সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের রাজ্য কী?

ঈশ্বরের রাজ্য কী?

পাঠ ৬

ঈশ্বরের রাজ্য কী?

ঈশ্বরের রাজ্যের অবস্থিতি কোথায়? (১) এর রাজা কে? (২)

অন্যেরা কি রাজার সঙ্গে শাসনে অংশগ্রহণ করে? যদি করে, তাহলে কতজন? (৩)

কী দেখায় যে আমরা শেষ কালে বাস করছি? (৪)

ঈশ্বরের রাজ্য ভবিষ্যতে মানবজাতির জন্য কী করবে? (৫-৭)

১. যখন তিনি পৃথিবীতে ছিলেন, যীশু তাঁর শিষ্যদের ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন। কোন রাজ্য হল একটি শাসনতন্ত্র যার নেতৃত্বে আছে এক রাজা। ঈশ্বরের রাজ্য এক বিশেষ শাসনতন্ত্র। এটি স্বর্গে গঠিত এবং এই পৃথিবীর উপরে শাসন করবে। এটি ঈশ্বরের নামকে পবিত্রীকৃত, অথবা পূত, করবে। স্বর্গে যেমন হয়ে থাকে তেমনি পৃথিবীর উপরেও এটি ঈশ্বরের ইচ্ছাকে পালন করাবে।—মথি ৬:৯, ১০.

২. ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে যীশু তাঁর রাজ্যের রাজা হবেন। (লূক ১:৩০-৩৩) যখন যীশু পৃথিবীতে ছিলেন, তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে তিনি একজন দয়ালু, ন্যায়পরায়ণ এবং সিদ্ধ শাসক হবেন। যখন তিনি স্বর্গে ফিরে গিয়েছিলেন, সঙ্গেসঙ্গেই তাঁকে ঈশ্বরের রাজ্যের রাজারূপে সিংহাসনে স্থাপন করা হয়নি। (ইব্রীয় ১০:১২, ১৩) যিহোবা ১৯১৪ সালে যীশুকে কর্তৃত্বভার দেন, যা তিনি তাঁকে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তারপর থেকে, যিহোবার নিযুক্ত রাজা হিসাবে যীশু স্বর্গে শাসন করেছেন।—দানিয়েল ৭:১৩, ১৪.

৩. এছাড়াও পৃথিবী থেকে কিছু বিশ্বস্ত পুরুষ ও নারীকে যিহোবা বেছে নিয়েছেন স্বর্গে যাওয়ার জন্য। তারা মানবজাতির উপরে রাজা, বিচারক এবং যাজকরূপে যীশুর সঙ্গে শাসন করবে। (লূক ২২:২৮-৩০; প্রকাশিত বাক্য ৫:৯, ১০) যীশু তাঁর রাজ্যে এই সহশাসকদের অভিহিত করেছেন এক “ক্ষুদ্র মেষপাল” বলে। তাদের সংখ্যা ১,৪৪,০০০.—লূক ১২:৩২; প্রকাশিত বাক্য ১৪:১-৩.

৪. যীশু রাজা হওয়ার সাথে সাথেই, তিনি শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের স্বর্গের বাইরে নিক্ষেপ করেছিলেন এবং নিদুচ একেবারে পৃথিবীর সন্নিকদুট। এই কারণেই ১৯১৪ সাল থেকে পৃথিবীর উপরে বিষয়সমূহ এত মন্দ হয়ে পড়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ১২:৯, ১২) যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, রোগ মহামারী, অধর্মের বৃদ্ধি—এ সমস্তই একটি ‘চিহ্নের’ অংশ যা ইঙ্গিত করে যে যীশু রাজত্ব করছেন এবং এই বিধিব্যবস্থা এর শেষ কালে রয়েছে।—মথি ২৪:৩, ৭, ৮, ১২; লূক ২১:১০, ১১; ২ তীমথিয় ৩:১-৫.

৫. শীঘ্রই যীশু লোকেদের বিচার করবেন, তাদের পৃথক করবেন যেভাবে এক মেষপালক ছাগদের থেকে মেষদের পৃথক করে। “মেষ” হচ্ছে তারা যারা তাঁর বিশ্বস্ত প্রজারূপে নিজেদের প্রমাণ করবে। তারা পৃথিবীর উপরে অনন্ত জীবন পাবে। “ছাগ” হচ্ছে তারা যারা ঈশ্বরের রাজ্যকে মানতে অস্বীকার করবে। (মথি ২৫:৩১-৩৪, ৪৬) অদূর ভবিষ্যতে, যীশু সকল ছাগতুল্য ব্যক্তিদের ধ্বংস করবেন। (২ থিষলনীকীয় ১:৬-৯) যদি আপনি যীশুর একজন “মেষ” হতে চান, আপনি অবশ্যই রাজ্যের বার্তা শুনবেন এবং যা শেখেন সেই অনুসারে কাজ করবেন।—মথি ২৪:১৪.

৬. বর্তমানে পৃথিবী বহু দেশে বিভক্ত রয়েছে। প্রত্যেকের নিজের শাসনতন্ত্র আছে। এই জাতিগুলি প্রায়ই একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে। কিন্তু ঈশ্বরের রাজ্য সকল মনুষ্য শাসনতন্ত্রকে পরিবর্তিত করবে। এটি একমাত্র শাসনতন্ত্র হিসাবে সমগ্র পৃথিবীর উপরে শাসন করবে। (দানিয়েল ২:৪৪) তখন সেখানে আর যুদ্ধ, অপরাধ এবং দৌরাত্ম্য থাকবে না। সকল মানুষ শান্তিতে এবং ঐক্যে একত্রে বাস করবে।—মীখা ৪:৩, ৪.

৭. যীশুর হাজার বছর রাজত্বকালে, বিশ্বস্ত মানুষেরা সম্পূর্ণ সিদ্ধ হবে এবং সমস্ত পৃথিবী এক পরমদেশে পরিণত হবে। হাজার বছর শেষ হওয়ার মধ্যেই, যীশু সমস্ত কিছু করবেন যা ঈশ্বর তাঁকে করতে বলেছিলেন। তারপর তিনি তাঁর পিতার হস্তে রাজ্যকে পুনরায় ফিরিয়ে দেবেন। (১ করিন্থীয় ১৫:২৪) ঈশ্বরের রাজ্য যা করবে সে সম্বন্ধে আপনার বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের বলুন না কেন?

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

যীশুর শাসনাধীনে, আর কোন ঘৃণা অথবা কুসংস্কার থাকবে না