সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

খণ্ড ১১

যে-অনুপ্রাণিত গীতগুলো সান্ত্বনা ও শিক্ষা দেয়

যে-অনুপ্রাণিত গীতগুলো সান্ত্বনা ও শিক্ষা দেয়

দায়ূদ ও অন্যেরা উপাসনায় ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন গীত রচনা করে। গীতসংহিতা বইয়ে সেগুলোর মধ্যে ১৫০টি গীতের কথা সংরক্ষিত আছে

বাইবেলের সবচেয়ে বড়ো বইটি হল, পবিত্র গীতগুলোর এক সংকলন। পুরো বইটি লিখতে প্রায় ১,০০০ বছর লেগেছিল। গীতসংহিতা বইয়ে বিশ্বাসের লিখিত অভিব্যক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অন্তর্দৃষ্টিমূলক ও হৃদয়গ্রাহী অভিব্যক্তিগুলো রয়েছে। এতে আনন্দ, প্রশংসা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন থেকে শুরু করে তীব্র শোক, দুঃখ ও অনুতাপের মতো বিভিন্ন ধরনের মানব আবেগ-অনুভূতি তুলে ধরা হয়েছে। এটা সুস্পষ্ট যে, ঈশ্বরের সঙ্গে গীতরচকদের এক নির্ভরযোগ্য, অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। এই গীতগুলোর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে এমন কয়েকটির মূলভাব বিবেচনা করুন।

যিহোবা হলেন ন্যায্য সার্বভৌম প্রভু, উপাসনা ও প্রশংসা লাভের যোগ্য। “তুমি, যাঁহার নাম সদাপ্রভু [“যিহোবা,” NW], একা তুমিই সমস্ত পৃথিবীর উপরে পরাৎপর,” গীতসংহিতা ৮৩:১৮ পদে আমরা পড়ি। বেশ কিছু গীত যিহোবার সৃষ্টির কাজ যেমন, তারকাখচিত আকাশ, পৃথিবীর অপূর্ব জীবন ও মানবদেহের বিভিন্ন বিস্ময়কর বিষয়ের জন্য তাঁর প্রশংসা করে। (গীতসংহিতার ৮, ১৯, ১৩৯, ১৪৮ গীত) অন্যগুলো যিহোবাকে এমন একজন ঈশ্বর হিসেবে গৌরবান্বিত করে, যিনি তাঁর প্রতি অনুগত ব্যক্তিদের পরিত্রাণ ও সুরক্ষা করার জন্য কাজ করেন। (গীতসংহিতার ১৮, ৯৭, ১৩৮ গীত) আবার কিছু গীত তাঁকে ন্যায়বিচারের ঈশ্বর হিসেবে উচ্চীকৃত করে, যিনি নিপীড়তদের জন্য স্বস্তি ও দুষ্টদের জন্য শাস্তি নিয়ে আসেন।—গীতসংহিতার ১১, ৬৮, ১৪৬ গীত।

যিহোবা সেই ব্যক্তিদের সাহায্য করেন ও সান্ত্বনা দেন, যারা তাঁকে ভালোবাসে। সম্ভবত ২৩ গীত হচ্ছে সবচেয়ে সুপরিচিত গীত, যেটিতে দায়ূদ যিহোবাকে একজন প্রেমময় মেষপালক হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি তাঁর মেষদের নির্দেশনা দেন, সুরক্ষা করেন এবং যত্ন নেন। গীতসংহিতা ৬৫:২ পদ ঈশ্বরের উপাসকদের মনে করিয়ে দেয় যে, যিহোবা হলেন “প্রার্থনা-শ্রবণকারী।” গুরুতর অন্যায়ে পতিত হয়েছে এমন অনেকে ৩৯ ও ৫১ গীতের মধ্যে অনেক সান্ত্বনা খুঁজে পেয়েছে, যেখানে দায়ূদ হৃদয়গ্রাহী কথাগুলোর মাধ্যমে তার গুরুতর ভুলগুলোর জন্য অনুতাপ করেছেন এবং যিহোবার ক্ষমার প্রতি তার বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। গীতসংহিতা ৫৫:২২ পদে, যিহোবার প্রতি নির্ভর করার এবং সমস্ত ব্যক্তিগত ভার তাঁর ওপর অর্পণ করার জোরালো পরামর্শ রয়েছে।

যিহোবা মশীহ রাজ্যের মাধ্যমে জগৎকে পরিবর্তন করবেন। গীতসংহিতার বেশ কিছু বাক্যাংশ ভবিষ্যদ্‌বাণীকৃত রাজা মশীহের প্রতি স্পষ্টভাবে প্রযোজ্য। দ্বিতীয় গীত ভবিষ্যদ্‌বাণী করে যে, এই শাসক সেই দুষ্ট জাতিগুলোকে ধ্বংস করবেন, যারা তাঁর বিরোধিতা করে। ৭২ গীত প্রকাশ করে যে, এই রাজা ক্ষুধা, অবিচার ও নিপীড়ন দূর করবেন। গীতসংহিতা ৪৬:৯ পদ অনুসারে, মশীহের রাজ্যের মাধ্যমে ঈশ্বর যুদ্ধ দূর করবেন আর এমনকী যুদ্ধের সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস করবেন। ৩৭ গীতে আমরা পড়ি যে, দুষ্টদের নির্মূল করা হবে আর অন্যদিকে ধার্মিক লোকেরা পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকবে, বিশ্বশান্তি ও একতা উপভোগ করবে।

গীতসংহিতা বইয়ের ওপর ভিত্তি করে।