ধুত্বকে নষ্ট করার জন্য শয়তান মিথ্যা ধর্মকে ব্যবহার করে।

কীভাবে আমরা আমাদেরকে ক্ষতি করা থেকে শয়তানকে প্রতিরোধ করতে পারি?

▪ যিশু শয়তানকে “জগতের অধিপতি” বলে সম্বোধন করেছিলেন। (যোহন ১৪:৩০) কীভাবে আমরা শয়তানের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় যিশু তা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে যিশু তাঁর স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “তাহাদিগকে সেই পাপাত্মা” বা দুষ্ট ব্যক্তি “হইতে রক্ষা কর। তাহারা জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই। তাহাদিগকে সত্যে পবিত্র কর; তোমার বাক্যই সত্যস্বরূপ।” (যোহন ১৭:১৫-১৭) ঈশ্বরের বাক্যের জ্ঞান আমাদেরকে মানবজাতির জগতের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে, যেটাকে শয়তান শাসন করে।

কীভাবে স্বর্গদূতেরা আজকে আমাদেরকে প্রভাবিত করে?

▪ “যুগান্তে,” যিশু বলেছিলেন, “দূতগণ আসিয়া ধার্ম্মিকদের মধ্য হইতে দুষ্টদিগকে পৃথক্‌ করিবেন।” (মথি ১৩:৪৯) আমরা এখন ‘যুগান্তে’ বাস করছি আর লক্ষ লক্ষ লোক ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচারের প্রতি সাড়া দিচ্ছে।—মথি ২৪:৩, ১৪.

কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করতে শুরু করেছে এমন সকলেই যে তাঁর অনুমোদন লাভ করে, তা নয়। স্বর্গদূতেরা যিহোবার দাসদের কাজ পরিচালনা করে আর যে-লোকেরা আন্তরিকভাবে ঈশ্বরকে ভালোবাসে তারা সেই ব্যক্তিদের থেকে পৃথকীকৃত, যারা তাদের শেখা বিষয়গুলোকে কাজে লাগাতে চায় না। যারা ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করে তাদের বিষয়ে বর্ণনা করতে গিয়ে যিশু বলেছিলেন: “তাহা এমন লোক, যাহারা সৎ ও উত্তম হৃদয়ে বাক্য শুনিয়া ধরিয়া রাখে, এবং ধৈর্য্য সহকারে ফল উৎপন্ন করে।”—লূক ৮:১৫. (w১০-E ১১/০১)

আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত এই বইয়ের ১০ অধ্যায়টি দেখুন।

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

স্বর্গদূতেরা আন্তরিক লোকেদেরকে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে একত্রিত করার ক্ষেত্রে এক ভূমিকা পালন করে থাকে