সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ৬১

দায়ূদকে রাজা করা হয়

দায়ূদকে রাজা করা হয়

শৌল আবারও দায়ূদকে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি তার সবচেয়ে ভালো তিন হাজার সৈন্য নিয়ে দায়ূদের খোঁজে বের হন। দায়ূদ যখন তা জানতে পারেন, তখন তিনি খোঁজ নিতে পাঠান যে, শৌল ও তার লোকেরা রাতে কোথায় শিবিরস্থাপন করবে। তারপর, দায়ূদ তার দু-জন লোককে জিজ্ঞেস করেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে আমার সঙ্গে শৌলের শিবিরে যাবে?’

‘আমি যাব,’ অবীশয় উত্তর দেন। অবীশয় হলেন দায়ূদের বোন সরূয়ার ছেলে। শৌল ও তার লোকেরা যখন ঘুমাচ্ছিল, তখন দায়ূদ এবং অবীশয় নিঃশব্দে হামাগুড়ি দিয়ে শিবিরে প্রবেশ করে। তারা শৌলের বর্শা ও জলের পাত্র তুলে নেয়, যেগুলো শৌলের মাথার ঠিক পাশেই ছিল। কেউ তাদের দেখতে বা কোনো শব্দ শুনতে পায় না কারণ সকলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল।

এখন দায়ূদ ও অবীশয়কে দেখো। তারা বেরিয়ে এসেছে এবং নিরাপদে একটা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে গিয়েছে। দায়ূদ তখন ইস্রায়েলের সেনাপতির উদ্দেশে চিৎকার করে বলে: ‘অব্‌নের, তুমি তোমার প্রভু ও রাজাকে সুরক্ষা করছ না কেন? দেখো তো! তার বর্শা ও জলের পাত্র কোথায়?’

শৌল তখন জেগে ওঠেন। তিনি দায়ূদের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে জিজ্ঞেস করেন: ‘তুমি কি দায়ূদ?’ তুমি কি নীচে শৌল ও অব্‌নেরকে দেখতে পাচ্ছ?

‘হ্যাঁ, প্রভু মহারাজ,’ দায়ূদ শৌলকে উত্তর দেন। আর দায়ূদ জিজ্ঞেস করেন: ‘কেন আপনি আমাকে ধরতে চাচ্ছেন? আমি কী অন্যায় করেছি? হে মহারাজ, এই যে আপনার বর্শা। আপনার কোনো লোককে এসে এগুলো নিয়ে যেতে বলুন।’

‘আমি ভুল করেছি,’ শৌল স্বীকার করেন। ‘আমি বোকার মতো কাজ করেছি।’ তখন দায়ূদ নিজের পথে চলে যান আর শৌল বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু, দায়ূদ মনে মনে বলেন: ‘কোনো একদিন নিশ্চয়ই শৌল আমাকে মেরে ফেলবেন। আমার পলেষ্টীয়দের দেশে পালিয়ে যাওয়া উচিত।’ আর তিনি তা-ই করেন। দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বোকা বানায় আর তাদের এটা বিশ্বাস করতে বাধ্য করে যে, তিনি এখন তাদের পক্ষে আছেন।

এর কিছু সময় পরে, পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়। যুদ্ধে শৌল ও যোনাথন দু-জনেই মারা যায়। এতে দায়ূদ অনেক দুঃখিত হন আর একটা সুন্দর গান লিখে এভাবে গেয়ে ওঠেন: ‘আমার ভাই যোনাথন, তোমার জন্য আমি খুবই ব্যাকুল। তুমি আমার কতই না প্রিয় ছিলে!’

এরপর দায়ূদ ইস্রায়েলের হিব্রোণ নগরে ফিরে আসেন। এখানে দুটো দলের লোকেদের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এক দল শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশৎকে রাজা হিসেবে চায়, আরেক দল দায়ূদকে রাজা করতে চায়। কিন্তু, শেষপর্যন্ত দায়ূদের লোকেরা জয়ী হয়। দায়ূদ যখন রাজা হন, তখন তার বয়স ত্রিশ বছর। সাড়ে সাত বছর ধরে তিনি হিব্রোণে শাসন করেন। তার কয়েকটি ছেলে হয় আর তাদের নাম অম্নোন, অবশালোম এবং আদোনিয়।

একটা সময়ে দায়ূদ ও তার লোকেরা যিরূশালেম নামে একটা সুন্দর নগর জয় করে নেয়। দায়ূদের বোন সরূয়ার আরেক ছেলে যোয়াব এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তাই, দায়ূদ পুরস্কার হিসেবে যোয়াবকে তার সৈন্যদলের সেনাপতি করেন। এখন দায়ূদ যিরূশালেম নগরে শাসন করতে শুরু করেছেন।