সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ১৭

যে-যমজ ভাইয়েরা বিপরীত স্বভাবের ছিল

যে-যমজ ভাইয়েরা বিপরীত স্বভাবের ছিল

এখানে যে-দুই বালককে দেখা যাচ্ছে, তারা একেবারে বিপরীত স্বভাবের, তাই না? তুমি কি তাদের নাম জান? শিকারি বালকটি হচ্ছে এষৌ এবং যে মেষের যত্ন নিচ্ছে, সে যাকোব।

এষৌ এবং যাকোব হচ্ছে ইস্‌হাক ও রিবিকার যমজ সন্তান। বাবা অর্থাৎ ইস্‌হাক, এষৌকে অনেক পছন্দ করতেন কারণ এষৌ ভালো শিকারি ছিলেন এবং তিনি পরিবারের জন্য খাবার নিয়ে আসতেন। কিন্তু রিবিকা, যাকোবকে ভালোবাসতেন কারণ যাকোব চুপচাপ ও শান্ত স্বভাবের ছিলেন।

তাদের ঠাকুরদাদা অব্রাহাম তখনও জীবিত ছিলেন আর তার কাছ থেকে যিহোবার বিষয়ে শুনতে যাকোব কতটা পছন্দ করত, তা আমরা নিশ্চিতভাবেই কল্পনা করতে পারি। অবশেষে অব্রাহাম এক-শো পঁচাত্তর বছর বয়সে মারা যান আর তখন এই যমজ সন্তানদের বয়স পনেরো বছর।

এষৌর বয়স যখন চল্লিশ বছর, তখন তিনি কনান দেশের দু-জন মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। এই কারণে ইস্‌হাক ও রিবিকা অনেক দুঃখ পেয়েছিল কারণ সেই মেয়েরা যিহোবাকে উপাসনা করত না।

তারপর, একদিন এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল, যেটার কারণে এষৌ তার ভাই যাকোবের ওপর প্রচণ্ড রেগে যান। সেই সময়টা এসে গিয়েছিল, যখন ইস্‌হাক তার বড়ো ছেলেকে আশীর্বাদ করবেন। যেহেতু এষৌ যাকোবের চেয়ে বয়সে বড়ো ছিলেন, তাই এষৌ সেই আশীর্বাদ লাভ করার আশা করেছিলেন। কিন্তু, এষৌ এর আগেই সেই আশীর্বাদ লাভ করার অধিকার যাকোবের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তা ছাড়া, যখন এই দুই বালকের জন্ম হয়েছিল, তখন ঈশ্বরই বলে দিয়েছিলেন যে, যাকোব আশীর্বাদ লাভ করবে। আর সেটাই হয়েছিল। ইস্‌হাক তার ছেলে যাকোবকে আশীর্বাদ করেছিলেন।

পরে, এষৌ যখন সেই বিষয়টা জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি যাকোবের ওপর খুবই রেগে যান। এষৌ এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, তিনি বলেন তিনি যাকোবকে হত্যা করবেন। রিবিকা যখন এই বিষয়টা শুনেছিলেন, তখন তিনি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। তাই, তিনি তার স্বামী ইস্‌হাককে বলেন: ‘যদি যাকোবও কোনো কনানীয় মেয়েকে বিয়ে করে, তাহলে আমার বেঁচে থেকে কী লাভ।’

তখন ইস্‌হাক তার ছেলে যাকোবকে ডেকে বলেছিলেন: ‘তুমি কোনো কনানীয় মেয়েকে বিয়ে কোরো না। এর পরিবর্তে, তুমি হারণে তোমার দাদু বথূয়েলের বাড়িতে যাও। তার ছেলে লাবনের কোনো মেয়েকে বিয়ে করো।’

যাকোব তার বাবার কথা শুনেছিলেন এবং সঙ্গেসঙ্গে হারণের উদ্দেশে দীর্ঘযাত্রা শুরু করেছিলেন, যেখানে তার আত্মীয়স্বজন বসবাস করত।

আদিপুস্তক ২৫:৫-১১, ২০-৩৪; ২৬:৩৪, ৩৫; ২৭:১-৪৬; ২৮:১-৫; ইব্রীয় ১২:১৬, ১৭.