সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

একজন “প্রার্থনা-শ্রবণকারী”

একজন “প্রার্থনা-শ্রবণকারী”

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

একজন “প্রার্থনা-শ্রবণকারী”

১ বংশাবলি ৪:৯, ১০

যিহোবা ঈশ্বর কি প্রকৃতপক্ষে একনিষ্ঠ উপাসকদের আন্তরিক প্রার্থনাগুলোকে শোনেন? যাবেষ নামে একজন ব্যক্তি যার সম্বন্ধে সামান্যই জানা যায়, তার বিষয়ে বাইবেলের বিবরণ দেখায় যে, যিহোবা হলেন সত্যই “প্রার্থনা-শ্রবণকারী।” (গীতসংহিতা ৬৫:২) এই সংক্ষিপ্ত বিবরণটি অপ্রত্যাশিত বলে মনে হতে পারে এমন এক স্থানে পাওয়া যায়—বংশধারার সেই তালিকাগুলোর মধ্যে, যেগুলো দিয়ে প্রথম বংশাবলি বইটি শুরু হয়। আসুন আমরা ১ বংশাবলি ৪:৯, ১০ পদ পরীক্ষা করে দেখি।

যাবেষের বিষয়ে আমরা যতটুকু জানি, তা এই দুটো পদেই পাওয়া যায়। ৯ পদ অনুসারে, তার মা “তাঁহার নাম যাবেষ রাখিয়া বলিয়াছিলেন, আমি ত দুঃখেতে প্রসব করিলাম।” * কেন তিনি এ রকম একটি নাম বেছে নিয়েছিলেন? তিনি কি স্বাভাবিক প্রসববেদনার চেয়ে বেশি বেদনার দ্বারা এই ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন? খুব সম্ভবত তিনি কি বিধবা ছিলেন ও দুঃখ করছিলেন যে, তাদের শিশুকে এই পৃথিবীতে স্বাগত জানানোর জন্য তার স্বামী নেই? বাইবেল তা বলে না। কিন্তু এই মায়ের একদিন বিশেষ করে এই সন্তানের জন্য গর্ব করার কারণ থাকবে। যাবেষের ভাইয়েরা হয়তো ন্যায়নিষ্ঠ লোক ছিল কিন্তু “যাবেষ আপন ভ্রাতৃগণের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা সম্ভ্রান্ত ছিলেন।”

যাবেষ এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন, যিনি নিয়মিতভাবে প্রার্থনা করতেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদের জন্য অনুরোধ করে তিনি তার প্রার্থনা শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি তিনটে অনুরোধ করেছিলেন যা দেখায় যে, তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল।

প্রথমত, যাবেষ এই বলে ঈশ্বরের কাছে মিনতি করেছিলেন: “আমার অধিকার [“জমি-জমা,” বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন] বৃদ্ধি কর।” (পদ ১০) এই সম্মাননীয় ব্যক্তি জমি আত্মসাৎকারী ছিলেন না অর্থাৎ তিনি তার সহমানবের দ্রব্যে লোভ করতেন না। তার আন্তরিক অনুরোধ হয়তো জমির চেয়ে লোকেদের সঙ্গে আরও বেশি সম্পর্কযুক্ত ছিল। তিনি হয়তো এইজন্য জমি-জমা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন যাতে সেই জমিতে বসবাসকারী অনেককে তিনি সত্য ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে ও তাঁকে উপাসনা করতে সাহায্য করতে পারেন। *

দ্বিতীয়ত, যাবেষ অনুরোধ করেছিলেন ঈশ্বরের “হস্ত” যেন তার সঙ্গে সঙ্গে থাকে। ঈশ্বরের রূপক হাত হল তাঁর প্রযুক্ত শক্তি, যেটাকে তিনি তাঁর উপাসকদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করেন। (১ বংশাবলি ২৯:১২) যাবেষ হৃদয় থেকে যে-অনুরোধগুলো করেছিলেন, সেগুলো লাভ করার জন্য ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করেছিলেন, যাঁর হাত যারা তাঁর প্রতি বিশ্বাস প্রদর্শন করে তাদের প্রতি খাটো নয়।—যিশাইয় ৫৯:১.

তৃতীয়ত, যাবেষ প্রার্থনা করেছিলেন: “আমি যেন দুঃখ প্রাপ্ত না হই, এই জন্য মন্দ [“বিপদ,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] হইতে আমাকে রক্ষা কর।” “আমি যেন দুঃখ প্রাপ্ত না হই” অভিব্যক্তিটি হয়তো ইঙ্গিত দিতে পারে যে, যাবেষ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নয় কিন্তু মন্দতার প্রভাবগুলোর কারণে দুঃখিত হওয়া অথবা সেগুলোর কাছে নতিস্বীকার করাকে এড়ানোর জন্য প্রার্থনা করেছিলেন।

যাবেষের প্রার্থনা সত্য উপাসনার জন্য তার চিন্তা এবং প্রার্থনা-শ্রবণকারীর ওপর তার বিশ্বাস ও নির্ভরতাকে প্রকাশ করেছিল। যিহোবা কীভাবে সাড়া দিয়েছিলেন? এই সংক্ষিপ্ত বিবরণটি এই কথাগুলো দিয়ে শেষ হয়: “তাহাতে ঈশ্বর তাঁহার যাচিত বিষয় দান করিলেন।”

প্রার্থনা-শ্রবণকারী পরিবর্তিত হননি। তাঁর উপাসকদের প্রার্থনায় তিনি আনন্দিত হন। যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস ও নির্ভর করে, তারা হয়তো এই আস্থা রাখতে পারে: “যদি তাঁহার ইচ্ছানুসারে কিছু যাচ্ঞা করি, তবে তিনি আমাদের যাচ্ঞা শুনেন।”—১ যোহন ৫:১৪. (w১০-E ১০/০১)

[পাদটীকাগুলো]

^ যে-মূল শব্দটি থেকে যাবেষ নামটি এসেছে, সেটি “বেদনা”-কে বোঝাতে পারে।

^ পবিত্র শাস্ত্র-এর যিহুদি শব্দান্তর, টার্গামগুলো যাবেষের কথাগুলোকে এভাবে অনুবাদ করে: “সন্তান-সন্ততি দিয়ে আমাকে আশীর্বাদ কর আর শিষ্যদের দ্বারা আমার সীমানাগুলোকে বৃদ্ধি কর।”