সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে আপনি কীভাবে লড়াই করতে পারেন?

নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে আপনি কীভাবে লড়াই করতে পারেন?

নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে আপনি কীভাবে লড়াই করতে পারেন?

আপনি কি নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে কখনো লড়াই করেছেন? প্রকৃতপক্ষে, কে না করেনি? আমাদের সময়কাল আর্থিক সমস্যা, ব্যাপক দৌরাত্ম্য এবং অবাধ অবিচারের দ্বারা চিহ্নিত। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, অগণিত লোক অত্যন্ত দুঃখ, অত্যধিক অপরাধ বোধ এবং ব্যক্তিগত অযোগ্যতার অনুভূতির দ্বারা জর্জরিত।

এই ধরনের অনুভূতি বিপদজনক হতে পারে। তা হয়তো আমাদের আত্মবিশ্বাসকে দুর্বল করে দিতে, আমাদের যুক্তি করার ক্ষমতাকে অসাড় করে দিতে এবং আমাদের আনন্দকে কেড়ে নিতে পারে। বাইবেল বলে: “সঙ্কটের দিনে যদি অবসন্ন হও, তবে তোমার শক্তি সঙ্কুচিত।” (হিতোপদেশ ২৪:১০) সংকটপূর্ণ এই জগতে টিকে থাকার জন্য আমাদের শক্তির প্রয়োজন। তাই, নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। *

নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর বিরুদ্ধে বাইবেল কিছু দৃঢ় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা প্রদান করে। সৃষ্টিকর্তা ও সমস্ত জীবনের রক্ষাকর্তা যিহোবা ঈশ্বর চান না যে, আপনি প্রচণ্ড হতাশা অথবা নৈরাশ্যের কাছে হাল ছেড়ে দেন। (গীতসংহিতা ৩৬:৯) তাই আসুন আমরা এমন তিনটে উপায় বিবেচনা করি, যে-উপায়গুলোতে তাঁর বাক্য আমাদেরকে নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।

আপনার প্রতি ঈশ্বরের আগ্রহের বিষয়ে অবগত থাকুন

কেউ কেউ মনে করে যে, ঈশ্বর অন্যান্য বিষয় নিয়ে এতই ব্যস্ত যে, তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার সময় তাঁর নেই। আপনিও কি সেটাই মনে করেন? প্রকৃতপক্ষে, বাইবেল আমাদেরকে আশ্বাস দেয় যে, আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের অনুভূতি সম্বন্ধে আগ্রহী। গীতরচক বলেছিলেন: “সদাপ্রভু ভগ্নচিত্তদের নিকটবর্ত্তী, তিনি চূর্ণমনাদের পরিত্রাণ করেন।” (গীতসংহিতা ৩৪:১৮) এটা জানা কতই না সান্ত্বনাদায়ক যে, আমরা যখন দুর্দশার মধ্যে থাকি, তখন সর্বশক্তিমান সার্বভৌম আমাদের নিকটে থাকেন!

ঈশ্বর আবেগঅনুভূতিহীন অথবা উদাসীন নন। বাইবেল বলে যে, “ঈশ্বর প্রেম।” (১ যোহন ৪:৮) তিনি লোকেদেরকে ভালোবাসেন এবং যারা কষ্টভোগ করে তাদের প্রতি অনুভূতিশীল। উদাহরণস্বরূপ, প্রায় ৩,৫০০ বছর আগে ইস্রায়েলীয়রা যখন মিশরে বন্দিত্বে ছিল, তখন তিনি বলেছিলেন: “সত্যই আমি মিসরস্থ আপন প্রজাদের কষ্ট দেখিয়াছি, এবং কার্য্যশাসকদের সমক্ষে তাহাদের ক্রন্দনও শুনিয়াছি; ফলতঃ আমি তাহাদের দুঃখ জানি। আর মিস্রীয়দের হস্ত হইতে তাহাদিগকে উদ্ধার করিবার জন্য, . . . নামিয়া আসিয়াছি।”—যাত্রাপুস্তক ৩:৭, ৮.

ঈশ্বর ভালোভাবে আমাদের আবেগগত অবস্থা জানেন। সর্বোপরি, “তিনিই আমাদিগকে নির্ম্মাণ করিয়াছেন, আমরা তাঁহারই।” (গীতসংহিতা ১০০:৩) তাই, এমনকী আমরা যখন মনে করি যে, আমাদের সহমানবরা আমাদেরকে বোঝে না, তখনও আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, ঈশ্বর আমাদেরকে বোঝেন। ঈশ্বরের বাক্য বলে: “মনুষ্য যাহা দেখে, তাহা কিছু নয়; যেহেতু মনুষ্য প্রত্যক্ষ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি করে, কিন্তু সদাপ্রভু অন্তঃকরণের প্রতি দৃষ্টি করেন।” (১ শমূয়েল ১৬:৭) এমনকী আমাদের অন্তরের অনুভূতিও ঈশ্বরের কাছে গুপ্ত নয়।

এটা ঠিক যে, যিহোবা আমাদের ভুলত্রুটি সম্বন্ধেও অবগত আছেন। কিন্তু আমরা এইজন্য কৃতজ্ঞ থাকতে পারি যে, আমাদের প্রেমময় নির্মাণকর্তা হলেন ক্ষমাশীল। অনুপ্রাণিত বাইবেল লেখক দায়ূদ বলেছিলেন: “পিতা সন্তানদের প্রতি যেমন করুণা করেন, যাহারা সদাপ্রভুকে ভয় করে, তাহাদের প্রতি তিনি তেমনি করুণা করেন। কারণ তিনিই আমাদের গঠন জানেন; আমরা যে ধূলিমাত্র, ইহা তাঁহার স্মরণে আছে।” (গীতসংহিতা ১০৩:১৩, ১৪) ঈশ্বর আমাদের মধ্যে এমন বিষয়গুলো দেখেন, যেগুলো হয়তো আমরা নিজেরা দেখতে পাই না। তিনি আমাদের মধ্যে ভালো কিছু দেখেন আর যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হই, তিনি আমাদের দোষকে উপেক্ষা করেন।—গীতসংহিতা ১৩৯:১-৩, ২৩, ২৪.

তাই, আমরা যখন অযোগ্যতার অনুভূতির দ্বারা জর্জরিত হই, তখন আমাদের সেটার সঙ্গে লড়াই করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ঈশ্বর আমাদের যেভাবে দেখেন, অবশ্যই তা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে!—১ যোহন ৩:২০.

ঈশ্বরের সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন

আমরা যখন নিজেদেরকে ঈশ্বরের মতো করে দেখি, তখন আমরা কীভাবে উপকৃত হই? নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপটা নেওয়াকে—ঈশ্বরের সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তোলাকে—আমরা আরও সহজ বলে মনে করব। সেটা কি প্রকৃতপক্ষে সম্ভব?

একজন প্রেমময় পিতার মতো, যিহোবা ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষী। বাইবেল আমাদেরকে জোরালো পরামর্শ দেয়: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) অপূর্ব এই সত্যটি বিবেচনা করুন: যদিও আমরা দুর্বল ও পাপী, তবুও আমরা নিখিলবিশ্বের সার্বভৌমের সঙ্গে এক আন্তরিক ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারি।

ঈশ্বর বাইবেলে নিজেকে প্রকাশ করেছেন যাতে আমরা একজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে জানতে পারি। নিয়মিতভাবে বাইবেল পাঠ করার দ্বারা আমরা ঈশ্বরের হৃদয়গ্রাহী গুণাবলি সম্বন্ধে শিখতে পারি। * এই জ্ঞান নিয়ে ধ্যান করার সময় আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী বলে অনুভব করব। আমরা আরও ভালো করে বুঝতে পারব যে, তিনি সত্যই একজন প্রেমময় ও সমবেদনাময় পিতা।

বাইবেলে আমরা যা পাঠ করি, সেই সম্বন্ধে গভীরভাবে চিন্তা করা আমাদের জন্য আরও কিছু করে। তাঁর চিন্তাভাবনাকে আমাদের মনের ও হৃদয়ের মধ্যে নেওয়ার, সেগুলোকে আমাদেরকে সংশোধন করতে, সান্ত্বনা ও নির্দেশনা দিতে সুযোগ দেওয়ার দ্বারা আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতার আরও নিকটবর্তী হই। বিশেষ করে তখনই আমাদের তা করা প্রয়োজন যখন আমরা এমন চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিগুলোর সঙ্গে লড়াই করি, যেগুলো আমাদেরকে কষ্ট দেয় অথবা উদ্‌বিগ্ন করে। গীতরচক এটিকে এভাবে বলেন: “আমার মনে যখন দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়, তখন তোমার দেওয়া সান্ত্বনা আমার অন্তরকে আনন্দিত করে।” (গীতসংহিতা ৯৪:১৯, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) ঈশ্বরের বাক্য অনেক সান্ত্বনাদায়ক হতে পারে। আমরা যদি নম্রভাবে তাঁর সত্যের বার্তাকে গ্রহণ করি, তাহলে আমরা হয়তো দেখতে পাব যে, এমন সান্ত্বনা ও শান্তির দ্বারা আমাদের নেতিবাচক অনুভূতি আস্তে আস্তে সরে গিয়েছে, যা একমাত্র ঈশ্বরই প্রদান করতে পারেন। একজন প্রেমময় পিতা হয়তো যেমন এক চূর্ণমনা অথবা দুঃখার্ত সন্তানকে সান্ত্বনা প্রদান করেন, তেমনই যিহোবা এইভাবে আমাদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করেন।

ঈশ্বরের বন্ধু হওয়ার আরেকটা চাবির অন্তর্ভুক্ত হল তাঁর সঙ্গে নিয়মিতভাবে কথা বলা। বাইবেল আমাদেরকে এই আশ্বাস দেয় যে, “যদি তাঁহার ইচ্ছানুসারে কিছু যাচ্ঞা করি, তবে [ঈশ্বর] আমাদের যাচ্ঞা শুনেন।” (১ যোহন ৫:১৪) আমাদের যে-ভয় বা উদ্‌বেগই থাকুক না কেন, আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে ও তাঁর সাহায্য চাইতে পারি। আমরা যদি ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উজাড় করে দিই, তাহলে আমরা মনের শান্তি লাভ করব। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।”—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.

আপনি যখন বাইবেল পাঠ, ধ্যান করা ও ব্যক্তিগত প্রার্থনার কার্যক্রমটি মেনে চলবেন, তখন নিঃসন্দেহে আপনি দেখতে পাবেন যে, আপনি আপনার স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধন গড়ে তুলছেন। সেই বন্ধন হল নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার এক শক্তিশালী অস্ত্র। আর কী সাহায্য করতে পারে?

ভবিষ্যতের বিষয়ে এক নিশ্চিত আশার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন

এমনকী আমরা যখন অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে থাকি, তখনও আমরা উত্তম বিষয়গুলোর ওপর আমাদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে পারি। কীভাবে? ঈশ্বর আমাদেরকে ভবিষ্যতের বিষয়ে এক নিশ্চিত আশা প্রদান করেন। প্রেরিত পিতর এই কথাগুলোর দ্বারা এই অপূর্ব আশার সারাংশ করেছিলেন: “আমরা এমন নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি, যাহার মধ্যে ধার্ম্মিকতা বসতি করে।” (২ পিতর ৩:১৩) সেটার অর্থ কী?

‘নূতন আকাশমণ্ডল’ অভিব্যক্তিটি প্রকৃতপক্ষে এক সরকারকে—যিশু খ্রিস্টের অধীনে ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজ্যকে—নির্দেশ করে। ‘নূতন পৃথিবী,’ এই পৃথিবীতে এক নতুন মানব সমাজকে নির্দেশ করে, যেটার ওপর ঈশ্বরের অনুমোদন রয়েছে। “নূতন আকাশমণ্ডলের” শাসনের অধীনে নতুন পার্থিব সমাজ, সেই সমস্ত বিষয় থেকে মুক্ত হবে যেগুলোর কারণে নেতিবাচক অনুভূতিগুলো হয়ে থাকে। সেই সময়ে বসবাসরত বিশ্বস্ত মানুষদের সম্বন্ধে বাইবেল আমাদেরকে আশ্বাস দেয় যে, ঈশ্বর “তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না।”—প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.

নিশ্চিতভাবেই আপনি একমত হবেন যে, এগুলো হল রোমাঞ্চকর, উৎসাহজনক চিন্তাধারা। সেই কারণেই, ঈশ্বর সত্য খ্রিস্টানদের জন্য যে-ভবিষ্যৎ প্রত্যাশাগুলো প্রদান করেছেন সেগুলোকে বাইবেল ‘পরমধন্য [“আনন্দ-ভরা,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] আশা’ বলে। (তীত ২:১৩) আমরা যদি মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর আর যেজন্য সেই প্রতিজ্ঞাগুলো নির্ভরযোগ্য ও নিশ্চিত, সেই কারণগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি, তাহলে আমরা নেতিবাচক চিন্তাভাবনাকে দূর করতে পারব।—ফিলিপীয় ৪:৮.

বাইবেল আমাদের পরিত্রাণের আশাকে এক শিরস্ত্রাণের সঙ্গে তুলনা করে। (১ থিষলনীকীয় ৫:৮) প্রাচীনকালে, একজন সৈনিক তার শিরস্ত্রাণ ছাড়া যুদ্ধে রত হওয়ার সাহস করতেন না। তিনি জানতেন যে, এটা অনেক আঘাতকে প্রতিহত করবে এবং কোনোরকম আঘাত না করেই তিরগুলো ছিটকে যাবে। একটা শিরস্ত্রাণ যেমন মাথাকে রক্ষা করে, তেমনই আশা মনকে রক্ষা করে। আমাদের আশায় পূর্ণ করে এমন বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা, আমাদেরকে নেতিবাচক, ভয়শীল ও নিরাশাজনক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে রাখতে পারে।

তাই নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব। আপনিও তা করতে পারেন! ঈশ্বর যেভাবে আপনাকে দেখেন সেটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন, তাঁর আরও নিকটবর্তী হোন এবং ভবিষ্যতের বিষয়ে আপনার আশার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আপনি সেই দিন দেখতে পাবেন যখন নেতিবাচক অনুভূতিগুলো চিরকালের জন্য দূর হবে!—গীতসংহিতা ৩৭:২৯. (w১০-E ১০/০১)

[পাদটীকাগুলো]

^ যারা দীর্ঘসময় ধরে অথবা অত্যন্ত গুরুতর হতাশার সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের হয়তো একজন যোগ্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন।—মথি ৯:১২.

^ ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সংখ্যাটি বাইবেল পাঠের জন্য এক ব্যবহারিক ও কার্যকারী তালিকা তুলে ধরে।

[৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“আমি তাহাদের দুঃখ জানি।” যাত্রাপুস্তক ৩:৭, ৮

[১০ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“আমার মনে যখন দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়, তখন তোমার দেওয়া সান্ত্বনা আমার অন্তরকে আনন্দিত করে।” গীতসংহিতা ৯৪:১৯, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন

[১১ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন . . . রক্ষা করিবে।” ফিলিপীয় ৪:৭

[১১ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

যিহোবা ঈশ্বর সম্বন্ধীয় কিছু সান্ত্বনাদায়ক শাস্ত্রপদ

“সদাপ্রভু, সদাপ্রভু, স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্‌।”—যাত্রাপুস্তক ৩৪:৬.

“সদাপ্রভুর প্রতি যাহাদের অন্তঃকরণ একাগ্র, তাহাদের পক্ষে আপনাকে বলবান দেখাইবার জন্য তাঁহার চক্ষু পৃথিবীর সর্ব্বত্র ভ্রমণ করে।” —২ বংশাবলি ১৬:৯.

“সদাপ্রভু ভগ্নচিত্তদের নিকটবর্ত্তী, তিনি চূর্ণমনাদের পরিত্রাণ করেন।” —গীতসংহিতা ৩৪:১৮.

“হে প্রভু, তুমি মঙ্গলময় ও ক্ষমাবান্‌।” —গীতসংহিতা ৮৬:৫.

“সদাপ্রভু সকলের পক্ষে মঙ্গলময়, তাঁহার করুণা তাঁহার কৃত সমস্ত পদার্থের উপরে আছে।” —গীতসংহিতা ১৪৫:৯.

“আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর তোমার দক্ষিণ হস্ত ধারণ করিব; তোমাকে বলিব, ভয় করিও না, আমি তোমার সাহায্য করিব।”—যিশাইয় ৪১:১৩.

“ধন্য . . . করুণা-সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর।” —২ করিন্থীয় ১:৩.

“তাঁহার সাক্ষাতে আপনাদের হৃদয় আশ্বাসযুক্ত করিব, কারণ আমাদের হৃদয় যদি আমাদিগকে দোষী করে, ঈশ্বর আমাদের হৃদয় অপেক্ষা মহান্‌, এবং সকলই জানেন।” —১ যোহন ৩:১৯, ২০.

[১২ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

তারা সফলভাবে নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করছে

“আমার বাবা হলেন একজন মদ্যপায়ী আর তিনি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। যতদূর মনে করতে পারি, আমি অযোগ্যতার অনুভূতির দ্বারা জর্জরিত হয়েছি। কিন্তু আমি যখন একজন যিহোবার সাক্ষির সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিলাম, তখন আমি পৃথিবীতে অনন্তজীবন সম্বন্ধীয় প্রতিজ্ঞাটির বিষয়ে শিখেছিলাম। এই আশা আমার মন ও হৃদয়কে আনন্দে পূর্ণ করেছিল। বাইবেল পাঠ আমার জীবনের এক নিয়মিত অংশ হয়ে উঠেছিল। আমার হাতের কাছে সবসময়ই একটি বাইবেল থাকে। আমি যখন নেতিবাচক অনুভূতিগুলোর দ্বারা জর্জরিত হই, তখন আমি বাইবেল খুলে সান্ত্বনাদায়ক শাস্ত্রপদগুলো পাঠ করি। ঈশ্বরের হৃদয়গ্রাহী গুণাবলি সম্বন্ধে পাঠ করা আমাকে এই আশ্বাস প্রদান করে যে, তাঁর চোখে আমি কতখানি মূল্যবান।—কিটিয়া, ৩৩ বছর বয়সি একজন ভদ্রমহিলা। *

“আমি মদ, মারিজুয়ানা, কোকেনের প্রতি আসক্ত ছিলাম ও বিষাক্ত ধোঁয়া টানতাম। আমার যা-কিছু ছিল তার প্রায় সবকিছু হারিয়ে আমি ভিখারি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়নের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর, আমি পুরোপুরিভাবে আমার জীবনকে পরিবর্তন করেছি। আমি ঈশ্বরের সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে এসেছি। এমনকী যদিও আমাকে দোষীবোধ এবং অযোগ্যতার অনুভূতিগুলোর সঙ্গে এখনও লড়াই করতে হয়, তবুও আমি ঈশ্বরের করুণা ও প্রেমপূর্ণ-দয়ার ওপর নির্ভর করতে শিখেছি। আমি নিশ্চিত যে, ঈশ্বর আমাকে আমার নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে কাটিয়ে ওঠার জন্য ক্রমাগত শক্তি দেবেন। বাইবেলের সত্য জানা হল সর্বোত্তম বিষয়, যা আমার জীবনে কখনো ঘটেছিল।”—রেনাটো, ৩৭ বছর বয়সি একজন ভদ্রলোক।

“আমি যখন ছোটো ছিলাম, তখন থেকেই আমি নিজেকে আমার দাদার সঙ্গে তুলনা করতাম। আমি সবসময় নিজেকে তার চেয়ে ছোটো বলে মনে করতাম। এখনও আমি নিরাপত্তাহীন বলে বোধ করি আর আমি আমার দক্ষতাগুলোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী নই। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে না দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। আমি অবিরতভাবে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছি আর তিনি আমাকে আমার অযোগ্যতার অনুভূতিগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। এটা জানা হৃদয়গ্রাহী যে, ঈশ্বর সত্যই আমাকে ভালোবাসেন ও আমার জন্য চিন্তা করেন!”—রবার্টা, ৪৫ বছর বয়সি একজন ভদ্রমহিলা।

[পাদটীকা]

^ কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।