সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্তে

ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্তে

অধ্যায় ১৩২

ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্তে

পঞ্চাশত্তমীর দিন পবিত্র আত্মার সেচন প্রমাণ করে যে যীশু স্বর্গে ফিরে গেছেন। এর কিছু পরেই স্তিফানকে দেওয়া দর্শনও প্রমাণ করে যে তিনি স্বর্গে ফিরে গেছেন। তার বিশ্বস্ত সাক্ষ্যদানের জন্য প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুর পূর্বে, স্তিফান বলে ওঠেন: “দেখ! আমি দেখিতেছি, স্বর্গ খোলা রহিয়াছে, এবং মনুষ্যপুত্র ঈশ্বরের দক্ষিণে দাঁড়াইয়া আছেন।”

আর ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্তে বসে, যীশু তাঁর পিতার আজ্ঞার অপেক্ষায় আছেন: “তুমি আপন শত্রুদের মধ্যে কর্ত্তৃত্ব করিও।” কিন্তু যতক্ষণ অবধি, তিনি শত্রুদের বিপক্ষে কিছু না করছেন, যীশু কি করেন? তিনি শাসন অথবা রাজত্ব করেন, তাঁর অভিষিক্ত শিষ্যদের উপরে, প্রচারকার্যে তাদের পরিচালনা দিয়ে ও তাদের প্রস্তুত করেন, পুনরুত্থানের মাধ্যমে, তাঁর সাথে সহ-শাসক হবার জন্য তাঁর পিতার রাজ্যে।

উদাহরণস্বরূপ, যীশু শৌলকে মনোনীত করেন (যিনি পরে তার রোমীয় নামে পরিচিতি লাভ করেন, যা হল পৌল) যাতে শিষ্যকরণের কাজ অন্য দেশে তীব্র করা যায়। শৌল ঈশ্বরের আইনের জন্য উদ্যোগী কিন্তু যিহূদী ধর্মীয় নেতাদের দ্বারা তিনি পথভ্রষ্ট। এর ফলস্বরূপ, কেবল যে শৌল স্তিফানের হত্যা অনুমোদন করেন তাই নয় কিন্তু তিনি দম্মেশকে যান মহাযাজক কায়াফার কাছ থেকে আদেশ নিয়ে যাতে যিরূশালেমে সেই পুরুষ ও স্ত্রীলোকদের বন্দী করে নিয়ে আসতে পারেন যারা যীশুর অনুগামী। যাইহোক, শৌল যখন তার পথে সেখানে যাচ্ছেন, এক উজ্জ্বল আলো তার চারিদিকে দেখা দেয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান।

“শৌল, শৌল, কেন আমাকে তাড়না করিতেছ?” অদৃশ্য উৎস থেকে এক কণ্ঠস্বর তাকে জিজ্ঞাসা করে। “প্রভু, আপনি কে?” শৌল প্রশ্ন করেন।

“আমি যীশু, যাঁহাকে তুমি তাড়না করিতেছ,” উত্তর আসে।

শৌল যিনি অলৌকিক আলোর দ্বারা অন্ধ হয়ে যান, তাকে যীশু বলেন দম্মেশকে প্রবেশ করতে ও নির্দেশের অপেক্ষা করতে। এরপর যীশু অননিয়ের কাছে দর্শন দেন, যিনি তাঁর একজন শিষ্য। শৌলের বিষয়, যীশু অননিয়কে বলেন: “জাতিগণের ও রাজগণের এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের নিকটে আমার নাম বহনার্থে সে আমার মনোনীত পাত্র।”

বস্তুত, যীশুর সমর্থন থাকার জন্যই, শৌল (যিনি এখন পৌল নামে পরিচিত) এবং অন্য সুসমাচার প্রচারকরা তাদের প্রচারে ও শিক্ষা দানের কাজে দারুণ কৃতকার্য্য হন। বাস্তবিক, যীশু তাকে দম্মেশকের পথে দেখা দেবার ২৫ বৎসর পর, পৌল লেখেন যে “সুসমাচার” প্রচারিত হয়েছে “আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সমস্ত সৃষ্টির কাছে।”

অনেক বৎসর পার হয়ে যাবার পর, যীশু তাঁর প্রিয় প্রেরিত, যোহনকে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি দর্শন দেন। এই দর্শনগুলির মাধ্যমে যা যোহন বর্ণনা করেছেন বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য পুস্তকে, তিনি আসলে যেন, বেঁচে থাকেন যীশুকে তাঁর রাজ্যের ক্ষমতায় ফিরে আসতে দেখার জন্য। যোহন বলেন যে “আত্মাবিষ্ট” হয়ে তিনি সময়ের প্রবাহকালে এগিয়ে যেতে সমর্থ হয়ে “প্রভুর দিনে” পৌঁছান। এই “দিন” কি?

যত্নের সাথে বাইবেলের ভাববাণীগুলি অধ্যয়ন করলে দেখা যায়, যার মধ্যে যীশুর নিজের দেওয়া শেষদিনের ভাববাণীগুলিও আছে, তা প্রকাশ করে যে “প্রভুর দিন” শুরু হয়েছে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ১৯১৪ সালে, হ্যাঁ, এই বংশে! তাই ১৯১৪ সালে যীশু অদৃশ্য ভাবে ফিরে আসেন, জনতার কোন তূর্যনিনাদ তাতে ছিল না, কেবল তাঁর বিশ্বস্ত দাসগণ এই পুনরাগমণ সম্বন্ধে জানতে পারেন। সেই বৎসর যিহোবা যীশুকে আদেশ দেন তাঁর শত্রুদের মধ্যে কর্ত্তৃত্ব করতে!

তাঁর পিতার আজ্ঞার বাধ্য হয়ে, যীশু স্বর্গ থেকে শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের তাড়িয়ে দেন, এবং তাদের পৃথিবীতে নিক্ষেপ করেন। দর্শনে এই ঘটনা ঘটতে দেখার পর, যোহন এই স্বর্গীয় ঘোষণার রব শোনেন: “এখন পরিত্রাণ ও পরাআম ও রাজত্ব আমাদের ঈশ্বরের, এবং কর্ত্তৃত্ব তাঁহার খ্রীষ্টের অধিকার হইল!” হ্যাঁ, ১৯১৪ সাল থেকে খ্রীষ্ট রাজারূপে তাঁর শাসন শুরু করেন!

স্বর্গে যারা যিহোবার উপাসক তাদের জন্য ইহা কি সুসংবাদ! তাদের উৎসাহিত করা হয়: “হে স্বর্গ ও তন্নিবাসিগণ, আনন্দ কর!” কিন্তু পৃথিবীর অধিবাসীদের অবস্থা কি? “পৃথিবী ও সমুদ্রের সন্তাপ হইবে,” সেই রব বলে চলে, “কেননা দিয়াবল তোমাদের নিকটে নামিয়া গিয়াছে, সে অতিশয় রাগাপন্ন, সে জানে, তাহার কাল সংক্ষিপ্ত।”

আমরা ঠিক এখনই সেই সংক্ষিপ্ত সময়ে আছি। ব্যক্তিদের পৃথক করা হচ্ছে যে তারা ঈশ্বরের নূতন রাজ্যে প্রবেশ করবে অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। সত্যটি হচ্ছে, যে আপনার ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ এখন নির্ধারিত হচ্ছে খ্রীষ্টের পরিচালনার অধীনে ঈশ্বরের রাজ্যের যে প্রচার পৃথিবী জুড়ে হচ্ছে আপনি তাতে কিভাবে সাড়া দিচ্ছেন তার উপর ভিত্তি করে।

যখন পৃথক করার কাজ সম্পূর্ণ হবে, যীশু খ্রীষ্ট তখন ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে কাজ করবেন শয়তানের সমস্ত বিধি ব্যবস্থাকে লোপ করার জন্য ও তাদেরও যারা তাকে সমর্থন জানায়। যীশু সমস্ত দুষ্টতার অপসারণের এই কাজ সম্পাদন করবেন সেই যুদ্ধে যাকে বাইবেলে বলা হয় হরমা-গিদোন, বা আরমাগেডন। এরপর, যীশু, যিনি যিহোবার পরেই বিশ্বে সর্বমহান ব্যক্তি, শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের বন্ধন করবেন ও সহস্র বৎসরের জন্য “অগাধলোকে” নিক্ষেপ করবেন, যা হল মৃতবৎ নিধ্রিয় এক অবস্থা। প্রেরিত ৭:৫৫-৬০; ৮:১-৩; ৯:১-১৯; ১৬:৬-১০; গীতসংহিতা ১১০:১, ২; ইব্রীয় ১০:১২, ১৩; ১ পিতর ৩:২২; লূক ২২:২৮-৩০; কলসীয় ১:১৩, ২৩; প্রকাশিত বাক্য ১:১, ১০; ১২:৭-১২; ১৬:১৪-১৬; ২০:১-৩; মথি ২৪:১৪; ২৫:৩১-৩৩.

▪ যীশু স্বর্গে নীত হবার পর, কোথায় তিনি আছেন, আর কিসের অপেক্ষায়?

▪ যীশু স্বর্গে যাবার পর কাদের উপরে রাজত্ব করেন, আর তাঁর রাজত্ব কিভাবে প্রকাশ পায়?

▪ “প্রভুর দিন” কখন শুরু হয়, তার আরম্ভে কি হয়?

▪ কি পৃথক করার কাজ এখন চলছে যা আমাদের প্রত্যেককে প্রভাবিত করে, ও কিসের উপর ভিত্তি করে এই পৃথক করার কাজ হচ্ছে?

▪ এই পৃথকীকরণের কাজ শেষ হলে, কি কি ঘটনা ঘটবে?