অধ্যায় ৮
মণ্ডলী “শান্তিতে বাস করতে” থাকল
তাড়নাকারী শৌল একজন উদ্যোগী প্রচারক হয়ে ওঠেন
প্রেরিত ৯:১-৪৩ পদের উপর ভিত্তি করে
১, ২. শৌল দামেস্কে গিয়ে কী করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন?
একদল লোক দ্রুত দামেস্কের দিকে এগিয়ে চলেছে। তাদের এক মন্দ পরিকল্পনা রয়েছে, যা তারা সেখানে গিয়ে সম্পন্ন করবে। এখন তারা দামেস্কের একদম কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা খ্রিস্টানদের ঘর থেকে টেনে বের করে তাদের বাঁধবে, অপমান করবে এবং টেনে-হেঁচড়ে জেরুসালেমে মহাসভার সামনে নিয়ে যাবে আর সেখানেই তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।
২ এই দলের নেতা ছিলেন শৌল, যার হাত ইতিমধ্যেই রক্তে রাঙা। a কারণ কিছু সময় আগেই তার চরমপন্থী সঙ্গীরা যিশুর একজন বিশ্বস্ত শিষ্য স্তিফানকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলেছে। শৌল দূরে দাঁড়িয়ে সেই সমস্ত কিছু দেখছিলেন এবং এই হত্যাকে পুরোপুরি সমর্থন করেছিলেন। (প্রেরিত ৭:৫৭–৮:১) জেরুসালেমে যিশুর শিষ্যদের উপর চরম অত্যাচার করার পরও শৌলের মন ভরেনি। আর এখন তিনি দূরদূরান্তে খ্রিস্টানদের তাড়না করার জন্য বেরিয়ে পড়েছেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, খ্রিস্টের এই ভয়ঙ্কর দলকে পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন যেটাকে ‘প্রভুর পথ’ বলা হয়েছে।—প্রেরিত ৯:১, ২; ৬১ পৃষ্ঠায় দেওয়া “ শৌল দামেস্কে কীভাবে অধিকার পেয়েছিলেন?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।
৩, ৪. (ক) শৌলের সঙ্গে কী ঘটেছিল? (খ) এই অধ্যায়ে আমরা কোন প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করব?
৩ শৌল এবং তার দল প্রায় দামেস্কে পৌঁছে গিয়েছে, ঠিক তখনই রাস্তার মধ্যে হঠাৎ করে শৌলের চারিদিকে এক উজ্জ্বল আলো বিচ্ছুরিত হল। এটা দেখে তার সঙ্গীরা এতটাই অবাক হয়ে যায় যে, তারা কথাই বলতে পারছিল না। শৌল অন্ধ হয়ে গিয়ে মাটিতে পরে যান, তার চারিদিকে শুধুই অন্ধকার। তিনি আকাশ থেকে একটা জোরালো কণ্ঠস্বর শুনতে পান: “শৌল, শৌল, তুমি কেন আমাকে তাড়না করছ?” ভয়ে শৌলের বুক শুকিয়ে যায়। তিনি কাঁপতে কাঁপতে জিজ্ঞেস করেন: “প্রভু, আপনি কে?” উত্তরে সেই কণ্ঠস্বর যা বলেন, তা শুনে শৌলের হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। কন্ঠস্বর বলেন: “আমি যিশু, যাঁকে তুমি তাড়না করছ।”—প্রেরিত ৯:৩-৫; ২২:৯.
৪ যিশুর এই কথাগুলো থেকে আমরা কী শিখতে পারি? শৌল যখন খ্রিস্টান হন, তখন যে-ঘটনাগুলো ঘটে, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করলে আমরা কোন উপকার লাভ করব? এবং শৌল খ্রিস্টান হওয়ার পর মণ্ডলী যখন শান্তিতে বাস করতে থাকল, তখন মণ্ডলী কীভাবে সেই শান্তির সময়কে ব্যবহার করেছিল আর আমরা সেখান থেকে কী শিখতে পারি?
“তুমি কেন আমাকে তাড়না করছ?” (প্রেরিত ৯:১-৫)
৫, ৬. যিশু শৌলকে যা বলেছিলেন, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
৫ দামেস্কে যাওয়ার রাস্তায় যিশু যখন শৌলকে থামান, তখন তিনি তাকে এটা বলেননি, “তুমি কেন আমার শিষ্যদের তাড়না করছ?” বরং তিনি বলেছিলেন: “তুমি কেন আমাকে তাড়না করছ?” (প্রেরিত ৯:৪) সত্যিই, যিশুর শিষ্যেরা যখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়, তখন সেই একই কষ্ট যিশুও অনুভব করেন।—মথি ২৫:৩৪-৪০, ৪৫.
৬ খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস রাখার জন্য যদি আপনাকে তাড়না করা হয়, তা হলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনার প্রতি যা-কিছু ঘটছে, যিহোবা ও যিশু তা জানেন। (মথি ১০:২২, ২৮-৩১) হতে পারে, যিহোবা আপনার পরীক্ষাগুলো সঙ্গেসঙ্গে দূর করে দেবেন না। মনে করে দেখুন, শৌল যখন স্তিফানের হত্যাকে সমর্থন করছিলেন এবং জেরুসালেমে বিশ্বস্ত খ্রিস্টানদের ঘরে ঢুকে তাদের টেনে-হেঁচড়ে বের করছিলেন, তখন যিহোবা তাদের সেই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ৮:৩) তিনি দ্রুত তাদের সেই কষ্ট দূর করে দেননি। তবে, তিনি খ্রিস্টের মাধ্যমে সেই কঠিন পরিস্থিতিতে স্তিফান এবং অন্যান্য শিষ্যদের বিশ্বস্ত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি দিয়েছিলেন।
৭. তাড়নার সময় ধৈর্য ধরার জন্য আপনাকে কী করতে হবে?
৭ নিশ্চিত থাকুন, আপনিও তাড়নার সময় ধৈর্য ধরতে পারবেন। ধৈর্য ধরার জন্য আপনাকে এই পদক্ষেপগুলো নিতে হবে: (১) দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হোন, আপনার উপর যত পরীক্ষাই আসুক না কেন, আপনি যিহোবার প্রতি অনুগত থাকবেন। (২) যিহোবার কাছ থেকে সাহায্য চান। (ফিলি. ৪:৬, ৭) (৩) প্রতিশোধ নেওয়ার কাজটা যিহোবার উপর ছেড়ে দিন। (রোমীয় ১২:১৭-২১) (৪) আস্থা রাখুন, যিহোবা যতক্ষণ না আপনার পরীক্ষাগুলো সরিয়ে দিচ্ছেন, ততক্ষণ আপনাকে তা সহ্য করার শক্তি জোগাবেন।—ফিলি. ৪:১২, ১৩.
“ভাই শৌল, সেই প্রভু যিশু . . . আমাকে পাঠিয়েছেন” (প্রেরিত ৯:৬-১৭)
৮, ৯. অননিয়কে যখন এক বিশেষ কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, তখন তার কেমন লেগেছিল?
৮ “প্রভু, আপনি কে?” এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর, যিশু শৌলকে বলেন, “এখন ওঠো এবং নগরে যাও আর কী করতে হবে, তা তোমাকে বলা হবে।” (প্রেরিত ৯:৬) শৌল কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না, তাই তার সঙ্গীরা তার হাত ধরে দামেস্কে তার থাকার জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে শৌল তিন দিন ধরে উপবাস করেন আর ক্রমাগত প্রার্থনা করেন। সেই একইসময়ে যিশু অননিয় নামে তাঁর একজন শিষ্যকে শৌলের সম্বন্ধে বলেন। দামেস্কে বসবাসরত অননিয়ের ‘সমস্ত যিহুদির মধ্যে সুনাম ছিল।’—প্রেরিত ২২:১২.
৯ কল্পনা করুন, অননিয় যখন যিশুর কাছ থেকে এই বিশেষ কার্যভার পেয়েছিলেন, তখন তার কেমন লেগেছিল! তিনি হয়তো খুবই গর্বিত হয়েছিলেন, তবে সেইসঙ্গে তিনি একটু ভয়ও পেয়েছিলেন। তার জন্য এটা কতই-না বড়ো এক সম্মানের বিষয় ছিল কারণ মণ্ডলীর মস্তক বা নেতা যিশু নিজে তার সঙ্গে কথা বলছেন, যাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করা হয়েছে। আর তিনি এখন তাকে এক বিশেষ কার্যভারের জন্য বাছাই করেছেন। কিন্তু, তিনি এখন এটা ভেবে ভয় পাচ্ছেন যে, শৌলের মত একজন ভয়ঙ্কর লোকের সঙ্গে কীভাবে তিনি কথা বলবেন? তাই, তিনি যিশুকে বলেন: “প্রভু, আমি অনেকের কাছে এই ব্যক্তির বিষয়ে এবং সে জেরুসালেমে ঈশ্বরের লোকদের উপর কত অত্যাচার করেছে, সেই বিষয়ে শুনেছি। আর এখন তো সে প্রধান যাজকদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে এখানে এসেছে, যাতে যারা তোমার নামে ডাকে, তাদের সবাইকে সে গ্রেপ্তার করতে পারে।”—প্রেরিত ৯:১৩, ১৪.
১০. যিশু যেভাবে অননিয়র সঙ্গে আচরণ করেছিলেন, তা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
১০ অননিয় তার উদ্বিগ্নতার বিষয়ে যিশুর কাছে প্রকাশ করলে, যিশু তাকে বকাঝকা করেননি। তবে, তিনি তাকে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দেন যে, তাকে কী করতে হবে। যিশু তাকে প্রেমের সঙ্গে বোঝান যে, কেন তিনি তাকে এই বিশেষ কার্যভার দিচ্ছেন। এভাবে, যিশু অননিয়র সঙ্গে অনেক সম্মান দেখিয়ে কথা বলেন। যিশু শৌলের বিষয় তাকে বলেন: “যাও! কারণ এই ব্যক্তি ন-যিহুদিদের কাছে, রাজাদের কাছে এবং ইজরায়েলীয়দের কাছে আমার নাম বহন করার জন্য আমার মনোনীত পাত্র। আমি তাকে দেখাব, আমার নামের জন্য তাকে কত কষ্ট ভোগ করতে হবে।” (প্রেরিত ৯:১৫, ১৬.) অননিয় দেরি না করে যিশু যা করতে বলেন, তা-ই করেন। খ্রিস্টানদের চরম শত্রু শৌলের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি বেরিয়ে পড়েন। তিনি শৌলকে বলেন: “ভাই শৌল, সেই প্রভু যিশু, যিনি তোমাকে আসার পথে দেখা দিয়েছেন, আমাকে পাঠিয়েছেন, যেন তুমি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাও এবং পবিত্র শক্তিতে পূর্ণ হও।”—প্রেরিত ৯:১৭.
১১, ১২. যিশু, অননিয় ও শৌলের এই ঘটনা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
১১ যিশু, অননিয় ও শৌলের এই ঘটনা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। যেমন, যিশু সত্যিই প্রচার কাজে নির্দেশনা দিচ্ছেন, ঠিক যেমন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। (মথি ২৮:২০) এটা ঠিক যে, বর্তমানে যিশু কারো সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাকে প্রচার কাজে নির্দেশনা দেন না বরং তিনি বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসের মাধ্যমে প্রচার কাজে নির্দেশনা দেন। বর্তমানে, যিশু এই দাসকে নিজ বাড়ির দাসদের উপর নিযুক্ত করেছেন। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) পরিচালকগোষ্ঠীর নির্দেশনায় প্রকাশক ও অগ্রগামীদের সেই ব্যক্তিদের খোঁজার জন্য পাঠানো হয়, যারা খ্রিস্ট সম্বন্ধে জানতে চায়। ঠিক যেমন আমরা আগের অধ্যায়ে পড়েছি, অনেক সময় যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে এমন লোকদের দেখা হয়, যারা শৌলের মতো ঈশ্বরের কাছ থেকে নির্দেশনা লাভ করার জন্য প্রার্থনা করছিল।—প্রেরিত ৯:১১.
১২ অননিয়কে যে-কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি সেটা পালন করেছিলেন আর এর জন্য তিনি আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। আপনাকেও রাজ্যের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দেওয়ার আজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আপনি কি সেই আজ্ঞা মেনে চলেন? এমনকী আপনি যদি কখনো কখনো লোকদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পান, তারপরও কি আপনি এই আজ্ঞা মেনে চলেন? কিছু ভাই-বোন ঘরে ঘরে প্রচার করতে এবং অচেনা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে ঘাবড়ে যান। অনেকে আবার ব্যবসায়ী এলাকায়, রাস্তায় কিংবা টেলিফোনে সাক্ষ্যদান করতে ভয় পান। অননিয় প্রথমে ভয় পেয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি তার ভয় কাটিয়ে উঠেছিলেন। আর এর ফলে অননিয় শৌলকে পবিত্র শক্তি পেতে সাহায্য করার বিশেষ সুযোগ লাভ করেছিলেন। b অননিয় এইজন্য তার ভয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন, কারণ তিনি যিশুর উপর আস্থা রেখেছিলেন এবং শৌলকে নিজের ভাই বলে মনে করেছিলেন। অননিয়র মতো আমরাও যদি লোকদের প্রতি সহানুভূতি দেখাই, সবচেয়ে খারাপ ও ভয়ঙ্কর লোকদের কাছে প্রচার করার সময় তাদের আমাদের সম্ভাব্য ভাই কিংবা বোন হিসেবে দেখি আর এই আস্থা রাখি যে, প্রচার কাজে যিশু খ্রিস্ট নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা হলে আমরা আমাদের ভয় কাটিয়ে উঠতে পারব।—মথি ৯:৩৬.
“তিনি . . . যিশুর বিষয়ে এই কথা প্রচার করতে লাগলেন” (প্রেরিত ৯:১৮-৩০)
১৩, ১৪. আপনি হয়তো বাইবেল অধ্যয়ন করছেন আর এখনও পর্যন্ত বাপ্তিস্ম নেননি, তা হলে আপনি শৌলের কাছ থেকে কী শিখতে পারেন?
১৩ শৌল যা-কিছু শিখেছিলেন, সেই অনুযায়ী কাজ করার ক্ষেত্রে একেবারেই দেরি করেননি। তার চোখ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর, তিনি বাপ্তিস্ম নেন আর দামেস্কে শিষ্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, “শীঘ্রই তিনি সমাজগৃহে সমাজগৃহে গিয়ে যিশুর বিষয়ে এই কথা প্রচার করতে লাগলেন যে, তিনিই ঈশ্বরের পুত্র।”—প্রেরিত ৯:২০.
১৪ আপনি হয়তো বাইবেল অধ্যয়ন করছেন আর এখনও পর্যন্ত বাপ্তিস্ম নেননি, তা হলে আপনিও কি শৌলের মতো যত দ্রুত সম্ভব বাপ্তিস্ম নিতে পারেন? এটা ঠিক যে, শৌল সরাসরি যিশু খ্রিস্টকে একটা আশ্চর্য কাজ করতে দেখেছিলেন আর নিশ্চিতভাবে এই বিষয়টা তাকে পদক্ষেপ নিতে পরিচালিত করেছিল। কিন্তু, সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোনো আশ্চর্য কাজ দেখতেই হবে, এমন নয়। অনেক লোকই নিজের চোখে যিশুকে আশ্চর্য কাজ করতে দেখেছিল তবে, তারপরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। একজন ব্যক্তির হাত শুকিয়ে গিয়েছিল আর ফরীশীরা সেই ব্যক্তিকে সুস্থ হতে দেখেছিল। অন্যদিকে, যিহুদিদের একটা বড়ো দল লাসারের পুনরুত্থান দেখেছিল। এইরকম আশ্চর্য কাজ দেখার পরও, এদের মধ্যে অনেকে যিশুর বার্তার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখায়নি, এমনকী কেউ কেউ আবার তাঁর বিরোধিতাও করেছিল। (মার্ক ৩:১-৬; যোহন ১২:৯, ১০) যিশুর আশ্চর্য কাজ শৌলের উপর এতটাই গভীর ছাপ ফেলেছিল যে, তার জীবনই বদলে গিয়েছিল। কিন্তু, কেন শৌলের উপর গভীর ছাপ ফেলেছিল, যা অন্যদের উপর ফেলেনি? কারণ তিনি মানুষের চেয়ে ঈশ্বরকে বেশি ভয় করতেন আর খ্রিস্ট তার প্রতি যে-দয়া দেখেছিলেন, সেটার জন্য অনেক কৃতজ্ঞ ছিলেন। (ফিলি. ৩:৮) আপনিও যদি শৌলের মতো একই মনোভাব দেখান, তা হলে কোনো কিছুই আপনাকে প্রচার কাজ শুরু করতে এবং বাপ্তিস্মের জন্য যোগ্য হয়ে উঠতে বাধা দিতে পারবে না।
১৫, ১৬. সমাজগৃহে গিয়ে শৌল কী করেছিলেন এবং দামেস্কের যিহুদিরা কী করেছিল?
১৫ আপনি কি কল্পনা করতে পারেন, শৌল যখন সমাজগৃহে গিয়ে যিশু সম্বন্ধে প্রচার শুরু করেন, তখন হয়তো সেখানে থাকা লোকেরা কতটা অবাক হয়ে যায় আর রেগে লাল হয়ে যায়? শাস্ত্রপদ বলে, তাকে দেখে লোকেরা বলতে লাগল, “এ কি সেই ব্যক্তি নয়, যে জেরুসালেমে যারা যিশুর নামে ডাকে, তাদের উপর অত্যাচার করত?” (প্রেরিত ৯:২১) শৌল তাদের বোঝান, যিশুর প্রতি তার যে-দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, কেন তিনি সেটা পরিবর্তন করেছেন এবং “যিশুই যে খ্রিস্ট, তা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ” করেন। (প্রেরিত ৯:২২) কিন্তু, যুক্তি দিয়ে সমস্ত মানুষকে বোঝানো সম্ভব নয়। যুক্তি সেই সমস্ত ব্যক্তির মাথায় ঢোকে না, যারা পরম্পরাগত রীতিনীতির দ্বারা আবদ্ধ এবং অহংকারে পরিপূর্ণ। এই সমস্ত ব্যক্তিদের বোঝানোর অর্থ হল, ভস্মে ঘি ঢালা। তবে, তারপরও শৌল নিরুৎসাহিত না হয়ে লোকদের বোঝাতে থাকেন।
১৬ তিন বছর কেটে যাওয়ার পরও, দামেস্কের যিহুদিরা শৌলের বিরোধিতা করেই চলছিল। শেষ পর্যন্ত, তারা তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। (প্রেরিত ৯:২৩; ২ করি. ১১:৩২, ৩৩; গালা. ১:১৩-১৮) এই বিষয়টা শৌল যখন জানতে পারেন, তখন তিনি বুদ্ধিপূর্বক কাজ করেন এবং একদিন রাতে নগর ছেড়ে পালিয়ে যান। নগর থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কিছু লোকদের সাহায্যে একটা বড়ো ঝুড়িতে বসেন আর তারা তাকে নগরের প্রাচীরের জানালা দিয়ে নীচে নামিয়ে দিলে, তিনি পালিয়ে যান। লূক বলেন, সেই রাতে যারা তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল, তারা ‘শৌলের শিষ্য’ ছিল। (প্রেরিত ৯:২৫) এখান থেকে বোঝা যায়, শৌল যখন দামেস্কে প্রচার করেছিলেন, তখন কমপক্ষে কিছু লোক তার বার্তা শুনেছিল এবং খ্রিস্টের শিষ্য হয়েছিল।
১৭. (ক) আমরা যখন অন্যদের সত্য সম্বন্ধে জানাই, তখন তারা কেমন মনোভাব দেখায়? (খ) লোকেরা যদি আমাদের কথা না শোনে, তা হলেও আমাদের কী করে চলতে হবে এবং কেন?
১৭ প্রথম প্রথম আপনি যখন সত্য শিখছিলেন, তখন হয়তো আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং অন্যদের এই সত্য সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন। আর আপনি হয়তো মনে করেছিলেন, বাইবেলের সত্য যেহেতু খুবই যুক্তিসংগত, তাই তারা সবাই এই সত্য গ্রহণ করবে। কিছু লোক হয়তো এই সত্য গ্রহণ করেছিল, কিন্তু বেশিরভাগই তা গ্রহণ করেনি। হতে পারে, আপনার পরিবারের লোকেরা আপনার সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করতে শুরু করেছিল। (মথি ১০:৩২-৩৮) তবুও, আপনার উচিত শাস্ত্র থেকে যুক্তি ব্যবহার করে আপনার বোঝানোর ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে চলা আর খ্রিস্টীয় আচার-আচরণ বজায় রাখা। কে বলতে পারে, হয়তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার পরিবারের লোকদের মনোভাব পরিবর্তন হতে পারে!—প্রেরিত ১৭:২; ১ পিতর ২:১২; ৩:১, ২, ৭.
১৮, ১৯. (ক) বার্ণবা যখন শিষ্যদের শৌলের বিষয় বলেন, তখন কী হয়েছিল? (খ) কীভাবে আমরা বার্ণবা ও শৌলকে অনুকরণ করতে পারি?
১৮ শৌল দামেস্ক থেকে পালিয়ে জেরুসালেমে আসেন। সেখানে তিনি শিষ্যদের বলেন, তিনি এখন একজন খ্রিস্টান হয়েছেন। কিন্তু, স্বাভাবিকভাবেই তারা শৌলের উপর বিশ্বাস করে না। তারপর বার্ণবা এসে প্রেরিতদের বোঝান যে, শৌল সত্যি কথা বলছেন আর তখন তারা শৌলকে মেনে নেন। (প্রেরিত ৯:২৬-২৮) শৌল কিছু সময়ের জন্য তাদের সঙ্গে জেরুসালেমেই থেকে যান। তিনি এখানেও লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেন। তিনি সুসমাচার জানাতে লজ্জা পাননি, তবে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করেন। (রোমীয় ১:১৬) একটা সময় ছিল, তিনি এই নগরেই খ্রিস্টানদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার করতেন, কিন্তু এখন খ্রিস্ট সম্বন্ধে প্রচার করছেন। যিহুদিরা যখন দেখে যে, তাদের নেতা শৌল যিনি খ্রিস্টানদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি নিজেই এখন একজন খ্রিস্টান হয়ে গিয়েছেন, তখন তারা তা সহ্য করতে পারে না। তারা শৌলকে মেরে ফেলার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিন্তু, মণ্ডলীর “ভাইয়েরা যখন বিষয়টা জানতে পারলেন, তখন তারা তাকে কৈসরিয়াতে নিয়ে গেলেন এবং সেখান থেকে তার্ষ নগরে পাঠিয়ে দিলেন।” (প্রেরিত ৯:৩০) এভাবে যিশু, মণ্ডলীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইদের মাধ্যমে শৌলকে যে-নির্দেশনা দিয়েছিলেন, শৌল তা পালন করেছিলেন আর এর ফলে শৌল এবং মণ্ডলী উভয়ই উপকৃত হয়েছিল।
১৯ লক্ষ করুন, বার্ণবা শৌলকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। কোন সন্দেহ নেই, যিহোবার এই দু-জন উদ্যোগী দাস পরবর্তী সময়ে একে অন্যের খুব ভালো বন্ধু হয়েছিলেন। আপনিও কি বার্ণবার মতো মণ্ডলীতে নতুন ব্যক্তিদের সাহায্য করেন, তাদের সঙ্গে প্রচার করেন এবং তাদের সত্যে উন্নতি করে চলতে সাহায্য করেন? আপনি যদি তা করেন, তা হলে আপনি প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করবেন। অন্যদিকে, আপনি যদি একজন নতুন প্রকাশক হন, তা হলে আপনি কি শৌলের মতো অন্যদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করেন? অভিজ্ঞ প্রকাশকদের সঙ্গে প্রচারে যান, এর ফলে আপনার দক্ষতা বাড়বে এবং আপনি এই কাজে অনেক আনন্দ পাবেন আর সেইসঙ্গে এমন বন্ধুদের পাবেন, যাদের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব চিরকাল টিকে থাকবে।
“অনেকে প্রভুর শিষ্য হল” (প্রেরিত ৯:৩১-৪৩)
২০, ২১. প্রথম শতাব্দীতে এবং বর্তমানে ঈশ্বরের দাসেরা কীভাবে শান্তির সময়কে ভালোভাবে ব্যবহার করেছিল?
২০ শৌল খ্রিস্টান হওয়ার এবং সুরক্ষিতভাবে জেরুসালেমে যাওয়ার পর, “যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ার সমস্ত মণ্ডলী শান্তিতে বাস করতে” লাগল। (প্রেরিত ৯:৩১) শিষ্যেরা এই সুবিধাজনক সময় অর্থাৎ শান্তির এই সময়কে কীভাবে ব্যবহার করেছিল? (২ তীম. ৪:২) শাস্ত্রপদ বলে, তারা “বিশ্বাসে শক্তিশালী হতে থাকল।” প্রেরিত এবং অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইয়েরা শিষ্যদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে থাকল এবং ভালোভাবে মণ্ডলীর দেখাশোনা করল, যার ফলে তারা সবাই “যিহোবার প্রতি ভয় প্রদর্শন করল এবং পবিত্র শক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত সান্ত্বনার সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করতে লাগল।“ উদাহরণ স্বরূপ, পিতর শান্তির এই সময়কে ব্যবহার করে লুদ্দা ও শারোণের সমস্ত শিষ্যকে শক্তিশালী করতে লাগলেন। তার এই পরিশ্রম অনেক ভালো ফলাফল নিয়ে এসেছিল এবং অনেক ব্যক্তি “প্রভুর শিষ্য হল।” (প্রেরিত ৯:৩২-৩৫) শান্তির এই সময়ে শিষ্যেরা তাদের জাগতিক কাজকর্ম এবং ব্যক্তিগত আরাম আয়েশের পিছনে বেশি সময় ব্যয় না করে, একে অন্যের যত্ন নেওয়ার এবং সুসমাচার প্রচার করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছিল, যার ফলে “মণ্ডলীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল।“
২১ বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এইরকমই কিছু ঘটেছিল। অনেক দেশে যিহোবার সাক্ষিরা “শান্তিতে বাস করতে” শুরু করে কারণ সেই দেশের সরকারগুলো যারা বহু বছর ধরে সাক্ষিদের উপর তাড়না করছিল, সেই সরকারগুলো হঠাৎ পড়ে যায়। এর ফলে, প্রচার কাজের উপর যে-নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা অনেকটাই তুলে নেওয়া হয়। কিছু দেশ থেকে তো আবার পুরোপুরিভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। লক্ষ লক্ষ সাক্ষি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খোলাখুলিভাবে জনসাধারণ্যে প্রচার করে আর এর ফলাফল দারুণ হয়।
২২. বর্তমানে, আপনার কাছে প্রচার করার যে-সুযোগ রয়েছে, কীভাবে তা ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন?
২২ আপনার দেশে যদি ধর্ম সম্বন্ধে প্রচার করার পুরোপুরি স্বাধীনতা থাকে, তা হলে আপনি কি সেই সুযোগকে ভালোভাবে কাজে লাগাচ্ছেন? শয়তান এই কাজ থেকে আপনার মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন সম্পত্তির প্রতি আকর্ষিত করবে। (মথি ১৩:২২) কিন্তু, তার ফাঁদে পা দেবেন না। আপনার কাছে যতটুকু স্বাধীনতা রয়েছে, তার পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করুন। পরিস্থিতি যতক্ষণ পর্যন্ত ঠিক আছে, লোকদের কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দেওয়ার এবং ভাই-বোনদের শক্তিশালী করার জন্য আপনার যথাসাধ্য করুন। মনে রাখবেন, পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগে না। আজ আপনার কাছে যে-সুযোগ রয়েছে, কাল তা না-ও থাকতে পারে।
২৩, ২৪. (ক) টাবিথার ঘটনা থেকে আমরা কোন বিষয়গুলো শিখতে পারি? (খ) কোন বিষয়ে আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে?
২৩ লক্ষ করুন, টাবিথা নামে খ্রিস্টের একজন শিষ্যের প্রতি কী ঘটেছিল, যার অপর নাম ছিল দর্কা। তিনি লুদ্দার কাছে যাফো নগরে থাকতেন। এই বিশ্বস্ত বোন তার সময় এবং বস্তুগত সম্পদকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে “সবসময় ভালো কাজ করতেন এবং দরিদ্র ব্যক্তিদের সাহায্য করতেন।“ কিন্তু, তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ হন এবং মারা যান। c টাবিথার মৃত্যুতে যাফোতে থাকা সমস্ত শিষ্যেরা দুঃখে ভেঙে পড়ে, বিশেষ করে, সেই বিধবারা যাদের টাবিথা অনেক সাহায্য করতেন। টাবিথাকে যখন কবর দেওয়ার জন্য সবাই মিলে একত্রিত হয়, তখন পিতর সেখানে আসেন আর এমন এক আশ্চর্য কাজ করেন, যা খ্রিস্টের প্রেরিতদের মধ্যে তখনও পর্যন্ত কেউ করেননি। তিনি প্রার্থনা করেন আর টাবিথা বেঁচে ওঠেন! আপনি কি কল্পনা করতে পারেন, পিতর যখন সেই বিধবাদের এবং বাকি শিষ্যদের সেই ঘরে ডাকেন আর টাবিথাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেন, তখন তারা কতই-না আনন্দিত হয়েছিল! নিশ্চিতভাবেই এই ঘটনা, পরবর্তী সময়ে তাদের উপর যে-সমস্যাগুলো আসতে যাচ্ছিল, সেগুলোর সঙ্গে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য শক্তিশালী করেছিল। আর স্বাভাবিকভাবেই, এই আশ্চর্য ঘটনার কথা “পুরো যাফোতে ছড়িয়ে পড়ল এবং অনেকে প্রভুর শিষ্য হল।”—প্রেরিত ৯:৩৬-৪২.
২৪ টাবিথার এই ঘটনা আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায় আর এখান থেকে আমরা দুটো বিষয় শিখতে পারি। (১) আমাদের পরিস্থিতি যেকোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। সেইজন্য আমরা যতক্ষণ বেঁচে আছি, আমাদের উচিত যিহোবার কাছে সুনাম অর্জন করা। (উপ. ৭:১) (২) মৃত ব্যক্তিদের পুনরুত্থিত হওয়ার যে-আশা রয়েছে, তা অবশ্যই পরিপূর্ণ হবে। টাবিথা তার জীবনে যত ভালো কাজ করেছিলেন, যিহোবা সেই সমস্ত কাজ দেখেছিলেন এবং তাকে পুরস্কার দিয়েছিলেন। একইভাবে, আমারও যে-কঠোর পরিশ্রম করছি, তা তিনি মনে রাখবেন। আর যদি আরমাগিদোনের আগে আমাদের মৃত্যুও হয়, তা হলে তিনি পুনরায় আমাদের জীবন ফিরিয়ে দেবেন। (ইব্রীয় ৬:১০) তাই, আজ আমরা হয়তো “কঠিন সময়ে” রয়েছি অথবা “শান্তিতে বাস” করছি, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আসুন আমরা যেন খ্রিস্ট সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নিজেদের সর্বোত্তমটা করে চলি। —২ তীম. ৪:২.
a “ শৌল—একজন ফরীশী” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।
b সাধারণত ১২ জন প্রেরিতের মাধ্যমেই অন্য ব্যক্তির উপর পবিত্র শক্তি বর্ষণ করা হত। কিন্তু, এই পরিস্থিতিটা একটু অন্যরকম ছিল। অননিয় প্রেরিত ছিলেন না, কিন্তু তারপরও বিবরণ দেখায় যে, যিশু অননিয়কে শক্তি দিয়েছিলেন যাতে তিনি শৌলকে পবিত্র শক্তি লাভ করতে সাহায্য করতে পারেন। খ্রিস্টান হওয়ার পর শৌল বেশ কিছু সময় ধরে ১২ জন প্রেরিতের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। তবে, এই সময়ে তিনি হয়তো অনেক উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার কাজ করেছিলেন। আর তাই, হয়তো যিশু অননিয়র মাধ্যমে শৌলকে পবিত্র শক্তি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন যাতে তিনি প্রচার করার জন্য শক্তি লাভ করেন।
c “ টাবিথা—‘তিনি সবসময় ভালো কাজ করতেন’” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।