খণ্ড ১৯
যিশু এক সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান করেন
যিশু কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন, যেগুলো রাজকীয় ক্ষমতায় তাঁর উপস্থিতিকে এবং এই বিধিব্যবস্থার শেষকে চিহ্নিত করবে
জৈতুন পর্বতে বসে নীচে যিরূশালেম ও এর মন্দিরের অপূর্ব দৃশ্য দেখার সময়, যিশুর চার জন প্রেরিত একান্তে তিনি আগে যা বলেছিলেন, সেই সম্বন্ধে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিল। যিশু সবেমাত্র বলেছিলেন যে, যিরূশালেমের মন্দির ধ্বংস হবে। আর এর আগে একবার তিনি তাদেরকে ‘যুগান্ত’ বা বিধিব্যবস্থার শেষ সম্বন্ধে বলেছিলেন। (মথি ১৩:৪০, ৪৯) এখন প্রেরিতরা জিজ্ঞেস করে: “আপনার আগমনের [“উপস্থিতির,” NW] এবং যুগান্তের চিহ্ন কি?”—মথি ২৪:৩.
উত্তরে যিশু বলেছিলেন যে, যিরূশালেম ধ্বংসের আগে কী কী ঘটবে। কিন্তু, তাঁর কথাগুলো এর চেয়েও আরও সুদূরপ্রসারী ছিল। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী পরে পৃথিবীব্যাপী বড়ো আকারে পরিপূর্ণ হবে। যিশু বিভিন্ন ঘটনা ও জগৎ পরিস্থিতি সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, যেগুলো মিলে একটা চিহ্ন গঠন করবে। সেই চিহ্ন পৃথিবীর লোকেদের দেখাবে যে, স্বর্গে রাজা হিসেবে যিশুর উপস্থিতি শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য কথায়, চিহ্ন ইঙ্গিত দেবে যে, যিহোবা ঈশ্বর যিশুকে দীর্ঘ প্রতিজ্ঞাত মশীহ রাজ্যের রাজা করেছেন। এই চিহ্নের অর্থ হবে, রাজ্য দুষ্টতা দূর করতে ও মানবজাতির জন্য প্রকৃত শান্তি নিয়ে আসতে যাচ্ছে। যিশু যে-বিষয়গুলো ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সেগুলো এভাবে পুরোনো বিধিব্যবস্থার—বর্তমানে বিদ্যমান ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার—শেষকালকে এবং নতুন বিধিব্যবস্থার শুরুকে চিহ্নিত করবে।
স্বর্গে রাজা হিসেবে তাঁর উপস্থিতির সময়ে পৃথিবীতে কী ঘটবে, তা ব্যাখ্যা করার সময় যিশু বলেছিলেন যে, আন্তর্জাতিক যুদ্ধ, খাদ্যের অভাব, বড়ো বড়ো ভূমিকম্প ও ব্যাপক রোগব্যাধি হবে। অধার্মিকতা বৃদ্ধি পাবে। যিশুর প্রকৃত শিষ্যরা সমস্ত পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করবে। এইসমস্ত বিষয় ‘মহাক্লেশের’ সময়ে চরম সীমায় পৌঁছাবে, যেমনটা আগে কখনো হয়নি।—মথি ২৪:২১.
যিশুর অনুসারীরা কীভাবে জানতে পারবে যে, সেই ক্লেশ সন্নিকট? “ডুমুরগাছ হইতে . . . শিখ,” যিশু বলেছিলেন। (মথি ২৪:৩২) ডুমুর গাছের শাখায় যখন পাতা দেখা যায়, তখন সেটা এক উল্লেখযোগ্য চিহ্ন যে, গ্রীষ্ম কাল সন্নিকট। একইভাবে, যিশুর ভবিষ্যদ্বাণীকৃত সমস্ত বিষয় যখন একটা নির্দিষ্ট সময়কালে দেখা যাবে, তখন সেটা হবে এক লক্ষণীয় চিহ্ন যে, শেষ সন্নিকট। যিশু বলেছিলেন যে, মহাক্লেশ কখন শুরু হবে, সেটার একেবারে সঠিক দিনক্ষণ আর কেউ নয় বরং পিতা জানেন। তাই, যিশু তাঁর শিষ্যদের জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “তোমরা জাগিয়া থাকিও ও প্রার্থনা করিও; কেননা সে সময় কবে হইবে, তাহা জান না।”—মার্ক ১৩:৩৩.
—মথি ২৪ ও ২৫ অধ্যায়; মার্ক ১৩ অধ্যায়; লূক ২১ অধ্যায়ের ওপর ভিত্তি করে।
^ অনু. 14 যিশুর ভবিষ্যদ্বাণী সম্বন্ধে আরও আলোচনার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৮৬-৯৫ পৃষ্ঠা দেখুন।