সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ৪০

মোশি পাথরে আঘাত করেন

মোশি পাথরে আঘাত করেন

বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে—দশ বছর, কুড়ি বছর, ত্রিশ বছর, উনচল্লিশ বছর! আর ইস্রায়েলীয়রা এখনও প্রান্তরে রয়েছে। কিন্তু এত বছর ধরে যিহোবা তাঁর লোকেদের যত্ন নিয়ে এসেছেন। তিনি তাদেরকে খাবার হিসেবে মান্না দিয়েছেন। তিনি দিনের বেলা মেঘস্তম্ভ দিয়ে ও রাতের বেলা অগ্নিস্তম্ভ দিয়ে তাদের পরিচালিত করেছেন। আর এত বছর ধরে তাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে যায়নি ও তাদের পায়ে ফোসকাও পড়েনি।

এখন মিশর ছেড়ে চলে আসার পর চল্লিশতম বছরের প্রথম মাস। ইস্রায়েলীয়রা আবারও কাদেশে শিবির স্থাপন করেছে। এটা হচ্ছে সেই জায়গা, যেখানে তারা প্রায় চল্লিশ বছর আগে ছিল, যখন বারো জন গুপ্তচরকে কনান দেশ নিরীক্ষণ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। মোশির বোন মরিয়ম কাদেশে মারা যান। আর আগের মতো, এখানে আবারও সমস্যা দেখা দেয়।

লোকেরা কোনো জল খুঁজে পায় না। তাই, তারা মোশিকে অভিযোগ করে বলে: ‘আমরা মরে গেলেই ভালো হতো। কেন তুমি মিশর থেকে বের করে আমাদের এই ভয়ংকর জায়গায় নিয়ে এসেছ, যেখানে কোনো কিছুই জন্মায় না? এখানে শস্য নেই, ডুমুর নেই, আঙুর নেই, ডালিম নেই। এমনকী এখানে পান করার জন্য কোনো জলও নেই।’

মোশি ও হারোণ যখন আবাসে প্রার্থনা করার জন্য যায়, তখন যিহোবা মোশিকে বলেন: ‘লোকেদের একত্রে জড়ো করো। তারপর, তাদের সামনে ওখানে যে-পাথর রয়েছে, সেটাকে বলো। তাহলেই এর মধ্যে থেকে লোকেদের ও তাদের সমস্ত পশুর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ জল বের হবে।’

তাই মোশি লোকেদের একত্রিত করেন এবং বলেন: ‘শোনো, তোমরা যারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করো না! হারোণ এবং আমাকে কি তোমাদের জন্য এই পাথর থেকে জল বের করতে হবে?’ তারপর, মোশি একটা লাঠি দিয়ে সেই পাথরের গায়ে দু-বার আঘাত করেন আর তখন ওই পাথর থেকে প্রচুর জলের ধারা বেরিয়ে আসে। এখন সমস্ত লোক আর সেইসঙ্গে পশুপাখিদের পান করার জন্য যথেষ্ট জল রয়েছে।

কিন্তু যিহোবা, মোশি ও হারোণের ওপর রাগ হন। তুমি কি জান, কেন? কারণ মোশি এবং হারোণ বলেছিল যে, তারা পাথর থেকে জল বের করতে যাচ্ছে। কিন্তু, আসলে যিহোবা তা করেছিলেন। আর মোশি ও হারোণ যেহেতু এই বিষয়ে সত্য কথা বলেনি, তাই যিহোবা বলেন যে, তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। ‘তোমরা আমার লোকেদের কনান দেশে নিয়ে যাবে না,’ তিনি বলেন।

খুব শীঘ্র ইস্রায়েলীয়রা কাদেশ ছেড়ে চলে যায়। অল্পসময় পরেই তারা হোর পর্বতে চলে আসে। এখানে, পর্বতের ওপরে হারোণ মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল এক-শো তেইশ বছর। ইস্রায়েলীয়রা অনেক দুঃখ পায় আর তাই লোকেরা ত্রিশ দিন পর্যন্ত হারোণের জন্য শোক করে। তার ছেলে ইলীয়াসর, ইস্রায়েল জাতির পরবর্তী মহাযাজক হন।

গণনাপুস্তক ২০:১-১৩, ২২-২৯; দ্বিতীয় বিবরণ ২৯:৫.