সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যায় ২

“তোমরা . . . আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে”

“তোমরা . . . আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে”

যেভাবে যিশু তাঁর প্রেরিতদের প্রচার কাজে নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন

প্রেরিত ১:১-২৬ পদের উপর ভিত্তি করে

১-৩. যিশু কীভাবে তাঁর প্রেরিতদের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে ছিলেন? আর এর ফলে কোন প্রশ্নগুলো উঠে আসে?

 যিশুর প্রেরিতেরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ আনন্দে রয়েছেন। তারা চান না তাদের এই আনন্দ শেষ হয়ে যাক। তারা কিছু দিন আগে যিশুর মৃত্যুর কারণে খুবই দুঃখী আর মনমরা ছিলেন। কিন্তু, যিশু এখন বেঁচে উঠেছেন আর তাই তাদের আনন্দের কোনো শেষ নেই। গত ৪০ দিন ধরে যিশু কয়েক বার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিয়েছেন আর এই সময়ে তিনি তাদের অনেক কিছু শেখান এবং তাদের সাহস বৃদ্ধি করতে থাকেন। কিন্তু, আজ শেষ বারের মতো তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন।

যিশু তাঁর প্রেরিতদের সঙ্গে জৈতুন পর্বতের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিচ্ছেন আর তারা তাঁর প্রতিটা কথা মন দিয়ে শুনছেন। যিশু তাঁর কথা শেষ করার পর তাদের হাত তুলে আশীর্বাদ করেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে থাকেন আর প্রেরিতেরা তাঁর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। পরে একটা মেঘ এসে তাঁকে ঢেকে দেয়, শিষ্যেরা আর তাঁকে দেখতে পান না। কিন্তু, শিষ্যেরা সেখানেই দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন।—লূক ২৪:৫০; প্রেরিত ১:৯, ১০.

এই বিশেষ ঘটনা যিশুর প্রেরিতদের জীবন বদলে দিয়েছিল। তাদের প্রভু তো স্বর্গে ফিরে গিয়েছেন, তারা এখন কী করবেন? আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, তাদের প্রভু যে-কাজ শুরু করেছিলেন আর যেটা করার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, তারা তা চালিয়ে যাবেন। যিশু সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার জন্য কীভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন? প্রেরিতেরা কীভাবে তা সম্পন্ন করেছিলেন? আর বর্তমানে খ্রিস্টানেরা এই ঘটনা থেকে কী শিখতে পারে? প্রেরিত বইয়ের প্রথম অধ্যায় এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়, যেগুলো জেনে আমাদের বিশ্বাস মজবুত হবে।

‘বিভিন্ন স্পষ্ট প্রমাণ’ (প্রেরিত ১:১-৫)

 ৪.লূক কীভাবে প্রেরিত বইয়ের বিবরণ লিখতে শুরু করেন?

প্রেরিত বইয়ের শুরুতেই লূক থিয়ফিল নামে একজন ব্যক্তির উদ্দেশে কথা বলেন। তিনি তার সুসমাচারের বই এই ব্যক্তিকে উদ্দেশ করেই লেখেন। a লূক তার সুসমাচারের বইয়ের শেষের দিকে যে-ঘটনাগুলোর কথা উল্লেখ করেছিলেন, প্রেরিত বইয়ের শুরুতে সেই ঘটনারই সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করেছেন। এটা করার সময় তিনি কিছু নতুন তথ্য যুক্ত করেন আর সেগুলো আলাদা আলাদা শব্দের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এইভাবে তিনি দেখিয়েছিলেন, প্রেরিত বই লূক লিখিত সুসমাচারের পরের ঘটনাগুলোর বিবরণ জানায়।

৫, ৬. (ক) কোন বিষয়টা যিশুর শিষ্যদের তাদের বিশ্বাসকে মজবুত করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে? (খ) কীভাবে বর্তমানে খ্রিস্টানদের বিশ্বাসও “স্পষ্ট প্রমাণের” উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে?

যিশুর শিষ্যদের বিশ্বাস মজবুত করার জন্য কোন বিষয়টা সাহায্য করত? প্রেরিত ১:৩ পদ জানায়, যিশু “বিভিন্ন স্পষ্ট প্রমাণের দ্বারা তাদের দেখিয়েছিলেন যে, তিনি জীবিত।” যে-গ্রীক শব্দকে “স্পষ্ট প্রমাণ” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, পুরো বাইবেলে এর ব্যবহার কেবলমাত্র “প্রিয় চিকিৎসক” লূকই করেছেন। (কল. ৪:১৪) এই গ্রিক শব্দ সেই সময় চিকিৎসকেরাই তাদের লেখার মধ্যে ব্যবহার করত, এর অর্থ হল প্রমাণটা সঠিক, নির্ভুল এবং নির্ভরযোগ্য ছিল। যিশুও নিজের সম্বন্ধে এইরকম প্রমাণ দিয়েছিলেন। তিনি পুনরুত্থিত হওয়ার পর অনেকবার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিয়েছিলেন। কখনো তিনি দু-এক জন শিষ্যকে দেখা দিয়েছিলেন, আবার কখনো সমস্ত প্রেরিতকে দেখা দিয়েছিলেন। একবার তো তিনি ৫০০-শোরও বেশি শিষ্যকে দেখা দিয়েছিলেন। (১ করি. ১৫:৩-৬) নিশ্চিতভাবেই এটা কতই-না স্পষ্ট প্রমাণ ছিল!

বর্তমানে, সত্য খ্রিস্টানদের বিশ্বাসও “বিভিন্ন স্পষ্ট প্রমাণের” উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু, এই বিষয়টার কি কোনো প্রমাণ রয়েছে যে, যিশু পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন আর আমাদের পাপের জন্য মারা গিয়েছিলেন এবং আবারও পুনরুত্থিত হয়েছেন? নিশ্চয়ই রয়েছে। ঈশ্বরের বাক্যে যিশুর জীবন সম্বন্ধে যে-সমস্ত বিবরণ দেওয়া রয়েছে, সেখানে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের কথা বলা রয়েছে, যারা নিজের চোখে যিশুকে দেখেছিল এবং নিজের কানে তাঁর কথা শুনেছিল। তাই, যিশুকে বিশ্বাস করার জন্য যতটা প্রমাণের প্রয়োজন, তার চেয়েও বেশি প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা যদি বাইবেলের এই কথাগুলো নিয়ে ভালোভাবে অধ্যয়ন করি আর প্রার্থনাপূর্বক সেগুলো নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা করি, তা হলে আমাদের বিশ্বাস অবশ্যই শক্তিশালী হবে। মনে রাখবেন, প্রকৃত বিশ্বাস সঠিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে, এটা চোখ বন্ধ করে কোনো কিছুকে সত্য বলে মেনে নেয় না। অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য প্রকৃত বিশ্বাস খুবই প্রয়োজন।—যোহন ৩:১৬.

 ৭. যিশু তাঁর শিষ্যদের সামনে প্রচার কাজ এবং শিষ্য তৈরি করার কোন উদাহরণ রেখেছিলেন?

যিশু তাঁর প্রেরিতদের নিজের পুনরুত্থানের প্রমাণ দেওয়ার পাশাপাশি ‘ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধেও কথা বলেছিলেন।’ যেমন, তিনি তাদের সেই ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো বুঝতে সাহায্য করেন যেখানে বলা হয়েছিল, খ্রিস্ট কষ্ট ভোগ করবেন এবং মারা যাবেন। (লূক ২৪:১৩-৩২, ৪৬, ৪৭) যিশু এটাও বুঝিয়েছিলেন, খ্রিস্ট হিসেবে তিনি কী কী করেছিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন, কারণ তাঁকে সেই রাজ্যের রাজা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রথম থেকেই যিশুর প্রচারের মূল বিষয় ছিল, ঈশ্বরের রাজ্য আর এটাই বর্তমানে তাঁর শিষ্যদের প্রচারের মূল বিষয়।—মথি ২৪:১৪; লূক ৪:৪৩.

“পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে” (প্রেরিত ১:৬-১২)

৮, ৯. (ক) যিশুর শিষ্যদের মনে দুটো ভুল ধারণা কী ছিল? (খ) কীভাবে যিশু তাদের সেই ভুল ধারণা সংশোধন করতে সাহায্য করেছিলেন আর বর্তমানে খ্রিস্টানেরা এর থেকে কী শিখতে পারে?

প্রেরিতেরা যখন জৈতুন পর্বতের উপর একত্রিত হয়েছিলেন, তখন সেটাই ছিল পৃথিবীতে যিশুর সঙ্গে তাদের শেষ দেখা। তারা যিশুর কাছ থেকে কিছু বিষয় জানার জন্য উৎসুক ছিলেন, তাই তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন: “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইজরায়েলের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে আনবেন?” (প্রেরিত ১:৬) এই কথাগুলো থেকে বোঝা যায়, প্রেরিতদের মনে দুটো ভুল ধারণা ছিল। প্রথমত, তারা মনে করেছিলেন এই পৃথিবীতেই ঈশ্বরের রাজ্য ইজরায়েল জাতির হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, তারা আশা করেছিলেন প্রতিজ্ঞাত রাজ্য “এই সময়ে” অর্থাৎ এখনই রাজত্ব শুরু করে দেবে। এই ভুল ধারণা সংশোধন করার জন্য যিশু কীভাবে তাদের সাহায্য করেছিলেন?

তাদের প্রথম ধারণার ক্ষেত্রে যিশু হয়তো জানতেন যে, কয়েক দিন পর তারা নিজেরাই বুঝতে পারবে তাদের ধারণা ভুল। এর কারণ তাঁর শিষ্যেরা খুব শীঘ্রই অর্থাৎ দশ দিন পরই এক নতুন জাতি অর্থাৎ আত্মিক ইজরায়েলের শুরু দেখতে পাবে। ইজরায়েল জাতির সঙ্গে ঈশ্বরের বিশেষ সম্পর্ক শেষ হতে যাচ্ছিল। তাদের দ্বিতীয় ধারণা সংশোধন করার জন্য যিশু প্রেমের সঙ্গে পরামর্শ দিয়ে বলেন, “পিতা যে-সময় ও কাল নিজের অধীনে রেখেছেন, তা তোমাদের জানার বিষয় নয়।” (প্রেরিত ১:৭) এই বিষয়টা যিহোবা ঠিক করেন যে, তাঁর উদ্দেশ্য অনুযায়ী কোন ঘটনা কখন ঘটবে। যিশু মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগে এই বিষয়ে বলেছিলেন, “পুত্রও জানেন না” সেই দিন অথবা সেই সময় কখন আসবে, “কেবল পিতা জানেন।” (মথি ২৪:৩৬) বর্তমানেও খ্রিস্টানেরা যদি অতিরিক্ত চিন্তা করতে থাকে যে, এই বিধিব্যবস্থার শেষ কখন আসবে, তা হলে তারা এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করছে, যা তাদের জানার বিষয় নয়।

১০. প্রেরিতদের মতো আমাদের কেমন মনোভাব রাখা উচিত এবং কেন?

১০ প্রেরিতদের সেই ভুল ধারণার জন্য তাদের নীচু চোখে দেখা উচিত নয় কারণ তাদের অসাধারণ বিশ্বাস ছিল। তাদের যখন সংশোধন করা হয়েছিল, তখন তারা নম্রভাবে নিজেদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেছিলেন। যদিও তারা নিজেদের ভুল চিন্তাভাবনার কারণে সেই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন, তবুও এটা তাদের সম্বন্ধে আমাদের এক ভালো বিষয় জানায় আর সেটা হল, যিশুর দেওয়া সেই পরামর্শ তারা মেনে নিয়েছিলেন, যা তিনি বার বার তাদের দিয়েছিলেন: “জেগে থেকো।” (মথি ২৪:৪২; ২৫:১৩; ২৬:৪১) তারা আধ্যাত্মিকভাবে জেগে ছিলেন আর মনোযোগ দিয়ে সেই প্রমাণগুলো দেখার চেষ্টা করছিলেন, যেগুলো থেকে বোঝা যায় যিহোবা খুব তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নেবেন। বর্তমানে, আমাদেরও সেই প্রেরিতদের মতো মনোভাব রাখা উচিত। বিশেষ করে ‘শেষকালের’ এই শেষ সময়ে আমাদের জন্য জেগে থাকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।—২ তীম. ৩:১-৫.

১১, ১২. (ক) যিশু তাঁর শিষ্যদের কোন কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন? (খ) যিশু প্রচার কাজের দায়িত্ব দেওয়ার আগে কেন তাদের পবিত্র শক্তি দেওয়ার প্রতিজ্ঞার বিষয়ে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন?

১১ যিশু তাঁর প্রেরিতদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, তাদের প্রধান চিন্তার বিষয় কী হওয়া উচিত। তিনি বলেছিলেন, “তোমাদের উপর পবিত্র শক্তি আসার পর তোমরা শক্তি লাভ করবে আর তোমরা জেরুসালেমে, সমস্ত যিহূদিয়া ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে।” (প্রেরিত ১:৮) শিষ্যদের যিশুর পুনরুত্থানের খবর সবার প্রথমে জেরুসালেমে প্রচার করতে হত, যেখানে যিশুকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর তাদের সমস্ত যিহূদিয়া ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত প্রচার করতে হত।

১২ নিশ্চিতভাবেই, যিশু তাঁর শিষ্যদের প্রচার কাজের দায়িত্ব দেওয়ার আগে সেই প্রতিজ্ঞার বিষয়ে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তাদের সাহায্যের জন্য পবিত্র শক্তি পাঠাবেন। মূল ভাষায় “পবিত্র শক্তি” শব্দটা প্রেরিত বইয়ে ৪০ বারেরও বেশি পাওয়া যায়। বাইবেলের এই রোমাঞ্চকর বই আমাদের বার বার জোর দিয়ে বলে, পবিত্র শক্তির সাহায্য ছাড়া যিহোবার ইচ্ছা পূরণ করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। তাই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা যেন পবিত্র শক্তি চেয়ে যিহোবার কাছে বার বার প্রার্থনা করি। (লূক ১১:১৩) বর্তমানে, আগের চেয়ে আরও বেশি করে আমাদের পবিত্র শক্তির সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে।

১৩. বর্তমানে প্রচার কাজ কত বড়ো আকারে হচ্ছে? কেন উদ্যোগের সঙ্গে আমাদের এই কাজ করতে হবে?

১৩ প্রথম শতাব্দীতে প্রেরিতদের কাছে “পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত” বলতে সীমিত কিছু এলাকাই ছিল। কিন্তু বর্তমানে, আমাদের কাছে প্রচার করার জন্য পুরো পৃথিবী রয়েছে। এই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে আমরা যেমন দেখেছি, যিহোবার সাক্ষিরা পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত গিয়ে আনন্দের সঙ্গে প্রচার করে। এর কারণ, তারা জানে ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যেন সমস্ত ধরনের লোক রাজ্যের সুসমাচার সম্বন্ধে জানতে পারে। (১ তীম. ২:৩, ৪) আপনি কি এই জীবন রক্ষাকারী কাজে পুরোপুরিভাবে অংশ নিচ্ছেন? যদি নিয়ে থাকেন, তা হলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, এর চেয়ে সন্তোষজনক কাজ আপনি আর কোথাও খুঁজে পাবেন না। আর এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য যিহোবা আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তি দেবেন। প্রেরিত বইয়ে আমরা দেখতে পাব, প্রচার কাজে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য আমাদের কোন পদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করতে হবে আর এই কাজের প্রতি আমাদের কেমন মনোভাব রাখতে হবে।

১৪, ১৫. (ক) খ্রিস্টের ফিরে আসার বিষয়ে স্বর্গদূতেরা কী বলেছিলেন? তাদের কথার অর্থ কী ছিল? (এ ছাড়া, পাদটীকা দেখুন।) (খ) কীভাবে খ্রিস্ট ‘যেভাবে স্বর্গে গিয়েছিলেন, সেভাবেই তিনি ফিরে আসবেন’?

১৪ এই অধ্যায়ের শুরুতে আমরা যেমন দেখেছি, যিশু যখন পৃথিবী ছেড়ে স্বর্গে চলে যাচ্ছিলেন, তখন একটা মেঘ এসে তাঁকে ঢেকে দেয়, প্রেরিতেরা তাঁকে আর দেখতে পান না। কিন্তু, সেই ১১ জন প্রেরিত সেখানেই দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। সেইসময় দু-জন স্বর্গদূত এসে প্রেমের সঙ্গে তাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, “হে গালীলের লোকেরা, তোমরা দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছ কেন? এই যে যিশু, যাঁকে তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে তোমরা যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, সেভাবেই তিনি আসবেন।” (প্রেরিত ১:১১) সেই স্বর্গদূতেরা কি এটা বোঝাতে চেয়েছিলেন, যিশু রক্ত মাংসের শরীর ধারণ করে ফিরে আসবেন, যেমনটা কিছু ধর্ম শিখিয়ে থাকে? না, স্বর্গদূতেরা এটা বোঝাতে চাননি। কীভাবে আমরা তা বলতে পারি?

১৫ লক্ষ করুন, স্বর্গদূতেরা প্রেরিতদের বলেছিলেন, তারা যিশুকে ‘যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলেন, সেভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।’ b কিন্তু, তারা এটা বলেননি যে, তিনি একই শরীরে অর্থাৎ মানুষের শরীর ধারণ করে ফিরে আসবেন। যিশু কীভাবে স্বর্গে গিয়েছিলেন? তিনি যখন পৃথিবী ছেড়ে স্বর্গে চলে যাচ্ছিলেন, তখন প্রেরিতেরা কিছু দূর পর্যন্তই তাঁকে দেখতে পান, তারপর একটা মেঘ এসে তাঁকে ঢেকে দেয়। যখন স্বর্গদূতেরা এসে প্রেরিতদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, ততক্ষণে যিশু তাদের চোখের আড়ালে চলে গিয়েছেন। সেই সময় সেই কয়েক জন প্রেরিতই বুঝতে পেরেছিলেন, এখন যিশু পৃথিবী ছেড়ে অনেক দূরে তাঁর পিতার কাছে স্বর্গে ফিরে যাচ্ছেন। স্বর্গদূতেরা বলেছিলেন, খ্রিস্ট এভাবেই ফিরে আসবেন আর ঠিক তা-ই ঘটেছিল। বর্তমানে, সেই প্রেরিতদের মতোই অল্প কয়েক জন ব্যক্তি, যারা বাইবেল সম্বন্ধে ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং সেই চিহ্নগুলো শনাক্ত করতে পারে তারাই বুঝতে পেয়েছে যে, যিশু ফিরে এসেছেন। এর অর্থ হল, তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হিসেবে রাজত্ব করতে শুরু করেছেন। (লূক ১৭:২০) আমাদের সেই প্রমাণগুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে যে, যিশু রাজা হিসেবে রাজত্ব শুরু করে দিয়েছেন এবং অন্যদেরও তা বুঝতে সাহায্য করতে হবে। এর কারণ তারা যেন বুঝতে পারে, এখনই সেই সময় যখন তাদের ঈশ্বরের সেবা করতে হবে।

“তুমি আমাদের জানাও, . . . তুমি কাকে মনোনীত করেছ” (প্রেরিত ১:১৩-২৬)

১৬-১৮. (ক) প্রেরিত ১: ১৩, ১৪ পদ থেকে আমরা খ্রিস্টীয় সভা সম্বন্ধে কোন বিষয়গুলো শিখি? (খ) যিশুর মা মরিয়মের উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (গ) বর্তমানে খ্রিস্টীয় সভা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

১৬ যিশু স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পর তাঁর প্রেরিতেরা “অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জেরুসালেমে ফিরে গেলেন।” (লূক ২৪:৫২) কিন্তু, খ্রিস্ট স্বর্গে ফিরে যাওয়ার আগে যে-নির্দেশনাগুলো তাদের দিয়েছিলেন, সেগুলো কি তারা পালন করেছিলেন? প্রেরিত ১:১৩ ও ১৪ পদ পড়লে আমরা জানতে পারি, তারা একটা “উপরের ঘরে” একত্রিত হয়েছিলেন। এই পদগুলো থেকে খ্রিস্টীয় সভা সম্বন্ধে আমরা কিছু আগ্রহজনক বিষয় শিখি। সেই সময় প্যালেস্টাইনের বেশিরভাগ বাড়িতে উপরে একটা ঘর থাকত, যে-ঘরে যাওয়ার সিঁড়ি বাড়ির বাইরের দিকে হত। শিষ্যেরা যে “উপরের ঘরে” একত্রিত হয়েছিল, সেটা সম্ভবত মার্কের মায়ের বাড়ি ছিল, তার কারণ প্রেরিত ১২: ১২ পদে মার্কের মায়ের ঘরের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, সেই ঘরটা যারই হোক না কেন, সেটা একটা সাধারণ ঘর ছিল, যেটা শিষ্যদের একত্রিত হওয়ার জন্য একেবারে উপযুক্ত ছিল। কিন্তু, সেখানে কারা উপস্থিত হয়েছিল আর তারা সেখানে কী করেছিল?

১৭ লক্ষ করুন, সেখানে শুধু প্রেরিতেরা কিংবা পুরুষেরাই নয় বরং ‘কয়েক জন মহিলাও’ ছিল, যাদের মধ্যে যিশুর মা মরিয়মও ছিলেন। বাইবেলে এখানেই শেষ বারের মতো মরিয়ম সম্বন্ধে উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু, মরিয়ম সেখানে নিজের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেননি বরং অন্য খ্রিস্টীয় ভাই-বোনদের সঙ্গে নম্রভাবে উপাসনা করার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। তিনি এটা দেখে কতই-না খুশি হয়েছিলেন যে, তার চার ছেলেও তার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত রয়েছেন, যারা তাদের সৎ ভাই যিশু যখন বেঁচে ছিলেন, তখন তাঁর উপর কখনোই বিশ্বাস দেখাননি। (মথি ১৩:৫৫; যোহন ৭:৫) যিশু মারা যাওয়া এবং পুনরুত্থিত হওয়ার পর, তারা তাঁর উপর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন।—১ করি. ১৫:৭.

১৮ একটু লক্ষ করুন যে, শিষ্যেরা কেন একত্রিত হয়েছিল। শাস্ত্রপদ বলে, তারা “সকলে একত্রে মিলিত হয়ে ক্রমাগত একমনা হয়ে প্রার্থনা করতেন।” (প্রেরিত ১:১৪) উপাসনার জন্য সভায় একত্রে মিলিত হওয়া খ্রিস্টানদের জন্য সবসময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে এসেছে। সভায় একত্রিত হয়ে আমরা নির্দেশনা ও পরামর্শ পাই এবং একে অন্যকে উৎসাহিত করি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, আমরা সভায় একত্রিত হয়ে আমাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবার উপাসনা করি। সভাতে গান ও প্রার্থনা করা যিহোবাকে খুবই খুশি করে আর এটা করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আসুন, এই পবিত্র সভায় একত্রিত হওয়া আমরা কখনোই বন্ধ করে না দিই, যেখানে আমরা অনেক উৎসাহিত হই।—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

১৯-২১. (ক) প্রেরিত পিতর মণ্ডলীতে যে-গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (খ) যিহূদার পরিবর্তে একজন নতুন প্রেরিতকে নিযুক্ত করা কেন গুরুত্বপূর্ণ ছিল আর বিষয়টা যেভাবে সমাধান করা হয়েছিল, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১৯ এখন খ্রিস্টের সেই শিষ্যেরা সংগঠনকে নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মুখোমুখি হয় যা প্রেরিত পিতর তাদের সামনে তুলে ধরেন। (১৫-২৬ পদ) এটা দেখা কতই-না আনন্দের বিষয় যে, পিতর যিনি কয়েক সপ্তাহ আগে তার প্রভুকে তিন বার অস্বীকার করেছিলেন, তিনি নিজের চিন্তাভাবনা এতটাই পরিবর্তন করেছেন যে, এখন এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নেতৃত্ব নিচ্ছেন। (মার্ক ১৪:৭২) আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে পাপ করার প্রবণতা রয়েছে, তাই আমাদের বার বার মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যিহোবা “মঙ্গলময় ও ক্ষমাবান্‌” আর যারা প্রকৃত অনুতপ্ত হয়, তিনি তাদের ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত।—গীত. ৮৬:৫.

২০ পিতর বুঝতে পারেন, যিশুকে যিনি বিশ্বাসঘাতকতা করে ধরিয়ে দিয়েছিলেন তার জায়গায় একজন নতুন প্রেরিতকে নিযুক্ত করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? পিতর বলেছিলেন, প্রেরিত হিসেবে এমন কাউকে বাছাই করতে হবে, যিনি যিশুর পরিচর্যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁকে পুনরুত্থিত হতে দেখেছিলেন। (প্রেরিত ১:২১, ২২) পিতরের এই কথা যিশুর করা প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ছিল, “তোমরাও, যারা আমার অনুসারী হয়েছ, ১২টা সিংহাসনে বসে ইজরায়েলের ১২ বংশের বিচার করবে।” (মথি ১৯:২৮) তাই বলা যায়, যিহোবার এটাই উদ্দেশ্য ছিল, প্রেরিতদের সংখ্যা ১২ হবে আর সেই ১২ জন তারাই হবে, যারা যিশুর পরিচর্যার সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন। এই ১২ জন ভবিষ্যতে নতুন জেরুসালেমের “১২টা ভিত্তিপ্রস্তরও” হবে। (প্রকা. ২১:২, ১৪) এভাবে ঈশ্বর পিতরকে যিহূদার উদ্দেশে করা ভবিষ্যদ্‌বাণী বুঝতে সাহায্য করেছিলেন, যা বলে, “অন্য ব্যক্তি তাহার অধ্যক্ষপদ প্রাপ্ত হউক।”—গীত. ১০৯:৮.

২১ কীভাবে নতুন প্রেরিতকে নিযুক্ত করা হয়েছিল? ঘুঁটি চালার মাধ্যমে, যেটা বাইবেলের সময় একটা সাধারণ প্রথা ছিল। (হিতো. ১৬:৩৩) ঘুঁটি চেলে নিযুক্ত করার এই প্রথার বিষয়ে বাইবেলে এখানেই শেষ বারের মতো পাওয়া যায়। এরপর শিষ্যদের ওপর যখন পবিত্র শক্তি বর্ষণ করা হয়, তখন থেকেই হয়তো এই প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এখানে নতুন প্রেরিতকে নিযুক্ত করার জন্য কেন ঘুঁটি চালা হয়েছিল, তার উত্তর আমরা প্রেরিতদের প্রার্থনা থেকে পাই: “হে যিহোবা, তুমি সকলের হৃদয় জান, তুমি আমাদের জানাও, এই দু-জন ব্যক্তির মধ্য থেকে তুমি কাকে মনোনীত করেছ।” (প্রেরিত ১:২৩, ২৪) আসলে তারা চেয়েছিলেন, যিহোবাই যেন সেই নতুন প্রেরিতকে নিযুক্ত করেন। ঘুঁটি চেলে মত্তথিয়কে মনোনীত করা হয়, যিনি হয়তো সেই ৭০ জনের একজন ছিলেন, যাকে যিশু প্রচার কাজে পাঠিয়েছিলেন আর তখন থেকে মত্তথিয়কে “সেই ১২ জন” প্রেরিতদের মধ্যে একজন হিসেবে গোনা হয়। cপ্রেরিত ৬:২.

২২, ২৩. বর্তমানে যারা মণ্ডলীতে নেতৃত্ব নিচ্ছেন কেন তাদের প্রতি বাধ্য থাকতে এবং বশীভূত হতে হবে?

২২ এই ঘটনা দেখায় ঈশ্বরের লোকদের জন্য সংগঠিত হয়ে কাজ করা কতই-না গুরুত্বপূর্ণ! বর্তমানেও মণ্ডলীতে অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করার জন্য দায়িত্ববান ভাইদের নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু, কোনো ভাইকে নিযুক্ত করার আগে প্রাচীনেরা খেয়াল রাখেন বাইবেলে অধ্যক্ষদের জন্য যে-যোগ্যতার বিষয়ে বলা রয়েছে, তা যেন সেই ভাইয়ের মধ্যে থাকে। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তারা পবিত্র শক্তির নির্দেশনা চেয়ে প্রার্থনা করেন। এভাবে যে-ভাইকে নিযুক্ত করা হয় তার বিষয়ে মণ্ডলী এটা মেনে নেয় যে, পবিত্র শক্তির মাধ্যমে তাকে নিযুক্ত করা হয়েছে। আমাদের উচিত প্রাচীনদের বশীভূত থাকা এবং তাদের নেতৃত্বের বাধ্য হওয়া। এমনটা করার মাধ্যমে আমরা মণ্ডলীতে প্রেম ও একতা বজায় রাখতে পারব।—ইব্রীয় ১৩:১৭.

আমরা সেই অধ্যক্ষদের বাধ্য ও বশীভূত থাকি, যারা নেতৃত্ব নিচ্ছেন

২৩ পুনরুত্থিত হওয়ার পর যিশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন, যার ফলে তারা অনেক শক্তিশালী হয়েছিল আর মণ্ডলীকে যেভাবে সংগঠিত করা হয়েছিল, তা দেখে তারা উৎসাহিত হয়েছিল। এর ফলে, পরবর্তী সময়ে যে-রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল, তার জন্য শিষ্যেরা পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত ছিল। পরবর্তী অধ্যায়ে এই ঘটনার বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

a লূক তার সুসমাচারের বইতে এই ব্যক্তিকে “মাননীয় থিয়ফিল” বলে সম্বোধন করেছেন। এটা দেখে কেউ কেউ মনে করে, থিয়ফিল একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন, তবে তিনি তখনও খ্রিস্টের শিষ্য হননি। (লূক ১:৩) কিন্তু, প্রেরিত বইয়ে লূক তাকে “হে থিয়ফিল” বলে সম্বোধন করেন। এই বিষয়ে কিছু পণ্ডিত মনে করে, থিয়ফিল লূক লিখিত সুসমাচার পড়ার পরই খ্রিস্টান হয়েছিলেন। তাই, তারা বলে যে, লূক প্রেরিত বইয়ে থিয়ফিলকে বিশেষ কোনো শব্দের মাধ্যমে সম্বোধন করেননি, এর পরিবর্তে তিনি এমনভাবে লিখেছেন যেন কোনো খ্রিস্টীয় ভাইকে লিখছেন।

b মূল ভাষার বাইবেলে গ্রিক শব্দ ট্রোপস্‌ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হল “সেভাবেই” কিন্তু গ্রিক শব্দ মরফি ব্যবহার করা হয়নি যার অর্থ হল, “রূপ।”

c প্রেরিত পৌলকে যদিও “প্রেরিত হিসেবে . . . ন-যিহুদিদের” জন্য বাছাই করা হয়েছিল, কিন্তু তাকে কখনোই সেই ১২ জন প্রেরিতদের মধ্যে গোনা হয়নি। (রোমীয় ১১:১৩; ১ করি. ১৫:৪-৮) প্রেরিত পৌলকে এই বিশেষ সুযোগ এইজন্য দেওয়া হয়নি কারণ পৃথিবীতে যিশুর পরিচর্যার সময় তিনি যিশুর সঙ্গে ছিলেন না।