সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বর যা চান যীশু সকলই পূর্ণ করেন

ঈশ্বর যা চান যীশু সকলই পূর্ণ করেন

অধ্যায় ১৩৩

ঈশ্বর যা চান যীশু সকলই পূর্ণ করেন

যখন যোদ্ধা—রাজা যীশু খ্রীষ্ট শয়তান ও তার অধার্মিক জগতকে সরিয়ে দেবেন, কি আনন্দের কারণই না তা হবে! যীশুর শান্তিপূর্ণ হাজার বৎসরের রাজত্ব অবশেষে শুরু হবে!

যীশু ও তাঁর সঙ্গী রাজাদের পরিচালনার অধীনে, যারা আরমাগেদনে রক্ষা পাবে তারা ঐ ধার্মিক যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করবে। সবেত, যারা পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে তারা সন্তানাদি উৎপন্ন করবে কিছু সময়ের জন্য, আর তারাও এই পৃথিবীকে এক অপূর্ব সুন্দর বাগানে পরিণত করার আনন্দদায়ক কাজে অংশ নেবে।

সময় মত যীশু লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিদের তাদের কবর থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন যাতে তারা সুন্দর পরমদেশ উপভোগ করতে পারে। তিনি এই কাজ করবেন তাঁর প্রতিজ্ঞার পূর্ণতাস্বরূপ: “কেননা এমন সময় আসিতেছে, যখন কবরস্থ সকলে . . . বাহির হইয়া আসিবে।”

যাদের যীশু পুনরুত্থান দেবেন তাদের মধ্যে সেই দস্যুও থাকবে যে তাঁর পাশে যাতনাদণ্ডে মারা গিয়েছিল। স্মরণ করুন যীশু তার কাছে কি প্রতিজ্ঞা করেন: “আমি তোমাকে অদ্যই বলিতেছি, যে তুমি আমার সাথে পরমদেশে থাকিবে।” না, সেই ব্যক্তিকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে না যীশুর সাথে রাজত্ব করার জন্য, অথবা যীশুও পুনরায় মানুষ হয়ে পরমদেশ পৃথিবীতে তার সাথে বাস করবেন না। বরং, যীশু এই পূর্বের দস্যুর সাথে থাকবেন এই অর্থে যে তিনি তাকে পুনরুত্থানের দ্বারা পরমদেশে জীবিত করবেন এবং দেখবেন যে তার সকল আত্মিক ও দৈহিক প্রয়োজন যেন পূর্ণ হয়, যেমন পরের পাতায় চিত্রিত করা হয়েছে।

বিষয়টি চিন্তা করুন! যীশুর প্রেমময় পরিচর্য্যার অধীনে সমস্ত মনুষ্য পরিবার—আরমাগেডন থেকে রক্ষাপ্রাপ্তেরা, তাদের বংশধররা, এবং যারা মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হবে ও তাঁর বাধ্য হবে সেই সহস্র লক্ষ ব্যক্তিরা—আমশ সিদ্ধতার দিকে এগিয়ে যাবে। যিহোবা, তাঁর রাজকীয় পুত্র যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে, আত্মিকভাবে মনুষ্যদের মধ্যে বাস করবেন। “আর,” যে রব যোহন স্বর্গ থেকে শোনেন বলে, “তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না।” পৃথিবীতে কেউই কষ্ট পাবে না বা অসুস্থ হবে না।

যীশুর হাজার বৎসরের রাজত্বের শেষে, পরিস্থিতি ঠিক সেইরকম হবে যা ঈশ্বর আদিতে প্রথম মানব দম্পতি, আদম ও হবাকে বলেছিলেন, ও চেয়েছিলেন তারা বহু বংশ হোক ও পৃথিবী পূর্ণ করুক। হ্যাঁ, পৃথিবী ধার্মিক ও সিদ্ধ এক মানব জাতি দ্বারা পূর্ণ হবে। কারণ যীশুর মুক্তির মূল্যের উপকার সকলের জন্য ব্যবহার করা হবে। আদমের পাপজনিত মৃত্যু আর থাকবে না!

এইভাবে, যীশু সব সম্পন্ন করবেন যা যিহোবা তাঁকে করতে বলেছেন। সেইজন্য, হাজার বৎসরের শেষে, তিনি রাজ্য ও সিদ্ধ মানব সমাজকে তাঁর পিতার কাছে হস্তান্তর করবেন। ঈশ্বর তখন শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের সেই মৃতবৎ নিষ্কিয়তা অগাধলোক থেকে ছেড়ে দেবেন। কি উদ্দেশ্যে?

হাজার বৎসরের শেষে, বেশীর ভাগ যারা সেই পরমদেশে বেঁচে থাকবে তারা হবে পুনরুত্থিত ব্যক্তিরা যাদের বিশ্বাস কখনও পরীক্ষিত হয়নি। যেহেতু মৃত্যুর পূর্বে, তারা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা জানত না সেই কারণে বিশ্বাস প্রদর্শন করতে পারেনি। তারপর, পুনরুত্থান পাওয়ার পর ও বাইবেলের সত্য শেখার পর, পরমদেশে কোন বাধা না থাকায়, ঈশ্বরের সেবা করা তাদের জন্য সহজ ছিল। কিন্তু যদি শয়তানকে সুযোগ দেওয়া হয় ঈশ্বরের পরিচর্য্যায় তাদের বিরত করতে, তাহলে পরীক্ষার মধ্যে কি তারা বিশ্বস্ত থাকবে? এই প্রশ্নের সমাধানের জন্য, শয়তানকে ছাড়া হবে।

যোহনকে দেওয়া প্রকাশিত বাক্যে দেখান হয় যে যীশুর হাজার বৎসরের রাজত্বের পর, শয়তান এক অনির্ধারিত সংখ্যার লোককে ঈশ্বরের পরিচর্য্যায় বিরত করতে সফল হবে। কিন্তু সেই শেষ পরীক্ষা সমাপ্ত হবার পর, শয়তান, তার মন্দ দূতেরা, এবং সকলে যাদের সে ভ্রান্ত করতে সফল হয়েছে চিরকালের জন্য ধ্বংস হবে। অন্যদিকে, সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষিত, বিশ্বস্ত রক্ষাপ্রাপ্তরা বেঁচে থাকবে তাদের স্বর্গীয় পিতার আশীর্বাদসকল চিরকাল উপভোগ করার জন্য।

স্পষ্টত, যীশু ঈশ্বরের এই গৌরবপূর্ণ উদ্দেশ্য সাধনে, গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়েছেন, ও নিয়ে যাবেন। কি অপূর্ব ভবিষ্যৎ না আমরা উপভোগ করতে পারব তিনি ঈশ্বরের মহান স্বর্গীয় রাজারূপে যেগুলি সাধিত করবেন তার জন্য। তবুও, আমরা কখনোই ভুলে যেতে পারি না মনুষ্য থাকাকালীন তিনি যা কিছু করেছেন।

যীশু স্বেচ্ছায় পৃথিবীতে আসেন ও আমাদের তাঁর পিতার বিষয়ে শিক্ষা দেন। এর উপরে তিনি ঈশ্বরের মহৎ গুণাবলীগুলি প্রদর্শন করেন। তাঁর অগাধ সাহস ও পুরুষত্ব, তাঁর তুলনাহীন প্রজ্ঞা, শিক্ষক হিসাবে তাঁর অপূর্ব দক্ষতা, তাঁর নির্ভীক নেতৃত্ব এবং তাঁর করুণা ও অনুভূতি যখন আমরা লক্ষ্য করি আমাদের হৃদয় আন্দোলিত হয়। আমরা যখন স্মরণ করি যে মুক্তির মূল্য প্রদান করার জন্য তিনি কি অবর্ণনীয় দুঃখই না ভোগ করেন, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র আমরা জীবন পেতে পারি, নিশ্চয়ই, আমাদের হৃদয় তাঁর প্রতি উপলব্ধিতে আলোড়িত হয়!

সত্যই, কি অপূর্ব এক ব্যক্তিকে আমরা দেখেছি যীশুর জীবনী আলোচনায়! তাঁর মহত্ত্ব সুস্পষ্ট ও অভিভূতকারী। রোমীয় রাজ্যপাল পন্তীয় পীলাতের কথা ত্তনিত করতে আমরা পরিচালিত হই: “দেখ! সেই ব্যক্তি!” হ্যাঁ, সত্যই, “সেই ব্যক্তি,” সর্বমহান ব্যক্তি যিনি কখনও জীবিত ছিলেন!

আমরা যদি তাঁর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান ব্যবস্থা স্বীকার করি, তাহলে আদম থেকে প্রাপ্ত পাপ এবং মৃত্যুর বোঝা আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে, আর যীশু আমাদের “সনাতন পিতা” হতে পারেন। সকলে যারা অনন্ত জীবন লাভ করবে তাদের কেবল ঈশ্বরের নয় কিন্তু তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টেরও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আপনার এই বই পড়া এবং অধ্যয়ন করা যেন আপনাকে সেই রকম জীবনদায়ক জ্ঞান নিতে সাহায্য করে! ১ যোহন ২:১৭; ১:৭; যোহন ৫:২৮, ২৯; ৩:১৬; ১৭:৩; ১৯:৫; লূক ২৩:৪৩; আদিপুস্তক ১:২৮; ১ করিন্থীয় ১৫:২৪-২৮; প্রকাশিত বাক্য ২০:১-৩, ৬-১০; ২১:৩, ৪; যিশাইয় ৯:৬.

▪ যারা আরমাগেডন পার হবে ও তাদের ছেলেমেয়েরা কি আনন্দদায়ক সুযোগ পাবে?

▪ যারা আরমাগেডন পার হবে ও তাদের ছেলেমেয়েরা ছাড়া আর কারা পরমদেশ উপভোগ করবে, এবং কোন অর্থে যীশু তাদের সাথে থাকবেন?

▪ হাজার বৎসরের শেষে পরিস্থিতি কিরূপ হবে, ও যীশু তখন কি করবেন?

▪ কেন শয়তানকে অগাধলোক থেকে ছাড়া হবে, এবং তার ও যারা তার অনুগমন করে তাদের ফল কি হবে?

▪ কিভাবে যীশু আমাদের “সনাতন পিতা” হতে পারেন?