সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যায় ৯

“ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না”

“ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না”

অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদিদের জন্য সুসমাচার শোনার সুযোগ খুলে যায়

প্রেরিত ১০:১–১১:৩০ পদের উপর ভিত্তি করে

১-৩. পিতর দর্শনে কী দেখেছিলেন এবং এই দর্শনের অর্থ বোঝা আমাদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

 সময়টা ছিল ৩৬ খ্রিস্টাব্দের শরৎ কাল। পিতর সমুদ্রের ধারে একটা বাড়ির খোলা ছাদে দুপুর বেলায় প্রার্থনা করছেন। তিনি কয়েক দিন ধরে এই বাড়িতে অতিথি হিসেবে রয়েছেন। এই বাড়ির মালিক শিমোন চামড়ার ব্যাবসা করেন। খুব কম যিহুদি রয়েছে, যারা একজন চর্মকারের বাড়িতে থাকতে চাইবে। a পিতর এই বাড়িতে থেকে এটা প্রমাণ করেছিলেন যে, তার মনের মধ্যে কোনোরকম পক্ষপাতিত্বের মনোভাব নেই। তিনি জানতেন, যিহোবা ঈশ্বর কখনো পক্ষপাতিত্ব করেন না এবং তাঁর চোখে সমস্ত মানুষ সমান। কিন্তু, তারপরও তিনি ঈশ্বরের এই গুণ সম্বন্ধে এক বড়ো শিক্ষা লাভ করতে যাচ্ছিলেন।

প্রার্থনা করতে করতে পিতর একটা দর্শন দেখেন। সেই দর্শনে তিনি এমন কিছু দেখেন, যা যেকোনো যিহুদিকেই বিরক্ত করে তুলতে পারত। তিনি দেখেন, আকাশ থেকে বড়ো চাদরের মতো কিছু একটা নেমে আসছে আর তার মধ্যে এমন অনেক প্রাণী রয়েছে, যেগুলো মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী অশুচি। এরপর তিনি একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পান যা পিতরকে বলছে, এই প্রাণীগুলো মারো আর খাও। কিন্তু পিতর বলেন: “আমি ব্যবস্থায় নিষিদ্ধ এবং ব্যবস্থা অনুযায়ী অশুচি এমন কিছু কখনো খাইনি।” এইরকম তিন বার ঘটে আর প্রত্যেক বার এই কণ্ঠস্বর পিতরকে বলে: “ঈশ্বর যেগুলোকে শুচি করেছেন, তুমি সেগুলোকে অশুচি বোলো না।” (প্রেরিত ১০:১৪-১৬) পিতর এই সমস্ত কিছু দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু, খুব তাড়াতাড়ি তিনি সেই দর্শনটা বুঝতে পারেন।

পিতর যে-দর্শন দেখেছিলেন, সেই দর্শনের অর্থ বোঝা আমাদের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দর্শন আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে, যিহোবা মানুষকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন। আমরাও যদি যিহোবার মতো একই দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখি, তা হলে আমরাও ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দিতে পারব। আসুন দেখি, এই দর্শনের আগে এবং পরে কোন ঘটনাগুলো ঘটেছিল।

তিনি “নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের কাছে বিনতি সহকারে প্রার্থনা করতেন” (প্রেরিত ১০:১-৮)

৪, ৫. কর্ণীলিয় কে ছিলেন এবং তিনি যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন কোন ঘটনা ঘটেছিল?

পিতর এই দর্শন দেখার এক দিন আগে কর্ণীলিয় নামে একজন ব্যক্তিও ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দর্শন পান। কিন্তু পিতর এটা জানতেন না। কর্ণীলিয় যাফো থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে কৈসরিয়ায় থাকতেন। কর্ণীলিয় রোমীয় সৈন্যদের শতপতি এবং “একজন ঈশ্বরভয়শীল ব্যক্তি ছিলেন।” b কর্ণীলিয় তার পরিবারের ভালোভাবে যত্ন নিতেন আর শাস্ত্রপদ বলে যে, “তিনি এবং তার পরিবার ও পরিজন ঈশ্বরকে উপাসনা করতেন।” কর্ণীলিয় ধর্মান্তরিত ব্যক্তি ছিলেন না বরং তিনি অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদি ছিলেন। কর্ণীলিয় যিহুদিদের প্রতি দয়া দেখাতেন এবং প্রয়োজন রয়েছে এমন যিহুদিদের বস্তুগত বিষয় জোগানোর মাধ্যমে সাহায্য করতেন। তিনি “নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের কাছে বিনতি সহকারে প্রার্থনা করতেন” আর এটা একজন আন্তরিক ব্যক্তি হিসেবে তার অভ্যাস ছিল।—প্রেরিত ১০:২.

দুপুর প্রায় তিনটের সময় কর্ণীলিয় যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন তিনি এক দর্শন দেখেন। সেই দর্শনে একজন স্বর্গদূত তাকে বললেন: “ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছেন এবং তুমি যে লোকদের দান দিয়ে থাক, তা তিনি লক্ষ করেছেন।” (প্রেরিত ১০:৪) এরপর স্বর্গদূত তাকে নির্দেশনা দেন যেন তিনি তার লোক পাঠিয়ে প্রেরিত পিতরকে তার বাড়িতে ডেকে আনেন। স্বর্গদূত যা বলেন, কর্ণীলিয় ঠিক তা-ই করেন। এখন কর্ণীলিয়ের সামনে সুযোগের সেই দরজা খুলতে যাচ্ছে, যা এখনও পর্যন্ত ন-যিহুদিদের জন্য বন্ধ ছিল। খুব শীঘ্রই তাকে পরিত্রাণের বার্তা শোনানো হবে।

৬, ৭. (ক) একটা অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে বলুন যা দেখায় যে, ঈশ্বর সেই আন্তরিক ব্যক্তিদের প্রার্থনা শোনেন। (খ) এই ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো থেকে আমরা কোন বিষয়টা বুঝতে পারি?

বর্তমানেও অনেকে ঈশ্বরকে জানার জন্য প্রার্থনা করে থাকে। ঈশ্বর কি সেই আন্তরিক ব্যক্তিদের প্রার্থনা শোনেন? একটা অভিজ্ঞতা লক্ষ করুন। আলবানিয়ায় একজন বোন যখন ঘরে ঘরে প্রচার করছিলেন, তখন একজন মহিলার সঙ্গে তার দেখা হয়। বোন তাকে একটা প্রহরীদুর্গ পত্রিকা দেন, যেটাতে সন্তানদের মানুষ করে তোলার উপর একটা প্রবন্ধ ছিল। c সেই মহিলা বোনকে বলেন: “আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না, আমি ঈশ্বরের কাছে এটাই প্রার্থনা করছিলাম, যাতে তিনি আমাকে মেয়েদের মানুষ করে তুলতে সাহায্য করেন। আর তিনি আপনাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। এমনটা মনে হচ্ছে যেন এই পত্রিকা আমার জন্যই লেখা হয়েছে।” সেই মহিলা এবং তার মেয়েরা বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করে আর পরবর্তী সময়ে তার স্বামীও অধ্যয়ন করতে শুরু করেন।

এইরকম অভিজ্ঞতা কি কখনো-সখনো শোনা যায়? না! সারা পৃথিবীতে সাক্ষিরা প্রায়ই এইরকম অভিজ্ঞতা লাভ করে থাকে। তাই, এটাকে কোনো কাকতালীয় ঘটনা বলা যেতে পারে না। তা হলে এখান থেকে আমরা কোন বিষয়টা বুঝতে পারি? প্রথমত, যিহোবা সেই আন্তরিক ব্যক্তিদের প্রার্থনা শোনেন, যারা তাকে জানতে চায়। (১ রাজা. ৮:৪১-৪৩; গীত. ৬৫:২) দ্বিতীয়ত, প্রচার কাজে স্বর্গদূতেরা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।—প্রকা. ১৪:৬, ৭.

“পিতর . . . ভাবছিলেন” (প্রেরিত ১০:৯-২৩ক)

৮, ৯. ঈশ্বর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে পিতরকে কোন নির্দেশনা দেন আর পিতর কী করেন?

পিতর যে-দর্শন দেখেছিলেন, সেটার অর্থ কী হতে পারে, তা নিয়ে “ভাবছিলেন” বা চিন্তিত ছিলেন। তিনি বাড়ির ছাদেই ছিলেন, ইতিমধ্যে কর্ণীলিয়ের পাঠানো লোকেরা সেই বাড়িতে পৌঁছায়। (প্রেরিত ১০:১৭) পিতর কিছু সময় আগে এমন কিছু খেতে তিন বার অস্বীকার করেছিলেন, যা ব্যবস্থা অনুযায়ী অশুচি ছিল। তা হলে, তিনি কি এখন এই লোকদের সঙ্গে যেতে রাজি হবেন এবং একজন ন-যিহুদির বাড়িতে পা রাখবেন? ঈশ্বর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে পিতরকে এই নির্দেশনা দেন, “দেখো! তিন জন ব্যক্তি তোমাকে খুঁজছে। তুমি উঠে নীচে যাও এবং কোনোরকম সন্দেহ না করে তাদের সঙ্গে যাও, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি।” (প্রেরিত ১০:১৯, ২০) পিতর পবিত্র শক্তির দেওয়া এই নির্দেশনা অবশ্যই মেনে নেবেন, কারণ কিছুক্ষণ আগেই তিনি যে-দর্শন দেখেছেন, সেই দর্শন দেখে তার মন ইতিমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে।

এরপর সেই তিন জন ব্যক্তি পিতরকে বলেন, একজন স্বর্গদূত কর্ণীলিয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন আর সেইজন্য তারা পিতরের কাছে এসেছেন। এরপর পিতর তাদের বাড়ির ভিতরে আসার আমন্ত্রণ জানান এবং ‘তার অতিথি হিসেবে তাদের থাকতে দেন।’ (প্রেরিত ১০:২৩ক) পিতরের এই আচরণ এটা প্রকাশ করে যে, তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী নিজের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে শুরু করে দিয়েছেন।

১০. বর্তমানে যিহোবা কীভাবে তাঁর লোকদের নেতৃত্ব দেন এবং আমরা নিজেদের কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি?

১০ বর্তমানে যিহোবা ধীরে ধীরে তাঁর লোকদের কাছে তাঁর উদ্দেশ্য প্রকাশ করার মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। (হিতো. ৪:১৮) তিনি তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসকে’ সঠিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। (মথি ২৪:৪৫) কখনো কখনো বাইবেলের সত্যের উপর আমাদের যে-বোধগম্যতা রয়েছে, সেখানে রদবদল করা হয়ে থাকে অথবা সংগঠনের বিভিন্ন কাজ আমরা যেভাবে করে থাকি, সেখানে পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। সেইসময় আমরা নিজেদের জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘এই ধরনের কোনো রদবদল যখন করা হয়, তখন আমি কি দ্রুত তা মেনে নিই? ঈশ্বরের পবিত্র শক্তির মাধ্যমে আমাদের যে-নির্দেশনা দেওয়া হয়, তা কি আমি আনন্দের সঙ্গে মেনে নিই?’

পিতর ‘তাদের বাপ্তিস্ম দেওয়ার আজ্ঞা দিলেন’ (প্রেরিত ১০:২৩খ-৪৮)

১১, ১২. কৈসরিয়ায় পৌঁছানোর পর পিতর কী করেছিলেন আর তিনি কোন বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন?

১১ পিতর সেই দর্শন দেখার পরের দিন, কর্ণীলিয়ের পাঠানো সেই তিন জন লোক এবং যাফোতের ‘ছয় জন (যিহুদি) ভাইকে’ সঙ্গে নিয়ে পিতর কৈসরিয়ার উদ্দেশে রওনা হলেন। (প্রেরিত ১১:১২) কৈসরিয়াতে কর্ণীলিয় পিতরের আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি “তার আত্মীয়স্বজন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের” তার বাড়িতে একত্রিত করেন, সম্ভবত এরা প্রত্যেকেই ন-যিহুদি ছিল। (প্রেরিত ১০:২৪) পিতর যখন সেখানে পৌঁছান, তখন তিনি সেখানে এমন এক কাজ করেন, যেটা করবেন বলে তিনি আগে কখনো চিন্তাও করেননি। তিনি একজন অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদির বাড়িতে পা রাখেন। পিতর এই বিষয়ে তাদের বলেন: “আপনারা ভালোভাবেই জানেন, একজন যিহুদির পক্ষে অন্য জাতির কোনো লোকের কাছে যাওয়া কিংবা তার সঙ্গে মেলামেশা করা, যিহুদি আইনের বিরুদ্ধে। কিন্তু, ঈশ্বর আমাকে দেখিয়েছেন, কোনো ব্যক্তিকে অশুচি বলা আমার উচিত নয়।” (প্রেরিত ১০:২৮) পিতর এখন ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, ঈশ্বর সেই দর্শনের মাধ্যমে তাকে কোন শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। ঈশ্বর পিতরকে শুধুমাত্র এটা বোঝাতে চাইছিলেন না যে, তার কোনো খাবারকে অশুচি বলা উচিত নয় বরং তিনি পিতরকে এটা বোঝাতে চাইছিলেন যে, তার ‘কোনো ব্যক্তিকে [এমনকী ন-যিহুদি ব্যক্তিকেও] অশুচি বলা উচিত নয়।’

“কর্ণীলিয় তার আত্মীয়স্বজন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একত্রিত করে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।”—প্রেরিত ১০:২৪

১২ কর্ণীলিয়ের ঘরে থাকা ব্যক্তিরা এটা জানতে চান যে, পিতর তাদের কী বলবেন। কর্ণীলিয় পিতরকে বলেন: “এখন আমরা সকলে, যিহোবা আপনাকে যা যা বলার আদেশ দিয়েছেন, সেই সমস্ত কিছু শোনার জন্য ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত আছি।” (প্রেরিত ১০:৩৩) একটু কল্পনা করুন, প্রচার করার সময় যদি কেউ আপনাকে এই কথাগুলো বলে, তা হলে আপনি কতটা খুশি হবেন! পিতর এখন এই জোরালো শব্দগুলো ব্যবহার করে তার কথা শুরু করেন: “এখন আমি সত্যি সত্যি বুঝতে পারলাম, ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না, কিন্তু প্রত্যেক জাতির মধ্য থেকে যে-কেউ তাঁকে ভয় করে এবং সঠিক কাজ করে, তাকে ঈশ্বর গ্রহণ করেন।” (প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫) পিতর নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেন যে, ঈশ্বর কোনো ব্যক্তির দেশ, জাতি অথবা বাহ্যিক কোনো কিছু দেখেন না, এর পরিবর্তে প্রত্যেককে একই দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। এরপর পিতর যিশুর প্রচার কাজ, তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের বিষয়ে তাদের কাছে সাক্ষ্য দেন।

১৩, ১৪. (ক) ৩৬ খ্রিস্টাব্দে কর্ণীলিয় এবং অন্যান্য ন-যিহুদি ব্যক্তিরা যখন খ্রিস্টান হয়েছিল, তখন কোন বিষয়টা প্রকাশ পেয়েছিল? (খ) কেন আমাদের লোকদের বাহ্যিক বিষয়গুলো দেখে বিচার করা উচিত নয়?

১৩ এরপর এমন এক ঘটনা ঘটে, যা আগে কখনো ঘটেনি। “পিতর এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছিলেন, এমন সময় . . . ন-যিহুদিদের” উপর পবিত্র শক্তি বর্ষণ করা হয়। (প্রেরিত ১০:৪৪, ৪৫) বাইবেলে কেবলমাত্র এই একটা ঘটনার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বাপ্তিস্মের অনেক আগেই কারোর উপর পবিত্র শক্তি বর্ষণ করা হয়েছিল। পিতর বুঝতে পারেন, যিহোবা এই ন-যিহুদিদের গ্রহণ করেছেন, তাই তিনি “আজ্ঞা দিলেন, যেন তাদের [সেই ন-যিহুদি ব্যক্তিদের] . . . বাপ্তিস্ম দেওয়া হয়।” (প্রেরিত ১০:৪৮) এভাবে ৩৬ খ্রিস্টাব্দে যখন সেই ন-যিহুদি ব্যক্তিরা খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিল বা খ্রিস্টান হয়েছিল, তখন এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, যিহুদিদের উপর যিহোবার আর কোনো বিশেষ অনুগ্রহ নেই। (দানি. ৯:২৪-২৭) পিতর এই সুযোগে তৃতীয় অর্থাৎ শেষ ‘স্বর্গরাজ্যের চাবিটা’ ব্যবহার করেন। (মথি ১৬:১৯) আর এর ফলে সমস্ত অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদিদের সামনে পবিত্র শক্তির মাধ্যমে অভিষিক্ত খ্রিস্টান হওয়ার সুযোগ খুলে গিয়েছিল।

১৪ বর্তমানে আমরা রাজ্যের প্রচারকেরা এটা জানি যে, “ঈশ্বর পক্ষপাতিত্ব করেন না।” (রোমীয় ২:১১) তিনি চান “যেন সমস্ত ধরনের লোক রক্ষা পায়।” (১ তীম. ২:৪) তাই, আমাদের কখনোই লোকদের বাহ্যিক বিষয়গুলো দেখে বিচার করা উচিত নয়। আমাদের কাজ হল, ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দেওয়া। এর মধ্যে সেই সমস্ত ধরনের লোক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা তাদের ভাষা, তাদের জাতি, তাদের ধর্ম অথবা তারা দেখতে যেমনই হোক না কেন।

‘তারা আর আপত্তি করলেন না, তারা ঈশ্বরের গৌরব করলেন’ (প্রেরিত ১১:১-১৮)

১৫, ১৬. কেন যিহুদি খ্রিস্টানেরা পিতরের উপর রেগে ছিল এবং কীভাবে পিতর তাদের বুঝিয়েছিলেন যে, তিনি ভুল কিছু করেননি?

১৫ পিতর জেরুসালেমে ফিরে গিয়ে সেখানকার ভাইদের কৈসরিয়ায় যে-ঘটনা ঘটেছিল, সেই বিষয়ে জানানোর জন্য উৎসুক হয়ে রয়েছেন। তাই, তিনি জেরুসালেমের উদ্দেশে রহনা দেন। কিন্তু এমনটা মনে করা হয়, পিতর সেখানে পৌঁছানোর আগেই জেরুসালেমে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদিরাও “ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে।” পিতর জেরুসালেমে পৌঁছানো মাত্রই “যারা ত্বকচ্ছেদ আইনের পক্ষপাতী ছিলেন, তারা পিতরের সমালোচনা করতে লাগলেন।” (প্রেরিত ১১:১-৩) এই যিহুদি খ্রিস্টানেরা পিতরের উপর রেগে ছিল কারণ তিনি ‘অচ্ছিন্নত্বক ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেছেন।’ এই লোকেরা এই বিষয়টা নিয়ে সমালোচনা করেনি যে, এই ন-যিহুদি ব্যক্তিরা খ্রিস্টান হতে পারে কি না বরং তারা এটা বলতে চাইছিল যে, ন-যিহুদি ব্যক্তিরা যদি খ্রিস্টান হতে চায়, তা হলে তাদের মোশির ব্যবস্থা মানতে হবে, যার মধ্যে ত্বকচ্ছেদ করানোর বিষয়টা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখান থেকে এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, কিছু যিহুদি শিষ্যের জন্য এটা মেনে নেওয়া কঠিন হচ্ছিল যে, মোশির ব্যবস্থা শেষ হয়ে গিয়েছে।

১৬ পিতর কীভাবে সেই লোকদের বোঝান যে, তিনি ভুল কিছু করেননি? প্রেরিত ১১:৪-১৬ পদ যেমন বলে, ঠিক তেমনই তিনি তাদের সামনে সেই চারটে প্রমাণ তুলে ধরেন, যেগুলো দেখায় যে, এই কাজ করার জন্য ঈশ্বর তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন: (১) ঈশ্বরের কাছ থেকে তিনি এক দর্শন পেয়েছিলেন (৪-১০ পদ); (২) পবিত্র শক্তি তাকে এই আজ্ঞা দিয়েছিলেন (১১, ১২ পদ); (৩) একটা দর্শনে স্বর্গদূত কর্ণীলিয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন (১৩, ১৪ পদ); এবং (৪) ন-যিহুদি ব্যক্তিদের উপর পবিত্র শক্তি বর্ষণ করা হয়েছিল। (১৫, ১৬ পদ) এই সমস্ত প্রমাণ দেওয়ার পর পিতর এমন একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, যেটার উত্তর সেই যিহুদি খ্রিস্টানেরা জানত। তিনি বলেন: “তাই, প্রভু যিশু খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করায় আমাদের মতো তাদেরও যদি ঈশ্বর দান হিসেবে পবিত্র শক্তি দিয়ে থাকেন, তা হলে আমি কে যে, ঈশ্বরকে বাধা দেব?”—প্রেরিত ১১:১৭.

১৭, ১৮. (ক) পিতরের কথা শোনার পর যিহুদি খ্রিস্টানদের কোন সিদ্ধান্ত নিতে হত? (খ) মণ্ডলীতে একতা বজায় রাখা কেন কঠিন হতে পারে এবং আমাদের কোন প্রশ্নগুলো নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত?

১৭ পিতরের কথা শোনার পর এই যিহুদি খ্রিস্টানদের এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হত। তারা কি তাদের হৃদয় থেকে পক্ষপাতিত্বের মনোভাব উপড়ে ফেলে সেই ন-যিহুদি ভাইদের গ্রহণ করবে? শাস্ত্রপদ বলে: “তারা যখন এইসমস্ত বিষয় শুনলেন, তখন তারা আর আপত্তি করলেন না। তারা ঈশ্বরের গৌরব করে বললেন: ‘ঈশ্বর ন-যিহুদি লোকদেরও অনুতাপ করার সুযোগ দিয়েছেন, যাতে তারা জীবন লাভ করতে পারে।’” (প্রেরিত ১১:১৮) সেই যিহুদি খ্রিস্টানেরা তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে আর তাই মণ্ডলীতে একতা বজায় থাকে।

১৮ বর্তমান সময়েও একতা বজায় রাখা কঠিন হতে পারে কারণ সত্য উপাসকেরা “সমস্ত জাতি ও বংশ ও বর্ণ ও ভাষার” মধ্য থেকে এসেছে। (প্রকা. ৭:৯) অনেক মণ্ডলীতে এমন অনেক ভাই-বোন রয়েছে, যারা আলাদা আলাদা ভাষায় কথা বলে থাকে এবং আলাদা আলাদা পরিবেশে বড়ো হয়ে উঠেছে। তাই, আমাদের নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘কোনো ব্যক্তি শুধুমাত্র আমার চেয়ে আলাদা বলে কি আমি তাকে পছন্দ করি না? সারা পৃথিবীতে লোকেরা তাদের দেশ, জাতি এবং সংস্কৃতির জন্য যদিও নিজেকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে, কিন্তু আমি কি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ যে, আমার খ্রিস্টীয় ভাই-বোনদের প্রত্যেককে আমি সমান চোখে দেখব?’ ভেদাভেদের মনোভাব যেকোনো ব্যক্তির মধ্যেই আসতে পারে। মনে করে দেখুন, ন-যিহুদি ব্যক্তিরা যখন খ্রিস্টান হয়েছিল, তখন তার কয়েক বছর পর পিতর (কৈফা) কী করেছিলেন। তিনি যিহুদি খ্রিস্টানদের দেখাদেখি “নিজেকে ন-যিহুদি লোকদের কাছ থেকে আলাদা রাখতে শুরু করলেন” আর এই কারণেই পৌলকে পিতরের চিন্তাভাবনা সংশোধন করতে হয়েছিল। (গালা. ২:১১-১৪) তাই আসুন, আমরা সতর্ক থাকি যেন কখনো পক্ষপাতিত্বের মনোভাব না দেখাই।

“বহুসংখ্যক লোক প্রভুর উপর বিশ্বাস করল” (প্রেরিত ১১:১৯-২৬ক)

১৯. আন্তিয়খিয়ায় যিহুদি শিষ্যেরা কাদের কাছে প্রচার করতে শুরু করেছিল আর এর ফলাফল কী হয়েছিল?

১৯ এখন কি যিশুর এই শিষ্যেরা সেই অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদিদের কাছে গিয়ে তাদের সুসমাচার জানাবে? লক্ষ করুন, কিছু সময় আগে সিরিয়ার আন্তিয়খিয়ায় কী হয়েছিল। d আন্তিয়খিয়া নগরে যিহুদিদের একটা বড় সম্প্রদায় বসবাস করত আর এখানে যিহুদি ও ন-যিহুদিদের মধ্যে অনেক শান্তি ছিল। সেই জন্য এই নগরটা ছিল ন-যিহুদিদের কাছে প্রচার করার এক আদর্শ জায়গা। আন্তিয়খিয়ায় কিছু শিষ্য “গ্রিকভাষী লোকদের কাছে” সুসমাচার ঘোষণা করতে শুরু করে। (প্রেরিত ১১:২০) এখানে গ্রিকভাষী যে-লোকদের বিষয়ে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে শুধুমাত্র যিহুদিরাই নয় বরং অচ্ছিন্নত্বক ন-যিহুদি ব্যক্তিরাও ছিল। শিষ্যেরা যখন এখানে প্রচার কাজ শুরু করে, তখন যিহোবা তাদের উপর আশীর্বাদ করেন এবং ‘বহুসংখ্যক লোক প্রভুর উপর বিশ্বাস করে।’ —প্রেরিত ১১:২১.

২০, ২১. কীভাবে বার্ণবা নম্রতা দেখিয়েছিলেন এবং কীভাবে আমরা প্রচার কাজের ক্ষেত্রে তার মতো হতে পারি?

২০ এখন আন্তিয়খিয়ায় শস্য কাটার জন্য পেকে গিয়েছে। তাই, জেরুসালেম মণ্ডলী বার্ণবাকে আন্তিয়খিয়ায় পাঠায়। সেখানে এত বেশি পরিমাণে লোক সুসমাচার শোনার জন্য আগ্রহ দেখায় যে, বার্ণবার একার পক্ষে সেই সমস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই কাজে বার্ণবাকে সাহায্য করার জন্য কে উপযুক্ত হতে পারে? শৌল এই কাজের জন্য একদম যোগ্য ছিলেন কারণ তিনি ন-যিহুদি ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রেরিত হয়েছিলেন। (প্রেরিত ৯:১৫; রোমীয় ১:৫) বার্ণবা কি এইরকম চিন্তা করেছিলেন যে, শৌল যদি আন্তিয়খিয়ায় আসেন, তা হলে আমার সম্মান কমে যাবে? না। বার্ণবা নম্র ছিলেন আর তিনি জানতেন, এই সমস্ত কাজ তার পক্ষে একা করা অসম্ভব। তাই, তিনি শৌলকে খোঁজার জন্য তার্ষ নগরে যান। তিনি যখন শৌলকে খুঁজে পান, তখন তিনি শৌলকে সঙ্গে নিয়ে আন্তিয়খিয়ায় আসেন। এরপর, তারা দু-জনে মিলে প্রায় এক বছর ধরে আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে থাকা ভাই-বোনদের উৎসাহিত করেন এবং তাদের শক্তিশালী করতে থাকেন। —প্রেরিত ১১:২২-২৬ক.

২১ প্রচার কাজের ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা নম্রতা দেখাতে পারি? আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে আলাদা আলাদা দক্ষতা এবং গুণাবলি রয়েছে। তবে, আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। কিছু খ্রিস্টানের জন্য গৃহকর্তার কাছে প্রত্রিকা অর্পন করা সহজ বলে মনে হয়। তবে, পুনর্সাক্ষাৎ করা এবং বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করা তাদের জন্য কঠিন বলে মনে হতে পারে। আপনার পক্ষেও যদি পুনর্সাক্ষাৎ করা কিংবা অন্য কোনো উপায়ে সাক্ষ্যদান করা কঠিন বলে মনে হয়, তা হলে কোনো একজন প্রকাশকের সাহায্যে তা করতে শিখলে, কেমন হয়? এটা করার মাধ্যমে আপনি পরিচর্যায় আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন এবং অনেক আনন্দ লাভ করবেন। —১ করি. ৯:২৬.

“ভাইদের জন্য ত্রাণসামগ্রী” পাঠান হয় (প্রেরিত ১১:২৬খ-৩০)

২২, ২৩. আন্তিয়খিয়ার খ্রিস্টানেরা কীভাবে তাদের ভাইদের প্রতি প্রেম দেখিয়েছিল আর কীভাবে বর্তমানেও ঈশ্বরের লোকেরা একে অন্যের প্রতি প্রেম দেখিয়ে থাকে?

২২ এই আন্তিয়খিয়াতেই প্রথমে “ঈশ্বরের নির্দেশনায় শিষ্যদের খ্রিস্টান বলে ডাকা হয়।” (প্রেরিত ১১:২৬খ) শিষ্যদের জন্য এই খ্রিস্টান নামটা একদম উপযুক্ত ছিল কারণ তারা খ্রিস্টের মতোই জীবনযাপন করত। ন-যিহুদি ব্যক্তিরা যখন খ্রিস্টান হয়েছিল, তখন যিহুদি এবং ন-যিহুদি ব্যক্তিদের মধ্যে ভালোবাসা এবং ভ্রাতৃপ্রেমের বন্ধন কি দৃঢ় হয়েছিল? অবশ্যই তা হয়েছিল। লক্ষ করুন, ৪৬ খ্রিস্টাব্দে যখন এক ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল, তখন কী হয়েছিল? e প্রাচীনকালে গরীবদের ওপর দুর্ভিক্ষের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ত কারণ তাদের কাছে জমানো কোনো পুঁজি থাকত না আর এমনকী কোনো খাবারও থাকত না। যিহূদিয়ায় বসবাসরত যিহুদি খ্রিস্টানদের মধ্যে বেশিরভাগই হয়ত অনেক গরিব ছিল। তাই, দুর্ভিক্ষের সময় তাদের খাবারের হাহাকার পড়ে যায় এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আন্তিয়খিয়ার যিহুদি ও ন-যিহুদি ভাইয়েরা যখন এই খবর জানতে পারে, তখন তারা “যিহূদিয়ায় বসবাসরত ভাইদের জন্য ত্রাণসামগ্রী” পাঠায়। (প্রেরিত ১১:২৯) আসলে, আন্তিয়খিয়ার সেই ন-যিহুদি খ্রিস্টানেরা দেখিয়েছিল যে, তারা তাদের যিহুদি ভাইদের হৃদয় থেকে ভালোবাসে।

২৩ বর্তমানেও ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে সেই একই রকমের প্রেম ও একতা রয়েছে। আমরা যখন জানতে পারি যে, আমাদের দেশে অথবা অন্য কোনো দেশে আমাদের খ্রিস্টান ভাই-বোনেরা কোনো সমস্যায় পড়েছে, তখন আমরা নিজেরা দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাদের সাহায্য করি। কোনো এলাকাতে যখন আমাদের ভাই-বোনেরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে থাকে, যেমন হতে পারে ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় কিংবা সুনামি, তখন সেই সময়ে শাখা কমিটি সেই ভাই-বোনদের সাহায্য করার জন্য দ্রুত দুর্যোগ-ত্রাণ কমিটি গঠন করে থাকে। এই সমস্ত কিছু দেখায় যে, আমরা ভাই-বোনদের সত্যিই ভালোবাসি।—যোহন ১৩:৩৪, ৩৫; ১ যোহন ৩:১৭.

২৪. কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, পিতর যে-শিক্ষা লাভ করেছিলেন, সেই শিক্ষাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখি?

২৪ যিহোবা যাফো নগরে পিতরকে দর্শনের মাধ্যমে এক চমৎকার উপায়ে এটা প্রকাশ করেছিলেন যে, তিনি পক্ষপাতিত্ব করেন না। আর তিনি চান যেন যেকোনো ভাষা, জাতি এবং সমাজে সমস্ত ধরনের লোক সুসমাচার শুনতে পায়। আমরাও এই বিষয়টা মনে রাখতে চাই। তাই আসুন, যারা সুসমাচার শুনতে চায়, তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য দিই এবং তাদের যিহোবার সেবা করার সুযোগ দিই।—রোমীয় ১০:১১-১৩.

ভাই-বোনদের সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমরা যেন দ্রুত নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে তাদের সাহায্য করি

a চামড়ার ব্যাবসায়ীরা পশুর ছাল এবং মৃতদেহ থেকে চামড়া তৈরি করত এবং কিছু নোংরা জিনিসও ব্যবহার করত যেমন, কুকুরের মল। সেইজন্য কিছু যিহুদি তাদের নীচু চোখে দেখত। যিহুদিরা এটা চাইত না যে, যারা চামড়ার কাজ করে, তারা মন্দিরে প্রবেশ করুক। শুধু তাই নয়, এদের নগরের সীমানা থেকে কমপক্ষে ২০ মিটার দূরে ব্যাবসা করতে হত। আর সম্ভবত এই কারণেই শিমোনের বাড়ি লোকালয় থেকে দূরে “সাগরের ধারে” ছিল।—প্রেরিত ১০:৬.

b কর্ণীলিয় এবং রোমীয় সেনাবাহিনী” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

c এই প্রবন্ধটা ২০০৬ সালের ১ নভেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৪-৭ পৃষ্ঠায় রয়েছে, যেটার শিরোনাম হল “সন্তানদের মানুষ করে তোলার জন্য নির্ভরযোগ্য উপদেশ।”

d সিরিয়ার আন্তিয়খিয়া” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

e যিহুদি ইতিহাসবেত্তা জোসিফাস তার বইতে লিখেছিলেন, এই “ভয়ানক দুর্ভিক্ষ” সম্রাট ক্লোদিয়ের শাসনকালে (৪১-৫৪ খ্রিস্টাব্দ) হয়েছিল।