গল্প ৮১
ঈশ্বরের সাহায্যের ওপর নির্ভর করা
হাজার হাজার লোক বাবিল থেকে যিরূশালেমের পথে দীর্ঘযাত্রা করেছে। কিন্তু, তারা যখন সেখানে পৌঁছায়, তখন যিরূশালেম কেবল একটা ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে আছে। সেখানে কেউই বসবাস করে না। ইস্রায়েলীয়দের সব কিছু আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে।
প্রথমে, তারা একটা বেদি তৈরি করে। এটা হচ্ছে সেই জায়গা, যার ওপরে তারা যিহোবার উদ্দেশে পশু উৎসর্গ করতে বা উপহার দিতে পারে। কয়েক মাস পর, ইস্রায়েলীয়রা মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু করে। কিন্তু, কাছাকাছি দেশের শত্রুরা চায় না যে, ইস্রায়েলীয়রা সেটা নির্মাণ করুক। তাই, শত্রুরা তাদের কাজ থামিয়ে দেওয়ার জন্য তাদেরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। অবশেষে, তারা পারস্যের নতুন রাজাকে দিয়ে একটা আইন তৈরি করে তাদের নির্মাণকাজ থামিয়ে দেয়।
কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। ইস্রায়েলীয়রা বাবিল থেকে ফিরে আসার পর প্রায় সতেরো বছর পার হয়ে গিয়েছে। যিহোবা লোকেদের কাছে এই বিষয়টা বলার জন্য তাঁর ভাববাদী হগয় এবং সখরিয়কে পাঠান, যেন তারা আবার নির্মাণকাজ শুরু করে। লোকেরা ঈশ্বরের সাহায্যের ওপর নির্ভর করে এবং ভাববাদীদের বাধ্য হয়। তারা আবারও নির্মাণকাজ শুরু করে, যদিও একটা আইন অনুযায়ী তাদেরকে সেটা করতে নিষেধ করা হয়েছিল।
তাই, তত্তনয় নামে একজন পারসিক অধ্যক্ষ সেখানে এসে ইস্রায়েলীয়দের জিজ্ঞেস করে, কোন অধিকারে তারা মন্দির নির্মাণ করছে। ইস্রায়েলীয়রা তাকে উত্তর দেয় যে, তারা যখন বাবিলে ছিল, তখন রাজা কোরস তাদের এই কথা বলেছিলেন: ‘যাও, যিরূশালেমে গিয়ে তোমাদের ঈশ্বর যিহোবার মন্দির নির্মাণ করো।’
তত্তনয় তখন বাবিলে একটা চিঠি পাঠিয়ে জানতে চান, কোরস যিনি এখন আর বেঁচে নেই, তিনি সত্যিই তা বলেছিলেন কি না। খুব শীঘ্র পারস্যের নতুন রাজার কাছ থেকে একটা চিঠি আসে। তাতে লেখা থাকে যে, কোরস সত্যিই তা বলেছেন। আর তাই রাজা আরও লেখেন: ‘ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণ করতে দাও। আর আমি তোমাকে আদেশ দিচ্ছি, তুমি তাদেরকে সাহায্য করবে।’ প্রায় চার বছর পর মন্দিরের নির্মাণকাজ শেষ হয় আর ইস্রায়েলীয়রা খুবই খুশি হয়।
আরও অনেক বছর কেটে যায়। মন্দিরের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর প্রায় আটচল্লিশ বছর পার হয়ে গিয়েছে। যিরূশালেমের লোকেরা অনেক দরিদ্র হয়ে গিয়েছে আর সেই নগর ও ঈশ্বরের মন্দির আর আগের মতো সুন্দর দেখায় না। বাবিলে ইষ্রা নামে একজন ইস্রায়েলীয় ব্যক্তি জানতে পারেন যে, ঈশ্বরের মন্দির মেরামত করা প্রয়োজন। তাই, তিনি কী করলেন, তা কি তুমি জান?
ইষ্রা তখন পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের সঙ্গে দেখা করতে যান আর সেই ভালো রাজা যিরূশালেমে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইষ্রার কাছে অনেক উপহার দিয়ে দেন। ইষ্রা সেই উপহারগুলো যিরূশালেমে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবিলে থাকা ইস্রায়েলীয়দের কাছে সাহায্য চান। প্রায় ছয় হাজার লোক বলে যে, তারা যাবে। তাদের কাছে তখন বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে সোনা, রুপো ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র থাকে।
তবে, ইষ্রা খুবই চিন্তিত থাকেন কারণ পথে দুষ্ট লোকেরা রয়েছে। এই লোকেরা হয়তো তাদের সোনা-রুপো কেড়ে নিয়ে তাদেরকে মেরে ফেলতে পারে। তাই, ইষ্রা সমস্ত লোককে একসঙ্গে ডাকেন, যেমনটা তুমি এই ছবিতে দেখতে পাচ্ছ। তারপর, তারা যিহোবার কাছে প্রার্থনা করে, যাতে তিনি যিরূশালেমের উদ্দেশে দীর্ঘ যাত্রাপথে তাদেরকে সুরক্ষা করেন।
যিহোবা তাদের সুরক্ষা করেন। আর চার মাস যাত্রা করার পর, তারা নিরাপদে যিরূশালেমে পৌঁছায়। এটা কি দেখায় না যে, যারা সাহায্যের জন্য যিহোবার ওপর নির্ভর করে, তাদেরকে তিনি সুরক্ষা করতে পারেন?
ইষ্রা ২ থেকে ৮ অধ্যায়।