সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ৩২

দশ আঘাত

দশ আঘাত

এই ছবিগুলো দেখো। প্রতিটা ছবিতে এক একটা আঘাত তুলে ধরা হয়েছে, যা যিহোবা মিশরের ওপর এনেছিলেন। প্রথম ছবিতে তুমি দেখতে পাচ্ছ হারোণ তার লাঠি দিয়ে নীল নদে আঘাত করছেন। তিনি যখন তা করেছিলেন, তখন সেই নদীর জল রক্ত হয়ে গিয়েছিল। সমস্ত মাছ মরে গিয়েছিল আর নদী দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছিল।

এরপর, যিহোবা এমন কিছু করেন, যার ফলে নীল নদের সব ব্যাঙ ওপরে চলে আসে। এগুলো সব জায়গায়—তন্দুরে, রুটি সেঁকার পাত্রে, লোকেদের বিছানায়, সমস্ত জায়গায়—ছড়িয়ে ছিল। সেই ব্যাঙগুলো যখন মরে যায়, তখন মিশরীয়রা সেগুলো জড়ো করে বড়ো বড়ো স্তুপ তৈরি করে আর দেশ দুর্গন্ধে ভরে যায়।

তারপর, হারোণ তার লাঠি দিয়ে ভূমিতে আঘাত করেন আর ধূলি পিশুতে পরিণত হয়। এগুলো হচ্ছে ছোটো ছোটো উড়ন্ত পোকা, যা কামড় দেয়। এই পিশুগুলোই মিশরের ওপর তৃতীয় আঘাত ছিল।

বাকি অন্যান্য আঘাত ইস্রায়েলীয়দের নয় বরং শুধু মিশরীয়দেরই ক্ষতি করেছিল। চতুর্থ আঘাতটা ছিল বড়ো বড়ো দংশক, যা ঝাঁকে ঝাঁকে সমস্ত মিশরীয়দের বাড়িতে ঢুকে গিয়েছিল। পঞ্চম আঘাতটা পশুপাখির ওপর এসেছিল। এতে মিশরীয়দের অনেক গরু, মেষ ও ছাগল মরে গিয়েছিল।

এরপর, মোশি ও হারোণ কিছু ছাই নিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছিল। এর ফলে লোকেদের ও পশুপাখির দেহে যন্ত্রণাদায়ক ফোঁড়া হয়েছিল। এটাই ছিল ষষ্ঠ আঘাত।

তারপর, মোশি আকাশের দিকে তার হাত তোলেন আর এতে যিহোবা বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি পাঠান। এইরকম প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি মিশরে আগে কখনো হয়নি।

অষ্টম আঘাতটা ছিল একটা বিরাট পঙ্গপালের ঝাঁক। এর আগে বা পরে আর কখনো এত পঙ্গপাল দেখা যায়নি। এগুলো শিলাবৃষ্টির আঘাত থেকে যা-কিছু রক্ষা পেয়েছিল, সেগুলোর সমস্তই খেয়ে ফেলেছিল।

নবম আঘাতটা ছিল অন্ধকার। তিন দিন ধরে পুরো দেশ ঘোর অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা যেখানে বসবাস করত, সেখানে আলো ছিল।

অবশেষে, ঈশ্বর তাঁর প্রজাদেরকে একটা ছাগবৎস অথবা একটা মেষশাবকের রক্ত নিয়ে তাদের ঘরের দরজার চৌকাঠে ছিটিয়ে দিতে বলেছিলেন। এরপর ঈশ্বরের দূত মিশরের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন। স্বর্গদূত যে-সমস্ত দরজায় রক্ত দেখেছিলেন, সেইসমস্ত ঘরের কাউকে তিনি মেরে ফেলেননি। কিন্তু, যে-সমস্ত দরজার চৌকাঠে কোনো রক্ত ছিল না, সেইসমস্ত ঘরের মানুষ ও পশুপাখি, উভয়ের প্রথম সন্তানকে ঈশ্বরের দূত মেরে ফেলেছিলেন। এটাই ছিল দশম আঘাত।

এই শেষ আঘাতের পর ফরৌণ ইস্রায়েলীয়দের চলে যেতে বলেন। ঈশ্বরের সমস্ত প্রজা চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিল আর তাই সেই রাতেই তারা মিশর থেকে বের হয়ে যেতে শুরু করেছিল।

যাত্রাপুস্তক ৭ থেকে ১২ অধ্যায়।